মারাঠাদের মু্র্শিদাবাদ লুণ্ঠন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মুর্শিদাবাদ লুণ্ঠন
মূল যুদ্ধ: বর্গির হাঙ্গামা এবং বাংলায় মারাঠা আক্রমণ (১৭৪২)
তারিখ৬/৭ মে ১৭৪২[১][২]
অবস্থান
ফলাফল

মারাঠা সাফল্য[১][২]

বিবাদমান পক্ষ
মারাঠা সাম্রাজ্য বাংলা
সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী
ভাস্কর পণ্ডিত
মীর হাবিব[১]
অজ্ঞাত
শক্তি
~৪০,০০০[১] অজ্ঞাত
হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি
অজ্ঞাত অজ্ঞাত

মারাঠাদের মুর্শিদাবাদ লুণ্ঠন বলতে ১৭৪২ সালের ৬/৭ মে তারিখে নাগপুরের মারাঠা রাজা প্রথম রঘুজী ভোঁসলের সৈন্যবাহিনী কর্তৃক বাংলার তৎকালীন রাজধানী মুর্শিদাবাদ আক্রমণ ও লুণ্ঠনকে বোঝায়[১]ভাস্কর পণ্ডিতের নেতৃত্বাধীন মারাঠা বাহিনী বাংলার নবাব আলীবর্দী খানের অনুপস্থিতির সুযোগ গ্রহণ করে মুর্শিদাবাদ আক্রমণ করে এবং বিপুল পরিমাণ অর্থ ও অন্যান্য সামগ্রী লুণ্ঠন করে[২]। নবাব আলীবর্দী এ সংবাদ পেয়ে সসৈন্যে মুর্শিদাবাদের দিকে অগ্রসর হলে মারাঠারা পশ্চাৎপসরণ করে[১][২]

পটভূমি[সম্পাদনা]

১৭৪২ সালে মারাঠা সেনাপতি ভাস্কর পণ্ডিত ৪০,০০০ অশ্বারোহী সৈন্যসহ বাংলা আক্রমণ করেন[১]। মারাঠা সৈন্যরা বর্ধমানমুর্শিদাবাদ জেলায় লুটতরাজ করতে থাকে। ১৭৪২ সালের এপ্রিলে বাংলার নবাব আলীবর্দী খান বর্ধমানের নিকটে মারাঠাদের দ্বারা অবরুদ্ধ হন, কিন্তু অবরোধ ভেদ করতে সক্ষম হন[১]। ভাস্কর পণ্ডিত এতে হতাশ হয়ে বাংলা ত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু মীর হাবিব (বাংলার নবাবের একজন দলত্যাগী কর্মকর্তা) তাকে ভিন্নরকম পরামর্শ দেন। বর্ধমানে মারাঠাদের অবরোধ ভেদ করে নবাব আলীবর্দী কাটোয়ায় অবস্থান করছিলেন[১]। নবাবের অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে নবাবের রাজধানী মুর্শিদাবাদ আক্রমণ ও লুণ্ঠন করার জন্য মীর হাবিব ভাস্কর পণ্ডিতকে উৎসাহিত করেন[১]

ঘটনাবলি[সম্পাদনা]

১৭৪২ সালের ৬ মে ভাস্কর পণ্ডিতের মারাঠা হানাদারেরা মুর্শিদাবাদের নিকটে পৌঁছে[২]। তারা মুর্শিদাবাদের একটি উপশহর দাহিপাড়ায় পৌঁছে সেখানকার বাজার পুড়িয়ে দেয়[২], এবং তারপর এটি অতিক্রম করে খোদ মুর্শিদাবাদে পৌঁছে সেখানে লুটতরাজ করে[১][২]। কেবল ব্যাঙ্কার জগৎ শেঠের বাড়ি থেকেই তারা ৩ লক্ষ টাকা ও অন্যান্য মূল্যবান দ্রব্য লুট করেছিল[১][২]। মারাঠা সৈন্যরা এক দিনব্যাপী মুর্শিদাবাদ লুণ্ঠন করে এবং মুর্শিদাবাদের উপকণ্ঠে উদ্দেশ্যহীনভাবে ধ্বংসযজ্ঞ চালায়[১]। নবাব আলীবর্দী ৭ মে সকালে তার রাজধানী রক্ষা করতে পৌঁছান। আলীবর্দীর আগমনের সংবাদ পেয়ে মারাঠা হানাদারেরা কাটোয়ায় পশ্চাৎপসরণ করে। পথিমধ্যে তারা অসংখ্য গ্রাম জ্বালিয়ে দেয় এবং জ্বলন্ত গ্রামসমূহের সারি তাদের পদচিহ্ন হিসেবে থেকে যায়[২]

ফলাফল[সম্পাদনা]

সাফল্যের সঙ্গে মুর্শিদাবাদ আক্রমণের মাধ্যমে মারাঠারা তাদের ধ্বংসাত্মক ক্ষমতার প্রদর্শন ঘটায়। এটি বাংলার জনসাধারণ ও অভিজাতদের আতঙ্কিত করে তোলে[২]। মারাঠাদের লুণ্ঠনের ফলে নবাবের রাজকোষের বিপুল ক্ষতি হয়, যা নবাবের জন্য বড় একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়[২]

আরো দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. ড. মুহম্মদ আব্দুর রহিম, (বাংলাদেশের ইতিহাস), আলীবর্দী ও মারাঠা আক্রমণ, পৃ. ২৯৩–২৯৪
  2. মোহাম্মদ শাহ (২০১২)। "মারাঠা হামলা"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743