নূরুল ইসলাম (বীর বিক্রম)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
নূরুল ইসলাম
মৃত্যু১৯৭১
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
 বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণবীর বিক্রম
একই নামের অন্যান্য ব্যক্তিবর্গের জন্য দেখুন নূরুল ইসলাম

শহীদ নূরুল ইসলাম (জন্ম: অজানা - মৃত্যু: ১৯৭১) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর বিক্রম খেতাব প্রদান করে।[১]

জন্ম ও শিক্ষাজীবন[সম্পাদনা]

নূরুল ইসলামের জন্ম যশোর জেলার চৌগাছা উপজেলার ফুলসারা ইউনিয়নের চান্দা আফড়া গ্রামে। চার ভাইবোনের মধ্যে নূরুল ইসলাম ছিলেন তৃতীয়। তার বাবার নাম শফিউল্লাহ মিয়া এবং মায়ের নাম হায়াতুননেছা। তার স্ত্রীর নাম আনোয়ারা বেগম। তার এক মেয়ে। [২]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নবীন সৈনিক ছিলেন নূরুল ইসলাম। ১৯৭১ সালের মার্চে ছুটিতে থাকা অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে যুদ্ধে যোগ দেন। প্রতিরোধ যুদ্ধ শেষে ভারতে যান। পরে যুদ্ধ করেন ৮ নম্বর সেক্টরের বয়রা সাব-সেক্টরে।

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা[সম্পাদনা]

১৯৭১ সালের ৯ আগস্ট যশোর জেলার চৌগাছা উপজেলার বর্নীতে ছিলো সীমান্ত বিওপি। ১৯৭১ সালে সেখানে ছিল প্রায় ৭৫-৮০ জন পাকিস্তানি সেনা। একদল রাজাকারও তাদের সঙ্গে ছিল। ৯ আগস্ট বয়রা সাব-সেক্টরের সাব-সেক্টর কমান্ডার খন্দকার নাজমুল হুদার (বীর বিক্রম) নেতৃত্বে একদল মুক্তিযোদ্ধা বর্নী সীমান্ত বিওপিতে আক্রমণ করেন। কয়েক ঘণ্টা ধরে সেখানে যুদ্ধ হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকার মিলে ১৪-১৫ জন নিহত হয়। যুদ্ধের একপর্যায়ে পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকাররা লাশ ও অনেক অস্ত্রশস্ত্র ফেলে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। এরপর খন্দকার নাজমুল হুদার নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা অস্ত্রশস্ত্রগুলো সংগ্রহ করে নিজ ঘাঁটিতে নিয়ে যান। তার নির্দেশ পেয়ে নূরুল ইসলামের সহযোদ্ধারা সেগুলো সংগ্রহ করে নিজ ঘাঁটিতে পাঠাতে থাকেন। সেখানে ছিল একটি খাল। তার পূর্ব পারে ছিলেন অধিনায়কসহ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা। তাদের মধ্যে নূরুল ইসলামও ছিলেন। বাকি মুক্তিযোদ্ধারা ছিলেন খালের পশ্চিম পারে। এমন সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নতুন একটি দল পেছন দিক থেকে এসে হঠাৎ তাদের ওপর আক্রমণ করে। উৎফুল্ল মুক্তিযোদ্ধারা আকস্মিক ওই আক্রমণে প্রস্তুত ছিলেন না। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আকস্কিক পাল্টা আক্রমণে খালের পূর্ব পারে থাকা মুক্তিযোদ্ধারা চরম বিপদের মুখে পড়েন। পাকিস্তানি সেনাদের হাতে তারা প্রায় ঘেরাওয়ের উপক্রম হন। তখন নূরুল ইসলামসহ কয়েকজন বিচলিত না হয়ে সাহসিকতার সঙ্গে পাকিস্তানি সেনাদের মোকাবিলা করতে থাকেন। ওই সুযোগে তার সহযোদ্ধা নূর মোহাম্মদ শেখ (বীরশ্রেষ্ঠ) ও আবুল হোসেন (বীর প্রতীক) অধিনায়কসহ কয়েকজনকে খাল পার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যান। খালের পূর্ব পারে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ চলতে থাকে। ওই যুদ্ধে নূরুল ইসলামসহ চারজন মুক্তিযোদ্ধা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গুলিতে শহীদ হন। পরে মুক্তিযোদ্ধারা নূরুল ইসলাম ও তার সহযোদ্ধাদের মরদেহ উদ্ধার করে বর্নীতে সীমান্তসংলগ্ন স্থানে সমাহিত করেন। [৩]

পুরস্কার ও সম্মাননা[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না" | তারিখ: ০৯-১২-২০১১"। ২০১৭-১০-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৪-১৮ 
  2. একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রহন্থ। জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ১৪০। আইএসবিএন 9789843351449 
  3. একাত্তরের বীরযোদ্ধা, খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা (প্রথম খন্ড)। প্রথমা প্রকাশন। এপ্রিল ২০১২। পৃষ্ঠা ১৭১। আইএসবিএন 9789843338884 

বহি:সংযোগ[সম্পাদনা]