ভাস্কর পণ্ডিত

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ভাস্কর রাম কোলহাটকর পণ্ডিত
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্মদাক্ষিণাত্য
মৃত্যু৩১ মার্চ ১৭৪৪[১]
ধর্মহিন্দু
সামরিক পরিষেবা
যুদ্ধবাংলা অভিযান

ভাস্কর রাম কোলহাটকর পণ্ডিত (?–৩১ মার্চ ১৭৪৪), সংক্ষেপে ভাস্কর পণ্ডিত, মারাঠা সাম্রাজ্যের অন্তর্গত নাগপুর রাজ্যের মহারাজা রঘুজী ভোঁসলের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তিনি মারাঠাদের বাংলা অভিযানে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।[১][২]

বর্গী নেতৃত্ব[সম্পাদনা]

ভাস্কর ছিলেন রনকুশলী বর্গী নেতা। বর্গীরা বাংলায় লুঠতরাজের জন্যে এসেছিল। ১৭৪২ সালের এপ্রিল মাসে তার পরিচালনায় একটি মারাঠা বাহিনী নাগপুর থেকে অগ্রসর হয়ে বর্ধমান আক্রমণ করে। এই আক্রমণের খবর পেয়ে ১৫ এপ্রিল নবাব আলীবর্দী খান কটক থেকে বর্ধমান উপস্থিত আসেন। ভাস্কর পণ্ডিতের নেতৃত্বে মারাঠা বাহিনী তার রসদ সরবরাহ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করে দেয় ও বর্ধমানের আশে পাশে ব্যপক লুণ্ঠন চালায়। এর কয়েকদিন পর গোলন্দাজ বাহিনীর সাহায্যর আলীবর্দী বাহিনী মারাঠা সৈন্যদের বেষ্টনী ভেদ করেন এবং কাটোয়া চলে যান। কাটোয়া অবস্থানকালে ভাস্কর পণ্ডিতের বাহিনী মুর্শিদাবাদ আক্রমণ করে ও অঢেল সম্পদ লুঠ করে। ভাস্করের বাহিনী নির্মমভাবে গ্রামগুলিতে হত্যালীলা চালায়। রাজধানী রক্ষার জন্য আলীবর্দী ৭ মে মুর্শিদাবাদে উপস্থিত হলে চতুর ভাস্কর তার বাহিনী নিয়ে কাটোয়া পালিয়ে যান। ১৭৪২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর আলিবর্দী আচমকা রাত্রে ভাস্কর পণ্ডিতের শিবির আক্রমণ করে ছত্রভঙ্গ করে দেন। তারা পালিয়ে যেতে বাধ্য হলেও মেদিনীপুরের দিকে অগ্রসর হয়ার সময় আবার লুঠপাঠ চালায়। নবাববাহিনী তাদের পিছু ধাওয়া করে চিল্কা হ্রদের ওপারে বিতাড়িত করে। কিন্তু ১৭৪৪ সালের মার্চের আবার ভাস্কর পণ্ডিত কর্তৃক উড়িষ্যা ও মেদিনীপুরের দিক হতে বাংলা আক্রান্ত হয়। ক্রমাগত আক্রমণ ও লুঠতরাজের ফলে বাংলা শ্মশানে পরিনত হচ্ছিল। মারাঠা সেনাপতিদের ভর্তুকি প্রদান করতে গিয়ে মুর্শিদাবাদ রাজকোষে টান পড়ে। শেষে নবাব গুপ্তহত্যার মাধ্যমে ভাস্কর পণ্ডিতকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

মৃত্যু[সম্পাদনা]

১৭৪৪ সালের ৩১ মার্চ বাংলার নবাব আলীবর্দী খানের সঙ্গে সন্ধি স্বাক্ষরের আলোচনাকালে তিনি এবং তার সৈন্যবাহিনীর ২১ জন সৈন্যাধ্যক্ষ আলীবর্দীর ষড়যন্ত্রে নিহত হন। বহরমপুরের মনকরার পাশে ভাগীরথী নদীর পরিত্যক্ত জলাশয়ে তাদের মৃতদেহ ফেলে দেওয়া হয়। বর্তমান সেটি একটা বিলে পরিনত হয়েছে। ভাস্করদহ বিল নামে পরিচিত।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. ড. মুহম্মদ আব্দুর রহিম. "মারাঠা আক্রমণ". বাংলাদেশের ইতিহাস. পৃ. ২৯৩–২৯৯.
  2. http://scroll.in/article/776978/forgotten-indian-history-the-brutal-maratha-invasions-of-bengal