রসিকতা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কৌতুক উপভোগ করছেন বিল ক্লিনটন ও বরিস ইয়েল্টসিন.

রসিকতা হলো কোন বক্তব্য, উচ্চারণ বা অঙ্গভঙ্গি যা মানুষের মনে হাস্য রসের সঞ্চার করে। যেমন একটি কৌতুক হচ্ছে রসবোধে পূর্ণ বর্ণনামূলক অভিব্যক্তি যেখানে নির্দিষ্ট এবং বিশেষায়িত ভংগিমায় শব্দগুলো উপস্থাপিত হয় যার ফলে মানুষ হাসে। এটি সংলাপ দিয়ে শুরু হয়ে গল্পের রূপ নেয়, পাঞ্চ লাইনে শেষ হয়। আর এই পাঞ্চ লাইন শুনেই শ্রোতা বুঝতে পারে যে উপস্থাপিত কথাগুলোর দ্বিতীয় কোন অর্থ আছে। এটা মূলত করা হয়ে থাকে শ্লেষালঙ্কার অথবা অন্যান্য শব্দ খেলা যেমন বিদ্রূপ ব্যবহার করে। ব্যঙ্গ আরেক ধরনের রসিকতা যার উদ্দেশ্য অবমাননাকরা।

ভাষাবিদ রবার্ট হেটজরন যে সংজ্ঞাটি প্রস্তাব করেছেনঃ "একটি কৌতুক হলো ক্ষুদ্র আকারের মৌখিক সাহিত্যের রসাত্মক অংশ যেখানে শেষ বাক্যে হাস্যকর পরিনিতি পায় যাকে বলে পাঞ্চলাইন। আসলে প্রকৃত শর্ত হলো, কৌতুকের রসবোধটা শেষে যেন চরমে পৌছে। এ চরম হাস্যবোধ মিলিয়ে যায় এমন কিছু যোগ করা যাবেনা। যদিও একে "মৌখিক" বলা হয়েছে তথাপি কৌতুক ছাপানো হতে পারে, উত্তরোত্তর রূপান্তর হতে থাকলে, আক্ষরিক ভাবে পুনরূৎপাদনে কোন বাধ্যবাধকতা নেই যেরকমটা কবিতার ক্ষেত্রে হয়"

একটি ভাল কৌতুক হলো স্বল্পপরিসরে প্রকাশিত কতগুলো দৃশ্য যা শেষ মুহূর্তে হাসার জন্য যথেষ্ট। তবে ধাঁধাঁ কৌতুকের ক্ষেত্রে ভাবধারা পরোক্ষভাবে বুঝা যায়। রুক্ষ কুকুরের গল্পটি এর নিজস্ব মানে আছে অকৌতুক হিসেবে, যদিও বা একে কৌতুক বলে উপস্থাপন করা হয়। এতে বিস্তরভাবে সময়, স্থান, এবং চরিত্রের বর্ণনা থাকে, আরও অহেতুক গড়গড়ে বর্ণনা থাকে যা পরিশেষে পাঞ্চলাইন প্রদান করতে ব্যর্থ হয়। কৌতুক একধরনের রসবোধ সাহিত্য কিন্তু সব রসবোধ সাহিত্যই কৌতুক নয়। কিছু রসবোধ সাহিত্য গঠিত হয় যা মৌখিক কৌতুক নয় যেমনঃ অনৈচ্ছিক রসবোধ, অবস্থাগত রসবোধ, দৈনন্দিন কৌতুক, ধুমধারাক্কা এবং চুটকি। ডাচ ভাষাবিদ আন্দ্রে জুলির মতে সাধারন মৌখিক কৌতুকগুলি সময়ের সাথে বেনামে বয়ে চলে। এগুলো ব্যক্তিগত এবং জনসমাগমে বলা হয়ে থাকে, একজন তার বন্ধুকে কথোপকথনের মধ্যেই সাবলীলভাবে কৌতুক বলে থাকে।

অথবা অনেকগুলো মানুষ জড়ো হয়ে বিনোদনের উদ্দ্যেশ্যে সেখানে একগাদা কৌতুক উপস্থাপন হয়ে থাকে। কৌতুক সময়ের সাথে লিখিতরুপেও বয়ে চলে, অতি সম্প্রতি, ইন্টারনেটের মাধ্যমে। মঞ্চ-কৌতুক, কৌতুক অভিনেতা এবং কৌতুকের গতিময়তা কাজ করে উপস্থাপনে কৌতুক বলার সঠিক সময়, সূক্ষতা এবং ছন্দের উপর; শারীরিক অঙ্গসঞ্চালন হাসানোর জন্য ততটাই দরকার যতটা দরকার হয় পাঞ্চলাইনের।

একটি বিখ্যাত উক্তি আছে, "একটি কৌতুক হাস্যকর কথা বলে,আর কৌতুক-অভিনেতা বস্তুকে হাস্যকর করে তোলে"

কৌতুক বলা[সম্পাদনা]

কৌতুক হলো একটি যৌথ প্রচেষ্টা;এটা গুরুত্বপূর্ণ যে কৌতুক উপস্থাপনকারী এবং দর্শকবৃন্দ একটি প্রবাহমান কৌতুক এর আবহে একইভাবে অগ্রসর হবে।একটি কথোপকথন গবেষণায়, সমাজবিজ্ঞানী হার্ভে স্যাকস কৌতুক বলার ক্ষেত্রে ধারাবাহিক গঠন বিস্তারিতভাবে বলেছেন।

"বলার ধরনটা গোছানো হয়, গল্পের ক্ষেত্রে, তিনটি পর্যায়ে আনুভূমিকভাবে সাজানো হয়...যেমনঃ ভূমিকা, সারগর্ভ, এবং প্রতিউত্তর ধারা।"

কাঠামোকরনঃ"কখনো কি শুনেছ যে..."[সম্পাদনা]

কাঠামো গঠন করা হয় এমন ভাবভঙ্গিমা দ্বারা যা দর্শকদের কৌতুক এর গতিধারা বুঝতে সাহায্য করে। "তুমি কি কখনো এটা শুনেছ......", "একটা কৌতুক মনে পড়ে গেল যা শুনেছিলাম......", "তাই, এক উকিল এবং এক ডাক্টার .........", এগুলো হচ্ছে জনপ্রিয় কথোপকথন ভঙিমা যা কৌতুক শুরু করতে ব্যবহৃত হয়। তবে যেই ভঙ্গিমা দিয়েই শুরু করা হোকনা কেন, এটা সামাজিক দূরত্ব এবং স্পষ্ট সীমারেখা তৈরি করে যা বর্ণনাতে বহমান। দর্শক এই প্রাথমিক স্তরে রসবোধ কিছুটা বুঝতে পারে। এ স্তরে এ ভাবধারাটাও প্রকাশ পায়, যে এটা আদৌ কোন কৌতুক নয় কিংবা "এটা কৌতুক করার সময় নয়"। এর উপস্থাপন কাঠামোর মধ্যে, কৌতুক বলাটাকে সাংস্কৃতিক যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করা হয়।কৌতুক উপস্থাপনের সময়, দর্শক এবং কৌতুকভিনেতা উভয়ই বুঝে নেয় যে , এটা বাস্তব জীবন থেকে আলাদা। যেমনঃ " একদিন গোপাল ভাঁড় রাস্তার পাশ দিয়ে যাচ্ছিল......" এটা শুনে একজন বাঙালি বুঝে নেয় যে এটা একটি কৌতুক।

বাচনভঙ্গি[সম্পাদনা]

 ভাষাগত কাঠামোর উপর ভিত্তি করে কৌতুক গল্পের আকারেও বলা হয়ে থাকে। যে কৌতুক  বলে সে এটাকে সাহিত্যিক  কৌতুক থেকে আলাদা করে মুখস্থ অনুযায়ী  ও দর্শকভেদে  নিজের ইচ্ছে মত বলতে পারে।

পাঞ্চলাইন[সম্পাদনা]

এ পাঞ্চলাইন দর্শকদের মুলত হাসানোর উদ্দেশ্যে তৈরি। রসবোধ ঠিক তখনি উপচে পড়ে যখন দর্শকরা এতক্ষন ধরে বিবৃত ঘটনার বিপরীত অর্থ ঊদ্ধার করে আসল ঘটনা বুঝতে পারে।

সাড়া দেয়া[সম্পাদনা]

হাসি হলো কৌতুকভিনেতার আশাকৃত প্রতিউত্তর। যে কোতুক বলে সে আশা করে যে দর্শকবৃন্দ কৌতুক বুঝতে পেরেছে এবং তৃপ্তি পেয়েছে। কিন্তু যদি শ্রোতারা কৌতুক না বুঝতে পারে যদিও বা প্রয়োজনীয় দুটি স্ক্রিপ্ট সেখানে থাকে যা বুঝানোর চেষ্টা করে অথবা তারা বুঝতে পারে কিন্তু হাসেনা ; তাহলে পরিস্থিতি বেখাপ্পা, অমার্জিত হয়। একটি মেয়ে, মহিলা বাথরুমে একটি কৌতুক শুনে যেভাবে প্রতিউত্তর দিবে, সেই একই কৌতুক অফিসে সহকর্মীর মুখে শুনে অন্যভাবে প্রতিউত্তর দিবে।

প্রেক্ষাপট পরিবর্তন,কথা পরিবর্তন[সম্পাদনা]

বক্তা কৌতুকের প্রাথমিক বর্ণনা দর্শকভেদে কিছুটা পরিবর্তন করে থাকে,তবে পাঞ্চলাইনে গিয়ে একইরুপ রসবোধ উপচে পড়ে। তবে একই পাঞ্চলাইন আনতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পুনর্মিলণী তে যে শব্দগুলো ব্যবহার করা হয় এবং কারও দাদুর কাছ শোনা শব্দগুলো একই হবেনা।

কৌতুকীকরন সম্পর্ক[সম্পাদনা]

নৃবিজ্ঞানীরা "কোতুকীকরন সম্পর্ক" কে সজ্ঞায়িত করেছে তাদের অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে যারা সামাজিক সাংস্কৃতিকভাবে প্রাতিষ্ঠানিক কৌতুক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে। এ সম্পর্ক একমুখী অথবা পারস্পরিকভাবে বিভিন্ন দলের মাঝে বজায় থাকে।

ছাপাকৃত কৌতুক এবং নির্জন হাসি[সম্পাদনা]

আজকের যুগে অনেক ছাপা কৌতুকের বই পাওয়া যায়, ইন্টারনেটে একটি "সার্চ" সম্পন্ন করলেই শিরোনামের আধিক্যে পাতা ভরে যায়। এগুলো নির্জনে হাসার জন্য পড়া যায় অথবা নিজের সংগ্রহে রেখে বন্ধুদের আনন্দ দেয়া যায়। কিছু মানুষ কৌতুকের মাঝে গভীর অর্থ খোজার চেষ্টা করে। বিভিন্ন ধরনের "ম্যাগাজিন" প্রায়ই কৌতুক এবং কার্টুন ব্যবহার করে থাকে । রিডার্স ডাইজেস্ট প্রতিটি লেখা শেষ করার আগে একটি কৌতুক(অপ্রাসঙিক)দিয়ে শেষ করে। " The New Yorker" প্রথম ১৯২৫ সালে প্রকাশিত হয় যখন তারা তাদের উদ্দেশ্য বলেছিল " বাস্তবিকসম্পন্ন কৌতুক ম্যাগাজিন" পত্রিকা হিসেবে যা আজও এটার কার্টুন এর জন্য পরিচিত।

বৈদ্যুতিন কৌতুকীকরণ[সম্পাদনা]

বিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে বৈদ্যুতিন যোগাযোগের অগ্রযাত্রায় নতুনত্ব যোগ হয়েছে। একটি মৌখিক কৌতুক অথবা ব্যঙ্গচিত্র একটি বন্ধুকে ই-মেইল করে পাঠানো হয় অথবা বুলেটিন বোর্ডে লেখা হয়; প্রতিউত্তরে LOL বলা হয়ে থাকে, অথবা অন্য আরেকটি বন্ধুর কাছে পাঠানো হয়। এ ক্রিয়াপ্রতিক্রিয়া কম্পিউটার পর্দার মধ্যে এবং নির্জনেই সম্পন্ন হয়। ইন্টারনেট কৌতুকের ক্ষেত্রে পটভূমি এবং আবহ হারিয়ে গিয়ে, শুধু কথাগুলোই রক্ষিত হয়। যখন কৌতুক কাউকে ফরওয়ার্ড(Forward) করে পাঠানো হয় তখন কাঠামোটা হয় এমন ঃ "RE: আজকের দিনের হাসি( laugh for the day)" অথবা এজাতীয় কিছু। কৌতুক সংবলিত এ ই-মেইলের প্রেরনের পরিমাণ সূচকহারে বাড়তে পারে; ৫ x ৫ জনকে ফরওয়ার্ড করণ= ৩১২৫ জন প্রাপক ( একটি দিনের হিসেবে বিকেলের দিকে।)

কৌতুকের চক্র[সম্পাদনা]

একটি কৌতুক চক্র হলো একটি বিষয় বা পরিস্থিতি বিষয়ক কিছু কৌতুকের সংগ্রহশালা যা রসবোধ নিয়ে বর্ণনা করে। কিছু বিখ্যাত চক্র যেমন elephant jokes(হাতির কৌতুক) অবোধ্য রসবোধ ব্যবহার করেছে, মৃত বাচ্চার কৌতুক যা প্রকাশ করে কালো রসবোধ এবং আলো বাতির কোতুক, যা নির্বোধ সব কাজকর্ম বর্ণনা করে। কৌতুক চক্র গড়ে উঠতে পারে জাতিগত দল, পেশা, বিপর্যয় অথবা যৌক্তিক প্রক্রিয়ার( নক-নক-নক) উপর ভিত্তি করে।

বিয়োগ এবং বিপর্যয়[সম্পাদনা]

যেমটা হয়েছিল ৯/১১ এ বিপর্যয়ের সময় , কৌতুক চক্র তারকা কিংবা জাতীয় শোক ইত্যাদিকে ঘিরে থাকে যেমনঃ প্রিন্সেস ডায়ানা, ওয়েলস এর মৃত্যু, মাইকেল জ্যাকসনের মৃত্যু এবং স্পেস শাটল চ্যালেঞ্জার দুর্ঘটনা

জাতিগত কৌতুক[সম্পাদনা]

সমাজবিজ্ঞানী খ্রিস্টি ডেভিস সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যে জাতিগত কৌতুক বলা হয়ে থাকে তা বিশদভাবে লিখেছেন। জাতিগত এসব কৌতুকে সে খুজে পেয়েছে যে "নির্বোধ" জাতি এখানে চিহ্নিত করা হয় তা ঐ সংস্কৃতির মানুষের কাছে আজব কিছুই নয়। বরঞ্চ এসব(ভৌগোলিক,অর্থনৈতিক,সামাজিক,ভাষাগত দিক দিয়ে) কৌতুক বক্তার নিকট সুবিদিত।

অর্থহীন এবং অতিরঞ্জিত কৌতুক[সম্পাদনা]

তৃতীয় শ্রেণীর কৌতুক চক্র গড়ে উঠে কিছু অর্থহীন চরিত্র ঘিরে যেমন "গুতা" ঃ উদাহরণ হিসেবে বলা যায় আঙুর, মৃত বাচ্চা অথবা হাতি এসব চরিত্র । ১৯৬০ সালের দিকে, লোকাচারবিদ এলান ডান্ডিস এসব কৌতুক চক্রের সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক অনুবাদ করে অগ্রযাত্রা শুরু করেন, যা আভিধানিক সাময়িকীতে প্রকাশ হতে থাকে।

শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতি[সম্পাদনা]

১৯ শতকের দিকে সারা ইউরোপে যখন লোককাহিনী এবং অন্যান্য মৌখিক সাহিত্য সংগ্রহ করার মত অবস্থা হয় তখন লোকাচারবিদ ও নৃবিজ্ঞানীদের ঐ সময় সবকিছু গোছানোর জন্য একটা পদ্ধতির দরকার হয়। "আর্নি-থম্পসন শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতি" প্রথম প্রকাশিত হয় আন্তি আর্নি কর্তৃক ১৯১০ সালে, এবং যা পরবর্তীতে স্টিথ থম্পসন কর্তৃক বিস্তৃত করা হয় যা ইউরোপীয় লোককাহিনী এবং অন্যান্য মৌখিক সাহিত্যের সবচেয়ে জনপ্রিয় শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতি হিসেবে পরিচিত হয়।

কৌতুক এবং রস গবেষণা[সম্পাদনা]

অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই তাদের সাধ্যের মধ্যে কৌতুক নিয়ে গবেষণার দাবি করে থাকে । সৌভাগ্যক্রমে, এমন অনেক কৌতুক আছে ভাল,মন্দ,খারাপ যা চারপাশে ছড়িয়ে থাকে। দুর্ভাগ্যক্রমে, এসব বিভিন্ন রকম কৌতুকের উপর যে গবেষণা হয় তা যে ফল বয়ে আনে তা মনে করিয়ে দেয় " অন্ধ ও এক হাতির গল্প ", যেখানে প্রত্যেকের দেখাই তার নিজ নিজ অবস্থা থেকে সঠিক ছিল কিন্তু তারা যে জন্তু(হাতি) দেখল সেটা ভাবতেও পারেনি।

মনোবিজ্ঞান[সম্পাদনা]

সিগমুন্ড ফ্রয়েড হলো আধুনিক পন্ডিতদের মধ্যে একজন যে কৌতুককে গবেষণা করার মত বিষয় বলে গুরুত্ব দিয়েছেন।১৯০৫ সালে তার লিখিত "Jokes and their Relation to the Unconscious" তে রসবোধের সামাজিক প্রকৃতি বর্ণনা করেন এবং ভিনেস কৌতুকের অনেক উদাহরণ দিয়েছেন। এক্ষেত্রে তার করা কাজ মূল্যবান, কেননা তিনিই প্রথম তার লেখাতে কৌতুক,রসবোধ এবং কমিকের মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরেন।

এসব স্বতন্ত্র বিষয়গুলো সহজেই ঘোলাটে হয়ে যায় যখন সকল হাস্যকর উপস্থাপনাকে "রসিকতা/কৌতুক" নামক ছাতার নিচে আনা হয়; যা আলোচনাকে আরও বেশি ফেনিয়ে তুলে।

ভাষাবিদ্যা[সম্পাদনা]

রসবোধের ভাষাবিদ্যা গত দেড় দশকে বিশাল পদক্ষেপ তৈরি করেছে এবং এক্ষেত্রে মানব ফ্যাকাল্টিতে রসবোধের মনোবিজ্ঞানকে উচ্চ আধুনিক তাত্ত্বিক বিষয় হিসেবে প্রতিস্থাপিত করেছে।

লোকাচারবিদ্যা এবং নৃবিদ্যা[সম্পাদনা]

লোকাচার এবং সাংস্কৃতিক নৃবিদ্যা কৌতুকের উপর সম্ভবত সবচেয়ে শক্তিশালী দাবি করে থাকে এটির অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারে । পশ্চিমা সংস্কৃতিতে কৌতুক হলো ঐতিহ্যগত লোক সংস্কৃতির বিদ্যমান কিছু বিন্যাসের একটি। "simple forms" নামে ১৯৩২ সালে আন্দ্রে জুলি কর্তৃক প্রকাশিত গ্রন্থে অসংখ্য মৌখিক লোকসাহিত্যের সংগ্রহশালা প্রকাশিত হয়।

যান্ত্রিক রসবোধ[সম্পাদনা]

"যান্ত্রিক রসবোধ" হচ্ছে শিক্ষার একটি নতুন ক্ষেত্র যা রসবোধ রূপায়নে কম্পিউটার ব্যবহার করে। এখানে মুলত যান্ত্রিক ভাষা এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুষম সমন্বয় করা হয়। এই সেক্টরের প্রাথমিক উদ্দেশ্য হলো এমন কিছু প্রোগ্রাম তৈরি করা যা একইসাথে কৌতুক তৈরি করতে পারে এবং লিখিত কৌতুক চিহ্নিত করতে পারে।

হাসির শারীরবৃত্ত[সম্পাদনা]

১৮৭২ সালে,প্রথম দিককার একজন হিসেবে, চার্লস ডারউইন "শ্বাস-প্রশ্বাস, কন্ঠস্বর, মুখভঙ্গি, অঙ্গভঙ্গি ইত্যাদি সাপেক্ষে হাসির বোধগম্য ও অনেকদিক দিয়েই নির্ভুল বর্ণনা প্রকাশ করেন" । ডারউইন তার শুরুর দিকের গবেষণায় প্রশ্ন তুলছেন, কে হাসে এবং কেন হাসে; এর উপর অসংখ্য উত্তর একে আরও জটিল করে তুলেছে। মানুষ এবং একই শ্রেণীভুক্ত অন্যান্য প্রাণীর হাসি বোঝার জন্য , বৈজ্ঞানিক হাসিবিদ্যা(Gelotology) প্রতিষ্ঠিত হয়; মানসিক এবং শারীরিক উভয় বিবেচনায়, এটা হচ্ছে হাসি এবং দেহের উপর হাসির প্রভাব নিয়ে শিক্ষা। হাসির ছয়টি কারণ তালিকাভুক্ত করা হয়েছেঃ সামাজিক প্রসঙ্গ, অবহেলা, উদ্বিগ্নতা, উপহাস, ক্ষমাপ্রার্থনার অভিনয় এবং সুড়সুড়ি ।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]