জাহানকোষা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

জাহানকোষা হল পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের কাটরার দক্ষিণ-পূর্বে তোপখানায় অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক কামান। মধ্যযুগীয় বাংলার নবাবী আমলের যুদ্ধাস্ত্রের এটি একটি উল্লেখযোগ্য নিদর্শন। 'জাহান কোষা' শব্দের অর্থ হল 'পৃথিবীর ধ্বংসকারী'। [১]

জাহানকোষা কামান (জগতের ধ্বংসকারী).

বিবরণ[সম্পাদনা]

কামানটির দৈর্ঘ্য ১৭ ফুট ৬ ইঞ্চি, পরিধি ৫ ফুট, ওজন ২১২ মণ; কামান বিস্ফোরণের জন্য ২৮ সের (১৭ কিলো) বারুদের প্রয়োজন হয়। [১] কামানটি তৈরী করা হয়েছিল অষ্ট ধাতু অর্থাৎ সোনা, রূপা, দস্তা, তামা, জিঙ্ক, টিন, লোহা ও পারদ দিয়ে; অষ্ট ধাতু দিয়ে তৈরী হবার জন্য আজও কামানটি মরচে বিহীন।

কামানটির অন্যদিক
জাহানকোষার তথ্যফলক

ইতিহাস[সম্পাদনা]

কামানের গায়ে ইরানি ভাষায় একাধিক পিতল-ফলকের লেখা থেকে জানা যায়, ১৬৩৭ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবর মাসে (১০৪৭ হিজরী, জমাদিয়স সানি মাস) দিল্লির বাদশাহ শাহজাহানের রাজত্বকালে ইসলাম খাঁর সুবাদারিতে জাহাঙ্গীরনগরে দারোগা শের মহম্মদ ও হরবল্লভ দাস উভয়ের তত্ত্বাবধানে মিস্ত্রি জনার্দন কর্মকার জাহানকোষা কামানটি নির্মাণ করেন। [১]

নবাব মুর্শিদকুলি খাঁ ঢাকা থেকে রাজধানী মুর্শিদাবাদে স্থানান্তরিত করবার সময় ওই কামানটি এখানে নিয়ে আসেন। মুর্শিদকুলি খাঁ থেকে পরবর্তী অন্যান্য নবাবগণ এখানে তাদের অস্ত্রাগার বা ‘তোপখানা’ স্থাপন করেন। সেসময় জাহান কোষা কামানটিকে, একটি অশ্বথ গাছের শিকড়ে আটকে থাকা অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল। পরবর্তীকালে, ভারতীয় প্রত্নত্বাত্তিক বিভাগের উদ্যোগে, এই কামানটিকে গাছের শিকড় থেকে ছাড়িয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. ঘোষ, বিনয়, "পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি", তৃতীয় খন্ড, প্রথম সংস্করণ, প্রকাশ ভবন, পৃষ্ঠা: ২৫

2. পর্যটনে মুর্শিদাবাদ : দীননাথ মণ্ডল, অণিমা প্রকাশনী, কলকাতা ।

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

  • "The official website"। ৮ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জুলাই ২০১৭