মালয়েশিয়া–সুইডেন সম্পর্ক

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মালয়েশিয়া–সুইডেন সম্পর্ক
মানচিত্র Malaysia এবং Sweden অবস্থান নির্দেশ করছে

মালয়েশিয়া

সুইডেন

মালয়েশিয়া–সুইডেন সম্পর্ক হল মালয়েশিয়া এবং সুইডেন রাষ্ট্রদ্বয়ের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক। ১৯৫৮ সালে এ দুই দেশের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়।[১] কুয়ালালামপুরে অবস্থিত সুইডেনের এবং স্টকহোমে অবস্থিত মালয়েশিয়ার দূতাবাসের মাধ্যমে এ দুই দেশ নিজেদের প্রতিনিধিত্ব করছে। ২০০৯ সাল পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় প্রায় ৯০টি সুইডীয় কোম্পানি কাজ করছে এবং ৪৫০ জন সুইডীয় নাগরিক বসবাস করছে।[২] ২০১১ সালে, মালয়েশিয়ায় ৪৪,১৩৮ জন সুইডেনের নাগরিক ভ্রমণ করে।[৩]

দ্বিপাক্ষিক চুক্তি[সম্পাদনা]

১৯৭৯ সালের ৩ মার্চ কুয়ালালামপুরে দ্বিপক্ষীয় নিরাপত্তা রক্ষার জন্য একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর করে মালয়েশিয়া এবং সুইডেন।[৪][৫] ১৯৬৭ সালের ১৯ অক্টোবর কুয়ালালামপুরে সুইডেন রাজ্য এবং মালয়েশিয়া সরকার এ দুই রাষ্ট্রের মধ্যকার বিমানপথ এবং নির্দিষ্ট অঞ্চলে যোগাযোগের জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে।[৬] দ্বৈত রাজস্ব চুক্তি প্রত্যাহার এবং রাজস্ব ফাঁকির বিরুদ্ধেও দুই রাষ্ট্রের মধ্যে একটি চুক্তি রয়েছে।[৭]

অপহরণ এবং কারাবাস[সম্পাদনা]

১৯৭৫ সালে জাপানিজ রেড আর্মি সুইডেনের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ফ্রেডরিক বার্জেনস্ট্রাহল এবং তার সহকারী উলা অডোভিস্টকে কুয়ালালামপুর থেকে অপহরণ করেন।[৮] মালয়েশিয়ার এক কর্মকর্তা তান শ্রি ওস|মন এস. কাশিমকে পরবর্তীতে উদ্ধার অভিযানে অসাধারণ ভূমিকা পালনের জন্য সুইডেনের রয়েল অর্ডার অব দ্য পোলার স্টারের কমান্ডার খেতাবে ভূষিত করা হয়।[৯][১০]

২০১৪ সালে মালয়েশিয়া পর্যটন বোর্ডের স্টকহোম শাখার পরিচালক এবং তার স্ত্রীকে একমাসেরও বেশি সময় ধরে পুলিশী জিজ্ঞাসাবাদের অধীনে রাখা হয়। পরবর্তীতে তাদের চার সন্তানকে অনাথ হিসেবে দত্তক দেওয়া হয়, কারণ এই দম্পতি তাদের বারো বছরের সন্তানকে উপাসনা না করার জন্য বাসায় শারীরিক শাস্তি দিয়েছিল; যা সুইডেনে নিষিদ্ধ।[১১]

অর্থনৈতিক সম্পর্ক[সম্পাদনা]

২০১২ সালের জানুয়ারি এবং জুলাই মাসের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ২ বিলিয়ন মালয়েশিয়ান রিঙ্গিতে পৌছায়, যেখানে ২০১১ সালের জানুয়ারি এবং জুন মাসের মধ্যে এর পরিমাণ ছিল ১.৯ বিলিয়ন।[৩] ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সুইডেনে নিযুক্ত মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রদূত সাতুক বদরুদ্দিন আব রহমান বলেন যে মালয়েশিয়ায় ১০ মিলিয়ন রিঙ্গিতেরও বেশি পরিমাণ বিনিয়োগ করছে এমন ১২০টি সুইডিশ কোম্পানি মালয়েশিয়ায় কাজ করে যাচ্ছে। তবে সুইডেনে কোনো মালয়েশিয়ান কোম্পানি পরিচালিত হচ্ছে না।[৩] সুইডেনে নিযুক্ত মালয়েশিয়ার দূতাবাস সুইডীয় ব্যবসাকে আকৃষ্ট করতে প্রায়শই বিভিন্ন কর্মসূচীর আয়োজন করে থাকে, যেখানে মালয়েশিয়ায় বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধা তুলে ধরা হয়।T[৩]

২০০৬ সালে প্রায় ১.৬ বিলিয়ন মালয়েশিয়ান রিঙ্গিতের সুইডীয় পণ্য মালয়েশিয়ায় রপ্তানি করা হয়, পক্ষান্তরে মালয়েশিয়ায় আমদানিকৃত পণ্যের পরিমাণ ছিল ০.৭ বিলিয়ন রিঙ্গিত। মালয়েশিয়ান সুইডীয় রপ্তানিকৃত পণ্যসমূহ হল টেলিযোগাযোগ সামগ্রী, মোটর যানবাহন, রাসায়নিক পদার্থ, শক্তি উৎপাদনে সক্ষম যন্ত্রসামগ্রী, মেশিন, কাগজ এবং ধাতব লোহাআকরিক। আর সুইডীয় আমদানিকৃত পণ্যসমূহ হল মালয়েশিয় ইলেকট্রনিক যন্ত্র এবং ইলেকট্রনিকস যন্ত্রাংশ, মেশিন, সামগ্রী, টেক্সটাইল, পাম তেল এবং রাবারের কাঁচামাল।[১২][১৩]

মালয়েশিয়ায় ভলভো সম্পূরক ব্যবসা পরিচালনা করে যা ট্রাক প্রক্রিয়াজাতকরণ করে থাকে।

রাষ্ট্রীয় সফর[সম্পাদনা]

২০০৫ সালে ইয়াং দি-পার্তুয়ান এগং (রাজা) মালয়েশিয়ার সিরাজউদ্দিন অব পার্লিস এবং রাজা পারমাইসুরি এগং (রাণী) টেংকু ফাউজিয়া অব পার্লিস সুইডেনে সফর করেন।[২][১৪]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "National Day Of Sweden Celebrations In Malaysia"। Scandasia.com। ২৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুন ২০০৯ 
  2. "H.E. Helena Sångeland: Swedish Ambassador to Malaysia"Scandasia.com। ৮ আগস্ট ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুন ২০০৯ 
  3. "Direct Flights Can Boost Malaysia-Sweden Trade Relations, Says Envoy"Bernama। ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১২ 
  4. "Text of the treaty in Swedish, Malay and English" (পিডিএফ) [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  5. Bilateral investment treaties, By Rudolf Dolzer, Margrete Stevens, International Centre for Settlement of Investment Disputes
  6. "Agreement between the European Community and the Government of Malaysia on certain aspects of air services" 
  7. Lang, Michael (২০০১)। Tax treaty interpretationKluwer Law Internationalআইএসবিএন 90-411-9857-1 
  8. "Terrorists' Jet Lands in Libya"St. Petersburg Times। ৮ আগস্ট ১৯৭৫। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুন ২০০৯ 
  9. "His Majesty King Carl XVI Gustaf of Sweden awards Malaysian citizen Tan Sri Osman S. Cassim the Royal Order of the Polar Star"। ২৮ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ নভেম্বর ২০১৬ 
  10. "Former sec-gen receives Swedish royal order for his brave feat in 1975"The Star। ৭ মে ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুন ২০০৯ 
  11. "Bid to free Muslim son-smack parents"। London Evening Standard। ২৩ জানুয়ারি ২০১৪। পৃষ্ঠা 28। 
  12. "Trade with Malaysia"Sweden। ২০ এপ্রিল ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুন ২০০৯ 
  13. "Malaysia, Sweden trade on the rise."New Straits Times। ৭ সেপ্টেম্বর ১৯৯৫। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুন ২০০৯ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  14. "King Syed Sirajuddin And Queen Fauziah On Official Visit"Getty Images। ৭ মার্চ ২০০৫। ২৫ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুন ২০০৯