বিগ ব্যাং (দক্ষিণ কোরিয়ার ব্যান্ড)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিগ ব্যাং
বাম থেকে ডানেঃ জি-ড্রাগন, টিওপি, সিওংগ্রি, তাইয়াং, দাইসুং
প্রাথমিক তথ্য
উদ্ভবসিওল, দক্ষিণ কোরিয়া
ধরন
  • কে-পপ
  • জে-পপ
  • হিপ-হপ
  • নৃত্য
  • ইলেক্ট্রনিক
  • আর এন্ড বি[১][২]
কার্যকাল২০০৬-বর্তমান
লেবেল
  • ওয়াইজি এন্টারটেইনমেন্ট
  • এভেক্স
  • ওয়ার্নার মিউজিক তাইওয়ান
সদস্যটিওপি
তাইয়াং
জি-ড্রাগন
সিওংগ্রি
তাইয়াং
দাইসুং
ওয়েবসাইটwww.ygbigbang.com

বিগ ব্যাং(কোরীয়ান: 빅뱅) হচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ান বয় ব্যান্ড যেটি গঠিত করে ওয়াইজি এন্টারটেইনমেন্ট। যার সদস্যরা হলেন জি-ড্রাগন, টিওপি, সিওংগ্রি, তাইয়াং, দাইসুং। এই দলটি আনুষ্ঠানিভাবে আত্নপ্রকাশ করে ২০০৬ সালের ১৯শে আগস্ট। প্রধানত একটা হিপহপ দল হিসাবে তাদের আত্নপ্রকাশের এ্যালবাম “বিগ ব্যাং ভলিউম ১” এ মাঝারি সফলতা লাভ করে প্রায় আটচল্লিশ হাজার কপি বিক্রি করে। তাদের সাফল্য এনে দেয় সম্রসারিত এ্যালবাম “অলওয়েজ”(২০০৭) এর মাধ্যমে, যার মাধ্যমে সেরা গান হচ্ছে “লাইস”(কোরীয়ান: 거짓말) যেটি কোরিয়ার টপ চার্টে টানা সাত সপ্তাহ জুড়ে এক নাম্বারে থেকে সকল রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়েছিল,[৩] এবং বছরের সেরা গান হিসাবে এমনেট এশিয়ান মিউজিক ফেস্টিবাল পদক জিতেছিল।[৪] বিগ ব্যাং তাদের সফলতা ও জনপ্রিয়তা অনুসরণ করে মুক্তি দিতে থাকেঃ “হট ইস্যু(ইপি)”(২০০৭) যেটি থেকে “লাস্ট ফেয়ারওয়েল”(কোরিয়ানঃ 마지막 인사) টপ-চার্টে জায়গা দখল করেছিল, “আবার স্ট্যান্ড আপ(ইপি)”(২০০৮) থেক ‘ডে বাই ডে’ (কোরিয়ানঃ하루하루) গানটিও টপ-চার্টে অবস্থান করে। বছরের সেরা শিল্পী হিসাবে ২০০৮ সালে এমনেট এশিয়ান মিউজিক এওয়ার্ড পদক পাওয়ার পর দলটি জাপানে সম্প্রসারিত করার চেষ্ঠা করে তাদের দ্বিতীয় কোরিয়ান এলব্যাম “রিমেম্বার” এবং জাপানে প্রথম এলব্যাম “নাম্বার ওয়ান” একই বছর মুক্তি দেয় এবং ফলস্বরুপে নবম এমটিভি মিউজিক এওয়ার্ড জাপান-এ তিনটি পুরস্কার জিতে।[৫][৬] তারা জাপানে আরও তিনটি এলব্যাম রিলিজ করেঃ বিগ ব্যাং(২০০৯), বিগ ব্যাং ২ (২০১১), এলাইব(২০১২)। জাপানের প্রচারের সাথে সাথে দলের সদস্যরা এককভাবে কাজ করতে থাকে, তাইয়াং এবং জি-ড্রাগন তাদের একক এ্যালবাম প্রকাশ করে, জি-ড্রাগন এবং টিওপি মিলে তাদের একক, সিওংগ্রি এবং দাইসুং অনেক সংগীত এবং অন্যান্য অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা করতে থাকেন এবং টিওপি বিভিন্ন ছবি এবং নাটকে অভিনয় করতে শুরু করেন।

দক্ষিণ কোরিয়ার দুই বছরের বিচ্ছেদের পর বিগ ব্যাং আবার একত্রিত হয় ২০১১ সালে তাদের ইপি “টুনাইট”(২০১১) এর মাধ্যমে। প্রচার সংক্ষিপ্ত করা হয় যেখানে দলের বিভিন্ন সদস্যরা আইনি জঠিলতার সম্মুখীন হয়। বছর শেষে দলটি উদ্বোধন করে বিশ্বব্যাপী সেরা কাজ শ্রেণীতে এমটিভি ইউরোপ মিউজিক এওয়ার্ড ২০১১ জিতে।[৭] ইউরোপ জয়ের তিন মাস পর তারা তাদের সেরা কোরিয়ান ইপি এলাইব(ইপি)(২০১২) যেটি তাদেরকে দ্বিতীয় বারের মত “এমনেট এশিয়ান মিউজিক এওয়ার্ড” এর বছরের সেরা শিল্পী পুরস্কার এনে দেয়। এলাইব প্রথম কোরিয়ান এ্যালবাম হিসাবে বিলবোর্ড ২০০ তে জায়গা করে নেয়। তারা তাদের প্রথম বিশ্ব সফর করে ‘বিগ ব্যাং এলাইব গ্যালাক্সি ট্যুর ২০১২' যেটি শেষ হয় ২০১৩ সালের শুরুতে। তিন বছর পর ২০১৫ সালে তাদের স্বদেশে সবচেয়ে অপেক্ষিত চারটি গান মুক্তি দেয়, ‘এম’, ‘এ’, ‘ডি’, ‘ই’, যার মাধ্যমে তাদের তৃতীয় কোরিয়ান এ্যালবাম “মেইড” এর দিকে অগ্রবর্তী হয়। তাদের এককগুলো সমালোচক এবং বাণিজ্যিকভাবে সফলতা লাভ করে এশিয়াতে প্রায় ১৫ মিলিয়নের বেশি কপি বিক্রি করে [৮] এবং তাদেরকে তৃতীয় বারের মত “এমনেট এশিয়ান মিউজিক এওয়ার্ড” এর বছরের সেরা শিল্পী পুরস্কার এনে দেয়।

“কিংস অব কে-পপ”[৯] এবং “ন্যাশন’স বয় ব্যান্ড[১০] আখ্যা পাওয়া দলটির সদস্যরা তাদের নিজস্ব গান রচনা ও প্রযোজনা করতে থাকে, বিশেষ করে জি-ড্রাগন দলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সম্মান এবং প্রশংসা পেয়েছেন মিউজিক ইন্ড্রাস্টিতে।[১১] গাওন তালিকা অনুযায়ী বিগ ব্যাং তাদের এককসহ ৯২মিলিয়নের বেশি রেকর্ড বিক্রি করেছে, এবং পূর্বে মিউজিক ইন্ড্রাস্ট্রি অব কোরিয়া(এমআইএকে) এবং কোরিয়া মিউজিক কনটেন্ট ইন্ড্রাস্ট্রি এ্যাসোসিয়েশন(কেএমসিআইএ) মিলে ১১৫ মিলিয়নের বেশি রেকর্ড বিক্রি করে যার মধ্যে ১০৮ মিলিয়ন ছিল ডিজিটাল একক, যাতে প্রত্যেক শিরোনাম গানে ৪.৩ মিলিয়ন ডাউনলোড হয়েছে, এবং ১.৫ মিলিয়ন অন্যান্য প্রত্যেক গানে, এবং ৬.৭ মিলিয়ন এ্যালবাম কোরিয়া, জাপান এবং এশিয়া মহাদেশে বিক্রি হয়েছে যা তাদের “এশিয়ার সর্বকালের সেরা বিক্রিত ডিজিটাল গ্রুপের” খেতাব দিয়েছে।[১২][১৩][১৪]

তারা অসংখ্য পুরস্কার জিতেছে যার মধ্যে সাইওয়ার্ল্ড এর ‘অল-টাইম বেস্ট সেলিং আর্টিস্ট’, সবচেয়ে বেশিবার জেতা বছরের সেরা শিল্পী “এমনেট এশিয়ান মিউজিক এওয়ার্ড” এ এবং প্রথম কোরিয়ান হিসাবে “ফোর্বিস এর ১০০ সেলিব্রেটিতে” স্থান পায়। বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা এবং কে-পপে তাদের অবদানের জন্য ওয়াশিংটন পোস্ট তাদেরকে বর্ণনা করেছে “এশিয়ার সবচেয়ে বড় ব্যান্ড” নামে এবং হলিউড রিপোর্টার বর্ণনা করেছে “বিশ্বের সবচেয়ে বড় বয় ব্যান্ড হিসাবে”।[১৫]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

বিগ ব্যাং এমটিভি ফাস্ট ফরওয়ার্ড-এ, থাইল্যান্ড, ডিসেম্বর ২০০৭

দলটির শুরু হওয়ার পূর্বে এর অনেক সদস্যরাই বিনোদন জগতে পরিচিত ছিলেন। জি-ড্রাগন এবং তাইয়াং প্রথম ওয়াইজি এন্টারটেইনমেন্ট-এ প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন এগার বছর বয়সে। টিওপি ছিলেন একজন আন্ডারগাউন্ড র্যা পার যাকে মঞ্চে সবাই টেম্পো নামে চিনে। জি-ড্রাগন এর নিকট যখন ওয়াইজি এন্টারটেইনমেন্ট যখন একটা বয় ব্যান্ড খোলার কথা ব্যাক্ত করে তখন জি-ড্রাগন তার ছেলেবেলার বন্ধু টিওপি-কে অডিশনের জন্য আমন্ত্রণ করেন। [১৬] সেওংগ্রিকে প্রথম দেখা যায় বাস্তবধর্মি টেলিভিশন সিরিজ “লেটস কোকপ্লে” তে। অবশেষে ছয়জনের সদস্যের দলবিন্যাস করা হয় উপরোক্তদের সাথে এসে যোগ হয় দায়সুং এবং সো-১, যাদেরকে অডিশনের মাধ্যমে ডুকানো হয়। তাদের আত্নপ্রকাশের সময় সো-১ কে বাদ দিয়ে দেয়া হয়।[১৭][১৮] ২০০৬ সালের ১৯শে আগস্ট সিওল অলিম্পিক পার্কের জিমানাস্টিক এরিনাতে ওয়াইজি পরিবারের দশ বছর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকির কনসার্টে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্নপ্রকাশ করে বিগ ব্যাং। [১৯]

ডিস্কোগ্রাফী[সম্পাদনা]

স্টুডিও এ্যালবাম[সম্পাদনা]

কোরিয়া[সম্পাদনা]

  • বিগ ব্যাং ভলিউম ১(২০০৬)
  • রিমেম্ভার(২০০৮)
  • মেইড(২০১৬)

জাপান[সম্পাদনা]

  • নাম্বার ওয়ান(২০০৮)
  • বিগ ব্যাং(২০০৯)
  • বিগ ব্যাং ২(২০১১)
  • এলাইভ(২০১২)
  • মেইড সিরিজ(২০১৬)

এক্সটেন্ডড প্লে[সম্পাদনা]

কোরিয়া[সম্পাদনা]

  • অলওয়েজ(২০০৭)
  • হট ইস্যু(২০০৭)
  • স্ট্যান্ড আপ(২০০৮)
  • টুনাইট(২০১১)
  • এলাইব(২০১২)

জাপান[সম্পাদনা]

  • ফর দা ওয়ার্ল্ড(২০০৮)
  • উইথ ইউ(২০০৮)
  • স্পেশাল ফাইনাল ইন ডুম মেমরিয়াল কালেকশন(২০১২)

একক এলব্যাম[সম্পাদনা]

  • বিগব্যাং/উই বিলং টুগেদার(২০০৬)
  • বিগব্যাং ইজ ভিআইপি/লা লা লা(২০০৬)
  • বিগ ব্যাং ৩ (২০০৬)
  • এম(২০১৫)
  • এ(২০১৫)
  • ডি(২০১৫)
  • ই(২০১৫)

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Big Bang to Perform 'Alive Galaxy Tour' in New Jersey, 'Most Potential to Succeed in the U.S.'"KpopStarz। ২০১২-১১-০৮। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-১১-১৬ 
  2. Fujimori, Sachi (২০১২-১১-০৮)। "Leading up to its Newark shows, is Big Bang ready to bring K-pop to the U.S.?"NorthJersey। The Record। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-১১-১৬ 
  3. "Big Bang's "Lies" lingered in Melon chart for 54 weeks!"। Daily Kpop News। ২০১১-০২-১৫। ২০১৫-০৭-০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১১-১৩ 
  4. "2007 Mnet KM Music Festival (MKMF)"। Kpopped!। ২০০৭-১১-১৮। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-১১-১৮ 
  5. "Mnet KM Music Festival 2008"। Yeinjee.com। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১১-১৭ 
  6. "Big Bang scores triple win at Japan MTV Music Awards"। Hancinema। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৫-৩১ 
  7. Frost, Caroline (২০১১-০৭-১১)। "MTV EMA Awards: Britney Spears Loses Out To BIGBANG, Lady Gaga, Justin Bieber, Bruno Mars, Eminem All Winners"। The Huffington Post। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-১১-০৩ 
  8. "Big Bang's Album Sales, World Tour Earn Them A Cool $128 Million In 2015"KpopStarz। ২০১৫-১২-১৫। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৫-০৫ 
  9. "Big Bang Performs First U.S. Show In 3 Years"Vibe। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-১২-১১ 
  10. Maggo, Eduan (২০১০-০৫-৩১)। "Korea's boy band Big Bang rule MTV TRL Awards"। Gulf News। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৫-০৭ 
  11. Park, Yiseung (২০১০-০৮-০৬)। "'음악평론가' 임진모, "작곡하는 빅뱅은 아이돌 아니다""। Nate। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৯-০৬ 
  12. "Big Bang Physical Sales on South Korea"OneHallyu। এপ্রিল ৭, ২০১৬। মে ৫, ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ৮, ২০১৬ 
  13. "Big Bang Physical Sales on Japan"OneHallyu। এপ্রিল ৭, ২০১৬। মে ৫, ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ৮, ২০১৬ 
  14. "Big Bang Digital Sales on South Korea"OneHallyu। এপ্রিল ৭, ২০১৬। মে ৫, ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ৮, ২০১৬ 
  15. "Big Bang's Global Influence: How to Build a Boy Band That Lasts"The Hollywood Reporter। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-১২-১১ 
  16. Park, So-youn (২০১০-০২-০২)। "[新스타고백]지드래곤⑤아이돌그룹 활동, 망설였다 - 아시아경제"। Asiae। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৫-২৩ 
  17. "Big Bang Profile"। KBS World। ডিসেম্বর ১, ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০১-১৫ 
  18. '준비된 그룹' 빅뱅, 대폭발 예고 (কোরীয় ভাষায়)। Sports Chosun। ২০০৬-০৭-০৭। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০১-১৫ 
  19. 올 최고 기대주 빅뱅, 9월 중순부터 본격 활동 개시 (কোরীয় ভাষায়)। Sports Chosun। ২০০৬-০৮-২১। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০১-১৫