মহারাণী হেমন্তকুমারী সংস্কৃত কলেজ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মহারাণী হেমন্তকুমারী সংস্কৃত কলেজ
মহারাণী হেমন্তকুমারী সংস্কৃত কলেজ এর নামফলক
সক্রিয়১৯০৪ (1904)–১৯৬৩ (1963)
প্রতিষ্ঠাতামহারাণী হেমন্তকুমারী দেবী
মূল প্রতিষ্ঠান
রাজশাহী কলেজ
ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক
রায় বাহাদুর কুমুদিনী কান্ত ব্যানার্জী
অবস্থান
রাজশাহী
,
৬০০০
,
বাংলাদেশ
শিক্ষাঙ্গনশহুরে
ভাষাসংস্কৃত

মহারাণী হেমন্তকুমারী সংস্কৃত কলেজ ১৯০৪ সালে রাজশাহী কলেজ এর একটি সংযুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬৩ সালে কলেজটি বন্ধ হয়ে যায়।[১]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

১৯০৪ সালে রাজশাহীতে মহারাণী হেমন্তকুমারী সংস্কৃত কলেজ স্থাপনা উত্তরবঙ্গের সংস্কৃত শিক্ষার অগ্রগতির ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। প্রকৃতপক্ষে উনবিংশ শতাব্দিতে ও বিংশ শতাব্দির প্রথমার্ধে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে পাশ্চাত্য শিক্ষার পাশাপাশি সংস্কৃত ভাষার চর্চাও শুরু হয়। এই সময়কালে বিশেষ করে বাংলায় আরবী অথবা ফারসি ভাষায় অধ্যয়নরত ছাত্রদের সংখ্যা থেকে সংস্ক্রত ভাষায় অধ্যয়নরত ছাত্রদের সংখ্যা ছিলো বেশি।

বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরে সংরক্ষিত মহারাণী হেমন্তকুমারী সংস্কৃত কলেজ এর নামফলক

রাজশাহীতে সংস্কৃত শিক্ষার প্রবর্তনের পরিকল্পনা শুরু হয়েছিলো ১৯০১ সালে। সেই সময় রাজশাহী কয়েকজন বিদগ্ধ হিন্দু জমিদারী সংস্কৃত পণ্ডিত অধ্যপকম্যাক্সমূলারের মৃত্যতে শোক প্রকাশের জন্য অনুষ্ঠিত একটি জনসভায় বিষয়টি সম্পর্কে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেন। এরই ফলশ্রুতিতে তদানিন্তন রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ রায় বাহাদুর কুমুদিনী কান্ত ব্যানার্জীর উদ্যগে রাজশাহী কলেজের হিন্দু ছাত্রদের জন্য একটি সংস্কৃতি বিভাগ খোলার একটি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

মহারাণী হেমন্তকুমারী দেবী তাঁর ময়মনসিংহ জমিদারী থেকে সংস্কৃত কলেজের জন্য বার্ষিক ১৬০০ টাকা দিতে প্রতিশ্রুতি বদ্ধ হন। তিনি কলেজের ভবন নির্মাণের জন্য এককালীন ১৭,০০০ টাকাও দান করেন। তিনি ছাত্রদের জন্য বার্ষিক ১৮০ টাকা ব্রত্তিও প্রদান করেন।[২]

ব্যবস্থাপনা[সম্পাদনা]

১৯০৪ সালের ১ লা জুলাই বাংলার তৎকালীন লে: গভর্নর রাজশাহী কলেজ প্রাঙ্গনে সংস্কৃত কলেজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। ১৮০৮ সালে সেই কলেজ ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হয়। কলেজটি রাজশাহী কলেজের নিয়ন্ত্রণাধীনে উক্ত কলেজেরই একটি সংযুক্ত ইন্সটিটিউট হিসেবে স্থাপিত হয়। ১২ জন সদস্য নিয়ে সংস্কৃত কলেজেন প্রথম পরিচালনা পরিষদ গঠিত হয়। এই পরিষদের সভাপতি ছিলেন পদাধিকার বলে জেলা কালেক্টর এবং সহ-সভাপতি এবং সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ। ১৯০৫ সালে ৩ জন শিক্ষক এবং ৩৫ জন ছাত্র নিয়ে সংস্কৃত কলেজ কার্যক্রম শুরু।[৩]

সমাপ্তি[সম্পাদনা]

১৯৪২ সালে রাণী হেমন্তকুমারী দেবীর মৃত্যু সংস্কৃত কলেজ এর জন্য এক বিরাট আর্থিক বিপর্যয় ডেকে আনে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশে শিক্ষা অফিসের জন্য সংস্কৃত কলেজের ভবনটি সাময়িকভাবে ছেড়ে দিতে হয়। কলেজটি বন্ধ হওয়ার পূর্ব অবধি রাজশাহী কলেজের একটি ভবনে সংস্কৃত কলেজের কার্যক্রম চালু ছিল। পরবর্তিতে রাজশাহী কলেজ কর্তৃপক্ষ অনেক চেষ্টা করেও সংস্কৃত কলেজের ভবনটি তাদের নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন নি। বর্তমানে রাজশাহী শিক্ষা বিভাগীয় দপ্তর বা ডি.ডি.পি.আই. অফিস হিসেবে মহারাণী হেমন্তকুমারী সংস্কৃত কলেজ ভবনটি ব্যবহৃত হচ্ছে। শিক্ষক-ছাত্র সংখ্যা কমতে থাকায় এবং সংস্কৃত শিক্ষা সম্পর্কে সরকারের সেরকম ঋৎসাহ না থাকায় ১৯৬৩ সালে কলেজটি বন্ধ হয়ে যায়।[১]

ভবন সমূহ[সম্পাদনা]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. ঐতিহ্যে রাজশাহী কলেজ। রাজশাহী: প্রফেসর ড.কে.এম জালালউদ্দীন আকবর। সেপ্টেম্বর ২০০১। পৃষ্ঠা ৩১। 
  2. পুঠিয়া রাজবংশ। ঢাকা, বাংলাদেশ: বিমলাচরণ মৈত্রেয়। ২০১০। পৃষ্ঠা ২৩। 
  3. Hundred Years of the University of Calcutta। Calcutta, India: University of Calcutta। সেপ্টেম্বর ১৯৫৭। 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]