অর্ণব গোস্বামী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
অর্ণব গোস্বামী
উইকি সম্মেলন ভারত, ২০১১-তে অর্ণব গোস্বামী
জন্ম
শিক্ষাহিন্দু কলেজ, দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়
সেইন্ট এন্থনীজ কলেজ, অক্সফোর্ড
পেশাবার্তা পরিবেশক এবং রিপাবলিক মিডিয়া নেটওয়ার্কের মালিক ও মুখ্য সম্পাদক
কর্মজীবন১৯৯৮ – বর্তমান
উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব
দ্য নিউজআওয়ার,
ফ্রেঙ্কলি স্পিকিং উইথ অর্ণব
টেলিভিশননেশন ওয়ান্ট টু নো, পুছতা হ্যাঁয় ভারত
দাম্পত্য সঙ্গীশ্যামাব্রতা রায়

অর্ণব রঞ্জন গোস্বামী (অসমীয়া: অৰ্ণৱ গোস্বামী) ভারতের একজন প্রথম সারির সাংবাদিক। তিনি ভারতীয় নিউজ মিডিয়া রিপাবলিক মিডিয়া নেটওয়ার্কের মালিক ও মুখ্য সম্পাদক।

জীবনী[সম্পাদনা]

টাইমস সাহিত্য উৎসব ২০১২ তে অর্ণব গোস্বামী

অর্ণব গোস্বামীর জন্ম হয়েছিল গুয়াহাটিতে[১][২] অর্ণব গোস্বামীর পিতা কর্নেল মনোরঞ্জন গোস্বামী ও মাতা সুপ্রভা গোস্বামী। অর্ণব গোস্বামীর পরিবারভুক্ত এক অগ্রজ অসমের প্রখ্যাত আইনজ্ঞ। তাঁর পিতৃকুলের রজনীকান্ত গোস্বামীও একজন উকিল ছিলেন। রজনীকান্ত গোস্বামী ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসএর সক্রিয় নেতা ও একজন মুক্তিসংগ্রামী ছিলেন। [৩] অন্য দিকে, তাঁর মাতৃকুলে গৌরী শঙ্কর ভট্টাচার্য্য একজন প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ ছিলেন। ভট্টাচার্য্য বহু দিন ধরি অসম বিধানসভার বিরোধী দলনেতা ছিলেন। [৩] গৌরী শঙ্কর ভট্টাচার্য্য একাধারে একজন মুক্তি সংগ্রামী, বুদ্ধিজীবী-সাহিত্যিক ও অসম সাহিত্য সভা পুরস্কারের প্রাপক ছিলেন। অর্ণব গোস্বামীর শিক্ষা জীবন ভারতের বিভিন্ন স্থানে সম্পন্ন হয়েছিল। [২][৩] অর্ণব গোস্বামী নতুন দিল্লীর দিল্লী সেনা ছাউনীর মাউন্ট সেইন্ট মেরীজ স্কু থেকে দশম শ্রেণীর পরীক্ষা উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। এর পর দ্বাদশ শ্রেণী উত্তীর্ণ হয়েছিলেন জব্বলপুর সেনা ছাউনীর কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় থেকে। দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ন্তগত হিন্দু কলেজ থেকে সমাজশাস্ত্র বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রী নেওয়ারনেওয়ারপর পর অর্ণব গোস্বাম ১৯৯৪ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ন্তগত সেইন্ট এন্থনীজ কলেজ থেকে সামাজিক নৃতত্ত্ব বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি ফেলিক্স ফেলোশিপের প্রাপক ছিলেন। ২০০০ সালে তিনি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়র আন্তঃরাষ্ট্রীয় অধ্যয়ন বিভাগ(সিডনী সাসেক্স কলেজ)এ একজন ভিজিটিং ফেলো ছিলেন। তিনি সেই সময়ে ডি সি পাবেট ফেলো ছিলেন। [২][৪]

২০০৫ সালে অর্ণব গোস্বামী এন ডি টি ভি-তে তাঁর কেরিয়ার আরম্ভ করেন। এন ডি টি ভি-তে তিনি দৈনিক বার্তা পরিবেশক হিসাবে কাজ করার সাথে ডি ডি মেট্রো চ্যানেলে সম্প্রচারিত নিউজ টুনাইট শীর্ষক অনুষ্ঠানের জন্য কাজ করেন। [৫] পরে বার্তা সম্পাদক হিসাবে তিনি এন ডি টি ভি-র মুখ্য গোটর সদস্য হন। সেই সময়ে (অর্থাৎ ১৯৯৮ সালে) অনুষ্ঠান প্রযোজনার থেকে ২৪ ঘণ্টা প্রচার সংক্রমণ হয়েছিল। [২] তিনি সোমবার থেকে শুক্রবার প্রতিদিন রাতে নিউজওয়ার শীর্ষক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত করতেন। নিউজআওয়ার ছিল যেকোনো চ্যানেলে পরিবেশিত বক্তব্যের বিশ্লেষণমূলক অনুষ্ঠানের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সময়ের জন্য নিরবছিন্ন ভাবে প্রচারিত অনুষ্ঠান (১৯৯৮-২০০৩)। [৪] এন ডি টি ভির একজন জ্যেষ্ঠ সম্পাদক হিসাবে তিনি চ্যানেলটির সমস্ত সম্পাদনা করার দায়িত্বে ছিলেন। চ্যানেলটির বহুল সমাদৃত অনুষ্ঠানগুলির অন্যতম নিউজনাইট অনুষ্ঠানের সূত্রধার ছিলেন অর্ণব গোস্বামী। [৬] এই অনুষ্ঠানের জন্যই তিনি ২০০৪ সালে এশিয়ান টেলিভিশন পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে এশিয়ার শ্রেষ্ঠ বার্তা পরিবেশকের পুরস্কার লাভ করেন।

বর্তমানে অর্ণব গোস্বামী টাইমস নাও নামে জনপ্রিয় নিউজ চ্যানেলটির মুখ্য সম্পাদক।[৭] তাঁর দ্বারা পরিবেশিত দ্য নিউজআওয়ার শীর্ষক অনুষ্ঠানটির সোমবার থেকে শুক্রবার প্রতিদিন রাত ৯ টায় সম্প্রচার হয়। এই অনুষ্ঠানটিতে পারভেজ মুশারফরাহুল বাজাজএর মতো ব্যক্তিও অংশগ্রহণ করেছিলেন। [৮] অর্ণব গোস্বামীর উল্লেখনীয় কাজের মধ্যে ২০০৬ সালের মুম্বাই রেল বোমা বিস্ফোরনের প্রচার, ২০০৮ সালের বিতর্কিত সংসদের আস্থা ভোটের সময়ে নিরবছিন্ন ২৬ ঘণ্টা পরিবেশন,২০০র অধিক রাজনীতিকদের সাক্ষাৎকার ও এই ভোটের বিশ্লেষণ ও ২০০৮ সালের মুম্বাই সন্ত্রাসবাদী আক্রমণের সময়ে ৬৫ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বার্তা পরিবেশন ইত্যাদি অন্যতম। [৯] তিনি ফ্রেঙ্কলী স্পীকিং উইথ অর্ণব নামে আরেকটি অনুষ্ঠানের সূত্রধার। [১০] এই অনুষ্ঠানটিতে বেনজির ভুট্টো, প্রাক্তন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন, আফগানিস্তানএর রাষ্ট্রপতি হামিদ কারজাই, নির্বাসিত তিব্বতের নেতা তথা ধর্মগুরু দলাই লামা, আমেরিকার বৈদেশিক সচিব হিলারী ক্লিন্টন, সোনিয়া গান্ধী আদি বহু প্রখ্যাত ব্যক্তি অংশ গ্রহণ করেছেন। [১০][১১][১২][১৩] এই অনুষ্ঠানে ভারতের রাজনীতি, ক্রীড়া, চলচ্চিত্র ও কর্পোরেট ক্ষেত্রের অন্য বহু স্বনামধন্য ব্যক্তি অংশগ্রহণ করেছেন। অর্ণব গোস্বামী Combating Terrorism: The Legal Challenge শীর্ষক এখন গ্রন্থও প্রণয়ন করেছেন।[২][৪]

পুরস্কার ও সম্মান[সম্পাদনা]

  1. শ্রেষ্ঠ বার্তা পরিবেশক হিসাবে এশিয়ান টেলিভিশন পুরস্কার (দ্বিতীয় বিজেতা)[৫]
  2. সংবাদ সেবার ক্ষেত্রে সোসাইটি ইয়ং এচিভার্স পুরস্কার[১০]
  3. অভিনব মুখ্য সম্পাদকের ইণ্ডিয়ান নিউজ ব্রডকাষ্টিং পুরস্কার, ২০০৮[৪]
  4. নিউজ লাইভএর দ্বারা বর্ষটির অসমীয়া সম্মান [১]
  5. ২০১০ সালে ইণ্ডিয়ান এক্সপ্রেস গোটর দ্বারা রামনাথ গোয়েঙ্কা টেলিভিশন সাংবাদিকতা উৎকর্ষ পুরস্কার [১৪]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Award to Arnab Goswami"The Assam TribuneGuwahati। জানুয়ারি ১৮, ২০১০। এপ্রিল ১, ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ২৮, ২০১১ 
  2. "Arnab Goswami"। mediamughals.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৮-০৪ 
  3. "The Soil Beckons"। outlookindia.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৮-০৪ 
  4. "Mr. Arnab Goswami Editor-in-Chief, Times Now"। edvancelearning.com। ২০১১-০৭-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৮-০৪ 
  5. "NEW DELHI TELEVISION LIMITED" (পিডিএফ)। sebi.gov.in। ২০১১-০৯-২৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৮-০৪ 
  6. "Diversity in programming is crucial to NDTV"। afaqs.com। ২০১২-০৯-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৮-০৪ 
  7. "DETAILED COVERAGE: TRANSCRIPT"। onthemedia.org। ২০১২-০৪-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৮-০৪ 
  8. "Excl: Musharraf says ISI did not hide Osama - 2"। timesnow.tv। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৮-০৪ 
  9. "Bearing witness to events affects the course of conflict"। rotary.org। ২০১১-০৭-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৮-০৪ 
  10. "Arnab Goswami receives Society Young Achievers award"। indiantelevision.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৮-০৪ 
  11. "UK stance on Pak elections 'very clear': Brown"। dailytimes.com.pk। ২০১২-০৭-২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৮-০৪ 
  12. "Mullah Omar is I Pakistan, says Karzai"। hvk.org। ২০১১-০১-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৮-০৪ 
  13. "Thukchuk Lachungpa on Karmapa controversy-II"। isikkim.com। ২০১১-০৭-১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৮-০৪ 
  14. "Ramnath Goenka Award for Excellence in Journalism"। indianexpress.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৮-০৪ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]