কমলা দাশগুপ্ত

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কমলা দাশগুপ্ত
জন্ম(১৯০৭-০৩-১১)১১ মার্চ ১৯০৭
মৃত্যু১৯ জুলাই ২০০০(2000-07-19) (বয়স ৯৩)
প্রতিষ্ঠানযুগান্তর দল
আন্দোলনভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন

কমলা দাশগুপ্ত (১১ই মার্চ ১৯০৭ – ১৯শে জুলাই ২০০০) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিযুগের নারী বিপ্লবী ও সাহিত্যিক[১]

জন্ম[সম্পাদনা]

কমলা দাশগুপ্ত ১৯০৭ সালে ঢাকার বিক্রমপুরে এক বৈদ্য পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯২৪ সনে তিনি ঢাকার ব্রাহ্মবালিকা শিক্ষালয় থেকে প্রবেশিকা পাশ করেন। এর পরে তার পরিবার কলকাতায় গমন করে। কলকাতায় তিনি বেথুন কলেজে ভর্তি হন। ১৯২৮ সনে বেথুন কলেজ থেকে বি.এ ডিগ্রি লাভ করেন এবং পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইতিহাসে এম.এ পাস করেন।[২]

রাজনৈতিক জীবন[সম্পাদনা]

এম.এ শ্রেণির ছাত্রাবস্থায় তিনি রাজনৈতিক মনস্ক হয়ে ওঠেন। সে সময় যুগান্তর দল এর কতিপয় সদস্যের সাথে তার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয়। তিনি বিপ্লবী দীনেশ মজুমদারের কাছে লাঠিখেলা শিখতে আরম্ভ করেন। ১৯২৯ সালে যুগান্তর দলের নেতা রসিকলাল দাসের প্রেরণায় গান্ধীর অহিংসবাদ ছেড়ে সশস্ত্র সংগ্রামের জন্য যুগান্তর দলে যোগ দেন।[২] সহপাঠী হিসাবে ছিল কল্যাণী দাস। তিনি বীণা দাসকে রিভলবার সরবরাহ করেন যা দিয়ে তিনি ফেব্রুয়ারি ১৯২২ সালে গভর্নর স্ট্যানলি জ্যাকসনকে হত্যার চেষ্টা করেন।[৩] তিনি বোমা হামলার সাথে জড়িত থাকার কারণে বেশ কয়েকবার গ্রেফতার হন কিন্তু প্রমাণের অভাবে প্রত্যেক সময় মুক্তি পান। ১৯৩২-৩৮ তিনি প্রেসিডেন্সি ও হিজলী বন্দী নিবাসে আটক থাকেন। হিজলি বন্দি নিবাসে বন্দি থাকা অবস্থায় তিনি ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন।[৪]

১৯৩০ সালে তিনি বাড়ি ছেড়ে দরিদ্র নারীদের জন্য একটি হোস্টেলের ম্যানেজার হিসেবে চাকরি নেন। সেখানে তিনি বিপ্লবীদের জন্য বোমা ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম সংরক্ষণ করতেন এবং বহন করে আনতেন।[৫] ভারত ছাড়ো আন্দোলনে যোগ দিয়েও কারাবাস করেছেন তিন বছর (১৯৪২-৪৫)। দাংগা বিধ্বস্ত নোয়াখালী তে ত্রানের কাজ করেছেন এই বিপ্লবী।

প্রকাশিত গ্রন্থ[সম্পাদনা]

কর্মজীবনে শিক্ষকতা ছাড়াও মন্দিরা পত্রিকা সম্পাদনা করতেন কমলা দাশগুপ্ত। দেশ ভাগের পরে লিখেছিলেন তার আত্মজীবনী রক্তের অক্ষরে যা ১৯৫৪ সালে প্রকাশিত হয়। তিনি পরে লিখেছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামে বাংলার নারী (১৯৬৩) নামে আরো একটি গবেষণামূলক গ্রন্থ। গ্রন্থ দুটিতে তার বিপ্লবী ও রাজনৈতিক জীবনের নানা বিষয় উঠে এসেছে।[২][৬]

মৃত্যু[সম্পাদনা]

কমলা দাশগুপ্ত ২০০০ সালের ১৯ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন।[৬]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী, জেলে ত্রিশ বছর, পাক ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম, ধ্রুপদ সাহিত্যাঙ্গণ, ঢাকা, ঢাকা বইমেলা ২০০৪, পৃষ্ঠা ২২০।
  2. "দাশগুপ্ত, কমলা"http://bn.banglapedia.org। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জানুয়ারি ২০১৫  |প্রকাশক= এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
  3. Constructing the image of a Woman Activist The History of Doing: An Illustrated Account of Movements for Women's Rights and Feminism in India, 1800-1990, By Radha Kumar, Kali for Women Organization, Published by Zubaan, 1993. আইএসবিএন ৮১-৮৫১০৭-৭৬-৯. Page 87. Retrieved:2008-08-02.
  4. পতি, ভাস্করব্রত (২২ ডিসেম্বর ২০১৬)। "দেশের প্রথম মহিলা জেল এখন আই আই টি'র গুদামঘর!"গণশক্তি ডট কম। কলকাতা। ২০২২-০২-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১২-২২ 
  5. India Sisterhood is Global: The International Women's Movement Anthology, By Robin Morgan, Feminist Press, 1996. আইএসবিএন ১-৫৫৮৬১-১৬০-৬., 9781558611603. Page 303.Retrieved:2008-08-02
  6. কমলা দাশগুপ্ত (জানুয়ারি ২০১৫)। স্বাধীনতা সংগ্রামে বাংলার নারী, অগ্নিযুগ গ্রন্থমালা ৯কলকাতা: র‍্যাডিক্যাল ইম্প্রেশন। পৃষ্ঠা ১০১-১০৬। আইএসবিএন 978-81-85459-82-0