ব্যবহারকারী:Minar Mahmud/খেলাঘর

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

ভিক্ষা হচ্ছে কোন রকম লেনদেনের চিন্তা ছাড়াই, অপরের অনুগ্রহে অর্থ আদায়ের চেষ্টা। বিভিন্ন জনসমাগমপূর্ন স্থান, যেমন শহুরে পার্ক, ব্যাস্ত বাজার, বাস কিংবা ট্রেন স্টেশনে ভিক্ষুকদের দেখা যায়। অর্থ ছাড়াও তারা খাদ্য, পানীয়, সিগারেট কিংবা অন্যান্য কিছু চেয়ে থাকে।

বেগার, ১৬২২, জ্যাক্‌স ক্যালট

কানাডিয়ান মেডিক্যাল এসোসিয়েশনের জার্নালে, ভিক্ষুকদের উপর প্রকাশিত এক গবেষনা থেকে দেখা যায়, ৭০% ভিক্ষুকই একটি নিম্ন-আয়ের চাকুরির দিকে আগ্রহ প্রকাশ করে। মূলত, তাদের আগ্রহ একটি 'নিয়মিত আয়' অথবা 'উদ্বাস্তু অবস্থার উন্নতিসাধনের' দিকে থাকে। যদিও, তাদের অনেকেই মনে করে মানসিক, স্বাস্থ্যগত কিংবা স্বল্প-দক্ষতার কারনে তারা সাধারণ চাকুরির অনুপযোগী।[১]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

দ্য সিঙ্গিং বেগার্‌স রুশ চিত্রকর আইভান ইয়েরমেন্যভ সি. ১৭৭৫

ইতিহাসের আদি থেকেই মানব সমাজে ভিক্ষুকেরা বিদ্যমান ছিল। পৃথিবীর প্রায় সকল শহরেই ভিক্ষাবৃত্তি প্রচলিত ছিল, যদিও এর ধরন কিংবা পদ্ধ্বতিতে বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্নতা দেখা যায়।

গ্রীস[সম্পাদনা]

প্রাচীন গ্রীকরা দরিদ্রদের দু'ভাগে ভাগ করে। ptochos (গ্রীকঃπτωχός, "নিষ্ক্রিয় দরিদ্র" বা "ভিক্ষুক") এবং penes (গ্রীকঃ ποινής, "সক্রিয় দরিদ্র")। এদের মাঝে penes বা সক্রিয় দরিদ্রেরা ছিল অপেক্ষাকৃত উচ্চ সামাজিক মর্যাদাসম্পন্ন।[২] নূতন নিয়মে যিশুকে বর্ণনা করা হয় ১ম ভাগ অথবা ভিক্ষুকদের ত্রাণকর্তা হিসেবে, যাদের সাধারণভাবে দরিদ্র কিংবা সমাজের নিকৃষ্টতম বলে মনে করা হত।[৩]

ব্রিটেন[সম্পাদনা]

১৭৮৬ সালে জেমস গিলরে এর ব্যাঙ্গচিত্র, পর্যাপ্ত টাকার থলি হস্তান্তর করা হচ্ছে তৃতীয় রাজা জর্জ এর কাছে যার বিপরীতে দেখানো হয়েছে একজন হাত-পা ছাড়া পঙ্গু ভিক্ষুক , বাম কোনায়
কাশকুল, অথবা ভিক্ষুকের থালা, দরবেশ ও উর্ধ্বে-আসীন বাজ-পালকের ছবি সহ, হিজরী ১২৮০. ব্রুকলিন জাদুঘর.

১৫৬৬ সালে ভবঘুরে ভিক্ষুকদের বিরুদ্ধে থমাস হারমান একটি আইন জারি করেন। আধুনিক ইংল্যান্ড এর শুরুর দিকে রবার্ট গ্রীন তার কোনি-ক্যাচিং পুস্তিকায় তর্ক উত্থাপন করেন যে, সমাজের "সম্মানিত" ব্যাক্তিদের মাঝে জঘন্যতম অপরাধ বিদ্যমান। দ্য বেগার'স অপেরা তিন পর্বে রচিত একটি গীতিনাট্য যা ১৭২৮ সালে জন গে রচনা করেন। "দ্য লাইফ এন্ড এডভেঞ্চারস অব ব্যাম্ফিল্ড মুর কের‍্যু প্রথম প্রকাশিত হয় ১৭৪৫ সালে। এছাড়াও ইউরোপীয় দেশগুলোতে সমগোত্রীয় আরও লেখক ছিলেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

জ্যাকসন জে. স্পিলভোগেলের মতে, "অষ্টাদশ শতকে শহর এবং গ্রাম উভয় অঞ্চলেই দারিদ্য ছিল প্রকটভাবে দৃশ্যমান সমস্যা...বোলগ্‌নায় ভিক্ষুকের সংখ্যা ছিল মোট জনসংখ্যার আনুমানিক ২৫ শতাংশ; মাইঞ্জে জনগনের ৩০ শতাংশ ছিল ভিক্ষুক অথবা পতিতা...এ শতকের শেষ দিকে ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডের আনুমানিক ১০ শতাংশ মানুষ খাদ্যের জন্য নির্ভর করত শুধুমাত্র অন্যের বদান্যতা কিংবা ভিক্ষার উপর।"[৪]

রেনেসাঁস থেকে শুরু হওয়া ব্রিটিশ দরিদ্র আইন ভিক্ষাবৃত্তির উপর বিভিন্ন বিধি-নিষেধ আরোপ করে। বিভিন্ন সময়ে পঙ্গুদের জন্য ভিক্ষা নিষিদ্ধ্ব ছিল। প্রথাটি একটি ওয়ার্কহাউসে রুপলাভ করে। এটি ছিল একটি রাজ্য-নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠান যেখানে, অন্যস্থানে কাজ করতে অপারগদের ভয়ানক পরিবেশে এবং স্বল্প-মাত্রার খাদ্যের বিনিময়ে কাজ করতে বাধ্য করা হত। বিংশ শতকের ওয়েলফেয়ার স্টেট রাজকোষ থেকে অর্থের সাহায্যে দরিদ্রদের মৌলিক চাহিদা পুরনের মাধ্যমে ভিক্ষুকের সংখ্যা ব্যাপকভাবে কমিয়ে আনে।


তথ্যসুত্র[সম্পাদনা]

  1. "Income and spending patterns among panhandlers"CMAJ167 (5): 477–9। সেপ্টেম্বর ২০০২। পিএমআইডি 12240813পিএমসি 121964অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  2. Cavallo, Guglielmo (১৯৯৭)। The Byzantines। Chicago, Illinois: University of Chicago Press। আইএসবিএন 0-226-09792-7 
  3. http://www.biblestudytools.com/lexicons/greek/nas/ptochos.html
  4. Jackson J. Spielvogel (2008). "Western Civilization: Since 1500". Cengage Learning. p.566. আইএসবিএন ০-৪৯৫-৫০২৮৭-১