চর রাজিবপুর উপজেলা

স্থানাঙ্ক: ২৫°২৩′৫৩″ উত্তর ৮৯°৪১′২০″ পূর্ব / ২৫.৩৯৮০৬° উত্তর ৮৯.৬৮৮৮৯° পূর্ব / 25.39806; 89.68889
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
চর রাজিবপুর
উপজেলা
মানচিত্রে চর রাজিবপুর উপজেলা
মানচিত্রে চর রাজিবপুর উপজেলা
স্থানাঙ্ক: ২৫°২৩′৫৩″ উত্তর ৮৯°৪১′২০″ পূর্ব / ২৫.৩৯৮০৬° উত্তর ৮৯.৬৮৮৮৯° পূর্ব / 25.39806; 89.68889 উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
দেশবাংলাদেশ
বিভাগরংপুর বিভাগ
জেলাকুড়িগ্রাম জেলা
উপজেলা১৯৮৩
সংসদীয় আসনকুড়িগ্রাম-৪
আয়তন
 • মোট১১১.০৩ বর্গকিমি (৪২.৮৭ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা
 • মোট৭৩,৩০৭ [১]
সাক্ষরতার হার
 • মোট২৬.৪৭%
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
পোস্ট কোড৫৬৫০ উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
৫৫ ৪৯ ০৮
ওয়েবসাইটদাপ্তরিক ওয়েবসাইট উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

চর রাজিবপুর উপজেলা বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা। স্থানীয় ভাবে এটি রাজিবপুর উপজেলা নামে পরিচিত। বাংলাদেশের নারী খেতাবপ্রাপ্ত বীরপ্রতীক তারামন বিবি এই উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। বাংলাদেশের প্রথম সীমান্ত হাট বালিয়ামারী-কালাইরচর সীমান্ত হাট এই উপজেলায় অবস্থিত। ভৌগোলিক ভাবে এই উপজেলাটি জামালপুর সীমান্তে এবং কুড়িগ্রাম জেলার মূল ভুখন্ড থেকে ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা বিচ্ছিন্ন। এই উপজেলায় ছোট বড় প্রায় ৩০ টি চর রয়েছে।

অবস্থান ও আয়তন[সম্পাদনা]

এর আয়তন ১১১.০৩২ বর্গ কিলোমিটার।

রাজিবপুর উপজেলার উত্তরে রৌমারী উপজেলাচিলমারী উপজেলা এবং ব্রহ্মপুত্র নদ

দক্ষিণে জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলাগাইবান্ধা জেলার গাইবান্ধা সদর উপজেলা এবং ব্রহ্মপুত্র নদ

পূর্বে ভারতের আসামমেঘালয় রাজ্য।

পশ্চিমে গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা

প্রশাসন[সম্পাদনা]

ভৌগোলিক ভাবে জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার ডাঙধরা ও চর আমখাওয়া ইউনিয়নের মানুষ রাজিবপুর উপজেলা কেন্দ্রীক।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

রাজিবপুর থানাটি ১৯৭৭ সালে গড়ে উঠে,পরবর্তীতে ১৯৮৩ সালে চর রাজিবপুর উপজেলা নামে আত্মপ্রকাশ করে।

ঐতিহাসিক ঘটনাবলি[সম্পাদনা]

১৯৭১ সালে কোদালকাটিতে পাকবাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচন্ড যুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে অনেক পাকসেনা নিহত এবং ১১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। বীর প্রতীক তারামন বিবির জন্মস্থান শঙ্কর মাধবপুর গ্রামে একদিনে প্রায় ৪০ জন পাকবাহিনীকে হত্যা করা হয়। এছাড়া ১৯৬০ সালে ঘূর্ণিঝড়ে রাজিবপুরের জামালপুর সীমান্তে ২১ জন লোক নিহত হয়।

জনসংখ্যা[সম্পাদনা]

২০১১ সালের আদমশুমারি তথ্য অনুযায়ী,রাজিবপুর উপজেলার মোট জনসংখ্যা ৭৩৩০৭ জন।

আর, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুযায়ী,রাজিবপুর উপজেলার মোট ভোটার রয়েছে ৫৪হাজার ৭৯জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছে ২৬হাজার ৫শ’ ৩৫জন ও মহিলা ভোটার রয়েছে ২৭হাজার ৫শ’৪৪জন।

শিক্ষা[সম্পাদনা]

গড় হার ২৬.৪৭%; কলেজ ৪টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৯টি, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ২১টি, বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩৩টি, মাদ্রাসা ৬টি।

উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠানসূমহ[সম্পাদনা]

কলেজঃ

  • রাজিবপুর সরকারি কলেজ,
  • রাজিবপুর মহিলা কলেজ,


মাধ্যমিক বিদ্যালয়ঃ

  • রাজিবপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়,
  • রাজিবপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়,
  • চরনেওয়াজী দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়,
  • কোদালকাটি সাদাকাত হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়,

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ঃ

  • রাজিবপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,
  • চর রাজিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,
  • রাজিবপুর মুন্সিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,
  • জাউনিয়ার চর মিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,
  • সরকার-পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,
  • মোহনগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,

দাখিল মাদ্রাসাঃ

  • নয়ারচর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা
  • রাজিবপুর সবুজবাগ দাখিল মাদ্রাসা,
  • চর রাজিবপুর আলিম মাদ্রাসা,
  • বদরপুর দাখিল মাদ্রাসা,

অর্থনীতি[সম্পাদনা]

  • মোট আবাদী জমি: ১৫৪৫০ একর
  • অর্থকরী ফসল: ধান, পাট, সরিষা,বাদাম, কাউন প্রভৃতি
  • শিল্প প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা: মোট ৭টি, কুটির শিল্প- ৭টি
  • পাকা রাস্তা: ১৪ কি. মি.
  • কাঁচা রাস্তা: ১৫০ কি. মি.
  • হাটবাজার: ৫ টি। উল্লেখযোগ্য হাট: রাজিবপুর হাট ও বর্ডার হাট এবং নয়ারচর বাজার
  • প্রধান রপ্তানি দ্রব্য ধান, পাট, গুড়, বাদাম
  • শিল্প ও কলকারখানা ওয়েল্ডিং ৫, চাল ও আটা মিল
  • কুটিরশিল্প কুমার ২২, বাঁশ ও বেত শিল্প ৩০, স্বর্ণকার ১০, কাঠের কাজ ১২, সেলাই কাজ ২০

ভূমি ব্যবহার[সম্পাদনা]

চাষযোগ্য জমি ১৫৪৫০ একর। এক ফসলি ২০%, দো ফসলি ৫২%, তিন ফসলি ২৮%; সেচের আওতায় আবাদি জমি ৩০%। ভূমিহীন ১১%, প্রান্তিক চাষি ৪৪.৫%, মধ্যম চাষি ২০%, বড় চাষি ১২%; মাথাপিছু আবাদি জমি ০.০৭ হেক্টর।

প্রধান কৃষি ফসল[সম্পাদনা]

ধান, গম, পাট, আলু, আখ, কাউন, শাকসবজি, চিনাবাদাম, রসুন, সরিষা, মসুর।

বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় কৃষি ফসল[সম্পাদনা]

চিনা, আউশ ধান, অড়হর।

প্রধান ফল-ফলাদি[সম্পাদনা]

আম, কাঁঠাল, কুল, সুপারি, জাম, কলা, তরমুজ।

প্রধান নদী[সম্পাদনা]

ব্রহ্মপুত্র, হলহলিয়া, জিঞ্জিরাম।

দর্শনীয় স্থান[সম্পাদনা]

এই উপজেলার প্রায় তিন ভাগের এক ভাগ নদী। আর এই নদীগুলোর কোল ঘেষা গ্রামগুলো দেখতে অনেক সুন্দর। আরও রয়েছে ছোট বড় অনেক চর যা দেখলে মনে হয় এক একটা দ্বীপ। আর এই চরগুলোর সৌন্দর্য কাশফুল আরও বহুগুন বাড়িয়ে দেয়। এই নদীগুলো পাহাড়া দেওয়ার জন্য রয়েছে একটা জলথানা, যা বাংলাদেশের দুইটি জলথানার একটি। এছাড়া রয়েছে পাহাড়িয়া নদী। যে নদী মাঝে মাঝে ভারত বাংলাদেশের মধ্যে ভাগ হয়ে গেছে।

বাংলাদেশের প্রথম বালিয়ামারী-কালাইরচর সীমান্ত হাট রাজিবপুরে অবস্থিত। যা উপজেলাটির বালিয়ামারী এবং ভারতের মেঘালয় রাজ্যের কালাইচর সীমান্তে অবস্থিত।

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান[সম্পাদনা]

  • মসজিদ: ১২৫টি
  • মন্দির: ১টি
  • গির্জা: নাই

যোগাযোগ ব্যবস্থা[সম্পাদনা]

পাকা রাস্তা ২০ কিমি, কাঁচা রাস্তা ১৫০ কিমি; নৌপথ ১৪ নটিক্যাল মাইল। পালতোলা নৌকা, ঘোড়ার গাড়ির পাশাপাশি সব ধরনের আধুনিক যানবাহন এখানে চলাচল করে।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র[সম্পাদনা]

১ টি করে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র, যক্ষ্মা ও কুষ্ঠ নিরাময় কেন্দ্র এবং পশু হাসপাতাল রয়েছে।

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি[সম্পাদনা]

  • তারামন বিবি(তিনি ১৯৭১ সালে ১১ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ করেন। এবং বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক উপাধি দেয়)।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "এক নজরে সাঘাটা উপজেলা"বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। জুন ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২১ ডিসেম্বর ২০১৪ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]