উপ্পাদা জামদানি শাড়ী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
উপ্পাদা জামদানি শাড়ী
ভৌগোলিক নির্দেশক
বর্ণনাউপ্পাদা জামদানি শাড়ি এক প্রকারের সিল্কজাত হাতে বোনা শাড়ি যার আঁচলের উপর সোনালী এবং রূপোলী জরির কাজ করা থাকে।
ধরনহস্তশিল্প
অঞ্চলউপ্পাদা ,পূর্ব গোদাবরী জেলা,অন্ধ্রপ্রদেশ
দেশভারত
উপাদানসিল্ক
প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইটhttp://ipindia.nic.in/girindia/


উপ্পাদা জামদানি শাড়ী একপ্রকারের সিল্কজাত [১] হাতে বোনা শাড়ী, যা অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের পূর্ব গোদাবরী জেলার অঞ্চলে পাওয়া যায়।[২][৩] উপ্পাদা বুনন পদ্ধতিকে জামদানি বলা হয় এবং এটি খুবই পুরানো বুনন পদ্ধতি।[৪] এই ফেব্রিক উতকৃষ্ট মানের এবং স্বমহিমায় বিরাজমান। উপ্পাদা জামদানি শাড়ির আঁচল সিল্কের উপর সোনালী এবং রূপোলী জরির কাজের জন্য বিখ্যাত [৫] এবং এই শাড়ি হাল্কা ওজনবিশিষ্ট হয়।[৬] এই হস্তশিল্প ভারতের ভৌগোলিক অস্তিত্বের ইঙ্গিত দেয়।[৭][৮]

শব্দপ্রকরন[সম্পাদনা]

জামদানি পার্সিয়ান শব্দজাত Jam (জাম) যার অর্থ ফুল (flower) এবং Dani (দানি) কথাটির অর্থ হল পাত্র (Vase)।[৯]

নামকরনের ইতিহাস[সম্পাদনা]

উপ্পাদা জামদানি বুননের উৎপত্তি ৩০০ বছরেরও আগে। ভারতে এই প্রকার সিল্ক জামদানি বুননের পৃষ্টপোষক হলেন পিটাপুরাম,[১০] ভেঙ্কাটাগিরি এবং বব্বিলি অঞ্চলের মহারাজারা। এই উপ্পাদা শাড়ী রাজকীয় পরিবারের মহিলারা শুধুমাত্র ব্যবহার করতেন এবং রাজপরিবার ব্যতীত অন্য কোন পরিবারের এই শাড়ি ব্যবহার করা নিষিদ্ধ ছিল।[১১] সেই সময় এই উপ্পাদা জামদানি শাড়ি শুধুমাত্র সুতি দিয়ে তৈরী হত এবং সেই শাড়িতে বিশুদ্ধ সোনা এবং রূপোর জরি ব্যবহার করা হতো।[১২]

ঘনশ্যাম সারোদে একজন বয়ন শিল্পী ১৯৮৮ সালে এই পুরানো বয়ন পদ্ধতিকে নতুন করে পূনঃআরোপিত করেন এবং এই নতুন ব্যান্ড উপ্পাদা জামদানি শাড়ী হিসাবে তৈরী হয়।[৪] ভারতে এই জামদানি বুনন বয়ন শিল্পের জগতে বিশেষ ভাবে পুরস্কৃত। ভিক্টোরিয়া এবং লন্ডনের অ্যালবার্ট জাদুঘরে জামদানি কাজের সুন্দর সুন্দর শাড়ি সংরক্ষিত আছে।

জামদানি শাড়ির কাপড়[সম্পাদনা]

উপপাদা জামদানি শাড়ি একটি সুন্দর টেক্সটাইল যা বহু শতাব্দী ধরে দক্ষিণ ভারতে বোনা হয়ে আসছে। কাপড়ের একটি সিল্কের মতো টেক্সচার রয়েছে এবং এটি হালকা ওজনের, এটি শাড়ি, গাউন, স্কার্ফ ইত্যাদি ডিজাইনের জন্য নিখুঁত করে তোলে। উপপাদা কাপড়ের পিছনের ইতিহাসটি বাংলায় জামদানি বুনন কৌশলের দিকে ফিরে পাওয়া যায়।

ভৌগোলিক অবস্থান[সম্পাদনা]

উপ্পাদা জামদানি সিল্ক বিশেষত উপ্পাদা গ্রাম, কথাপাল্লি, আমিনাবাদ, মুলাপেটা, রাভিন্দ্রাপুরাম, কোমারাগিরি ছাড়াও ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের পূর্ব গোদাবরী জেলার সমগ্র কথাপাল্লি এলাকার উৎপাদন।[১১]

অভিনবত্ব[সম্পাদনা]

  • উপ্পাদা জামদানি সিল্ক শাড়ি বুননে, কাপড়ের উপর নক্সাগুলি পুরোপুরি হাতের কাজ করা অন্যান্য বুননের মতো কোন যান্ত্রিক ব্যাপার নেই। তাই এই শাড়ি বুনতে অনেক বেশি সময়ের প্রয়োজন হয়। একটা শাড়ি বুনতে দুজন কারিগরের এক মাস বা তার বেশি সময় লাগে৷
  • এই বুননে আদা, জালা এবং বিভিন্ন থ্রিলস এর ব্যবহার হয় ফলে এই শাড়ির জমিতে বুননের সময়ই নক্সা হয়ে যায় এবং এই নক্সা গুলি হাত দিয়ে আলাদা করে স্পর্শ করা যায় না।[১২] শাড়ির এই নক্সাগুলি স্পষ্ট দেখা যায় এমনকি এই নক্সা শাড়ির উলটো পিঠেও দেখা যায়।
  • জামদানি কাজে সারা কাপড়ের সামনে এবং পিছনে বিভিন্ন বৈষম্যধর্মী সুতোয় ঢেউ খেলানো ভাবে কাজ থাকে।
  • এই উপ্পাদা শাড়ির জমিতে জামদানি নক্সা করা থাকে এবং আঁচলটি সম্পূর্ণ খাঁটি জরির কাজ দেখা যায়।
  • সাধারনতঃ পাখী (টিয়া পাখি এবং ময়ূর), পশু এবং ফুলের নক্সা দেখা যায়। পশুদের মধ্যে হাতির নক্সার প্রচলন অনেক বেশি।[১২]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Andhra spin! - The Times of India[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. "News Archives: The Hindu"। ১৪ জানুয়ারি ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জানুয়ারি ২০১৬ 
  3. Wide range at Lepakshi exhibition - The Hindu
  4. "Cultural Facets Of Andhra Pradesh" (পিডিএফ) 
  5. "Traditional Industry in the New Market Economy: The Cotton Handlooms of Andhra Pradesh" 
  6. Jemima Margaret Eliot (৩০ ডিসেম্বর ২০০৮)। "Andhra spin! - The Times of India"The Times of India। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জানুয়ারি ২০১৬ 
  7. Uppada Jamdani saris get GI tag
  8. "GEOGRAPHICAL INDIACTIONS JOURNAL NO. 30" (পিডিএফ)। ৯ আগস্ট ২০১৩ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জানুয়ারি ২০১৬  line feed character in |শিরোনাম= at position 25 (সাহায্য)
  9. Vasudev, Shefalee। "Next-Gen Weavers: Jamdani of the south"Livemint। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জানুয়ারি ২০১৬ 
  10. "The New Indian Express Uppada's claim over Jamdani sarees granted, Jun 26, 2009" 
  11. "Details of Geographical Indications Registered In Andhra Pradesh" (পিডিএফ) 
  12. "Geographical Indications Journal No. 27" (পিডিএফ)। ৯ আগস্ট ২০১৩ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০১৬  line feed character in |শিরোনাম= at position 25 (সাহায্য)