আইসিজিভি থর

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আইসিজিভি থর রেইকিয়াভিক পোর্টে পৌছাচ্ছে [২৭ অক্টোবর ২০১১]
ইতিহাস
আইসল্যান্ড
নাম: আইসিজিভি থর
নামকরণ: থর
নির্মাণাদেশ: ২০০৬
নির্মাতা: এএসএমএআর নৌ শিপইয়ার্ড, তালকাহুয়ানো, চিলি
নির্মাণের সময়: ২০০৮
অভিষেক: ২৯ এপ্রিল ২০০৯
কমিশন লাভ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১১
কার্যসময়: ২০১১-
সাধারণ বৈশিষ্ট্য
প্রকার ও শ্রেণী: রোলস-রয়েস মেরিন AS "ইউটি ৫১২ এল" type offshore patrol vessel
ওজন: ৩,৯২০ t (৪,৩২১ st)
দৈর্ঘ্য: ৯৩.৮০ মি (৩০৭.৭ ফু)
প্রস্থ: ১৬ মি (৫২ ফু)
উচ্চতা: ৩০ মি (৯৮ ফু)
গভীরতা: ৫.৮০ মি (১৯.০ ফু)
ইনস্টল ক্ষমতা: ২ × ৪,৫০০ kW Rolls Royce Bergen diesel
প্রচালনশক্তি:
গতিবেগ: ২০.১ নট (৩৭.২ কিমি/ঘ; ২৩.১ মা/ঘ)
নৌকা ও অবতরণ
নৈপুণ্য বহন করে:
এমওবি নৌকাs
লোকবল: ৪৮
সেন্সর এবং
কার্যপদ্ধতি:
  • 1 × S-band radar, 2 × X-band radar
  • Synthetic aperture sonar
রণসজ্জা:
বিমানচালানর সুবিধাসমূহ: হেলিকপ্টারের ইন ফ্লাইট জ্বালানি ভরার ক্ষমতা
টীকা: বোলার্ড পুলঃ ১২০ t (১৩২.৩ st)

আইসিজিভি থর হলো একটি ইউটি ৫১২এল ধরনের দূর সমুদ্রের প্রহরী জাহাজ, যা রোলস রয়েস দ্বারা নকশাকৃত এবং আইসল্যান্ডের উপকূল রক্ষীদের জন্য প্রস্তুতকৃত। এই জাহাজটি পুরাতন আইসিজিভি অইন জাহাজকে প্রতিস্থাপন করে। আইসল্যান্ডের সরকার ২০০৫ সালের ৪ মার্চে এই জাহাজটির গঠনপ্রণালীর অনুমোদন করে। এই জাহাজটির নির্মাণ কাজ ১৬ অক্টোবর ২০০৭ তারিখে চিলির তালকাহুয়ানোর এএসএমএআর নৌ শিপইয়ার্ডে (জাহাজ নির্মানের স্থান) শুরু হয়। ২০১০ সালে চিলির ভূমিকম্পের কারণে নির্মাণ কাজ ১ বছর পিছিয়ে যায়। কিন্তু ভূমিকম্পের ফলে জাহাজটির যতটা ক্ষতি ধারণা করা হয়েছিলো, ততটা ক্ষতি হয়নি। মেরামতের পরে ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১১ এ আইসিজিভি থরকে চিলির আইসিভি কর্মিগণের কাছে প্রেরণ করা হয়। ২০১১ সালের ২৭ অক্টোবরে জাহাজটি রেইকিয়াভিক পৌঁছায়। এটার প্রধান কাজ হলো ইইজেড চৌকি, মৎস্য আহরণ কার্য অনুসন্ধান এবং উদ্ধার কার্যক্রম। নরস দেবতা থরের নামানুসারে এই জাহাজটির নামকরণ করা হয়।

উৎপত্তি[সম্পাদনা]

৪ মার্চ ২০০৫ তারিখে আইসল্যান্ডের উপকূল রক্ষিদের জন্য পুরাতন জাহাজ (আইসিজিভি অইন) কে প্রতিস্থাপন করে একটি নতুন জাহাজ এবং একটি বিমান ক্রয়ের জন্য তৎকালীন বিচারপতি ও যাজকীয় বিষয়ক  মন্ত্রী (যা এখন অস্তিত্বহীন)[১] বিহর্ন বিহারন্যাসন একটি খসড়া প্রস্তাব করেন। আলদিং (আইসল্যান্ডের সংসদ) এই প্রস্তাবকে উচ্চ অগ্রাধিকার দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।[২] ২০০৫ সালের ৩১ ডিসেম্বরে আইসিজির জন্য একটি মাল্টি পারপাস জাহাজ ও বিমান অধিগ্রহণের সংক্রান্ত চাহিদা বিশ্লেষণের সূচনা হয়। উদ্ধার কাজ ও টহল, দূষণ রোধ, অনুসন্ধান এবং উদ্ধারকারী হেলিকপ্টারে জন্য তৈল গ্রহণ (ফুয়েলিং) এবং দেশের প্রায় যে কোন জায়গায় সিভিল ডিফেন্স কার্যক্রম ইত্যাদি হলো জাহাজটির প্রধান ভূমিকাগুলোর মধ্যে অন্যতম। এছাড়াও, সন্ত্রাসী কার্যক্রমের জবাব ও প্রতিরোধ, পুলিশ ও কাস্টম সংক্রান্ত বিভিন্ন অপারেশনে জড়িত হওয়া এবং বিভিন্ন উদ্ধার কার্যে সহায়তা করা এই জাহাজের অন্যতম দায়িত্ব। বোলার্ড পুলে আইসল্যান্ডের অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং উপকূলীয় জলে অনেক পরিমাণ যাত্রী এবং জাহাজি মাল পরিবহনের দায়িত্ব।

নির্মাণ[সম্পাদনা]

জাহাজ নির্মাণের জন্য দরপত্র আবেদন এবং জমার জন্য রাজ্য ট্রেডিং সেন্টারে খোলা ছিল। এসটিসি দ্বারা প্রক্রিয়াকরণের পরে ১২ টি দেশ থেকে ১৫ টি দরপত্র গ্রহণ করা হয়। জয়ী দরপত্রটি ছিলো এএসএমএআর এর দ্বিতীয় দরপত্র, যা চিলির বৃহত্তম জাহাজনির্মাণ প্রতিষ্ঠান। ২০০৬ সালের ২০ ডিসেম্বরে নতুন জাহাজটির নির্মাণ চুক্তি বিহর্ন, আর্নি এম. ম্যাথিএসেন, আর্থিক সংস্থান সংক্রান্ত মন্ত্রী, জর্জ ক্র. লারাউসন (আইসিজি এর পরিচালক), কার্লস ফান্টা ডি লা ভেগা (চিলি নৌ বাহিনীর রিয়ার এডমিরাল) এবং এএসএমএআর নৌ শিপইয়ার্ডের পরিচালক দ্বারা স্বাক্ষরিত হয়। নির্মাণ শুরু হয় ২০০৭ সালের ১৬ অক্টোবর থেকে। জাহাজটি ২০০৯ সালের ২৯ এপ্রিলে এএসএমএআর নৌ শিপইয়ার্ডের তালকাহুনোতে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে চালু হয়। পড়ে জাহাজটির সরকারি নামকরণ করা হয় থর (দেবতা থরের নামানুসারে)।[২]

নকশা[সম্পাদনা]

আইসিজিভি থর এর নকশা নোসিজিভি হাস্টার্ডের একইসাথে করা হয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে দুইটি জাহাজের নকশাই রোলস পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির দ্বারা প্রস্তুতকৃত। জাহাজটি দুইটি রোলস রয়েস সামুদ্রিক বার্গেন ডিজেল ইঞ্জিন দ্বারা চালিত। জাহাজটি দুইটি রোলস রয়েস মেরিন কামিওয়া উলস্টিন পক্ষোদ্গম পালক (প্রোপেলার) দ্বারা চালিত হয়। জাহাজটি সার্বিকভাবে ৯৩.৮ মিটার (৩০৮ ফুট) দীর্ঘ, ১৬ মিটার (৫২ ফুট) প্রশস্ত, এবং এটির উচ্চতা ৩০ মিটার (৯৮ ফুট)। জাহাজটির সর্বোচ্চ গতি ১৯.৫ নট (প্রতি ঘণ্টায় ২২.৪ মাইল প্রতি ঘণ্টায় ৩৬.১ কিলোমিটার), এটির গুণ ক্ষমতা, বা জেটিতে দড়ি টান যখন ১২০ টন (১২০ দীর্ঘ টন; ১৩০ সংক্ষিপ্ত টন) হয়। কার্গো ডেক ৩০০ বর্গ মিটার জুড়ে (৩,২০০ বর্গ ফুট)। জাহাজটিতে জীবন রক্ষাকারী বিভিন্ন যন্ত্রপাতি আছে। দুইটি এমওবি নৌকা এবং ছয়টি ভাইকিং জীবন রক্ষাকারী ভেলা তার মধ্যে অন্যতম। অন্যান্য বিশেশভাবে নকশাকৃত যন্ত্রপাতির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো - তেল বুম, ১ × ৪০এমএম বোফর্স বন্দুক, এবং তেল উকড়ি (স্কিমার)।[৩]

২০১০ সালের সুনামি[সম্পাদনা]

জাহাজটি রেইকিয়াভিকে পৌছাচ্ছে

২০১০ সালে একটি ৮.৮ মাত্রার ভুমিকম্প চিলিতে আঘাত হানে, যার ফলে একটি চিলির সমুদ্র উপকূলে একটি ভয়াবহ সুনামির সৃষ্টি হয়। তখন ধারণা করা হয়েছিলো এই ভয়াবহ দুর্যোগের পর আইসিজিভি থরকে মেরামত করা সম্ভব নয়, কারণ দুর্যোগের পর পুরো শিপইয়ার্ডই মারাত্বক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। তবুও অলৌকিকভাবে জাহাজটিতে সামান্য ক্ষতি হয়। শুকনো ডকে স্থানান্তরিত করে ছোটোখাটো মেরামতের পর এক বছরের কিছু বেশি সময় পড়ে জাহাজটিকে হস্তান্তর করা হয়।[২]

হস্তান্তর[সম্পাদনা]

ভূমিকম্প এবং সুনামির পরে আইসিজিভি থরকে পুরোপুরি মেরামতের পর জাহাজটিকে ২০১১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বরে এএসএমআর শিপইয়ার্ডে আইসিজি কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করা হয়। জাহাজটি তারপর রেইকিয়াভিকের পোতাশ্রয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে এবং সেই বছরের অক্টোবরের শেষেরদিকে পৌছায়। হালিফ্যাক্স এবং কয়েকটি শহরে বিরতি নেয়ার পরে ২০১১ সালের ২৭ অক্টোবরে রেইকিয়াভিকে পৌছায়। জাহাজটিতে ৪৮ জন কর্মি রয়েছেন।[২]

২০১৫ সালের ১১ জুনে থর রেইকিয়াভিকে ক্রুযেনশটার্ন দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

চিত্রশালা[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Frumvarp til laga um Stjórnarráð Íslands." [Bill regarding the Cabinet of Iceland.] (পিডিএফ)Legal Code (Icelandic ভাষায়)। Parliament of Iceland। সংগ্রহের তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০১২ 
  2. The Coastguard Vessel ÞÓR (PDF).
  3. IGCV R multipurpose vessel (PDF).

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

  • উইকিমিডিয়া কমন্সে ICGV Þór সম্পর্কিত মিডিয়া দেখুন।