সিঙ্গাপুরের লাল প্রতীক চিহ্ন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
পতাকার অনুপাত ১:২।

সিংগাপুরের লাল প্রতীকচিহ্ন  একটি বেসামরিক প্রতীকচিহ্ন, যা সিংগাপুরে নিবন্ধিত ব্যক্তিগত মালিকানার বেসামরিক জাহাজে ব্যবহৃত হয়। প্রতীকচিহ্নের সামগ্রিক নকশা জাতীয় পতাকার পরিবর্তিত রূপ, এখানে পতাকাটির দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি করে দৈর্ঘ্য এবং প্রস্থের অনুপাত ২ঃ১ করা হয়েছে। ১৯৬৬ সালের আইন অনুসারে প্রতীকচিহ্নটি প্রস্তুত করা হয়। এই পতাকার ব্যবহার সিঙ্গাপুরের সমুদ্র ও বন্দর কর্তৃপক্ষ  ম্যারিটাইম এন্ড পোর্ট অথরিটি অব সিঙ্গাপুর (এমপিএ) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এমপিএ এর মতে লাল চিহ্নটি, সিঙ্গাপুরের পতাকাবাহী বেসামরিক জাহাজে ব্যবহার করা একমাত্র প্রতীক এবং এটির বিকল্প হিসেবে জাতীয় পতাকার ব্যবহার গ্রহণযোগ্য নয়। বন্দরে যাতায়াতকারী সিংগাপুরের নিজস্ব সকল জাহাজে প্রতীক চিহ্নটি অবশ্যই উত্তোলিত রাখতে হবে।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

মালয়েশিয়া থেকে স্বাধীনতা প্রাপ্তির একবছর পরে ১৯৬৬ সালের ৬ই সেপ্টেম্বর সিংগাপুরের উপপ্রধানমন্ত্রী সংসদে সিঙ্গাপুর মার্চেন্ট মেরিন এনসাইন এন্ড নাম্বারড মিসেলিনিয়াস ৫, ১৯৬৬ সাল নামে একটি নথি উত্থাপন করেন। নথি অনুযায়ী সিংগাপুরে নিবন্ধিত জাহাজে ব্যবহারের জন্য একটি প্রতিকচিহ্ন প্রস্তুত করা হয়, যা সেসময় থেকে আজ পর্যন্ত ব্যবহার হয়ে আসছে।

নকশা[সম্পাদনা]

পার্লামেন্টারি পেপার মিসেলিনিয়াস ৫, ১৯৬৬, অনুসারে প্রতীকচিহ্নের পটভূমি লাল, সাথে দৈর্ঘ্য এর প্রস্থের অনুপাতে দ্বিগুণ। অন্যদিকে, সিঙ্গাপুরের জাতীয় পতাকার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের অনুপাত ৩:২ ।[১] পতাকাটির মাঝে সাদা রঙের একটি অর্ধচন্দ্র এবং পাঁচটি তারকা রয়েছে যেগুলো একটি সাদা বলয় দ্বারা আবৃত। তারকাগুলো মাঝখানে সজ্জিত হয়ে একটি পঞ্চভূজ আকৃতি তৈরি করেছে। চন্দ্রিকা এবং তারা জাতীয় পতাকা থেকে নেয়া হয়েছে, যদিও প্রতীকচিহ্নে চন্দ্রিকাটিকে তারার বামে না রেখে নিচে স্থাপন করা হয়েছে। ১৯৯৯ সালে সিংগাপুরের সমুদ্র ও বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইস্যুকৃত সিঙ্গাপুরের জাহাজের জন্য জাতীয় রং শীর্ষক একটি বিজ্ঞপ্তি মতে, প্রতীকচিহ্নে ব্যবহৃত লাল রং আর জাতীয় পতাকার রং একই।[২]  তথ্য, যোগাযোগ এবং কলা বিষয়ক মন্ত্রণালয় এই লাল রং এর ভিন্নতাকে প্যান্টোন ০৩২ নামে নির্দিষ্টকরণ করেছে।[১]

নির্মাণ তথ্যযুক্ত তালিকা[সম্পাদনা]

এমপিএ ১৯৯৯ সালে তাদের বিজ্ঞপ্তিতে একটি তালিকা প্রকাশ করেছে যেখানে এই পতাকা তৈরির মাপ সম্পর্কে তথ্য প্রদান করা হয়েছে।[২]  তালিকাটি ইঞ্চি ও সেন্টিমিটারের মাপ সংবলিত। পুরো পতাকার মাপ হলো ৩৬X৭২ ইঞ্চি (৯১.৪৪X১৮২.৮৮ সে.মি.)। পতাকার উপরিভাগ এবং বলয়ের উপরিভাগ এর দূরত্ব এবং পতাকার নিচের ভাগ এবং বলয়ের নিচের ভাগ এর দূরত্ব ৯.৭ ইঞ্চি (২৪.৬৪ সে.মি.)। বলয়ের বাইরের দিকের ব্যাস হচ্ছে ১৬.৬ ইঞ্চি (৪২.১৬ সে.মি.), এবং বলয়ের পুরুত্ব হচ্ছে ০.৯৫ ইঞ্চি (২.৪১ সে.মি.) । চন্দ্রিকার বাইরের দিকের তলের ব্যাসার্ধ ৫.৪৫ ইঞ্চি (১৩.৮৪সে.মি.)। প্রতিটি তারকাকে ৩.২ ইঞ্চি (১৩.৮৪ সে.মি.) ব্যাসের বৃত্তের মধ্যে সংযুক্ত করা যায় এবং তারকাগুলোর কেন্দ্র ৭২° কোণে আলাদা হয়ে একটি কল্পিত বৃত্তের পরিধি বরাবর সজ্জিত রয়েছে যেটির ব্যাসার্ধ ৩.২৫ ইঞ্চি (৮.১৩ সে.মি.)। কল্পিত বৃত্তের কেন্দ্র চন্দ্রিকার ভেতরের দিকের সর্বনিম্ন বিন্দু হতে ৬.৪ইঞ্চি (১৬.২৬ সে.মি.) দূরত্বে অবস্থিত।[৩] 

বিধিমালা[সম্পাদনা]

লাল প্রতীকচিহ্নের সামনে একটি নৌকার ক্রু রা দাড়ান অবস্থায়

১৯৯৫ সালের মার্চেন্ট শিপিং আইনের ৩৬(১) ধারা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীকে সিঙ্গাপুরের জাহাজের জন্য প্রতীকচিহ্ন প্রবর্তনের ক্ষমতা দেয়, যা হবে "সিঙ্গাপুরের জাহাজের জন্য যথাযথ রং"।[৪] ৩৬(২) ধারা নির্দেশ করে সিংগাপুরের জাহাজে মন্ত্রীর অনুমতি ব্যতীত লাল প্রতিকচিহ্নের বিপরীতে অন্য কোন ''নির্দিষ্ট রং'' ব্যবহার করলে জাহাজের নাবিক, জাহাজের মালিক অথবা যিনি জাহাজে থাকবেন এমন সদস্যকে ১,০০০ S$ জরিমানা করা হবে। ধারা ৩৭ নির্দেশ করে, যদি বন্দরে আসা এবং বন্দর ত্যাগকারী কোন সিঙ্গাপুরের জাহাজ লাল প্রতীকচিহ্নের পতাকা তুলতে ব্যর্থ হয় তাহলে জাহাজের প্রধানকে ১,০০০ S$ জরিমানা করা হবে।[৪]

এমপিএ ১৯৯৯ সালে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সিংগাপুরের জাহাজের মালিক, জাহাজের প্রধান এবং কর্মকর্তাদের মার্চেন্ট শিপিং আইনের ধারা ৩৬ও৩৭ এর বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে। নির্দিষ্টভাবে ৩ নম্বর অনুচ্ছেদে উল্ল্যেখ রয়েছে যে "লাল প্রতীকচিহ্নের পতাকার বিকল্প হিসেবে জাতীয় পতাকা গ্রহণযোগ্য নয়"।[২]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1.  .
  2.  .
  3.   .
  4. Merchant Shipping Act (Cap. 179, 1996 Rev.[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]