আডলফ হিটলারের যৌনজীবন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বারঘোফে কুকুরের সাথে আডলফ হিটলার এবং ইভা ব্রাউন
আডলফ হিটলারের যৌনজীবন নিয়ে দীর্ঘদিন ইতিহাসবিদ এবং পণ্ডিতদের মধ্যে বিতর্ক চলছে। প্রমাণ পাওয়া গেছে, পুরো জীবনে কিছু সংখ্যক মেয়ের সাথে তার রোমান্টিক সম্পর্ক ছিল। সমকামিতার প্রতি তার বিদ্বেষ দেখা গেছে। তাকে অনেকে সমকামী হিসেবে অভিযুক্ত করলেও, তিনি যে সমকামিতায় আসক্ত ছিলেন এমন কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না। তার নামের সাথে অনেক মেয়ের নাম যুক্ত হয়েছে, যাদের মধ্যে দুজন আত্মহত্যা করেছে, একজন আত্মহত্যা চেষ্টার ৮ বছর পর মারা গিয়েছে এবং আরেকজন আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছে। 
হিটলারকে সবাই জানত ঘরোয়া জীবনহীন একজন চিরকুমার মানুষ, যিনি তার পুরো জীবন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ও রাষ্ট্রের জন্য উৎসর্গ করেছেন।  ইভা ব্রাউনের সাথে তার ১৪ বছরের প্রেমের সম্পর্ক বাইরের এবং ভেতরের কেউ তেমন জানত না। ব্রাউনের জীবনীলেখক হেইকে গোরটেমা উল্লেখ করেছেন যে, এই জুটি স্বাভাবিক যৌন জীবন উপভোগ করত। হিটলার এবং ব্রাউন ১৯৪৫ এ এপ্রিলের শেষ দিকে বিয়ে করেছিলেন এবং আত্মহত্যার পূর্বে ৪০ ঘণ্টারও কম সময় তারা একসাথে ছিলেন। 
এলিস কর্তৃক যুদ্ধের সময়ের দুইটি প্রতিবেদনে হিটলারকে মানসিকভাবে বিশ্লেষণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। ১৯৪৩ সালে ওয়াল্টার সি ল্যাঙ্গার, দি আমেরিকান অফিস অব স্ট্র্যাটিজিক সার্ভিসের এক প্রতিবেদনে বলেন, হিটলারের অবদমিত সমকাম প্রবণতা ছিল এবং আরো বলেন, হিটলার পুরুষত্বহীন কর্পোহিল ছিলেন।  হেনরি মুররে এবং নাৎসি পার্টি বিরোধী অট্টো স্ট্রেসার আলাদা আলাদা প্রতিবেদনে একই মত দেন। ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ স্যার ইয়ান কারশাও স্ট্রেসারের মতকে  "হিটলার বিরোধী প্রোপাগান্ডা" হিসেবে উল্লেখ করেন। [১]
হিটলারের মৃত্যুর পর বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, তার যৌনতার প্রকার নিয়ে নানারকম মত আছে। অনেক বলেন যে তিনি সমকামী, অনেকে উভকামী আবার অনেকে বলেন তিনি সম্পূর্ণ যৌন নিস্ক্রিয়। তবে কোনটারই কোন প্রমাণ নেই। বেশিরভাগ ইতিহাসবিদ বিশ্বাস করেন যে, তিনি একজন বিপরীতকামীজিন মেরি লরেট নামে তার এক অবৈধ সন্তান আছে বলে একটা অভিযোগ আছে। মূল্ধারার ইতিহাসবিদেরা যেমন, ইয়ান কারশাও এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেন। [২]

ঐতিহাসিক তথ্য[সম্পাদনা]

হিটলারের যৌনজীবন নিয়ে নানা ধরনের গুজব আর জল্পনা-কল্পনা আছে, সেগুলোর অনেকগুলোই আবার রাজনৈতিক শত্রুদের দ্বারা মশলাযুক্ত হয়েছে। [৩] যেখানে হিটলারের কাছাঁকাছি অনেকেই তার যৌন পছন্দ সম্পর্কে জানতেন, কিন্তু তার যৌনতা নিয়ে চূড়ান্ত কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না। হিটলারের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে যা প্রমাণ পাওয়া যায়, তার প্রায় সবগুলোই তার আশেপাশের লোকজনের কাছে পাওয়া। আশেপাশের এসব লোকজনের মধ্যে আছেন তার সহকারী, তার সেক্রেটারি অ্যালবার্ট স্পিয়ার, রিচার্ড ওয়াগ্নার পরিবার ইত্যাদি। প্রমাণ আছে, পুরো জীবনে কিছু সংখ্যক মেয়ের সাথে তার রোমান্টিক সম্পর্ক ছিল এবং একই সাথে  সমকামিতার প্রতি তার বিদ্বেষ দেখা গেছে। তিনি সমকামিতায় আসক্ত ছিলেন, এমন কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না। [৪][৫][৬] ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ স্যার ইয়ান কারশাও বর্ণনা করেন যে, ভিয়েনার একজন যুবক হয়ে হিটলার নিজেকে সমকামিতা ও পতিতাবৃত্তিসহ যেকোণ ধরনের যৌন কর্মকাণ্ড থেকে নিজেকে নীরস্ত রাখেন। সে আসলে যৌনতার মাধ্যমে ছড়ানো রোগগুলোর ভয় পেতেন । .[৭]

হারমান রাউশনিং অভিযোগ করেন যে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কোর্ট মার্শালর বিষয়ে মিলিটারে রেকর্ডে একটা অনুচ্ছেদে দেখা যায় এক অফিসারের সাথে হিটলারের গোপন সমকাম সম্পর্ক ছিল। রাউশনিং আরো অভিযোগ করেন যে, মিউনিখে অনুচ্ছেদ ১৭৫ এর ভাঙ্গার অপরাধে হিটলার অপরাধী ছিলেন, যা সমকামের সাথে সম্পর্কযুক্ত। তবে কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি অভিযোগগুলোর। .[৮]

হিটলার যুবকথাকা অবস্থায় কিছু সাময়িক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। সে তার চেয়ে ১৯ বছরের ছোট এক দুঃসম্পর্কের ভাগ্নি গেলি রাউবালের সাথে গভীরসম্পর্কে যুক্ত ছিলেন। ১৯২৫ সালে মেয়েটির মা হিটলারের গৃহকর্মী হিসেবে নিযুক্ত হলে সে হিটলারের বাসায় থাকা শুরু করে। যদিও সম্পর্কের আসল প্রকৃতি এবং ব্যাপ্তি সম্পর্কে অনেককিছু অজানা হলেও, কারশাও এটাকে সুপ্ত যৌন নির্ভরতা হিসেবে অভিহিত করেন।[৯] সমসাময়িককালে গুজব ছিল যে, তাদের মধ্যে রোমান্টিক সম্পর্ক আছে। ১৯৩১ এর সেপ্টেম্বরে গেলি হিটলারের বন্দুক দিয়ে মিউনিখের সেই এপার্টমেন্টে আত্মহত্যা করে। এ ঘটনায় হিটলার গভীর ব্যথা পেয়েছিলেন।[১০] মিউনিখের প্রথম দিনগুলোতে হিটলারের আশেপাশের মানুষের মধ্যে একজন আর্নেস্ট হানফসটায়েঙ্গি লেখেন যে, "আমার মনে হয়, হিটলার এমন একটা মানুষ ছিল যে মাছও নন, মাংসও নন আবার পাখিও নন। যে পুরো সমকামীও নন আবার পুরো বিপরীতকামীও নন। আমি তাকে নপুংসক হস্তমৈথুন বিরত মানুষ বলে অভিযুক্ত করেছিলাম।"[১১] এছাড়া, হানফসটায়েঙ্গি হিটলারকে বিপরীতকামীতা নিয়ে অভিযুক্ত করেন যে, হিটলার ও আমেরিকান এম্বাসেডরের মেয়ে মার্থা ডডের সাথে রোমান্টিক সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। [১২] তার মতে, ফিল্মমেকার লেনি রিফেনস্টাহি হিটলারের সাথে সম্পর্ক করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু হিটলার মেয়েটিকে প্রত্যাখ্যান করেন।[১৩]

হিটলারের সময়ে সমকামীদের নির্যাতন করা হত। প্রায় ৫০০০ থেকে ১৫০০০ সমকামীকে পাঠানো হয়েছিল কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে, যাদের মধ্যে ২৫০০ থেকে ৭৫০০ জন মারা যায়।[১৪] নাইট অফ দি লং নাইভস (১৯৩৪) এর পরে হিটলার আর্ন্সট রুহম এবং অন্যান্য এসএ নেতার সমকামিতাকে নিতিভ্রষ্টতা এবং ব্যভিচার হিসেবে ব্যাখ্যা দেন।[১৫] ১৯৪১ এর আগস্টে হিটলার ঘোষণা দেন যে, সমকামিতা প্লেগের মত সংক্রামক ও বিপজ্জনক "[১৬] এবং হেইন্রিখ হিমম্লারের মিলিটারি ও এসএস থেকে সমকামী সরানোর উদ্যোগ সমর্থন করেন। ছেলেদের সমকামিতা ছিল অবৈধ এবং দোষীদের সরাসরি জেল অথবা কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে পাঠানো হত।[১৭]

হিটলার জনগণের কাছে গৃহজীবন ছাড়া একজন চিরকুমার হিসেবে পরিচিত ছিলেন, যে তার জীবনকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ও রাষ্ট্রের জন্য উৎসর্গ করেছেন।[১৮][১৯] তিনি ক্ষমতার কারণে মেয়েদের কাছে নিজেকে আকর্ষনীয় মনে করতেন।.[২০] হিটলারের বন্ধু অ্যালবার্ট স্পিয়ার তার একটা পছন্দের কথা বলেন যে, সে কম বুদ্ধিমান মেয়দের সময় কাটাতে ভালোবাসে যেসব মেয়ে তাকে কিছু জিজ্ঞেস করবে না।[২০] কারশাও ধারণা করেন যে, হিটলার সেইসব যুবতী মেয়েদের পছন্দ করতেন যাদের খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণ এবং কর্তৃত্ব ফলানো যায়। তিনি উল্লেখ করেন যে, হিটলারের মেয়ে সহযোগীদের মধ্যে কমপক্ষে ৩ জন (ইভা ব্রাউন, গেলি রাউবাল এবং মারিয়া রেইটার) ছিল তার থেকে অনেক বেশি কম বয়সের। ব্রাউন তার থেকে ২৩ বছরের ছোট ছিলেন, রাউবাল ছিলেন ১৯ বছরের ছোট এবং রেইটার ছিলেন ২১ বছরের ছোট।[২১]

ইভা ব্রাউনের সাথে তার ১৪ বছরের প্রেমের সম্পর্ক বাইরে এবং ভেতরের কেউ জানত না।[২২] আশেপাশের সবার মাঝে তিনি ব্রাউনকে নিয়ে খোলামেলা ছিলেন। বারচটেনসগাডেন এ তারা জুটি হিসেবে বাস করতেন। হিটলারের ভৃত্য হেইঞ্জ লিঞ্জ জানান, হিটলার আর ব্রাউনের আলাদা আলাদা শোবার ঘর এবং বাথরুম ছিল। তাদের শোবার ঘরের মাঝে একটা দরজা ছিল। সন্ধ্যার পর থেকে ঘুমানোর আগে পর্যন্ত শুধুমাত্র তারা দুজন একসাথে পড়তেন। ব্রাউন ড্রেসিং গাউন কিংবা হাউজ কোট পরতেন এবং ওয়াইন পান করতেন আর হিটলার চা ।[২৩]  ব্রাউনের জীবনীলেখক হেইকে গোরটেমা উল্লেখ করেছেন যে, এই জুটির স্বাভাবিক যৌন জীবন উপভোগ করত।[২৪] ব্রাউনের বন্ধু এবং আত্মীয়রা ১৯৩৮ এ ফটোগ্রাফার নেভিলি চেম্বারলিনের তোলা মিউনিখে হিটলারের ফ্ল্যাটের সোফায় তার বসা ছবি দেখে হাসাহাসি করত এবং বলতে, "কি হয়েছে সেটা সেই জানে আর সোফা জানে" [২৫]

হিটলারের চিঠি প্রমাণ করে যে, হিটলার ব্রাউনকে পছন্দ করতেন এবং খেলা বা অন্য কারণে চায়ের টেবিলে দেরী হলে চিন্তিত হতেন।[২৬] তার ব্যক্তিগত সচিব ট্রাউডল জাঙ্গে বলেছেন যে, যুদ্ধের সময় হিটলার এবং ব্রাউন নিয়মিত কথা বলতেন। ব্রাউন যখন মিউনিখে তার থেকে দূরে ছিলেন, তখন তিনি তার নিরাপত্তার ব্যাপারে অবগত ছিলেন এবং ব্রাউনকে নিজের কাছে নিয়ে আসেন।[২৭] জাঙ্গে একদিন তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, কেন তিনি বিয়ে করেননি। হিটলার উত্তর দিয়েছিলেন যে, "আমি আসলে বউকে বেশি সময় দিতে পারব না।"[২৭] হিটলার আরো বলেছিল যে, সে সন্তান চায় না। কারণ, "খুব কঠিন সময়। কারণ সন্তানরা তার বিখ্যাত বাবা মায়ের মত বিখ্যাত হওয়ার মত ক্ষমতা আছে বলে ধরে নেওয়া হয় এবং সন্তানরা যদি মাঝারি হয় তাহলে মেনে নেওয়া যায় না।"[২৭] হিটলার এবং ব্রাউন ১৯৪৫ এ এপ্রিলের শেষ দিকে বিয়ে করেছিলেন এবং আত্মহত্যার পূর্ব পর্যন্ত ৪০ ঘণ্টারও কম সময় একসাথে ছিলেন।[২৮]

ল্যাঙ্গার এবং মুরের যুদ্ধকালীন প্রতিবেদন[সম্পাদনা]

১৯৪৩ সালে, দি আমেরিকান অফিস অব স্ট্র্যাটিজিক সার্ভিস (OSS) ওয়াল্টার সি ল্যাঙ্গার কর্তৃক এ সাইকোলোজিক্যাল এনালাইসিস অফ এডলফ হিটলার: হিস লাইফ এন্ড লিজেন্ড নামে একটা প্রতিবেদন পায় এবং হিটলারের মতো একনায়ককে বুঝতে এলিস কে অর্থ দিয়ে সাহায্য করেন।[২৯] এই প্রতিবেদন পরবর্তিতে দি মাইন্ড অব এডলফ হিটলারঃ দি সিক্রেট ওয়ারটাইম রিপোর্ট(১৯৭২) শিরোনামে বইয়ে রূপান্তর করা হয়।[৩০] এখানে বলা হয় যে, হিটলারের অবদমিত সমকাম প্রবণতা ছিল[৩১] এবং আরো বলেন, হিটলার পুরুষত্বহীন কর্পোহিল ছিলেন।[৩২] হেনরি মুরে ১৯৪৩ সালে এনালাইসিস অব দি পারসোনালিটি অব এডলফ হিটলারঃ উইদ প্রেডিকশনস অফ হিজ ফিউচার বিহ্যাভিওর এন্ড সাজেশনস ফর ডিলিং উইদ হিম নাউ এন্ড আফটার জার্মানি'স সারেন্ডার শিরোনামে আরেকটা প্রতিবেদনে একই রকম তথ্য দেন।[৩৩] তার বর্ণনায় হিটলারকে একজন সিজোফ্রেনিক হিসেবে উল্লেখ কয়া হয়।[৩৪] হিটলারের বিরোধী অট্টো স্ট্রেসার OSS কে বলেন, এই নাৎসি একনায়ক গেলি রাউবালকে তার উপরে প্রসাব এবং পায়খানা করতে বলপ্রয়োগ করেন।[৩৫] কারশাও স্ট্রেসারের এই বর্ণনাকে হিটলার বিরোধী প্রোপাগান্ডা হিসেবে আখ্যা দেন। [১]

একজন নগ্ন নারী, এঁকেছেন হিটলার

সাম্প্রতিক অভিযোগসমূহ[সম্পাদনা]

হিটলারের মৃত্যুর পর বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, তার যৌনতার প্রকার নিয়ে নানারকম মত আছে। অনেকে বলে সে সমকামী, অনেকে উভকামী আবার অনেকে বলে তার মধ্যে যৌন অণুভুতিই নেই। তবে কোনটারই কোন প্রমাণ নেই। .[৯]

১৯৯৫ সালে স্কট লাইভ্লি এবং কেভিন আব্রাহামের লেখা দি পিঙ্ক স্বস্তিকা বইয়ে উল্লেখ করা হয় যে, নাৎসি পার্টির উপরের সারির নেতাদের বেশিরভাগ নেতা সমকামী ছিল এবং সেই সমকামীরা দুর্ধর্ষ এবং বিপজ্জনক ছিল। প্রধান ধারার ইতিহাসবিদেরা ওই বইটিতে তথ্য বিকৃতির জন্য সমলোচনা করেন।[৩৬][৩৭] সাউদার্ণ পোভার্টি ল সেন্টারের লেখক বব মোজার বলেন, বইটি সমকামবিরোধী গ্রুপের দ্বারা প্রচারিত হয়েছিল এবং ইতিহাসবিদরা একমত হয়েছেন যে, বইটির তথ্য ডাহা মিথ্যা।[৩৮]

ইউনিভার্সিটি অব ম্যাচাচুয়েটস লোয়েলের জ্যাক নাউসান পোর্টার ১৯৮৮ সালে লেখেনঃ "হিটলার কি সমকামীদের ঘৃণা করতেন? সেকি নিজে তার সমকামীতার জন্য লজ্জিত ছিলেন? এসবই আমাদের জানার সীমানার বাইরে। আমার মতে, সাধারণ চোখে তিনি পুরো যৌন উদাসীন একজন ব্যক্তি এবং আসলে তিনি একজন উদ্ভট যৌন ফেটিশধারী ব্যক্তি।"[৩৯]

ইতিহাসবিদ লোথার ম্যাচটান দি হিডেন হিটলার (২০০১) এ হিটলারের সমকামিতা নিয়ে বিতর্ক করেন। বইটিতে ভিয়েনায় হিটলারের যুবক বন্ধুদের সাথে অভিজ্ঞতা নিয়ে ধারণা করা হয়, তার প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় সম্পর্ক ছিল রূহম, হানফসটাএংল এবং এমিল মাউরাইসে সঙ্গে এবং বইটিতে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে হিটলারের সহযোগী হ্যান্স মেন্ডের ১৯২০ এর দশকের প্রথম দিকে মিউনিখ পুলিশের কাছে অভিযোগগুলোর বিশ্লেষণ নিয়ে "এ স্টাডি অব মেন্ড প্রোটকল" সিরিজ অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আমেরিকান সাংবাদিক রন রোজেনবাউম মাচটানের কাজের খুব সমলোচনা করেন এবং বলেন যে, "প্রমাণ এতই কম যে, সেটা প্রমাণ বলার যোগ্যতাই রাখে না।"[৪০] বেশিরভাগ পণ্ডিত মাচটারনের অভিযোগ উড়িয়ে দেন এবং বিশ্বাস করেন যে, হিটলার বিপরীতকামী।[৪] ২০০৪ সালে, এইচবিও মাচটানের তত্ত্বের উপর হিডেন ফাহরারঃ ডিবেটিং দি এনিগ্মা অব হিটলারস সেক্সুয়ালিটি শিরোনামে একটি তথ্যচিত্র প্রকাশ করে।

সম্ভ্যাব্য সম্পর্কসমূহ[সম্পাদনা]

ইভা ব্রাউন ছাড়াও কিছু মেয়ের সাথে হিটলারের রোমান্টিক সম্পর্কের যোগসূত্র পাওয়া গেছে।

নাম জীবনকাল মৃত্যুর সময় বয়স মৃত্যুর কারণ হিটলারের সাথে যোগাযোগ সম্পর্ক তথ্যসূত্র
স্টেফানি র‍্যাবাশ অজানা অজানা ১৯০৫ কিশোর প্রেম [৪১][৪২]
ক্যারোলেট লবজয় ১৮৫৮-১৯৫১ ৫৩ ১৯১৭ প্রেমিকা হিসেবে অভিযোগ পাওয়া যায় এবং তার ছেলে জিন ম্যারি লরেট হিটলারের অবৈধ সন্তান এ ব্যাপারেও অভিযোগ আছে। [৪৩] বেশিরভাগ মত এবং এন্টন জোছিমস্থ্যালার[৪৪], বেলিজিয়ান সাংবাদিক জিন পল মুল্ডারস,[৪৫] এবং স্যার ইয়ান,[২] কারশাও এর ধারণা অনুযায়ী, হিটলারের এই পিতৃত্ব অসম্ভব।
এনা হামস্টাঙ্গেল ১৮৮৫-১৯৮১ ৯৬ স্বাভাবিক ১৯২০ এর দশক প্রেমের গুজব শোনা যায় [৪৬]
মারিয়া রেইটার ২৩ শে ডিসেম্বর, ১৯১১-১৯৯২ ৮১ স্বাভাবিক( ১৯২৮ সালে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন) ১৯২৫ সম্ভবত প্রেমিকা [৪৭][৪৮][৪৯]
গেলি রুইবাল ৪ই জুন, ১৯০৮ - ১৮ই সেপ্টেম্বর, ১৯৩১ ২৩ আত্মহত্যা ১৯২৫ থেকে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত হিটলারের সাথে ছিলেন দুঃসম্পর্কের ভাতিজি, প্রেমিকা হিসেবে ধারণা করা হয় [৫০][৫১]
ইভা ব্রাউন ৬ই ফেব্রুয়ারি, ১৯১২ - ৩০এ এপ্রিল, ১৯৪৫ ৩৩ হিটলারের সাথে আত্মহত্যা ১৯২৯ এর বসন্তে দীর্ঘদিনের সঙ্গী এবং পরবর্তীতে স্ত্রী [৫২]
উনিটি মিরফোল্ড ৮ই আগস্ট ১৯১৪ - ২৮শে মে, ১৯৪৮ ৩৩ জার্মানীর সাথে ব্রিটেন যুদ্ধঘোষণা করলে উন্মাদ্গ্রস্থ হয়ে যান এবং আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এই কারণে ৯ বছর পরে মারা যান।[৫৩] ১৯৩৪ বন্ধু এবং প্রেমিকা হিসেবে ধারণা করা হয় [৫৪]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

উদ্ধৃতি[সম্পাদনা]

  1. Kershaw 2008, পৃ. 219।
  2. Kershaw 2001, পৃ. 635।
  3. Kershaw 2008, পৃ. 23–24, 219।
  4. Nagorski 2012, পৃ. 81।
  5. Kershaw 2008, পৃ. 22–23, 219।
  6. Joachimsthaler 1999, পৃ. 264।
  7. Kershaw 2008, পৃ. 23–24।
  8. Langer 1972, পৃ. 137–138।
  9. Kershaw 2008, পৃ. 218–219।
  10. Bullock 1999, পৃ. 393–394।
  11. Hanfstaengl 1957, পৃ. 123।
  12. Larson 2011, পৃ. 160–162।
  13. Bach 2007, পৃ. 92।
  14. Evans 2005, পৃ. 534।
  15. Kershaw 2008, পৃ. 315।
  16. Evans 2008, পৃ. 535।
  17. Evans 2008, পৃ. 535–536।
  18. Shirer 1960, পৃ. 130।
  19. Bullock 1999, পৃ. 563।
  20. Speer 1971, পৃ. 138।
  21. Kershaw 2001, পৃ. 284।
  22. Kershaw 2008, পৃ. 219, 378, 947।
  23. Linge 2009, পৃ. 39।
  24. Görtemaker 2011, পৃ. 168–171।
  25. Connolly 2010
  26. Speer 1971, পৃ. 139।
  27. Galante ও Silianoff 1989, পৃ. 96।
  28. Beevor 2002, পৃ. 342–344, 359।
  29. Langer 1943, পৃ. 2
  30. Langer 1972
  31. Langer 1943, পৃ. 196
  32. Langer 1943, পৃ. 138
  33. Murray 1943
  34. Vernon 1942
  35. Rosenbaum 1998, পৃ. 134।
  36. Jensen 2002
  37. Mueller 1994
  38. Moser 2005
  39. Porter 1998
  40. Rosenbaum 2001
  41. Kubizek 2011, পৃ. 67।
  42. Kershaw 2008, পৃ. 12–13।
  43. Allen 2012
  44. Joachimsthaler 1989, পৃ. 162–164।
  45. Het Laatste Nieuws 2008
  46. Large 1997, পৃ. 191।
  47. Rosenbaum 1998, পৃ. 111–116।
  48. TIME 29 June 1959
  49. Hamilton 1984, পৃ. 213।
  50. Kershaw 2008, পৃ. 218–222।
  51. Görtemaker 2011, পৃ. 43।
  52. Kershaw 2008, পৃ. 219, 378, 947, 955।
  53. Hamilton 1984, পৃ. 194।
  54. Bright 2002

গ্রন্থপঞ্জি[সম্পাদনা]