কেপলার-৬

স্থানাঙ্ক: আকাশের মানচিত্র ১৯ ৪৭মি ২০.৯সে, +৪৮° ১৪′ ২৩.৮″
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কেপলার-৬
পর্যবেক্ষণ তথ্য
ইপক J2000      বিষুব J2000
তারামণ্ডল সিগনাস
বিষুবাংশ  ১৯ ৪৭মি ২০.৯সে
বিষুবলম্ব +৪৮° ১৪′ ২৩.৮″
আপাত  মান (V) ১৩.৮
বিবরণ
ভর১.২০৯ M
ব্যাসার্ধ১.৩৯১ R
তাপমাত্রা৫৬৪৭ K
বয়স৩.৮ Gyr
অন্যান্য বিবরণ

কেপলার ৬ হল একটি হলুদ দৈত্য যা সিগনাস নক্ষত্রমণ্ডলের মধ্যে অবস্থিত। নক্ষত্রটি কেপলার মিশনের দৃষ্টিক্ষেত্রর মধ্যে পরে যা নাসা নেতৃত্বাধীন পৃথিবী সদৃশ গ্রহ আবিষ্কার অভিযানে আবিষ্কৃত হয়। নক্ষত্রটি সূর্যের তুলনায় আয়তনে সামান্য বড়, সামান্য ঠান্ডা ও ধাতু-সমৃদ্ধ এবং সূর্যের চেয়ে বেশি ভর সমৃদ্ধ। নক্ষত্রটিকে কেপলার-৬বি নামের একটি মাত্র বৃহস্পতি-আকারের বহির্গ্রহ খুব নিকট কক্ষপথ দিয়ে প্রদক্ষিণ করে।

নামকরণ ও ইতিহাস[সম্পাদনা]

কেপলার মিশনে আবিষ্কৃত হওয়ার কারণেই এর নাম হয় কেপলার-৬। পৃথিবী সদৃশ গ্রহ যেখানে গমন করা সম্ভব আবিষ্কারের উদ্দেশ্যে নাসা ২০০৯ সালে এই মিশনটি চালু করে।[১] অন্যান্য তারকাদের মত কেপলার -6 এর কোন সাধারণ এবং চলিত নাম নেই। জানুয়ারি ৪, ২০১০[২] সালে আমেরিকান এস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির ২১৫ তম সভায় কেপলার টিম অন্যনান্য তারকার যেমন কেপলার-৪, কেপলার-৫, কেপলার-৭কেপলার-৮ এর চারপাশের গ্রহের পাশাপাশি গ্রহ কেপলার-৬বি আবিষ্কৃত হওয়ার ঘোষণা দেয়।[৩] এটি কেপলার মহাকাশযানের আবিষ্কৃত তৃতীয় গ্রহ হবে, প্রথম তিনটি গ্রহ কেপলারের তথ্য অনুসারে যাচাই করা হবে যা আগেই আবিষ্ক্রিত হয়েছিল। এই তিনটি গ্রহ কেপলার এর পরিমাপ নির্ভুলতা পরীক্ষা করতে ব্যবহৃত হয়। [৪]

কেপলার-৬ এর আবিষ্কার পর্যায়ক্রমে উক্ত পর্যবেক্ষণ দ্বারা নিশ্চিত করা হয় : টেক্সাসের হবি এবারলি এবং স্মিথ টেলিস্কোপ ; হাওয়াই এর কেক ১ টেলিস্কোপ ; সাউদারন ক্যালিফরনিয়ার হ্যাল এবং শেইন টেলিস্কোপ ; আরিজোনা ডাব্লিউ আই ওয়াই এন (WIYN) , এম এম টি (MMT) ও টিলিঙ্ঘাস্ট টেলিস্কোপ এবং কেনারি দ্বিপের নরডিক অপটিক্যাল টেলিস্কোপ। [৫]

বৈশিষ্ট্য[সম্পাদনা]

কেপলার-৬ হল একটি নক্ষত্র যার ভর আনুমানিক ১.২০৯ Msun অথবা সূর্য ভরের পাঁচ-চতুর্থাংশ। এছাড়াও এটি সূর্যের চেয়ে বড় এবং এর ব্যাসার্ধ ১.৩৯১ Rsun বা সূর্যের সাত-পঞ্চমাংশ। তারকাটির বয়স আনুমানিক ৩.৮ বিলিয়ন বছর এবং এটির কার্যকরি তাপমাত্রা হল ৫৬৪৭ K (৯,৭০৫ °F)।[৬] সূর্যের তাপমাত্রা ৫৭৭৮ k যা তুলনামূলকভাবে কেপলার-৬ এর চেয়ে সামান্য বেশি। [৭] কেপলার-৬ এর ধাতবতা [Fe/H] = +০.৩৪, এটি সূর্যের চেয়ে ২.২ গুন বেশি ধাতুবহুল ।[৪] সাধারনত ধাতু সমৃদ্ধ নক্ষত্র গ্রহমণ্ডল এবং গ্রহ তৈরিতে সহায়ক ।[৮]

তারকাটিকে পৃথিবী থেকে দেখার আপাত মান ১৩.৮ যা তুলনামুল্কভাবে প্লুটোর আপাত মানের চেয়ে কম,[৪] প্লুটোর আপাত মান ১৩.৬৫ যা কেপলার-৬ এর চেয়ে সামান্য উজ্জ্বল।[৯] তারকাটি পৃথিবী থেকে খালি চোখে দেখা যায় না।

গ্রহজনিত ব্যবস্থা[সম্পাদনা]

কেপলার-৬ এর একটি নিশ্চিতক্রিত গ্যাস জায়ান্ট গ্রহ রয়েছে যার নাম কেপলার-৬বি।[৪] গ্রহটি আনুমানিক .৬৬৯ MJ বা বৃহস্পতি গ্রহের ভরের দুই তৃতীয়াংশ। এছাড়াও এটি বৃহস্পতি গ্রহের চেয়ে সামান্য বিকীর্ণ এবং এর ব্যাসার্ধ প্রায় ১.৩২৩ RJ। কেপলার-৬বি গ্রহটি তার নক্ষত্রটিকে গড়ে .০৪৫৬ AU দূরত্বে প্রদক্ষিণ করে এবং এটি ৩.২৩৪ দিনে একবার প্রদক্ষিণ সম্পন্ন করে। গ্রহের কক্ষপথের উৎকেন্দ্রিকতা ০ গণ্য করা হয় যা একটি বৃত্তাকার কক্ষপথ।[৬]

চিত্রটি কেপলারের আবিষ্কৃত পাঁচটি গ্রহের আপেক্ষিক আকৃতি প্রদর্শন করছে। বৃহস্পতির তুলনায় কিছুটা বড় কেপলার-৬বি বেগুনি রঙে নির্দেশিত হচ্ছে।
কেপলার-৬ গ্রহমণ্ডল[৪]
সহচর
(তারকার অনুক্রম)
ভর পরাক্ষ
(AU)
কক্ষীয় পর্যায়কাল
(দিনসমূহ)
উৎকেন্দ্রিকতা কক্ষীয় নতি ব্যাসার্ধ
বি ০.৬৬৯ MJ ০.০৪৫৬৭ ৩.২৩৪৭ ১.৩২৩ RJ

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Kepler: About the Mission"Kepler Mission। NASA। ২০১১। ৮ মে ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১১ 
  2. Alexander J. Willman, Jr. (৫ জানুয়ারি ২০১০)। "Kepler 6 Planetary System"Princeton University। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১১ 
  3. Rich Talcott (৫ জানুয়ারি ২০১০)। "215th AAS meeting update: Kepler discoveries the talk of the town"Astronomy.comAstronomy magazine। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১১ 
  4. "Summary Table of Kepler Discoveries"। NASA। ২০১০-০৮-২৭। ২০১৭-০৪-০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-১০-১৬ 
  5. "NASA's Kepler Space Telescope Discovers its FIrst Five Exoplanets"NASA। ৪ জানুয়ারি ২০১০। ৪ এপ্রিল ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১১ 
  6. "Notes for star Kepler-6"Extrasolar Planets Encyclopaedia। ২০১০। ২১ জানুয়ারি ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১১ 
  7. Fraser Cain (সেপ্টেম্বর ১৫, ২০০৮)। "Temperature of the Sun"। Universe Today। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১১ 
  8. Charles H. Lineweaver (২০০১)। "An Estimate of the Age Distribution of Terrestrial Planets in the Universe: Quantifying Metallicity as a Selection Effect"। Icarus151 (2): 307–313। arXiv:astro-ph/0012399অবাধে প্রবেশযোগ্যডিওআই:10.1006/icar.2001.6607বিবকোড:2001Icar..151..307L 
  9. "Pluto Fact Sheet"Goddard Space Flight CenterNASA। ১৭ নভেম্বর ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১১