ইউ উইল নেভার ইট লাঞ্চ ইন দিস টাউন এগেইন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ইউ উইল নেভার ইট লাঞ্চ ইন দিস টাউন এগেইন
প্রথম সংস্করণের প্রচ্ছদ (হার্ডকভার, র‍্যান্ডম হাউজ)
লেখকজুলিয়া ফিলিপস
দেশআমেরিকা
ভাষাইংরেজি
ধরনআত্নজীবনী
প্রকাশিত১৯৯১ (র‍্যান্ডম হাউজ)
পৃষ্ঠাসংখ্যা৫৭৩
আইএসবিএন৯৭৮-০-৩৯৪-৫৭৫৭৪-২
ওসিএলসি২১৫২৪০১৯
791.43/0232/092 B 20
এলসি শ্রেণীPN1998.3.P47 A3 1990

ইউ উইল নেভার ইট লাঞ্চ ইন দিস টাউন এগেইন (ইংরেজি: You'll Never Eat Lunch in This Town Again) বইটি আমেরিকান চলচ্চিত্র প্রযোজক এবং লেখিকা জুলিয়া ফিলিপসের লিখিত আত্মজীবনী। বইটিতে জুলিয়া একজন চলচ্চিত্র প্রযোজক হিসেবে সত্তর এবং আশির দশকের হলিউডের যে বেলেল্লাপনা এবং ক্ষমতার অপব্যবহার এ বিষয়গুলো দৃষ্টিগোচরে আনেন। বইটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৯১ সালে এবং খুব দ্রুতই বেস্ট সেলারে পরিণত হয়। ২০০২ সালে লেখিকার মৃত্যুর পর বইটি পূনরায় প্রকাশিত হয়।

পটভূমি[সম্পাদনা]

১৯৭০ এর দশকে জুলিয়া ফিলিপস এবং তার স্বামী মাইকেল ছিলেন হলিউডের সবচেয়ে সফল চলচ্চিত্র প্রযোজকদের মধ্যে অন্যতম। তাদের প্রযোজিত দ্বিতীয় চলচ্চিত্র দ্য স্টিং প্রায় ১৬০ মিলিয়ন ডলার আয় করে এবং বেশ কয়েকটি একাডেমিক পুরস্কার জিতে নেয়। ফলশ্রুতিতে জুলিয়া প্রথম নারী হিসেবে বেস্ট পিকচার্স অষ্কার পান। এই জুটির দ্বিতীয় চলচ্চিত্র ট্যাক্সি ড্রাইভার-এর জন্য তারা দ্বিতীয় বারের মত অস্কারে মনোয়ন পান এবং ১৯৭৬ সালে পাল্ম দর জিতে নেন। ১৯৭৭ সালে তারা তাদের অর্থনৈতিকভাবে সবচেয়ে সফল চলচ্চিত্রটি প্রযোজনা করেন যেটি পরিচালনা করেন বিখ্যাত চিত্রপরিচালক স্টিভেন স্পিলবার্গ। চলচ্চিত্রটি প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলার আয় করে নেয়।

তবে জুলিয়া ধীরে ধীরে মাদক সেবনের দিকে ঝুকে পড়ে এবং এটি তার কর্মজীবনকে প্রভাবিত করে। ফরাসি চলচ্চিত্র পরিচালক ফ্রঁসোয়া ত্রুফো তাকে বাজেট অসুবিধার জন্য  তিরস্কার করেন এবং চলচ্চিত্রের পোস্ট প্রোডাকশনের সময় জুলিয়াকে বহিস্কার করেন তার অতিরিক্ত মাদক সেবনের জন্য[১][২]

জুলিয়ার সাথে তার স্বামীর বিচ্ছেদ ঘটে এবং তিনি ধীরে ধীরে অন্ধকারে হারিয়ে যেতে থাকেন। একটা সময় শুধু কোকেইন-এর পিছনেই তিনি ১২০,০০০ ডলার ব্যয় করেন,[৩][৪] যদিও পরবর্তিতে তার মাদকাসক্তি কাটানোর জন্য থেরাপি নেওয়া শুরু করেন।[৫] দীর্ঘ ১১ বছর হলিউড থেকে দূরে থাকার পরে তিনি আবার চলচ্চিত্র প্রযোজনাতে আসেন। তার ধনসম্পত্তি সব বিক্রি করে দিয়ে দ্য বিট চলচ্চিত্রটি প্রযোজনা করেন। চলচ্চিত্রটি ছিল একটি শিশুকে নিয়ে যে কিনা স্থানীয় এক গুন্ডা দলকে কবিতা শেখাতে চেষ্টা করত। চলচ্চিত্রটি বক্স অফিস হিট করতে পারেনি এবং মাত্র ৫ হাজার ডলার আয় করতেও ব্যর্থ হয়।

সারমর্ম[সম্পাদনা]

বইটি শুরু হয় ১৯৮৯ সালের লেখিকাকে পাঠকের সাথে পরিচয় করানোর মাধ্যমে এবং তা পরপরই পাঠক ১৯৪০ এর দশকে ফিরে যায় ব্রুকলিন-এ যেখানে জুলিয়ার শৈশব কেটেছে।[৬] তারপর বইটিতে দেখানো হয় লেখিকার জীবনের শুরুর দিক যখন লেখিকা এবং তার  স্বামী মাইকেল চলচ্চিত্র প্রযোজক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। এই জুটির প্রযোজিত প্রথম চলচ্চিত্র ছিল স্টিলইয়ার্ড ব্লুস এবং এর মাধ্যমে তারা ১০০,০০০ ডলার আয় করে নেন। এরপর তারা ক্যালিফর্নিয়ার মালিব্যুতে থাকতে শুরু করেন। তারা কেট নামে মেয়ের বাবা-মা হন[৭] লেখিকা যখন তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে ভাল সময়টা কাটাচ্ছিলেন ঠিক তখনই মাদক সেবন শুরু করার মাধ্যমে তার অধঃপতনের শুরু হয়। এমনকি অষ্কার গ্রহণের দিনও তিনি মাদকাসক্ত ছিলেন। মাদক হিসেবে তিনি গ্রহণ করতেন একটি ডায়েট পিল, অল্প পরিমাণে কোক দেড় গ্লাস ওয়াইন এবং ভ্যালিয়াম ৩টি[৩][৭][৮] জুলিয়া সে সময়ে হলিউডের প্রথম শ্রেণীর অনেক তারকার গোপন তথ্য ফাঁস করে দেন যাদের মধ্যে স্টিভেন স্পিলবার্গমার্টিন স্কোরসেজি, রিচার্ড ড্রেইফাস, ডেভিড গ্রেফান উল্লেখযোগ্য।এদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন '৬০ এবং '৭০ এর দশকের হলিউডের প্রাণপুরুষ কিন্তু লেখিকা তাদেরকে খারাপ চোখে দেখতেন।[৫][৯] পরবর্তিতে লেখিকা মাদক হিসেবে কোকেইন নেওয়া শুরু করেন। একজন উগ্র মাদকাসক্তের সাথে পরবর্তিতে তিনি সম্পর্ক শুরু করেন যার ফলে লেখিকার নিজের মায়ের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াতেও থাকতে পারেননি। এবিষয়গুলো বইটিতে আলোচিত হয়েছে। [৭]

হলিউডের মেয়েদের অবস্থান নিয়ে লেখিকা তার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি ব্যাখ্যা করেন। ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা সেখানে অনেক পিছিয়ে আছে এবং এটা শুধুমাত্র মেয়ে হবার কারণেই এ বিষয়গুলোর সম্মুখীন হতে হয়। "আমি যদি নারী না হয়ে একজন পুরুষ হতাম তাহলে হলিউড আমার পাশে থাকত।" মাদকাসক্তির উপর ইঙ্গিত করে লেখিকা বলেন। তিনি আরো বলেন "তারা নারীদের দু চোখে দেখতে পারত না, সেখানে আমি ছিলাম নিত্তান্তই বাচ্চা একটা মেয়ে।"[৪] ২০০২ সালে চলচ্চিত্র সমালোচক ডেভিড থমসন জুলিয়া ফিলিপসকে নিয়ে লিখেন, "তোমরা হলিউডের লোকেরা নারীদের কখনোই ভালভাবে দেখ না,আমাদের সাথে থাকতে পছন্দ কর কিন্তু আমরা শুধুই দর্শক হিসেবে থাকি।".[১০] লেখিকার মতে, মাইক অভিজ এর মত কিছু লোকের জন্যই ১৯৭০ এর দশকের চলচ্চিত্রে গতানুগতিক তুচ্ছ বিষয়গুলো স্থান পেয়েছিল।এদের জন্যই তখনকার চলচ্চিত্রের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায়।

প্রাপ্তি[সম্পাদনা]

বইটি প্রকাশিত হওয়ার পরে  অধিকাংশ সমালোচকই একথা স্বীকার করেন যে, বইটিতে অনেকের আপত্তিকর তথ্য ছিল যা তাদের ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে পারত(যদিও বইটির পান্ডুলিপি থেকে প্রায় ২৫০ পৃষ্ঠার মত বাদ দেওয়া হয়),[৭] তারপরও র্যান্ডম হাউস ১৪ মাসের মত সময় নেয় শুধুমাত্র বইটির প্রকাশে অনুমতির জন্য।[৩][৫] সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন দ্য ন্যাশন এর লুইস কোল বইটি নিয়ে বলেন"যদিও এটি লিখিত কিন্তু তারপরও যেভাবে চোখে আঙ্গুল দিয়ে হলিউডের তখনকার সত্যিকারের অবস্থা দেখানো হয়েছে তা এক কথায় বিস্ময়কর।[১২] নিউজউইক এই বইটির রিভিউতে একে '৫৭৩ পৃষ্ঠার বারুদ' নামে আখ্যায়িত করে।[১৩] একজন চলচ্চিত্র প্রযোজক একে 'ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সুইসাইড নোট' হিসেবে বর্ণনা করেন।[৫] ২০০৩ সালে পিটার বিসকিন্ডের সত্তরের দশকের হলিউড নিয়ে লিখিত 'ইজি রাইডারস,রেজিং বুলস' বইটি থেকে একটি প্রামাণ্যচিত্র বানানো হয়।প্রামাণ্যচিত্রটিতে অভিনেতা রিচার্ড ড্রেইফাস জুলিয়া ফিলিসকে ইঙ্গিত করে বলেন,"(লেখিকার) সত্য কথাগুলো হজম করা খুব কষ্টকর ছিল"[১৪] চিত্রপরিচালক স্টিভেন স্পিলবার্গ কে তীব্র সমালোচনার পরেও তিনি লেখিকাকে ক্লোজ এনকাউন্টারস চলচ্চিত্রটি দেখার জন্য আমন্ত্রন জানান।[১৫]

২০০২ সালে জুলিয়া ফিলিপস ক্যান্সারের জন্য মৃত্যুবরণ করেন।তার মৃত্যুর পরে যুক্তরাজ্যের ফেবার অ্যান্ড ফেবার প্রকাশনী বইটি পেপারব্যাকে প্রকাশ করে [১৬] এবং তখন বইটি সবার নজর কাড়তে সক্ষম হয়।টিম অ্যাপোলো বইটির প্রশংসা করে লিখেন,'সত্যকে প্রকাশ করার ব্যাপারে এটি কোনো আপোস করেনি'[১৭] "একই সাথে যথেষ্ট পরিমাণে বিনোদনদায়ক এবং সত্য প্রকাশে বদ্ধপরিকর" এভাবেই ডেভিড থমসন বইটির প্রশংসা করেন.[১০] [dead link]

জুলিয়া ফিলিপসের স্মৃতিকথা নিয়ে লিখিত এই বইটি বাণিজ্যিকভাবে সফল হয়। বইটি দীর্ঘ ১৩ সপ্তাহ 'দ্য নিউ ইয়র্ক নন ফিকশন বেস্ট সেলার লিস্ট' এ এক নম্বরে ছিল।[১৮][১৯] লস এঞ্জেলেসের প্রখ্যাত কয়েকটি বই বিক্রির দোকান থেকে জানা যায় যে, বইটি বিক্রির দিক দিয়ে অন্য সব বইকে হার মানায়।[৭][২০] কিন্তু বইটি প্রকাশ করার জন্য হলিউড থেকে লেখিকার তীর্ব সমালোচনা করা হয়।এবং জুলিয়া, অ্যানা রাইস এর বিখ্যাত 'ইন্টারভিউ উয়থ এ ভ্যামপ্যায়ার' বইটি থেকে তৈরি চলচ্চিত্রে ডেভিড গ্রিফিন এর সাথে কাজ করার সুযোগ হারান।[৪][৭][২১] এমনকি লস এঞ্জেলেসের প্রায় সত্তরটিরও বেশি রেস্টুরেন্ট এর সঙ্গগঠন মর্টন বইটির জন্য ভবিষ্যতে পৃষ্ঠপোষকতায় অস্বীকৃতি জানায়।[৩][৪]

জুলিয়ার অন্তিম সময়ে তাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে তিনি বইয়ে সবার উপরে খুব নির্দয় ছিলেন কি না। তার উত্তর ছিল "আমাদের সবারই মান সম্মান আছে। অনেকেই আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করেছে, তাই আমার কোন ক্ষোভ নেই।"[৩][৫] তিনি অণুতপ্ত ছিলেন না। "আমি মাদকাসক্ত ছিলাম, এলকোহল সেবন করতাম এবং নিজের সন্তানের কাছেও খুব ভালো মা হতে পারিনিIএইসব কারণে আমি সামাজিকভাবে পরিত্যক্ত হইনি। বরং আমি তাদেরকে কঠোরভাবে মোকাবিলা করেছিলাম এবং এরা যা পাওয়ার যোগ্য তাদেরকে সেটাই দিয়েছিলাম।"[৩][৫]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; mcbride নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  2. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; ew-hodgman নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  3. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; nyt-obit নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  4. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; ew-friedman নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  5. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; indie-obit নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  6. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; m2-turner নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  7. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; people-wadler নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  8. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; guardian নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  9. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; ew-benatar নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  10. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; indie-thomson নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  11. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; nyt-bach নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  12. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; nation-cole নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  13. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; nw-review নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  14. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; nw-ansen নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  15. http://www.nytimes.com/1999/02/14/magazine/steven-the-good.html?pagewanted=all
  16. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; amazon-uk-02 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  17. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; salon-appelo নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  18. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; hawes-910407 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  19. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; hawes-910623 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  20. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; nyt-rohter নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  21. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; ew-jacobs নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি