গার্ল ইন মিরর

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
গার্ল ইন মিরর
শিল্পীরয় লিকতেনস্তাইন
বছর১৯৬৪
ধরনপপ আর্ট
অবস্থান৮ থেকে ১০টি সংস্করণ

গার্ল ইন মিরর বা দর্পনে কন্যা (ইংরেজি: Girl in Mirror) চিত্রকর্মটি রয় লিকতেনস্তাইন কর্তৃক ১৯৬৪ সাল অঙ্কিত একটি পোর্সেলিন-এনামেল-অন-স্টিল পপ আর্ট চিত্রকলা। এটির আট থেকে দশটি সংস্করণ রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। এটির একটি সংস্করণ ২০০৯ সালে ১৪ মিলিয়ন ডলারে বিক্রিত হয়েছিল এবং ২০১২ সালে এই বিক্রয় সংক্রান্ত একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এটির অন্য একটি সংস্করণ ২০১০ সালে ৪.৯ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি হয়। যদিও লিকতেনস্তাইনের অন্যান্য কর্মের মত এতে বেন-ডে ডট ব্যবহার করা হয়েছে, তবে এটি রোম্যান্স কমিক্সের থেকে সরাসরি অনুপ্রাণিত নয় বরং নিউ ইয়র্ক সিটি সাবওয়ে দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে আঁকা।

বিশ্লেষণ[সম্পাদনা]

লিকতেনস্তাইন ১৯৬৭ সালে

গার্ল ইন মিররে শিল্পী তাঁর অন্যান্য চিত্রকর্মের মত বেন-ডে ডট ব্যবহার করেছেন, কিন্ত নিউ ইয়র্ক সিটি সাবওয়ে সিস্টেমে ব্যবহৃত নির্দেশনা চিহ্নগুলোর চমৎকার দর্পনের মত প্রতিফলন এটি আঁকতে তাকে অনুপ্রাণিত করেছে, যার ফলশ্রুতিতে পরবর্তীতে সিরামিকের উপর তার পরিশ্রমী কাজগুলোর দেখা মেলে। দ্বিমাত্রিকতা থাকা সত্ত্বেও, তার আঁকা ছবিতে এনামেলের সহায়তায় আরো যান্ত্রিক আবির্ভাব প্রকাশ পায়।[১] ১৯৬৩ সালের পরে, লিকতেনস্তাইনের কমিক্স ভিত্তিক নারী "... কঠিন চেহারার, শুকনো, ভঙ্গুর এবং দেখতে সমানভাবে মডেলিশ, যেন মনে হয় এগুলো সবই একই পাত্র থেকে মেকআপ নিয়েছে।" অন্যান্য অনেকগুলোর মতই, এটি একটি বিশেষ চিত্রকর্ম, যা এমনভাবে আঁকা হয়েছে যেখানে মেলে দেয়া চুলগুলো ক্যানভাসের প্রান্ত অতিক্রম করেছে।

সংস্করণ[সম্পাদনা]

২০০৯ সালে এই চিত্রকলার একটি সংস্করণ অনুমতি ছাড়া বিক্রয় করার কারণে একটি আইনি বিতর্ক দেখা দেয়। এই কাজের আরেকটি সংস্করণ ক্রিস্টির (নিউ ইয়র্ক, রকফেলার প্লাজা) পোস্ট যুদ্ধের নিলামে বিক্রি হয়েছিল এবং একই সন্ধায় ১০ই নভেম্বর, ২০১০ সালে এটি $৪৮,৯৮,৫০০ (প্রিমিয়াম) বিক্রি হয়, যদিও এটি শুধুমাত্র $ ৩-৪ মিলিয়নের মধ্যে বিক্রি করার আশা করেছিল।[২] অধিকাংশের মতে, আয়নার মধ্যে মেয়ের আটটি সংস্করণ রয়েছে। যাইহোক, রয় লিকতেনস্তাইন ফাউন্ডেশনের ক্লেয়ার বেল বলেন যে, "লিও কাস্টেলি গ্যালারি পরিসংখ্যার রেকর্ড অনুযায়ী ১৯৬০ সালে যেখানে লিকতেনস্তাইন দেখিয়েছেন সেখানে বলা হয়েছে যে, এই কাজের ১০টি সংস্করণ থাকতে পারে, তাদের মধ্যে কিছু মূল প্রমাণাদি রয়েছে।"[৩] একটি সংস্করণ ২০০৮ সালে নিউ ইয়র্কে গাগোসিয়ান গ্যালারিতে প্রদর্শিত হয়।[৪] এই কাজের পূর্ববর্তী তিনটি নিলামে যথাক্রমে বিক্রয় হয়েছিল: ৫ই মে, ১৯৮৬ সালে সাদ্যবেইস নিউ ইয়র্কে $১,০০,০০০ ইউএসডি (হাম্মার),[৫] ৪ই মে, ১৯৮৭ সালে সাদ্যবেইস নিউ ইয়র্কে $১,৫০,০০০ ইউএসডি (হাম্মার),[৬] এবং ১৫ই মে, ২০০৭ সালে সাদ্যবেইস নিউ ইয়র্কে $৩৬,০০,০০০ ইউএসডি (হাম্মার)/$৪০,৭২,০০০ (প্রিমিয়াম)।[৭]

২০১২ মামলা[সম্পাদনা]

১৮ই জানুয়ারি, ২০১২ সালে ম্যানহাটানের নিউ ইয়র্ক স্টেট কোর্টে একটি মামলা দায়ের করা হয় যা আগে দুই ফেডারেল মামলার সাথে সম্পর্কিত ছিল।[৮] চিত্রকলার অবস্থার সম্মতির অভাব এবং প্রতারণামূলক মিথ্যা বর্ণনা উভয়ই মামলার অভিযোগ ছিল।[৩] মামলাটি ছিল $১০ মিলিয়নের শাস্তিমূলক ক্ষতিপূরণসহ, $১৪ মিলিয়ন ডলারের।[৮] ৯৩ বছর বয়সী জান কাউলেস দাবি করে যে, ২০০৮ সালে তার ছেলে নিউ ইয়র্ক আর্ট ডিলার চার্লস কাউলেস, তার অনুমতি ছাড়া "আয়নার মধ্যে মেয়ে" চিত্রকলাটির একটি সংস্করণ বিক্রি জন্য ল্যারি গাগোসিয়ানে স্থানান্তরিত করে।[৮] মামলাতে দাবি করা হয় যে, গাগোসিয়ানে জালিয়াতির মাধ্যমে চিত্রকলার ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে। ২০০৯ সালের আগস্ট ও ডিসেম্বরের মধ্যে একে $২ মিলিয়নে বিক্রি করা হয় এবং এতে $১ মিলিয়ন কমিশন চার্জিং পরিবর্তে,[৮] $৩ মিলিয়ন বা উপরে বিক্রি করলে আনুমানিক নিম্নে $৫,০০,০০০ কমিশন দেওয়া হবে।[৩] ২০০৮ সালের গ্রীষ্মের সময় "রয় লিকতেনস্তাইন: গার্লস" গাগোসিয়ান গ্যালারিতে প্রদর্শনীতে দেখানো হয়, ফলস্বরূপ, গ্যালারিতে "আয়নার মধ্যে মেয়ে" দুটি সংস্করণের একটি এক পর্যায়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।[৩] কাউলেস সংস্করণের নোটে কোন ক্ষতির সম্ভাবনা পাওয়া যায়নি এবং গাগোসিয়ানের কাজের আন্তর্জাতিক মার্কেটিং অক্ষত অবস্থায় সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল।[৩]

অভ্যর্থনা[সম্পাদনা]

দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস জানায় যে, "তার নিজের জেনেরিক উদ্ভাবন এবং তার আবেগ যেমন জ্বলন্ত রূপের ক্ষমতা, নির্দোষ চিত্রসমূহ দ্বারা আমেরিকান মেয়ের প্রশংসা করে", এটি ছিল লিকতেনস্তাইনের ক্ষমতার একটি উদাহরণ।[৪] একটি ছোট টুকরার আয়নার ছবিতে একটি শিল্পসম্মত উদ্দেশ্য কাজ করে। "অসাধারণ ধারার মত .... আয়নাতে মেয়ের (গার্ল ইন দ্য মিরর, ১৯৬৪) আধা প্রতিফলিত মুখ থেকে পতনশীল চুলের সংযোগ .... যা কাটা, বিশ্লেষণ, এবং ঐক্যবদ্ধ, সব কিছুর একটাই লক্ষ্য তা হচ্ছে বোধকের খণ্ডাংশ তীব্রতর করা।"[৯]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Waldman, Diane (১৯৯৯)। Roy Lichtenstein: Reflections। Electa। পৃষ্ঠা 29আইএসবিএন 88-435-7287-3Between 1963 and 1965, Lichtenstein produced a group of works in enamel, such as Girl in Mirror, 1964 (cat. 45). The subway signs he saw in New York inspired the hard finish and reflective surface. With the hard, slick enamel, Lichtenstein accomplished two objectives: he was able to move closer to achieving the look of mechanical perfection that he could only suggest in paintings of the period, and he reinforced the role of the two-dimensional image as an object. Girl in Mirror helped inspire a series of ceramic heads, which he began in 1965. 
  2. "Roy Lichtenstein (1923–1997): Girl in Mirror"Christies। ২০১০-১১-১০। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৫-১০ 
  3. Duray, Dan (২০১২-০১-২৪)। "New Gagosian Lawsuit Alleges Lichtenstein Switcheroo"GalleristNYThe New York Observer। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৫-১০ 
  4. "Roy Lichtenstein at Gagosian"The New York Times। ২০০৮-০৬-১০। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৫-১০ 
  5. "Roy Lichtenstein (American, 1923–1997): Girl in mirror"Blouin Art Sales Index। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৫-১৫ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  6. "Roy Lichtenstein (American, 1923–1997): Girl in mirror"Blouin Art Sales Index। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৫-১৫ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  7. "Contemporary Art Evening Sale: New York – 15 May 2007 07:00 PM N08317"Sotheby's। ৭ এপ্রিল ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৫-১৫ 
  8. Kennedy, Randy (২০১২-০১-১৯)। "Gagosian Sued for Selling Lichtenstein Painting Without Owner's Consent"The New York Times। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৫-১০ 
  9. Boatto, Alberto and Giordano Falzoni (সম্পাদক)। Lichtenstein (International সংস্করণ)। Fantazaria। পৃষ্ঠা 56। 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]