ক্রমপ্রজাতি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

ক্রমপ্রজাতি (ইংরেজি ভাষায়: Chronospecies) বলতে এমন ধরনের প্রজাতি বোঝায় যারা একটি পূর্বতন প্রজাতি থেকে ক্রমান্বয়িক পরিবর্তনের মাধ্যমে উৎপত্তি লাভ করেছে। সাধারণ বিবর্তনীয় প্রজাতির ক্ষেত্রে দেখা যায়, একটি প্রজাতি বিবর্তনের মাধ্যমে একাধিক প্রজাতির জন্ম দেয় এবং পূর্বপুরুষ প্রজাতিটি বিলুপ্ত হয়ে যায়। এক্ষেত্রে পূর্বপুরুষকে একটি আলাদা প্রজাতি এবং উত্তরপুরুষদেরকে আলাদা আলাদা প্রজাতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু ক্রমপ্রজাতির ক্ষেত্রে পূর্বপুরুষ এবং উত্তরপুরুষকে একই বিবর্তনীয় প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। অবশ্য যদি দুটি প্রজাতির সম্পর্ক পুরোপুরি প্রতিষ্ঠিত করা না যায় তাহলে দুটোকে আলাদা প্রজাতিও বলা যায়। তবে সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, ক্রমপ্রজাতির পূর্বপুরুষকে বিলুপ্ত ধরা হয় না, কারণ উত্তরপুরুষের মাধ্যমেই সে জীবিত থাকে, খুব বেশি হলে পূর্বপুরুষটিকে ছদ্ম-বিলুপ্ত বলা যায়।

বিবর্তনীয় প্রজাতির ক্ষেত্রে একটি পূর্বপুরুষ থেকে একাধিক সমসাময়িক প্রজাতির জন্ম হতে পারে, কিন্তু ক্রমপ্রজাতির বড় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে পূর্বপুরুষ থেকে ক্রম-বিবর্তনের যেকোন সময়ে কেবল একটি প্রজাতিই অস্তিত্বশীল থাকে। অনেক দিন ধরে বিবর্তনের পর পূর্বপুরুষ এবং উত্তরপুরুষ আলাদা প্রজাতি হয়ে যেতে পারে কিন্তু একটি নির্দিষ্ট সময়ে প্রজাতির সংখ্যা কেবল একটি।[১]

এর সাথে সম্পর্কিত আরও কিছু শব্দ আছে। যেমন জীবাশ্ম-প্রজাতি (paleospecies) বলতে এমন প্রজাতিকে বোঝায় যারা বিলুপ্ত হয়ে গেছে এবং কেবল জীবাশ্মের মাধ্যমে তাদের সম্পর্কে জানা যায়।

ক্রমপ্রজাতির ধারণা বিবর্তনের ফাইলেটিক গ্র্যাজুয়ালিজম মডেলের সাথে সম্পর্কিত এবং বিপুল পরিমাণ জীবাশ্ম আবিষ্কারের উপর নির্ভর করে। বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য যেহেতু অণেক দিনের ব্যবধানে ধিরে ধিরে পরিবর্তিত হয় সেহেতু অনেক সময়ের ব্যবধানে অস্তিত্বশীল দুটি প্রজাতিকে মধ্যবর্তী বেশ কিছু জীবাশ্ম-প্রজাতি দিয়ে সম্পর্কিত করা যেতে পারে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Steven M. Carr, "Evolutionary species and chronospecies ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৯ জুন ২০০৬ তারিখে"