ও-র্গ্যান-'জিগ্স-ব্রাল-ব্যাং-ছুব-র্দো-র্জে

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ও-র্গ্যান-'জিগ্স-ব্রাল-ব্যাং-ছুব-র্দো-র্জে

ও-র্গ্যান-'জিগ্স-ব্রাল-ব্যাং-ছুব-র্দো-র্জে (ওয়াইলি: o rgyan 'jigs bral byang chub rdo rje) (১৯৩৫-১৯৫৯) তিব্বতী বৌদ্ধধর্মের র্ন্যিং-মা ধর্মসম্প্রদায়ের ষষ্ঠ র্দ্জোগ্স-ছেন-গ্রুব-দ্বাং উপাধিধারী বৌদ্ধ লামা ছিলেন। তিনি র্দ্জোগ্স-ছেন বৌদ্ধবিহার নামক র্ন্যিং-মা ধর্মসম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান বৌদ্ধবিহারের একাদশ প্রধান ছিলেন।

প্রথম জীবন[সম্পাদনা]

ও-র্গ্যান-'জিগ্স-ব্রাল-ব্যাং-ছুব-র্দো-র্জে ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দে তিব্বতের লাসা শহরের অদূরে অবস্থিত দ্পাল-গ্যি-র্ত্সা-রি-ত্রা (ওয়াইলি: dpal gyi rtsa ri tra) নামক পবিত্র হ্রদের নিকটে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ঙ্গাগ-দ্বাং-নোর-বু (ওয়াইলি: ngag dbang nor bu) র্দ্জোগ্স-ছেন বৌদ্ধবিহারের শ্রী সিংহ মহাবিদ্যালয়ের পঁচিশতম প্রধান ছিলেন। তার মাতার নাম ছিল ত্শে-রিং-ছোস-গ্রোন (ওয়াইলি: tshe ring chos gron)। শ্রী সিংহ মহাবিদ্যালয়ের কুড়িতম প্রধান পে-মা-থেগ-ম্ছোগ-ব্লো-ল্দান (ওয়াইলি: pe ma theg mchog blo ldan), একুশতম প্রধান 'জিগ্স-মেদ-ব্লো-গ্রোস (ওয়াইলি: 'jigs med blo gros), তেইশতম প্রধান থুব-ব্স্তান-স্ন্যান-গ্রাগ্স (ওয়াইলি: thub bstan snyan grags), সাতাশতম প্রধান য়োন-তান-ম্গোন-পো (ওয়াইলি: yon tan mgon po), আঠাশতম প্রধান পে-মা-ত্শে-দ্বাং-র্গ্যা-ম্ত্শো (ওয়াইলি: pe ma tshe dbang rgya mtsho), সা-স্ক্যা ধর্মসসম্প্রদায়ের পণ্ডিত 'জাম-দ্ব্যাংস-ম্খ্যেন-ব্র্ত্সে-ছোস-ক্যি-ব্লো-গ্রোস (ওয়াইলি: 'jam dbyangs mkhyen brtse chos kyi blo gros) প্রভৃতি বৌদ্ধ ভিক্ষুরা তার উল্লেখযোগ্য শিক্ষক ছিলেন।[১]

পরবর্তী জীবন[সম্পাদনা]

ও-র্গ্যান-'জিগ্স-ব্রাল-ব্যাং-ছুব-র্দো-র্জে ১৯৫১ খ্রিষ্টাব্দে র্দ্জোগ্স-ছেন বৌদ্ধবিহারের একাদশ প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দে গণচীনের সেনাবাহিনী খাম্স অঞ্চলে প্রবেশ করে তিব্বতকে চীনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হিসেবে দাবী করলে তিনি লাসা চলে যান। ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি খাম্স অঞ্চলে ফিরে এসে ভিক্ষুর শপথ গ্রহণ করেন। এইসময় তিনি চার বছর ধরে র্দ্জোগ্স-ছেন বৌদ্ধবিহারের ব্যাপক সংস্কার শুরু করেন। তিনি এই বিহারে একটি তিনতলা বাড়ির সমান উচু ধাতব বুদ্ধমূর্তি নির্মাণ করান।[১]

মৃত্যু[সম্পাদনা]

১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দে গণচীনের সেনাবাহিনী র্দ্জোগ্স-ছেন বৌদ্ধবিহার অধিকার করে নেয় এবং ও-র্গ্যান-'জিগ্স-ব্রাল-ব্যাং-ছুব-র্দো-র্জে সহ বিহারের গুরুত্বপূর্ণ লামাদের বন্দী করে। চীনা সেনাবাহিনী ভিক্ষুদের বিবাহ করতে, বৃক্ষচ্ছেদন করতে, বুদ্ধ ও অন্যান্য মূর্তি ভেঙ্গে ফেলতে এবং প্রাচীন পুঁথি ও চিত্রকলা বিনষ্ট করতে বাধ্য করে। ২৫শে আগস্ট তারা ভিক্ষুদেরকে গুরুত্বপূর্ণ লামাদের সমালোচনা করার একটি সভা করার কথা ঘোষণা করে। এই সমস্ত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এই বিহারের ভিক্ষুরা চীনাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়ে তাদের ভিক্ষুর শপথ ত্যাগ করে অস্ত্রধারণ করেন। তারা চীনা সৈন্যদের তরোয়াল, ছুরি ও কুঠারের আঘাতে হত্যা করে বিহারের প্রধান লামাদেরকে উদ্ধার করেন। উদ্ধারের পর তারা বিহারে অগ্নিসংযোগ করলে বহু সৈন্য মারা যান। এই ঘটনায় প্রায় তিনশত চীনা সৈন্য ও পঞ্চাশজন ভিক্ষু নিহত হন। ও-র্গ্যান-'জিগ্স-ব্রাল-ব্যাং-ছুব-র্দো-র্জে একটি কুঠারের আঘাতে গুরুতর আহত হন এবং তিন দিন পরে স্থানীয় ওংপো বিহারে মৃত্যুবরণ করেন।[২]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Chhosphel, Samten (মার্চ ২০১৩)। "The Sixth Dzogchen Drubwang, Jikdrel Jangchub Dorje"The Treasury of Lives: Biographies of Himalayan Religious Masters। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৮-২৩ 
  2. Jamyang Norbu, Warriors of Tibet: The Story of Aten and the Khampas’ Fight for the Freedom of their Country
পূর্বসূরী
থুব-ব্স্তান-ছোস-ক্যি-র্দো-র্জে
ও-র্গ্যান-'জিগ্স-ব্রাল-ব্যাং-ছুব-র্দো-র্জে
পঞ্চম র্দ্জোগ্স-ছেন-গ্রুব-দ্বাং
উত্তরসূরী
'জিগ্স-মেদ-ব্লো-গ্সাল-দ্বাং-পো (ভারত)
বা
ব্স্তান-'দ্জিন-লুং-র্তোগ্স-ন্যি-মা (তিব্বত)