ইরম শর্মিলা চানু

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ইরম শর্মিলা চানু
Irom Chanu Sharmila
জন্ম (1972-03-14) ১৪ মার্চ ১৯৭২ (বয়স ৫২)
জাতীয়তাভারতীয়
পেশাCivil rights activist, Political activist, Poet
পরিচিতির কারণHunger strike against Armed Forces (Special Powers) Act, 1958
পিতা-মাতাIrom c Nanda (father)
Irom Ongbi Sakhi (mother)

ইরম শর্মিলা চানু ১৯৭২ সনের ১৪ মার্চ মণিপুরে জন্মগ্রহণ করেন৷ তাকে মণিপুরের লৌহমানবী "Iron Lady of Manipur" বলা হয়। [১] তিনি ২০০০ সনের ২ নভেম্বরের পর থেকে মণিপুরে সৈন্য বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন, ১৯৫৮ (Armed Forces (Special Powers) Act, 1958 (AFSPA)) বাতিল করার জন্য অনশন করছেন৷ তার মতে মণিপুর এবং উত্তর-পূর্ব ভারতে এটিই হিংসার মূল কারণ[২]। বর্তমানে অনশনের দশ বছর অতিক্রম করা শর্মিলাকে পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘ সময় অনশন করা নারী হিসেবে ধরা হচ্ছে।[৩]

অনশনের বিষয়ে[সম্পাদনা]

২০০০ সনের ২ নভেম্বর মণিপুরের ইম্ফল উপত্যকার মালমে ভারতের অন্যতম প্যারামিলিটারী বাহিনী দশজন মণিপুরী ভারতীয় নাগরিককে হত্যা করে।[৪][৫] এই ঘটনাটিকে পাচলৈ "মালম গণহত্যা" বলে উল্লেখ করা হয়।[৬] পাচদিনার স্থানীয় খবরের কাগজে ফটোসহ এই ঘটনার খবর ছাপা হয়। সেসব মৃতদের ভিতরে ৬২ বছর বয়সী বৃদ্ধা লেইচাংবাম ইবেতমি এবং ১৯৮৮ সনের রাষ্ট্রীয় শিশুর সাহসীকতার বটা বিজয়ী ১৮ বছরের ছিনাম চন্দ্রমণিও ছিলো।[৫]

এই ঘটনার প্রতিবাদে তখনকার চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর ২৮ বছর বয়সী মেয়ে শর্মিলা, অনশন আরম্ভ করেন।[৭] তার ভাই ইরম সিংহজিৎ সিঙর মতে "২ নভেম্বর ২০০২ তাৰিখ ছিলো বৃহস্পতিবার। শর্মিলা সকালের পরে বৃহস্পতিবারে ব্রত রেখেছিলো। তাঁর সেই "ব্রত"কে অব্যাহত রাখবে বলে স্থির করেছিলো"। ৪ নভেম্বর তারিখে অনশন আরম্ভের তারিখ হিসাবে গণনায় ধৰা হয়: ৩ তারিখ শুক্রবারে পেষ্ট্ৰী এবং মিঠাই দিয়ে নৈশভোজন শেষ করে শর্মিলা অনশন আরম্ভ করেন এবং অনুমতি সংগ্রহের কথা স্থানবিশেষে উল্লেখ কৰা হয়। [৮]

ভারত সরকারের উপরে শর্মিলার মুখ্য দাবী হচ্ছে AFSPA উঠাই নেয়া। এই আইনে সৈন্যবাহিনীকে সন্ত্রাসবাদী হবার সন্দেহে যেকোনো ভারতীয় নাগরিককে আটক করবার অধিকার প্রদান করা হয়েছে।[৪] বিরোধীপক্ষ এবং মানবাধিকার গোষ্ঠীসমূহের মতে এই আইনে নির্দোষ নাগরিককে অত্যাচাৰ, অপহরণ (forced disappearance) এবং গুপ্তহত্যা (extrajudicial execution) বৈধ করবার সুবিধা করে দিয়েছে।[৪][৭]

অনশন আরম্ভ করবার তিনদিন পরে ভারতীয় দণ্ডবিধি আইন'র (en:Indian panel code) ৩০ ধারায় "আত্মহত্যার চেষ্টা"র অভিযোগে শর্মিলাকে গ্রেপ্তার করে পুলিসি হেফাজতে প্রেরণ করে। [৮] তার স্বাস্থ্যের দ্রুত অবনতি ঘটার পরিপ্রেক্ষিতে জোর করে নাকের মাধ্যমে খাবার গ্রহণে en:nasogastric intubation বাধ্য করা হয়।[৩] তার পর প্রায়ই ইরম শর্মিলাকে নিয়মিতভাবে ভারতীয় দণ্ডবিধি আইন-এর ৩০৯ ধারার অধীনে প্রায় আটক করা হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত আটক আছে। ৩০৯ ধারা মতে আত্মহত্যা পরায়ণ ব্যক্তিকে এক বছর পর্যন্ত জেল, বা জরিমানা উভয় দণ্ড প্রদান করা যাবে।[৮][৯]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Rituparna Chatterjee (২০ এপ্রিল ২০১১)। "Spot the Difference: Hazare vs. Irom Sharmila"। Sinlung। সংগ্রহের তারিখ ৩০ এপ্রিল ২০১১ 
  2. "Manipur Fasting Woman Re-arrested"। BBC News। ৯ মার্চ ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ৮ মে ২০১১ 
  3. Andrew Buncombe (৪ নভেম্বর ২০১০)। "A decade of starvation for Irom Sharmila"The Independent। সংগ্রহের তারিখ ৮ মে ২০১১ 
  4. Nilanjana S. Roy (৮ ফেব্রুয়ারি ২০১১)। "Torchbearers for Victims in a Violent Land"New York Times। সংগ্রহের তারিখ ৮ মে ২০১১ 
  5. Rahul Pathak (৬ আগস্ট ২০০৪)। "Why Malom is a big reason for Manipur anger against Army Act"। IndianExpress.com। সংগ্রহের তারিখ ৮ মে ২০১১ 
  6. Malom Massacre
  7. Shoma Chaudhury (৫ ডিসেম্বর ২০০৯)। "Irom And The Iron In India's Soul"Tehelka। ২২ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ মে ২০১১ 
  8. "Manipur fasting woman re-arrested"। BBC News। ৯ মার্চ ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ৮ মে ২০১১ 
  9. Section 309 in The Indian Penal Code, 1860