সূরা ফাতিহা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আল ফাতিহা
سورة الفاتحة
সূরা আল ফাতিহা
শ্রেণীমক্কী সূরা
নামের অর্থশুরু
অন্য নামফাতিহাতুল কিতাব, উম্মুল কিতাব, সূরাতুল হামদ, সূরাতুস্ সালাত, আস্ সাব্‌'য়ুল মাসানী, সূরাতুদ দুআ[১]
অবতীর্ণ হওয়ার সময়নবী মুহাম্মদ-এর নবুয়াত প্রাপ্তির শুরুর দিকে
পরিসংখ্যান
সূরার ক্রম
আয়াতের সংখ্যা
পারার ক্রম
রুকুর সংখ্যা
সিজদাহ্‌র সংখ্যানেই
শব্দের সংখ্যা২৯
বিশেষ বিষয় সম্পর্কে আয়াতের সংখ্যাআল্লাহ্‌র প্রশংসা, প্রার্থনা
পরবর্তী সূরা →সূরা বাকারা
আরবি পাঠ্য · বাংলা অনুবাদ
সূরার অডিও
সূরার অডিও
চতুর্দশ বা পঞ্চদশ শতকের একটি পাণ্ডুলিপিতে সূরা আল-ফাতিহা

সূরা আল ফাতিহা (আরবি: سورة الفاتحة) মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের প্রথম সূরা, এর আয়াত সংখ্যা ৭ এবং রুকু সংখ্যা ১। ফাতিহা শব্দটি আরবি "ফাতহুন" শব্দজাত যার অর্থ "উন্মুক্তকরণ"। এটি আল্লাহ্ এর পক্ষ থেকে বিশেষ প্রতিদান স্বরূপ। সূরা ফাতিহা অন্যান্য সূরার ন্যায় বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম দিয়ে শুরু হয়েছে। আল ফাতিহা সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে বিধায় মক্কী সূরা হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ। সূরা ফাতিহাকে ভেঙে ভেঙে পড়া যায় না বলে একে অখণ্ড সূরা নামেও ডাকা হয়। সূরা ফাতিহাকে ভেঙে পড়ার বিধান নেই।

আয়াতসমূহ ও অর্থ[সম্পাদনা]

بِسْمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ ۝‎
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
পরম করুণাময় অতি দয়ালু আল্লাহর নামে।
  1. ٱلْحَمْدُ لِلَّٰهِ رَبِّ ٱلْعَالَمِينَ ۝
    আলহামদুলিল্লা-হি রব্বিল আ-লামীন।
    সমস্ত প্রশংসা জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লাহর জন্যে।
  2. ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ ۝
    আর রহমা-নির রহীম।
    অনন্ত দয়াময়, অতীব দয়ালু।
  3. مَالِكِ يَوْمِ ٱلدِّينِ ۝
    মা-লিকি ইয়াওমিদ্দীন।
    প্রতিফল দিবসের মালিক।
  4. إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ ۝
    ইয়্যা-কা না’বুদু ওয়া ইয়্যা-কানাছতা’ঈন।
    আমরা শুধু আপনারই দাসত্ব করি এবং শুধু আপনারই নিকট সাহায্য কামনা করি।
  5. ٱهْدِنَا ٱلصِّرَاطَ ٱلْمُسْتَقِيمَ ۝
    ইহদিনাসসিরা-তাল মুছতাকীম।
    আমাদের সরল পথনির্দেশ দান করুন।
  6. صِرَاطَ ٱلَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ ۝
    সিরা-তাল্লাযীনা আন’আম তা’আলাইহিম।
    তাদের পথে, যাদের আপনি অনুগ্রহ করেছেন।
  7. غَيۡرِ ٱلْمَغْضُوبِ عَلَيۡهِمۡ وَلَا اَ۬لضَّآلِّينَ ص۝
    গাইরিল মাগদূ বি’আলাইহীম ওয়ালাদ্দাল্লীন। (আমিন )
    এবং তাদের পথে নয় যারা আপনার ক্রোধের শিকার ও পথভ্রষ্ট । ( কবুল করুন )

ভাবানুবাদ[সম্পাদনা]

১:পরম করুণাময়, অতি দয়ালু আল্লাহর নামে।

২:সমস্ত প্রশংসা জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লাহর জন্যে।

৩:অনন্ত দয়াময়, অতীব দয়ালু।

৪:বিচার দিবসের মালিক।

৫:আমরা শুধু আপনারই দাসত্ব করি এবং শুধু আপনারই নিকট সাহায্য কামনা করি।

৬:আমাদের সরল পথনির্দেশ দান করুন।

৭:তাদের পথে, যাদের আপনি অনুগ্রহ করেছেন, এবং তাদের পথে নয় যারা  আপনার ক্রোধের শিকার ও পথভ্রষ্ট । ( কবুল করুন )

নামকরণ[সম্পাদনা]

ফাতিহা শব্দটি আরবি "ফাতহুন" শব্দজাত যার অর্থ "উন্মুক্তকরণ"। এ সূরার বিষয়বস্তুর সাথে সামঞ্জস্য রেখেই এর এই নামকরণ করা হয়েছে। যার সাহায্যে কোন বিষয়, গ্রন্থ বা জিনিসের উদ্বোধন করা হয় তাকে 'ফাতিহা' বলা হয়। অন্য কথায় বলা যায়, এ শব্দটি ভূমিকা এবং বক্তব্য শুরু করার অর্থ প্রকাশ করে।[২]

হাদিসে এ সুরার আরও চারটি নাম পাওয়া যায় যার একটি হলো উম্মুল। তবে ইসলামী লেখালিখিতে এ সুরার অন্ততঃ ২৩ অভিধা রয়েছে।[৩] একে সাবআ মাসানী বা বহুল পঠিত সাত আয়াত বলা হয়।

এই সূরাটির অন্য কয়েকটি নাম রয়েছে। যেমন- ফাতিহাতুল কিতাব, উম্মুল কিতাব[৪][৫][৬], সূরাতুল-হামদ, সূরাতুস-সালাত, আস্‌-সাব্‌'য়ুল মাসানী এবং সূরাতুস শেফা।

নাযিল হওয়ার সময়-কাল[সম্পাদনা]

এটি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুওয়াত লাভের একেবারেই প্রথম যুগের সূরা। বরং হাদীসের নির্ভরযোগ্য বর্ণনা থেকে জানা যায়, এটিই মুহাম্মাদের (সা.) ওপর নাযিলকৃত প্রথম পূর্ণাঙ্গ সূরা। এর আগে মাত্র বিচ্ছিন্ন কিছু আয়াত নাযিল হয়েছিল। সেগুলো সূরা 'আলাক্ব', 'মুয্‌যাম্‌মিল' ও 'মুদ্‌দাস্‌সির' ইত্যাদিতে সন্নিবেশিত হয়েছে।

বিষয়বস্তু[সম্পাদনা]

আসলে এ সূরাটি হচ্ছে একটি দোয়া। যে কোন ব্যক্তি এ গ্রন্থটি পড়তে শুরু করলে আল্লাহ প্রথমে তাকে এ দোয়াটি শিখিয়ে দেন। গ্রন্থের শুরুতে এর স্থান দেয়ার অর্থই হচ্ছে এই যে, যদি যথার্থই এ গ্রন্থ থেকে তুমি লাভবান হতে চাও, তাহলে নিখিল বিশ্ব-জাহানের মালিক আল্লাহর কাছে দোয়া এবং সাহায্য প্রার্থনা করো।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

মানুষের মনে যে বস্তুটির আকাঙ্ক্ষা ও চাহিদা থাকে স্বভাবত মানুষ সেটিই চায় এবং সে জন্য দোয়া করে। আবার এমন অবস্থায় সে এই দোয়া করে যখন অনুভব করে যে, যে সত্তার কাছে সে দোয়া করছে তার আকাংখিত বস্তুটি তারই কাছে আছে। কাজেই কুরআনের শুরুতে এই দোয়ার শিক্ষা দিয়ে যেন মানুষকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে, সত্য পথের সন্ধান লাভের জন্য এ গ্রন্থটি পড়, সত্য অনুসন্ধানের মানসিকতা নিয়ে এর পাতা ওলটাও এবং নিখিল বিশ্ব-জাহানের মালিক ও প্রভু আল্লাহ হচ্ছেন জ্ঞানের একমাত্র উৎস--- একথা জেনে নিয়ে একমাত্র তার কাছেই পথনির্দেশনার আর্জি পেশ করেই এ গ্রন্থটি পাঠের সূচনা কর।

এ বিষয়টি অনুধাবন করার পর একথা সুস্পষ্ট হয়ে যায় যে, কুরআন ও সূরা ফাতিহার মধ্যকার আসল সম্পর্ক কোন বই ও তার ভূমিকার সম্পর্কের পর্যায়ভুক্ত নয়। বরং এ মধ্যকার আসল সম্পর্কটি দোয়া ও দোয়ার জবাবের পর্যায়ভুক্ত। সূরা ফাতিহা বান্দার পক্ষ থেকে একটি দোয়া। আর আল্লাহর পক্ষ থেকে কুরআন তার জবাব । বান্দা দোয়া করে, "হে মহান প্রভু ! আমাকে পথ দেখাও"। জবাবে মহান প্রভু এই বলে সমগ্র কুরআন তার সামনে রেখে দেন, "এই নাও সেই হিদায়াত ও পথের দিশা যে জন্য তুমি আমার কাছে আবেদন জানিয়েছো "।

বৈশিষ্ট্য[সম্পাদনা]

এই সূরাটি আল কুরআনের একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ সূরা। প্রথমত এ সূরা দ্বারাই পবিত্র কোরআন আরম্ভ হয়েছে এবং এ সূরা দিয়েই সর্বশ্রেষ্ঠ এবাদত সালাত আরম্ভ করতে হয়। যে সকল সাহাবী সূরা আল-ফাতিহা সর্বপ্রথম নাযিল হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন, তাদের সে বক্তব্যের অর্থ বোধহয় এই যে, পরিপূর্ণ সূরারূপে এর আগে আর কোনো সূরা নাযিল হয়নি। এ জন্যই এ সূরার নাম "ফাতিহাতুল-কিতাব" বা "কুরআনের উপক্রমণিকা" রাখা হয়েছে।

'সূরা আল্-ফাতিহা' এদিক দিয়ে সমগ্র কোরআনের সার-সংক্ষেপ। এ সূরায় সমগ্র কোরআনের সারমর্ম সংক্ষিপ্ত আকারে বলে দেয়া হয়েছে। কোরআনের অবশিষ্ট সূরাগুলো প্রকারান্তরে সূরা ফাতিহারই বিস্তৃত ব্যাখ্যা। তাই এ সূরাকে সহীহ হাদীসে 'উম্মুল কিতাব', 'উম্মুল কুরআন', 'কোরানে আযীম' বলেও অভিহিত করা হয়েছে।[৭] হযরত রসূলে কারীম এরশাদ করেছেন যে -

"যার হাতে আমার জীবন-মরণ, আমি তাঁর শপথ করে বলছি, সূরা আল-ফাতিহার দৃষ্টান্ত তাওরাত, ইনজীল, যাবুর প্রভৃতি অন্য আসমানী কিতাবে তো নেই-ই, এমনকি পবিত্র কোরআনেও এর দ্বিতীয় নেই।"

ইমাম তিরমিযী আবু হুরাইরাহ থেকে বর্ণনা করেছেন যে, রসূলে কারীম আরো বলেছেন যে -

"সূরায়ে ফাতিহা প্রত্যেক রোগের ঔষধবিশেষ।"

সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা[সম্পাদনা]

এ সূরার প্রথম ও তৃতীয় আয়াতে আল্লাহ্‌র গুণবাচক নামসমূহের মধ্যে আর-রাহমানআর-রাহীম উল্লিখিত হয়েছে। রহম শব্দের অর্থ হচ্ছে দয়া, অনুগ্রহ। এই 'রহম' ধাতু হতেই 'রহমান' ও 'রহীম' শব্দদ্বয় নির্গত হয়েছে। 'রহমান' শব্দটি আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্য কারও জন্য ব্যবহার করা জায়েয নেই। অন্যদিকে 'রহীম' সৃষ্টজগতের কারও কারও গুণ হতে পারে। তবে আল্লাহ্‌র গুণ হলে সেটা যে অর্থে হবে অন্য কারও গুণ হলে সেটা একই অর্থে হবে না।[১]

সূরাটির দ্বিতীয় আয়াতে আল-হামদু কথাটি আশ-শুক্-র্ থেকে অনেক ব্যাপক, যা আধিক্য ও পরিপূর্ণতা বুঝায়। 'আশ-শুক্-র্ লিল্লাহ' বলার অর্থ হতো এই যে, আমি আল্লাহ্‌র যে নিয়ামত পেয়েছি, সেজন্য আল্লাহ্‌র শুকরিয়া আদায় করছি। অপরদিকে 'আল-হামদুলিল্লাহ' এর সম্পর্ক শুধু নিয়ামত প্রাপ্তির সাথে নয়।[১] মানুষ যখন আল্লাহ্‌ ছাড়া অপর কারো গুণ সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয়ে তার প্রশংসা করতে শুরু করে, তখন মানুষ তার ভক্তি-শ্রদ্ধার জালে বন্দী হয়ে পড়ে এবং শেষ পর্যন্ত সে মানুষের দাসত্ব ও মানুষের পূজা করতে আরম্ভ করে। এই অবস্থা মানুষকে শিরকের পথে পরিচালিত করতে পারে। সে জন্য যাবতীয় 'হামদ' একমাত্র আল্লাহ্‌র জন্যই করার শিক্ষা দেয়া হয়েছে।[১]

সৃষ্টিজগতকে আলাম এবং বহুবচনে আলামীন বলা হয়। সূরা আশ-শু'আরার ২৩-২৪ আয়াতদুটিতে বলা হয়েছে,

ফিরআউন বলল : "রাব্বুল আলামীন কি?" মূসা বললেন : "যিনি আকাশসমূহ-ভূপৃষ্ঠ এবং এ দু'টির মধ্যবর্তী সমস্ত জিনিসের রব।"

রব হচ্ছেন যিনি সৃষ্টি করা, প্রতিটি জিনিসের পরিমাণ নির্ধারণ করা, পথ প্রদর্শন ও আইন বিধান দেওয়া, লালন-পালন করা, রিযিক্‌ দান করা, জীবনদান করা, মৃত্যু প্রদান করা, সন্তান দেয়া, আরোগ্য প্রদান করা ইত্যাদি সবকিছু করার ক্ষমতা রাখেন।[১] চতুর্থ আয়াতে আল্লাহ্‌কে 'বিচার দিনের মালিক' বলে ঘোষণা করা হয়েছে। বিচার দিন সম্পর্কে সূরা আল-ইনফিতারের ১৭-১৯ নং আয়াতগুলোতে বলা হয়েছে,

"আর কিসে আপনাকে জানাবে প্রতিদান দিবস কী? তারপর বলি, কিসে আপনাকে জানাবে প্রতিদান দিবস কী? সেদিন কোনো মানুষ অন্য মানুষের জন্য কোনো কিছুর ক্ষমতা রাখবে না। আর সেদিন সকল বিষয় হবে আল্লাহর কর্তৃত্বে।"

পঞ্চম আয়াতে আল্লাহ ছাড়া অন্যসব উপাস্যের ইবাদাত করা ও সেগুলোর কাছে সাহায্য চাওয়াকে অস্বীকার করা হয়েছে। ইবাদত হল ভয়-ভীতি, আশা-আকাঙ্খার সাথে সেইসব কথা বা কাজ সম্পাদন করা, যা আল্লাহ পছন্দ করেন ও যাতে তিনি সন্তুষ্ট হন। যেসব কথা ও কাজে আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন তা থেকে বিরত থাকাও ইবাদাত। আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করা অথবা কারো কাছে অলৌকিক সাহায্য কামনা করা শির্ক হিসেবে গণ্য হয়।

সূরাটির ষষ্ঠ আয়াতে হিদায়াত চাওয়া হয়েছে। স্নেহ ও করুণা এবং কল্যাণ কামনাসহ কাউকে মঙ্গলময় পথ দেখিয়ে দেয়া ও মনজিলে পৌঁছিয়ে দেয়াকে আরবী পরিভাষায় হিদায়াত বলে। 'হিদায়াত' শব্দটির দুইটি অর্থ। একটি পথ প্রদর্শন করা, আর দ্বিতীয়টি লক্ষ্য স্থলে পৌঁছিয়ে দেয়া। সিরাত শব্দের অর্থ হচ্ছে রাস্তা বা পথ। আর মুস্তাকীম হচ্ছে, সরল সোজা।[১]

সূরাটির শেষ আয়াত এর পূর্বের আয়াতের 'সরলপথ'-এর ব্যাখ্যা।

সূরা আল-ফাতিহার প্রথম তিনটি আয়াতে আল্লাহ্‌র প্রশংসার বর্ণনা করা হয়েছে এবং প্রশংসার সাথে সাথে ঈমানের মৌলিক নীতি ও আল্লাহ্‌র একত্ববাদের বর্ণনাও সূক্ষভাবে দেয়া হয়েছে। তৃতীয় আয়াতে এর দু'টি শব্দে প্রশংসার সাথে সাথে কিয়ামত ও পরকালের কথা বলা হয়েছে। চতুর্থ আয়াতের এক অংশে প্রশংসা এবং অপর অংশে দোয়া ও প্রার্থনা করা হয়েছে। مَـالِكِ يَوْمِ الدِّينِ - এর মধ্যে জানিয়ে দেয়া হয়েছে যে, মানুষ পরকালেও আল্লাহ্‌র মুখাপেক্ষী। প্রতিদান দিবসে আল্লাহ্‌ ব্যতীত অন্য কারো সাহায্য পাওয়া যাবে না। একজন বুদ্ধিমান ও বিবেকবান ব্যক্তি মনের গভীরতা থেকেই এ স্বতঃস্ফুর্ত স্বীকৃতি উচ্চারণ করছে যে, আমরা তোমাকে ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত করি না। এ মৌলিক চাহিদাই إِيَّاكَ نَعْبُدُ তে বর্ণনা করা হয়েছে। অভাব পূরণকারী একক সত্তা আল্লাহ্‌, সুতরাং নিজের যাবতীয় কাজে সাহায্যও তার নিকট প্রার্থনা করবে। এ মৌলিক চাহিদাই বর্ণনা وإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ -এ করা হয়েছে। মোটকথা, এ চতুর্থ আয়াতে একদিকে আল্লাহ্‌র প্রশংসার সাথে একথারও স্বীকৃতি রয়েছে যে, ইবাদত ও শ্রদ্ধা পাওয়ার একমাত্র তিনিই যোগ্য। অপরদিকে তার নিকট সাহায্য ও সহায়তার প্রার্থনা করা এবং তৃতীয়তঃ আল্লাহ্‌ ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত না করার শিক্ষাও দেয়া হয়েছে। শেষ তিনটি আয়াতে মানুষের দোয়া ও আবেদনের বিষয়বস্তু এবং এক বিশেষ প্রার্থনা পদ্ধতি শিক্ষা দেয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত হাদিস[সম্পাদনা]

একটি হাদীসে মুহাম্মাদের এক সঙ্গীর গল্প বর্ণনা করা হয়েছে, যিনি এক বিষাক্রান্ত আদিবাসী প্রধানের ঔষধ হিসাবে আল-ফাতিয়াহ পাঠ করেছিলেন। হাদীস অনুসারে মুহাম্মদ পরে সঙ্গীকে জিজ্ঞাসা করলেন, "আপনি কীভাবে জানলেন যে এটি রুক্বায়াহ [ঔষধ]?"[৫] মুহাম্মদ আল বুখারী তার সংগ্রহে রেকর্ড করেছেন:

আবু সাইদ আল খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত:
যখন আমরা আমাদের একটি যাত্রায় ছিলাম, আমরা এমন এক জায়গায় ফিরে গেলাম যেখানে একজন দাসী মেয়ে এসে বলল, "এই গোত্রের প্রধান বিচ্ছু দ্বারা আহত হয়েছিল এবং আমাদের লোকেরা উপস্থিত নেই; তোমাদের মধ্যে এমন কেউ কি আছে যে তাকে চিকিৎসা করতে পারে (কিছু পাঠ করে)?" তারপরে আমাদের একজন লোক তার সাথে চলে গেল। যদিও আমরা মনে করিনি যে তিনি এই জাতীয় কোনও চিকিৎসা জানতেন। কিন্তু তিনি কিছু পাঠ করে চিকিৎসা করলেন এবং অসুস্থ লোকটি সুস্থ হয়ে উঠল এবং তারপরে তিনি তাকে ত্রিশটি ভেড়া উপহার দিয়েছিলেন এবং (পুরস্কার হিসাবে) আমাদেরকে দুধ পান করান। তিনি ফিরে আসলে, আমরা আমাদের বন্ধুকে জিজ্ঞাসা করলাম, "আপনি কি কিছু পাঠ করে চিকিৎসা করা জানেন?" তিনি বলেছিলেন, "না, তবে আমি কেবল সূরা আল-ফাতিহা আবৃত্তি করে চিকিৎসা করেছি।" আমরা বললাম, আমরা মদীনা পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত বা নবীকে জিজ্ঞাসা করার আগ পর্যন্ত কিছু না বলতে (এ সম্পর্কে), আমরা রাসূলের নিকট উল্লেখ করেছিলাম (আমরা যে মেষগুলি নিয়েছিলাম তা গ্রহণ করা বৈধ ছিল কি না তা জানতে) । নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তিনি কীভাবে জানতে পেরেছিলেন যে এটি (আল-ফাতিহা) চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে? আপনার পুরস্কার বিতরণ করুন এবং আমার জন্য এটির একটি অংশও অর্পণ করুন।"

— মুহাম্মদ আল বুখারী, সহীহ আল বুখারী [৮]

অনুরূপ সংস্করণ পাওয়া যায়: আল বুখারী: ০০৭.০৭১.৬৪৫[৯] — ঔষধ; আল বুখারী: ০০৭.০৭১.৬৩৩[১০] — ঔষধ; আল বুখারী: ০০৭.০৭১.৬৩২[১১] — ঔষধ

মুসলিম ইবনে আল-হাজ্জাজ লিপিবদ্ধ করেছেন আবু হুরায়রাহ বলেছিলেন যে মুহাম্মাদ বলেছেন:

কেউ যদি এমন প্রার্থনা দেখে যেখানে সে উম্মুল কুরআন তিলাওয়াত করে না, [১২] তবে এর ঘাটতি রয়েছে [তিনি এই তিনবার বলেছেন] এবং তা সম্পূর্ণ হয় না।

— মুসলিম ইবনে আল-হাজ্জাজ, সহিহ মুসলিম''[১৩][১৪]

অনুরূপ একটি কাহিনী আল বুখারীতে পাওয়া যায়: ০০১.০১২.৭২৩[১৫]—সালাতের বৈশিষ্ট্যসমূহ।

মুসলিম ইবনে আল হাজ্জাজ লিপিবদ্ধ করেছেন:

"হযরত জিব্রাইল (আঃ) যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে বসে ছিলেন, তখন তিনি তাঁর উপরে একটি শব্দ শুনলেন এবং মাথা উঠালেন। তিনি বললেন: 'এটি আকাশের একটি দরজা যা আজ খোলা হয়েছে এবং যা আজকের আগে কখনও খোলা হয়নি।' সেখান থেকে একজন ফেরেশতা নেমে এসেছিলেন। এবং তিনি (হযরত জিব্রাইল) বলেছেন: 'এটি এমন এক ফেরেশতা যিনি পৃথিবীতে অবতীর্ণ হয়েছেন, যিনি এর আগে কখনও অবতরণ করেননি।' তিনি (সেই ফেরেশ্তা) শান্তির শুভেচ্ছা জানিয়ে বললেনঃ দুটি নূরের সুসংবাদ দাও; যার পূর্বে আপনার কোন নবীকে দান করা হয়নি: কিতাবের সূরা ফাতিহা (সূচনা অধ্যায়) এবং সূরা বাকারার শেষ। আপনি তাদের এটি দেওয়া ছাড়া একটি শব্দও পাঠ করবেন না।

— মুসলিম ইবনে আল-হাজ্জাজ, সহিহ মুসলিম[১৬]

সুরা আল-ফাতিহার উপকার ও ফযীলত[সম্পাদনা]

হাদীসসমূহে বর্ণিত ফজিলত ও উপকারিতা (আরবি: فضائل ) এর কারণে কিছু সূরাকে ইসলামের অনুসারীরা বিশেষ গুরুত্ব দেয়। বিভিন্ন হাদীসের কাহিনীর গ্রহণযোগ্যতা সুন্নি ও শিয়া মুসলিমদের মধ্যে পরিবর্তিত হয় এবং একটি হাদীসের নিশ্চিত সত্যতার বিভিন্ন স্তরের শ্রেণিবদ্ধ করার জন্য বিভিন্ন পদ রয়েছে।

সুন্নি অনুযায়ী উপকার[সম্পাদনা]

অন্যতম সেরা সূরা[সম্পাদনা]

আহমদ ইবনে হাম্বল তাঁর মুসনাদে (হাদিস সংকলনে) লিপিবদ্ধ করেছেন যে আবু সা'ইদ বিন আল-মু'আললা বলেছেন: "যখন নবী আমাকে ডেকেছিলেন তখন আমি প্রার্থনা করছিলাম, সুতরাং নামায শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমি তাকে উত্তর দিলাম না। আমি তখন তার কাছে গেলাম এবং সে বলল, 'তোমাকে আসতে বাধা দেয় কি?' আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি প্রার্থনা করছিলাম।' তিনি বললেন, 'আল্লাহ কি বলেননি,' হে ইমানদারগণ! আল্লাহকে (তাঁর আনুগত্যের মাধ্যমে) এবং (তাঁর) রাসূলের উত্তর দিন, যখন তিনি আপনাকে তাঁর কাছে ডাকেন, যা আপনাকে জীবন দান করে। " ? ' তিনি তখন বলেছিলেন, 'আপনি মসজিদ ছেড়ে যাওয়ার আগে আমি আপনাকে কোরআনের সর্বশ্রেষ্ঠ সূরা শিখিয়ে দেব।' তিনি আমার হাতটি ধরেছিলেন এবং যখন তিনি মসজিদ ছেড়ে যাচ্ছেন, তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি বলেছিলেন: "আমি আপনাকে কোরআনের সর্বশ্রেষ্ঠ সূরা শিখিয়ে দেব।" উত্তরে তিনি বলেন, 'হ্যাঁ' "আল-হামদু লিল্লাহি রাব্বিল-আলামীন," এটি সাতটি বারবার আবৃত (আয়াত) এবং আমাকে দান করা মহিমান্বিত কুরআন। " (আল বুখারী, আবু দাউদ, আন-নাসাই এবং ইবনে মাজাহও এ হাদীসটি লিপিবদ্ধ করেছেন।)

রোগ নিরাময়ের জন্য আল-ফাতিহা ব্যবহৃত হয়েছিল[সম্পাদনা]

আল বুখারী তার সংগ্রহে লিপিবদ্ধ করেছেন: আবু সা 'ইদ আল খুদরী বলেছেন: "আমরা যখন আমাদের একটি যাত্রায় ছিলাম, তখন আমরা এমন এক জায়গায় ফিরে গেলাম যেখানে একজন দাসী এসে বলল," এই গোত্রের প্রধান বিচ্ছু দ্বারা আহত হয়েছিল এবং আমাদের লোকেরা উপস্থিত নেই; তোমাদের মধ্যে এমন কেউ কি আছে যে তাকে চিকিৎসা করতে পারে (কিছু পাঠ করে)? " তারপরে আমাদের একজন লোক তার সাথে চলে গেল যদিও আমরা মনে করি নি যে তিনি এই জাতীয় কোনও চিকিৎসা জানেন। কিন্তু তিনি কিছু পাঠ করে চিকিৎসা করলেন এবং অসুস্থ লোকটি সুস্থ হয়ে উঠল এবং তারপরে তিনি তাকে ত্রিশটি ভেড়া উপহার দিয়েছিলেন এবং আমাদেরকে দুধ পান করান (পুরস্কার হিসাবে)। তিনি ফিরে আসলে, আমরা আমাদের বন্ধুকে জিজ্ঞাসা করলাম, "আপনি কি কিছু পাঠ করে চিকিৎসা করা জানেন?" তিনি বলেছিলেন, "না, তবে আমি কেবল সূরা আল-ফাতিহা আবৃত্তি করে চিকিৎসা করেছি।" আমরা বললাম, আমরা মদীনা পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত বা নবীকে জিজ্ঞাসা করার আগ পর্যন্ত কিছু না বলতে (এ সম্পর্কে), আমরা রাসূলের নিকট উল্লেখ করেছিলাম (আমরা যে মেষগুলি নিয়েছিলাম তা গ্রহণ করা বৈধ ছিল কি না তা জানতে) । নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তিনি কীভাবে জানতে পেরেছিলেন যে এটি (আল-ফাতিহা) চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে? আপনার পুরস্কার বিতরণ করুন এবং আমার জন্য এটির একটি অংশও অর্পণ করুন। " (আল বুখারী ০০৬.০৬১.৫২৯ - কুরআনের ফজিলত)

(অনুরূপ সংস্করণগুলিতে পাওয়া গেছে: আল বুখারী: ০০৭.০৭১.৬৪৫ - ঔষধ; আল বুখারি: ০০৭.০৭১.৬৩৩ - ঔষধ; আল বুখারী: ০০৭.০৭১.৬৩২ - ঔষধ)

নামাজে প্রয়োজনীয়তা[সম্পাদনা]

মুসলিম ইবনে আল-হাজ্জাজ লিপিবদ্ধ করেছেন হযরত আবু হুরাইরাহ (রাঃ) বলেছেন যে নবী বলেছেন:

"যে ব্যক্তি এমন কোন সালাত আদায় করে যাতে সে উম্মুল কুরআন (যেমন, আল-ফাতিহা) পড়ে না, তবে তার সালাত অসম্পূর্ণ।" (সহিহ মুসলিম) (আল বুখারীতে একই ধরনের কাহিনী পাওয়া গেছে: ০০১.০১২.৭২৩ - প্রার্থনার বৈশিষ্ট্য)

দুই নূরের একটি[সম্পাদনা]

মুসলিম ইবনুল হাজ্জাজ লিপিবদ্ধ করেছেন ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেছেন:

"হযরত জিব্রাইল (অর্থাৎ ফেরেশতা গ্যাব্রিয়েল) যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে বসে ছিলেন, তখন তিনি তাঁর উপরে একটি শব্দ শুনলেন এবং মাথা উঠালেন। তিনি বললেন: 'এটি আকাশের একটি দরজা যা আজ খোলা হয়েছে এবং যা আজকের আগে কখনও খোলা হয়নি।' সেখান থেকে একজন ফেরেশতা নেমে এসেছিলেন। এবং তিনি (হযরত জিব্রাইল) বলেছেন: 'এটি এমন এক ফেরেশতা যিনি পৃথিবীতে অবতীর্ণ হয়েছেন, যিনি এর আগে কখনও অবতরণ করেননি।' তিনি (সেই ফেরেশ্তা) শান্তির শুভেচ্ছা জানিয়ে বললেনঃ দুটি নূরের সুসংবাদ দাও; যার পূর্বে আপনার কোন নবীকে দান করা হয়নি: কিতাবের সূরা ফাতিহা (সূচনা অধ্যায়) এবং সূরা বাকারার শেষ। আপনি তাদের এটি দেওয়া ছাড়া একটি শব্দও পাঠ করবেন না। (সহিহ মুসলিম)

"যখন আপনি নিজের বিছানায় শুয়ে আছেন [ঘুমের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন] এবং আপনি [বইয়ের সূচনা অধ্যায়] এবং সূরা আল-ইখলাস তিলাওয়াত করেন, তখন আপনি মৃত্যু ব্যতীত সমস্ত কিছু থেকে সুরক্ষিত হয়ে পড়ে..." [দুর্বল ধায়েফ আত-তারগীব ওয়া তারহেব: ৩৪]

"ফাতিহা ও আয়াতুল কুরসী: কোন দাস কখনই তাদের ঘরে এইদুটি আবৃত্তি করবে না; এছাড়া সেদিন কোনও জিন বা মানবের কোন খারাপ দৃষ্টি তাদেরকে প্রভাবিত করবে না..." [ধাইফ আল জাম আমি আস-সাগীর:৩৯৫২; আলেম আলবানীর মতে দুর্বল। "ফাতিহা কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমান।" [দুর্বল ধইফ আল জাম আমি আস-সাগীর: ৩৯৪৯]

শিয়া অনুযায়ী উপকার[সম্পাদনা]

মুহাম্মাদ (সাঃ) একজন সাহাবী বর্ণনা করেছেন যে তিনি একবার মুহাম্মদের (সাঃ) উপস্থিতিতে এই সূরাটি তেলাওয়াত করেছিলেন, তিনি বলেছিলেন, "যার হাতে আমার প্রাণ, তার দ্বারা এ জাতীয় অনুরূপ কিছু তাওরাতে (তাওরাত) , ইনজিল ( সুসমাচার), জাবুর (সাম) বা এমনকি কোরআনও অন্তর্ভুক্ত হয়নি।"

মুহাম্মদ (সাঃ) একবার জাবির ইবনে আবদাল্লাহ আনসারিকে জিজ্ঞাসা করলেন, "আমি কি আপনাকে এমন একটি সূরা শিখিয়ে দেব যার সাথে পুরো কুরআনে আর কোন তুলনা নেই?" জাবির জবাব দিলেন, "হ্যাঁ, এবং হে আল্লাহর নবী (সাঃ) আমার পিতা-মাতা আপনার উপর বন্দিত্বমোচন করতে পারেন।" সুতরাং মুহাম্মদ (সাঃ) তাকে সূরা আল-ফাতিহা শিখিয়েছিলেন। তখন মুহাম্মদ (সাঃ) জিজ্ঞাসা করলেন, "জাবির, আমি কি এই সূরা সম্পর্কে কিছু বলতে পারি?" জাবির জবাব দিলেন, "হ্যাঁ, এবং হে আল্লাহর নবী আমার পিতা-মাতা আপনার উপর বন্দিত্বমোচন করতে পারেন।" মুহাম্মদ বলেছিলেন, "এটি (সূরা আল-ফাতিহা) মৃত্যু ব্যতীত প্রতিটি অসুস্থতার নিরাময়।"

ইমাম আবুআবদিল্লাহ জাফর আস-সাদিক বলেছেন যে যার রোগ সুরা আল ফাতিহার দ্বারা নিরাময় করা যায় না, তবে সেই ব্যক্তির কোন চিকিৎসা নেই। একই বর্ণনায় লেখা আছে যে এই সূরাটি শরীরের যে অংশে ব্যথা হচ্ছে, সে অংশে ৭০ বার তেলাওয়াত করা হলে ব্যথা অবশ্যই দূর হবে। প্রকৃতপক্ষে এই সূরার শক্তি এতটাই বেশি যে বলা হয়ে থাকে যে, যদি কেউ এটি একটি মৃত দেহের উপরে ৭০ বার তেলাওয়াত করে, তবে সেই দেহটি চলতে শুরু করলে (অর্থাৎ জীবনে ফিরে আসে) তা আপনাকে অবাক করা উচিত নয়। সুরা ফাতিহা শারীরিক ও আধ্যাত্মিক অসুস্থতাও নিরাময় করে।

ইবলিস ৪টি অনুষ্ঠানে শোক প্রকাশ করে[সম্পাদনা]

আম্বারী তাঁর "কিতাবাবুর-রাদ" গ্রন্থে মুজাহিদ ইবনে জাবরের কাছ থেকে উল্লেখ করেছেন যে, আল্লাহ তা'আলার অভিশপ্ত ইবলিস চারবার শোক করেছিলেন: প্রথমে যখন তাকে অভিশাপ দেওয়া হয়েছিল; দ্বিতীয়ত যখন তাকে স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে ফেলে দেওয়া হয়েছিল; তৃতীয়ত যখন মুহাম্মদকে নবুওয়াত দেওয়া হয়েছিল; চতুর্থত যখন সূরা ফাতিহা নাযিল হয়েছিল এবং তা মদীনায় অবতীর্ণ হয়েছিল।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া। কুরআনুল কারীম (অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তাফসীর)। কুরআন মুদ্রণ কমপ্লেক্স। 
  2. Maududi, Sayyid Abul Ala। Tafhim Al Quran। ২০১৩-০৭-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৬-১৭ 
  3. "قراءة الفاتحة في الصلاة - موقع مقالات إسلام ويب"www.islamweb.net। ২০২০-১২-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৬-২৩ 
  4. Mulla SadraTafsir al-Quran al-Karim। পৃষ্ঠা 1:163–164। 
  5. Ibn Kathir। Tafsir Ibn Kathir। ২০১৭-০৬-২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৮-১৪ 
  6. "Hadith - The Book of the Commencement of the Prayer - Sunan an-Nasa'i - Sunnah.com - Sayings and Teachings of Prophet Muhammad (صلى الله عليه و سلم)"sunnah.com। ২০২০-০৮-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-৩০ 
  7. কুরতুবী
  8. সহীহ বুখারী, ৬:৬১:৫২৯ (ইংরেজি)
  9. সহীহ বুখারী, ৭:৭১:৬৪৫ (ইংরেজি)
  10. সহীহ বুখারী, ৭:৭১:৬৩৩ (ইংরেজি)
  11. সহীহ বুখারী, ৭:৭১:৬৩২ (ইংরেজি)
  12. "The Reason it is Called Umm Al-Kitab"। ২০১৩-০৪-০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৩-০৮ 
  13. "The Meaning of Al-Fatihah and its Various Names"। ২০১৭-০৬-২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৮-১৪ 
  14. সহীহ মুসলিম, ৪:৭৭৩ (ইংরেজি)
  15. সহীহ বুখারী, ১:১২:৭২৩ (ইংরেজি)
  16. সহীহ মুসলিম, ৪:১৭৬০ (ইংরেজি)

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]