ট্রলার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আইসল্যান্ডের একটি আধুনিক ট্রলার

ট্রলার (ইংরেজি: trawler) মাছ ধরার কাজে ব্যবহৃত এক ধরনের নৌযান। ট্রল (trawl) নামের এক বিশেষ ধরনের মাছ ধরার জাল টেনে নিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয় বলে নৌযানটির এমন নামকরণ করা হয়েছে। মাছ ধরা ছাড়াও যাত্রী পরিবহন ও মালামাল পরিবহনেও ট্রলার ব্যবহার করা হয়। ট্রলারগুলো মূলত ডিজেল-ইঞ্জিন সংবলিত মাঝারি থেকে বড় আকারের নৌকা। ইঞ্জিনের সাহায্যে চলে বলে ট্রলারে পাল থাকে না। চলাচলের দিক নিয়ন্ত্রণের জন্য হাল থাকে। আধুনিক ট্রলার আকারে ৩০০০ টন পর্যন্তও হতে পারে এবং এতে অনেক সময় ধৃত মাছের জন্য হিমাগারের সুবিধা থাকে।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

মধ্যযুগে ইংল্যান্ডের ব্রিক্সহাম ছিল বৃহত্তম মৎস্যবন্দর। এই ব্রিক্সহামেই ১৯শ শতকে ট্রলারের উদ্ভাবন হয়। সেই সময়ের ট্রলার ছিল কাঠের তৈরি পালতোলা নৌকাবিশেষ। উদ্ভাবনের কিছুদিনের মধ্যেই মাছধরার নৌকা হিসেবে ট্রলার ছড়িয়ে পরে গোটা বিশ্বে।

প্রথমদ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সাগর থেকে মাইন সরিয়ে নিতে অনেক ট্রলার ব্যবহার করা হয়েছিল। শত্রুপক্ষের বোমারু বিমান ও জাহাজের আক্রমণ থেকে জেলে নৌকার বহর রক্ষা করতেও কিছু ট্রলারে অস্ত্রশস্ত্র সংযোজন করে ব্যবহার করা হয়েছিল। স্নায়ুযুদ্ধের সময় আধুনিক যন্ত্রপাতি সজ্জিত বেশ কিছু ট্রলার ব্যবহার করা হয়েছিল গুপ্তচর জাহাজ হিসেবে ।

বাংলাদেশের ট্রলার[সম্পাদনা]

নারিকেল জিঞ্জিরা (সেইন্ট মার্টিন) দ্বীপের সাগর সৈকতে ট্রলার

বাংলাদেশের দক্ষিণে উপকূলীয় অঞ্চলে মাছধরার নৌকা হিসেবে ব্যবহৃত হয় একধরনের ট্রলার । আধুনিক ট্রলারের সাথে এসব মাছধরা নৌকার মিল সামান্যই, তাই এদেরকে দেশী ট্রলার বলা যেতে পারে । দেশী ট্রলার গুলো মূলত কাঠের তৈরি মাঝারি থেকে বৃহদাকার নৌকা । ডিজেল ইঞ্জিনের সাহায্যে চলাচল করে, তাই পাল থাকে না তবে দাঁড় থাকে । চলাচলের দিক নিয়ন্ত্রণের জন্য হাল থাকে । ট্রলার মূলত জেলে নৌকা হলেও যাত্রী ও মালামাল বহনেও এসব নৌকা ব্যবহার করা হয় ।