বায়তুল্লাহ মেহসুদ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বায়তুল্লাহ মেহসুদ
Shoulder height portrait of a man with a long black beard and black hair and head dress
বায়তুল্লাহ মেহসুদ
স্থানীয় নাম
পশতু: بیت اللہ محسود
উর্দু: بیت اللہ محسود‎‎
জন্মc. 1974
Bannu District, Khyber Pakhtunkhwa
মৃত্যুআগস্ট ৫, ২০০৯(২০০৯-০৮-০৫) (aged about 35)
South Waziristan
আনুগত্যTehrik-i-Taliban Pakistan
যুদ্ধ/সংগ্রামWar on Terror:

বায়তুল্লাহ মেহসুদ জঙ্গি প্রধান যিনি বেঁচে আছেন না মারা গেছেন তা নিয়ে গণমাধ্যমসহ পাকিস্তান ও মার্কিন সেনামহলে আলোচনার অন্ত নেই। এদিকে পাকিস্তানি তালেবান তার মৃত্যুর খবর অস্বীকার করেছে। তারা দাবি করেছে তাদের নেতা সুস্থ আছেন এবং ‘জিহাদি’ নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন। ধর্মীয় উগ্রবাদ আর সন্ত্রাসে জর্জরিত পাকিস্তানে নিরাপত্তাব্যবস্থা এমনকি সার্বভৌমত্বের প্রতিও হুমকি হিসেবে পরিগণিত মেহসুদের বিরুদ্ধে অনেক দিন ধরেই সর্বাত্মক সেনা অভিযান চলছিল।[১]

প্রাথমিক জীবন[সম্পাদনা]

সত্তর দশকের গোড়ার দিকে মেহসুদ অনগ্রসর ওয়াজিরিস্তানের বান্নু জেলার লন্দি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি প্রাথমিক পাঠ নেন স্থানীয় মাদ্রাসায়। আশির দশকের গোড়ার দিকে সোভিয়েত ইউনিয়ন আফগানিস্তানে দখলদারি চালালে বিপুলসংখ্যক পাকিস্তানি মাদ্রাসাছাত্রকে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই রিক্রুট করে আফগান যুদ্ধের জন্য। সেই দলে যোগদান করেন মেহসুদ। সেই থেকে তার পথচলা সহিংসতার রাস্তায়।[১]

তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান[সম্পাদনা]

নাইন-ইলেভেনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র যখন আফগানিস্তানে হমলা শুরু করে তখন বায়তুল্লাহ মেহসুদের কোনো খ্যাতি ছিল না। ২০০৭ সালে তিনি পাকিস্তানের বিবদমান কিছু দলকে একত্রিত করে উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ ও দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে গঠন করেন তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান। পরবর্তী সময়ে উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে শরিয়া আইন চালুর দাবিতে মেহসুদের নেতৃত্বে তালেবানরা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। পাকিস্তান এবং তাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মেহসুদের বাহিনীকে আল কায়দার অংশ হিসেবে জঙ্গি গোষ্ঠী আখ্যায়িত করে। তবে পাশ্চাত্যের কোনো লক্ষ্যবস্তুতে মেহসুদ হামলা পরিচালনা করেননি।[১][২]

শরিয়া শাসন[সম্পাদনা]

বায়তুল্লাহ মেহসুদ ‘স্বপ্ন’ দেখতেন শরিয়া শাসনের। শরিয়া শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য পাকিস্তানকে সন্ত্রাসের আখড়ায় পরিণত করেন বায়তুল্লাহ মেহসুদ। দেশটিতে একের পর এক বোমা হামলা, হত্যা পাকিস্তানকে পরিণত করে বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর রাষ্ট্রে।[১]

বেনজির ভুট্টোর হত্যাকারী সন্দেহ[সম্পাদনা]

পাকিস্তানি গোয়েন্দাদের ধারণা, বায়তুল্লাহ মেহসুদ সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর হত্যাকারী। ইসলামাবাদের ম্যারিয়ট হোটেলে ভয়াবহ বোমা হামলা, লাহোরে পুলিশ প্রশিক্ষণকেন্দ্রে হামলা, লাহোরে শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট দলের বাসে আততায়ীর গুলিবর্ষণ, পাকিস্তানে সংঘটিত প্রায় সব ভয়াবহ সন্ত্রাসের জন্য বায়তুল্লাহ মেহসুদকে সন্দেহ করা হয়[১]>[২]

মৃত্যু[সম্পাদনা]

পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে, মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় মেহসুদ, তার স্ত্রী এবং তাদের ৬ থেকে ৭ জন দেহরক্ষী প্রাণ হারায়। মেহসুদের শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হওয়ার পর নিজ গ্রাম নার্দোসাইয়ে তাকে দাফন করা হয় বলে জানা গেছে। তবে পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে মেহসুদের মৃত্যুর খবর এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত করা হয়নি।[৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. বায়তুল্লাহ মেহসুদের নিহত হওয়া না-হওয়া...[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ],নাইর ইকবাল, দৈনিক প্রথম আলো। ঢাকা থেকে প্রকাশের তারিখ: ১৪-০৮-২০০৯ খ্রিস্টাব্দ।
  2. মার্কিন ক্ষেপণাসত্র হামলায় বায়তুল্লাহ মেহসুদ নিহত[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ],ডেস্ক রিপোর্ট, দৈনিক আমার দেশ। ঢাকা থেকে প্রকাশের তারিখ: ০৮-০৮-২০০৯ খ্রিস্টাব্দ।
  3. বায়তুল্লাহ মেহসুদ সম্ভবত নিহত,ফাহমিদা সুলতানা, ডিডাব্লিউ। ঢাকা থেকে প্রকাশের তারিখ: ০৭-০৮-২০০৯ খ্রিস্টাব্দ।

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]