আলতাফুর রহমান

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আলতাফুর রহমান
জন্ম১৯৩৮
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব বাংলাদেশ
প্রতিষ্ঠানলেবার পার্টি
পরিচিতির কারণরাজনীতিবিদ

ডা. মোহাম্মদ আলতাফুর রহমান (জন্মঃ ১৯৩৮) ইংল্যান্ডের লেবার পার্টির একজন রাজনীতিবীদ এবং ল্যাংকাশায়ার এর হিন্ডবার্ন সিটির সাবেক মেয়র।[১] তিনি ১৯৩৮ সালে বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার দীঘলকান্দি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।[২] ১৯৬৬ সালে তিনি ইংল্যান্ড পাড়ি জমান।[১] ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ও তার বন্ধুরা মিলে বাংলাদেশের যুদ্ধাহত মুক্তিযুদ্ধাদের চিকিৎসা সহয়তা দিয়েছিলেন।[৩]

শিক্ষাজীবন[সম্পাদনা]

আলতাফুর রহমান দীঘলকান্দি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেনী পর্যন্ত পড়ার পর সারিয়াকান্দি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখান থেকে এসএসসি পাশ করার পর রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে এইসএসসি পাশ করেন। ১৯৫৮ সালে তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন এবং এমবিবিএস পাশ করার পর রাজশাহী মেডিকেল কলেজেই প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন।[২]

পরিবার[সম্পাদনা]

আলতাফুর রহমানের বাবা মরহুম আজিজুর রহমান এবং মা মরহুমা সবুনুরনেসা। ছয় ভাইবোনের মধ্যে আলতাফুর রহমান হলেন পঞ্চম।[২] তিনি ১৯৭৩ সালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী হোসনে আরার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। স্ত্রী ডা. হোসনে আরা রহমান, মেয়ে ডা.হেলেন রহমান এবং ছেলে আশিকুর রহমানকে নিয়েই আলতাফুর রহমানের সংসার।[৩]

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অবদান[সম্পাদনা]

মুক্তিযুদ্ধের সময় আলতাফুর রহমান লন্ডনে তার পাঁচ বাঙ্গালি বন্ধু ডা. জাফর উল্লাহ চৌধুরী, ডা. কাজী কামরুজ্জামান, ডা. বরকত চৌধুরী, ডা. মাহফুজুল হক ও ডা. মোশারফ হোসেনকে নিয়ে যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযুদ্ধাদের ওষুধ ও চিকিৎসাসেবা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পরে এই ছয় চিকিৎসক মিলে লন্ডনে গঠন করেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন অফ ইউনাইটেড কিংডম। এই সংগঠনের ব্যানারে লন্ডনে ওষুধ সংগ্রহ শেষে ভারতের হিলি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে তারা যুদ্ধাহত মুক্তিযুদ্ধাদের ওষুধ ও চিকিৎসাসেবা প্রদান করেন।[৩]

রাজনৈতিক জীবন[সম্পাদনা]

কারমাইকেল কলেজে পড়ার সময় যখন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে আইযুববিরোধী মনোভাব চাঙ্গা তখন পাকিস্তানের তৎকালীন মন্ত্রী ফজলুল বারী সারিয়াকান্দি আসতে চাইলে তিনি তার বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করেন এবং এজন্য মন্ত্রী তার সফর বাতিল করেন। তিনি মূলত সক্রিয় ছাত্ররাজনীতির সাথে জড়ান রাজশাহী মেডিকেল কলেজে পড়ার সময় থেকেই। আলতাফুর রহমান রাজশাহী মেডিকেল কলেজ স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের ভিপি ছিলেন।[২]

আলতাফুর রহমান রাজশাহীতে ১৯৫৮ থেকে ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত পশ্চিম পাকিম্তানবিরোধী বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে মেডিকেল কলেজসহ ছাত্রসমাজের নেতৃত্ত দেন। ১৯৬৩ সালে আন্দোলনে অংশগ্রহণের অভিযোগে পাকিস্তান সরকার তাকে গ্রেপ্তার করে।[২]

ইংল্যান্ডে তিনি পুলিশ বিভাগের চিকিৎসক ছিলেন। সে সুবাদে এলাকায় ব্যাপক পরিচিত হয়ে উঠেন। সেখানে তিনি ব্রিটিশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে লেবার পার্টির কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। ২০০৬ সালে নিজ দলের কাউন্সিলর লিজলিকে পরাজিত করে হিন্ডবার্ন সিটির মেয়র নির্বাচিত হন ও ২০০৭ সাল পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্বে ছিলেন।[৪] বর্তমানে তিনি হিন্ডবার্ন-বাংলাদেশ ওয়ালফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান।[৫]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Call for donations in aid of cyclone victims
  2. ছুটির দিনে, দৈনিক প্রথম আলো, ২ জুন ২০০৭, পৃষ্ঠাঃ ৪
  3. ছুটির দিনে, দৈনিক প্রথম আলো, ২ জুন ২০০৭, পৃষ্ঠাঃ ৬
  4. "Past Mayors of Hyndburn 1974 - 2012"। ৩১ আগস্ট ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  5. "The Hyndburn Bangladeshi Welfare Association"। ১১ মে ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮