চিনস্ট্র্যাপ পেঙ্গুইন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

চিনস্ট্র্যাপ পেঙ্গুইন
Pygoscelis antarctica
লিভিংস্টন দ্বীপপুঞ্জ, ওয়েস্টার্ন আন্ট্রাকটিকা
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: Animalia
পর্ব: কর্ডাটা
শ্রেণী: পক্ষী
বর্গ: Sphenisciformes
পরিবার: Spheniscidae
গণ: Pygoscelis
প্রজাতি: P. antarctica
দ্বিপদী নাম
Pygoscelis antarctica
(Forster, 1781)
চিনস্ট্র্যাপ পেঙ্গুইন উপনিবেশ ওরনি হার্বারের কাছে, আন্ট্রাকটিক পেনিনসুলা
মাথার সম্মুখ ভাগ
প্রাপ্তবয়স্কদের সাথে তরূণ পেঙ্গুইন
চিনস্ট্র্যাপ পেঙ্গুইন আন্ট্রাকটিকাতে একটি হিমশৈলের ওপরে ওঠার চেস্টা করছে

চিনস্ট্র্যাপ পেঙ্গুইন (Pygoscelis antarctica) হল একধরনের পেঙ্গুইন যাদের দেখতে পাওয়া যায় সাউথ স্যান্ডউইচ দ্বীপপুঞ্জ, অ্যান্টার্কটিকা, সাউথ ওর্কনিস দ্বীপপুঞ্জ, সাউথ সেথল্যান্ড, সাউথ জর্জিয়া, বৌভেট দ্বীপপুঞ্জ, ব্যালিনি দ্বীপপুঞ্জ প্রভৃতি দ্বীপপুঞ্জতে। তাদের মাথার নিচের দিকে সরু কালো রঙের ব্যান্ডের মতন দাগ থাকে বলে এদের নাম এরম দেওয়া হয়েছে এবং এই কালো দাগের জন্য এদেরকে দেখে মনে হয় যেন এরা মাথায় হেলমেট পড়ে আছে। আর এই রকমের রঙের জন্যই এদেরকে অন্যান্য পেঙ্গুইনদের থেকে খুব সহজেই চেনা যায়। এদের অন্যান্য নামগুলো হল "রিংড পেঙ্গুইন", "বিয়ার্ডেড পেঙ্গুইন", "স্টোনক্র্যাকার পেঙ্গুইন" ইত্যাদি।

বর্ণনা[সম্পাদনা]

চিনস্ট্র্যাপ পেঙ্গুইন ৬৮ সেমি (২৭ ইঞ্চি) পর্যন্ত বাড়তে পারে এবং এদের ওজন হয় ৬ কেজি (১৩.২ পাউন্ড)।[২] যদিও কিছু কিছু সময় তাদের ওজন ৩ কেজি (৬.৬ পাউন্ড) হয়ে যেতে পারে, এই ঘটনা ঘটে প্রধানত প্রজনন চক্রের জন্য। পুরষরা মহিলাদের থেকে আকারে বড় এবং ওজনেও বেশি হয়।[৩][৪]

প্রাপ্তবয়স্ক চিনস্ট্র্যাপ পেঙ্গুইনদের ফ্লিপার হয় কালো রঙের এবং এদের ভিতরের দিকে এবং ধারের দিকে সাদা দাগ থাকে। চোখের পিছন পর্যন্ত সাদা রঙের হয় চিনস্ট্র্যাপ পেঙ্গুইনদের এবং তা পিছনের দিকে লালচে বাদামি রঙের হয়ে যায়। এদের গাল এবং গলা দুটোই হয় সাদা রঙের এবং এদের ঠোঁট হয় কালো। এদের পা খুব শক্তিশালী হয় এবং লিপ্তপদাঙ্গুলিযুক্ত পা হয় গোলাপী রঙের। এদের পাখনার কালো এবং সাদা রঙের মিশ্রণ এদের জলের মধ্যে শিকারীদের থেকে ছদ্মবেশ বজায় রাখতে সাহায্য করে। যখন ওপর থেকে দেখা হয় তখন এদের কালো পিঠটা জলের মধ্যে মিলে যায়, এবং যখন নীচ থেকে দেখা হয় তখন এদের বুকের দিকটা সাদা রঙের হয় বলে ওপরের সুর্যাস্তের সাথে মিশে যায় বলে এদেরকে বোঝা যায় না। এরম ভাবেই এরা শিকারীদের হাত থেকে নিজেদের বাচিয়ে রাখার চেস্টা করে।[৫]

এরা প্রধানত মাছ, চিংড়ি ইত্যাদি খেয়ে বেঁচে থাকে। তারা জলে ৮০ কিলোমিটার (৫০ মাইল) পর্যন্ত সাঁতার কেটে শিকার ধরতে যায়। চিনস্ট্র্যাপ পেঙ্গুইনরা বরফ জলের মধ্যে সাঁতার কাটতে পারে কারণ এদের পাখনাগুলো খুব সংযুক্ত যা একটি জলরোধী কোট হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এদের শরীরের মোটা চর্বি নিরোধক প্রদান করে এবং ফ্লিপার ও পায়ে রক্ত ধমনী গুলো তাপ সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত হয়।[৫]

তারা ব্যারেন দ্বীপপুঞ্জতে বসবাস করে এবং শীতকালে হিমশৈলের ওপরে এরা সমবেত হয়। এছড়াও আন্ট্রাকটিক পেনিনসুলাতে এদের বসবাস করে। এদের প্রধান শিকারি হল চিতাবাঘ শীল। ১৬ মিলিয়ন চিনস্ট্র্যাপ পেঙ্গুইনদের আয়ু প্রধানত ১৫-২৩ বছর।

চিনস্ট্র্যাপ পেঙ্গুইনরা পেঙ্গুইন প্রজাতির মধ্যে সবথেকে আক্রমণাত্মক প্রজাতি বলে মনে করা হয়।[৬]

শিকারী[সম্পাদনা]

চিনস্ট্র্যাপ পেঙ্গুইনদের প্রধান শিকারি হল চিতাবাঘ শীল। এদের বাচ্চারা বা ডিম সিথবিল, ব্রাউন স্কুয়া ইত্যাদি পাখিদের দ্বারা শিকার হতে পারে। এছাড়াও সি লায়ন হল এদের আকেটি প্রধান শিকারী।

ব্যবহার[সম্পাদনা]

স্থলভাগে এরা গোলাকার বাসা বাঁধে পাথর দিয়ে। এবং তারা দুটো ডিম পারে। এই ডিম মহিলা এবং পুরুষ দুজনেই তা দেয় ৬ দিন করে। ৩৭ দিন পরে ডিম ফেটে বাচ্চা হয়। এদের পিঠ হয় লোমশ ধূসর রঙের এবং নিচের অংশ হয় সাদা রঙের। ২০-৩০ দিন বাচ্চারা বাসায় থাকে বড়দের দলে যোগ দেবার আগে। ৫০-৬০ দিন পরে তারা এই পাখনা ছেড়ে প্রাপ্তবয়স্কদের পাখনা পায় এবং তারপরই এরা সমুদ্রে যায়।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. BirdLife International (২০১২)। "Pygoscelis antarcticus"বিপদগ্রস্ত প্রজাতির আইইউসিএন লাল তালিকা। সংস্করণ 2013.2প্রকৃতি সংরক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন। সংগ্রহের তারিখ ২৬ নভেম্বর ২০১৩ 
  2. Weight of Chinstrap Penguin ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২ জুন ২০০৮ তারিখে.
  3. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৬ এপ্রিল ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ এপ্রিল ২০১৪ 
  4. http://animaldiversity.ummz.umich.edu/site/accounts/information/Pygoscelis_antarcticus.html
  5. "Chinstrap Penguin Fact Sheet, Lincoln Park Zoo".
  6. http://www.theanimalfiles.com/birds/penguins/chinstrap_penguin.html

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]