ফালতু

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ফালতু
ফালতু ছবিটির ডিভিডি প্রচ্ছদ
পরিচালকঅঞ্জন দাস
প্রযোজকঅরিন্দম চৌধুরী
রচয়িতাসৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ
শ্রেষ্ঠাংশেসৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়
নির্মলকুমার
ইন্দ্রাণী হালদার
যশ পণ্ডিত
মঞ্জরি ফড়ণীস
সুরকারজ্যোতিষ্ক দাশগুপ্ত
চিত্রগ্রাহকশীর্ষ রায়
সম্পাদকসঞ্জীব দত্ত
পরিবেশকপ্ল্যানম্যান মোশন পিকচার্স
মুক্তি১০ ফেব্রুয়ারি, ২০০৬
দেশ ভারত
ভাষাবাংলা

ফালতু ভারতীয় বাঙালি চিত্র পরিচালক অঞ্জন দাস পরিচালিত একটি বাংলা চলচ্চিত্রসৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ রচিত উপন্যাস রাণীরঘাটের বৃত্তান্ত অবলম্বনে নির্মিত এই ছবিটির মুখ্যভূমিকায় অভিনয় করেছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, নির্মলকুমার, ইন্দ্রাণী হালদার, যশ পণ্ডিত, মঞ্জরি ফড়ণীস, বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়, মাসুদ আখতার প্রমুখ।[১] স্পেন চলচ্চিত্র উৎসবে ভারত থেকে প্রতিযোগিতা বিভাগে নির্বাচিত হয়েছিল এই ছবিটি।[২] বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে উচ্চ প্রশংসিত ফালতু শ্রেষ্ঠ সমাজকল্যাণমূলক ছবি হিসেবে ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে।

কাহিনি-সারাংশ[সম্পাদনা]

ফালতু-র মূল কাহিনি কেন্দ্রীভূত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার রাণীরঘাটে। সময়কাল ১৯৫০-এর দশকের প্রথম পাদ। এই কাহিনি একটি কুড়ি বছরের সদ্যযুবকের ভালবাসা ও শিকড় অন্বেষণের কাহিনি। তারই সঙ্গে সঙ্গে গল্পে ঘনীভূত হয়েছে একটি গ্রাম ও সেই গ্রামের মানুষদের জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা অসংখ্য মুহূর্ত ও নাটকীয় ঘাতপ্রতিঘাত।

রাণীরঘাট একটি পশ্চাৎপদ গ্রাম। এই গ্রামের বাসিন্দারা মূলত পূর্ব পাকিস্তান (অধুনা বাংলাদেশ) থেকে আগত শরণার্থী। ফালতু সেই গ্রামেরই ছেলে। সে বাস চালাত আর যাত্রীদের নদীপারাপার করাতো। আদমসুমারির সময় এক জনগণনা আধিকারিক গ্রামবাসীদের ফালতুর (যশ পণ্ডিত) বাপের কথা জিজ্ঞাসা করলে তাদের জীবনযাত্রা নতুন দিকে মোড় নেয়। ফালতু যে সুরি খেপির (ইন্দ্রাণী হালদার অভিনীত একটি পাগলি চরিত্র) সন্তান সে কথা সকলেরই জানা, কিন্তু তার বাপ কে ছিল তা জানত না কেউই। ফালতুও জানত না, কখনও জানার চেষ্টাও করত না। সে তার কাজ আর প্রেমিকা টুকটুকিকে (মঞ্জরি ফড়ণীস) নিয়েই খুশি ছিল। কিন্তু সেই জনগণনা আধিকারিকের প্রশ্ন প্যান্ডোরার বাক্স খুলে দিল। ক্রমে প্রকাশিত হল গ্রামের প্রায় সকল পুরুষ বাসিন্দাই সুরি খেপির মানসিক ভারসাম্যহীনতার সুযোগ নিয়ে তাকে ধর্ষণ করেছিল। এমনকি যে ইসমাইল (বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়) ফালতুকে বড় করে তাকে বাস চালানো শিখিয়েছিল, সেই জড়িত ছিল এই পাশবিক কাজের সঙ্গে। অবস্থায় দাঁড়িয়েছিল এমন জায়গায় যে সকলেই জানত, ফালতু তাদেরই কারো একজনের সন্তান। কিন্তু নিশ্চিত করে কেউই কিছু বলতে পারত না।

এই সময় একটি সরকারি অধ্যাদেশ গ্রামবাসীদের কাছে দুঃসংবাদ বহন করে আনে। উন্নয়ন পরিকল্পনার অঙ্গ হিসেবে সরকার নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করে এবং সেই জন্য গ্রামবাসীদের বলে গ্রাম খালি করে দিতে। গ্রামবাসীদের রাজি হতে হয়। তবে চলে যাওয়ার আগে তারা ফালতু ও টুকটুকির বিয়ে দিতে চায় ফালতুর প্রতি কৃত তাদের অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত হিসেবে। কিন্তু কাহিনি এখানে একটি নাটকীয় মোড় নেয়। ঘটনাচক্রে টুকটুকি আত্মহত্যা করে এবং ফালতুও তার পরিচিত সমাজের থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে নেয়। সমগ্র কাহিনিটি মানবিক সম্পর্কের একটি দলিল যার উপজীব্য বিষয় কীভাবে অপরাধবোধ একটি গোটা গ্রামের জীবনকে তাড়া করে ফেরে। তারা তাদের পাপের স্খলন করতে গিয়েছিল, কিন্তু শেষমেশ একটি প্রেমের কালান্তকে রূপান্তরিত হল।

অভিনয়[সম্পাদনা]

কলাকুশলী[সম্পাদনা]

সমালোচনা[সম্পাদনা]

  • সত্যজিৎ রায়ের পথের পাঁচালীর পর এটি বাংলা সিনেমার দ্বিতীয় মাস্টারপিস। – সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ[৩]
  • একটি সমৃদ্ধ দৃশ্যশ্রাব্য অভিজ্ঞতা। – দ্য টেলিগ্রাফ[৪]

পুরস্কার[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Simple tale of a complex search"। ফেব্রুয়ারি ১০, ২০০৬। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১০-২২ 
  2. "Planman's Faltu invited for Spain fest"। 12/06/07। ২০১১-০৪-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ 2008-10-22  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  3. "Press : Planman Motion Pictures"। www.planmanmotionpictures.com। ২০০৮-০৫-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১০-২৩ 
  4. Mitra, Mandira (ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০০৬)। "Hitting hard, lyrically"The Telegraph,Kolkata। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১০-২২ 
  5. "69th & 70th Annual Hero Honda BFJA Awards 2007"। www.bfjaawards.com। ২০১০-০১-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১০-২৪ 
  6. Tuteja, Joginder (জুন ১৯, ২০০৮)। "Yash-Manjari's FALTU wins National Award"। জুন ২০, ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১০-২২ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]