গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড় হ্যারিয়েট

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঝড় হ্যারিয়েট থেকে পুনর্নির্দেশিত)
গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড় হ্যারিয়েট
থাইল্যান্ডের উপরে হ্যারিয়েটের গতিপথ
আবহাওয়ার ইতিহাস
তৈরি হয়১৯ অক্টোবর, ১৯৬২
Dissipated৩১ অক্টোবর, ১৯৬২
Severe cyclonic storm
3-minute sustained (IMD)
Highest winds55
Lowest pressure990 hPa (mbar); ২৯.২৩ inHg
Category 1-equivalent tropical cyclone
1-minute sustained (SSHWS/JTWC)
Highest winds65
সামগ্রিক প্রভাব
প্রাণহানি≥৫০,৯৩৫
ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাথাইল্যান্ড, পূর্ব পাকিস্তান

1962 Pacific typhoon and North Indian cyclone seasons এর অংশ

গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঝড় হ্যারিয়েট একটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় যা ১৯৬২ সালের অক্টোবরে থাইল্যান্ড এবং পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমান বাংলাদেশ) আঘাত হানে। এটি দক্ষিণ থাইল্যান্ডে ভূমিতে প্রবেশ করার আগে এবং মালয় উপদ্বীপ অতিক্রম করে বঙ্গোপসাগরে যাওয়ার আগে দক্ষিণ চীন সাগরে গঠিত হয়েছিল। এটি থাইল্যান্ডে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করে, বিশেষ করে লায়েম তালুমফুক এলাকায়, যেখানে এটি গ্রামগুলিকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়, ৯০০ টিরও বেশি প্রাণহানি ঘটায় এবং ১০,০০০ জনেরও বেশি লোক গৃহহীন হয়ে পড়ে, এটি থাইল্যান্ডের ইতিহাসে সবচেয়ে মারাত্মক ঝড় হিসেবে পরিণত হয়।

আবহাওয়ার ইতিহাস[সম্পাদনা]

স্যাফির-সিম্পসন মাপনী অনুযায়ী মানচিত্রে ঝড়টির পথ ও তীব্রতা দেখানো হয়েছে।
মানচিত্রের ব্যাখ্যা
     ক্রান্তীয় নিম্নচাপ (≤৩৮ মাইল প্রতি ঘণ্টা, ≤৬২ কিমি/ঘণ্টা)
     ক্রান্তীয় ঝড় (৩৯–৭৩ মাইল প্রতি ঘণ্টা, ৬৩–১১৮ কিমি/ঘণ্টা)
     শ্রেণী ১ (৭৪–৯৫ মাইল প্রতি ঘণ্টা, ১১৯–১৫৩ কিমি/ঘণ্টা)
     শ্রেণী ২ (৯৬–১১০ মাইল প্রতি ঘণ্টা, ১৫৪–১৭৭ কিমি/ঘণ্টা)
     শ্রেণী ৩ (১১১–১২৯ মাইল প্রতি ঘণ্টা, ১৭৮–২০৮ কিমি/ঘণ্টা)
     শ্রেণী ৪ (১৩০–১৫৬ মাইল প্রতি ঘণ্টা, ২০৯–২৫১ কিমি/ঘণ্টা)
     শ্রেণী ৫ (≥১৫৭ মাইল প্রতি ঘণ্টা, ≥২৫২ কিমি/ঘণ্টা)
     অজানা
ঝড়ের ধরন
▲ অ-ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড় / ছোট নিম্নচাপ/ ক্রান্তীয় গোলযোগ / মৌসুমী নিম্নচাপ

যে সিস্টেমটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঝড় হ্যারিয়েট হয়ে উঠবে তা ১৯ অক্টোবর বিকেলে ফিলিপাইনের পশ্চিম উপকূলে তৈরি হয়েছিল। সিস্টেমটি উত্তর-পশ্চিমে অগ্রসর হয়েছিল, তারপরে দক্ষিণ চীন সাগরের মধ্য দিয়ে উপকূলের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়েছিল। ঝড়টি খোলা সমুদ্রের মধ্য দিয়ে বেশ কয়েক দিন অতিবাহিত করেছিল, একটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় নিম্নচাপে শক্তিশালী হতে পারেনি। ২৩শে অক্টোবর, ঝড়টি দক্ষিণ ভিয়েতনামের দিকে উত্তরমুখী হয়, কিন্তু শীঘ্রই পশ্চিম দিকে ফিরে আসে, ধীরে ধীরে শক্তিশালী হয়ে দক্ষিণ চীন সাগর অতিক্রম করে। [১] ২৫ অক্টোবর বিকেলে, সিস্টেমটি অবশেষে একটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঝড়ে শক্তিশালী হয়ে হ্যারিয়েটের নাম প্রাপ্ত হয়। বাতাসের গতিবেগ ৬০ মা/ঘ (৯৫ কিমি/ঘ) -এ পৌঁছে, [২] শীঘ্রই ২৫ অক্টোবর থাইল্যান্ডের নাখোন সি থামমারাত প্রদেশে ঝড়টি ভূমি স্পর্শ করে। দেশটি অতিক্রম করার পর, হ্যারিয়েট ২৬ অক্টোবর ভারত মহাসাগরের খোলা পানিতে দূর্বল হয়ে পড়ে। [১] সিস্টেমটি পশ্চিম দিকে চলতে থাকে, তারপর উত্তর-পূর্ব দিকে বাঁক নেয়। এটি শীর্ষে পৌঁছায় ৩০ অক্টোবরে উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরের কাছ দিয়ে যাওয়ার সময়। এর পরেই, ৩১ অক্টোবরে বার্মা (বর্তমান মায়ানমার ) এর উপর বিলীন হওয়ার আগে পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) চট্টগ্রামের কাছে ঘূর্ণিঝড়টির ভূপতন ঘটে। [৩] [৪]

প্রভাব[সম্পাদনা]

হ্যারিয়েট নাখোন সি থামমারাত প্রদেশের পাক ফানাং জেলার লায়ম তালুমফুক এলাকায় ব্যাপক ক্ষতি সাধন করেছিল, যেখানে এটি গ্রামগুলিকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছিল। প্রাথমিক রিপোর্টে অন্তত ৭৬৯ জনের প্রাণহানির ঘটনা উল্লেখ করা হয়, ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ১৪২ জন নিখোঁজ এবং ২৫২ জনের বেশি গুরুতর আহত হয় বলে খবর পাওয়া যায়। সেই সময়ে ক্ষয়ক্ষতি অনুমান করা হয়েছিল $৩৪.৫ মিলিয়ন এর বেশি। [৫] [৬] এই দুর্যোগে ১৬,১৭০ জন গৃহহীন হয়ে পড়ে এবং প্রদেশ জুড়ে ২২,২৯৬ টি ভবন ধ্বংস হয়। [৭] থাই আবহাওয়া দফতরের চূড়ান্ত পরিসংখ্যান ৯৩৫ জনের মৃত্যুর খবর রেকর্ড করেছে, যা একে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে মারাত্মক গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় হিসাবে পরিণত করেছে।

ঘূর্ণিঝড়টিতে বাংলাদেশের ৫০,০০০ মানুষ মারা যায়। [৮]

আরো দেখুন[সম্পাদনা]

  • হ্যারিয়েট নামের ঝড়ের তালিকা
  • টাইফুন গে (১৯৮৯) - আরেকটি ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড় যা থাইল্যান্ড অতিক্রম করেছে

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "RSMC Best Track Data (Graphics) in 1962"Japan Meteorological Agency। ১৯৬২। মে ২৩, ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ২৭, ২০১১ 
  2. "Best Track – Tropical Storm Harriet"। Joint Typhoon Warning Center। ২০১১। সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ২৭, ২০১২ 
  3. India Meteorological Department (১৯৬২)। "Annual Summary — Storms & Depressions: Severe Cyclonic Storm in the Bay of Bengal" (পিডিএফ)। National Oceanic and Atmospheric Administration: 13–14। সংগ্রহের তারিখ মে ১২, ২০১৩ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  4. "IBTrACS - International Best Track Archive for Climate Stewardship" 
  5. "Thai Storm Toll Put at 769"। The New York Times। নভেম্বর ৪, ১৯৬২। পৃষ্ঠা 17। 
  6. "Harriet's Terrible Toll"The Miami News। নভেম্বর ২, ১৯৬২। পৃষ্ঠা 28। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ২৭, ২০১১ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  7. "วาตภัยที่แหลมตะลุมพุก"www.tungsong.com (থাই ভাষায়)। Thung Song Town Municipality। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০২০ 
  8. Damen, Michiel। "Cyclone Hazard in Bangladesh" 

টেমপ্লেট:1962 Pacific typhoon season buttons