ন্যান্সি ওয়েক

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ন্যান্সি ওয়েক[১]
ন্যান্সি ওয়েক (১৯৪৫)
ডাকনামহেলেন
(SOE)
আন্দ্রে
(French Resistance/SOE Identity)
হুয়াইট মাউস (সাদা ইঁদুর)
(Gestapo in France)
হুইস
(Operation:)
জন্ম(১৯১২-০৮-৩০)৩০ আগস্ট ১৯১২
ওয়েলিংটন, নিউজিল্যান্ড
মৃত্যু৭ আগস্ট ২০১১(2011-08-07) (বয়স ৯৮)
লন্ডন, ইংল্যান্ড, যুক্তরাজ্য
আনুগত্যফ্রান্স
যুক্তরাজ্য
সেবা/শাখাSpecial Operations Executive
First Aid Nursing Yeomanry
কার্যকাল১৯৪৩-১৯৪৫ (SOE)
পদমর্যাদাক্যাপ্টেন
ইউনিটফ্রিল্যান্স
যুদ্ধ/সংগ্রামদ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ
পুরস্কারঅস্ট্রেলিয়া অর্ডার অফ কম্প্যানিয়ন[২]
জর্জ মেডেল[৩]
লেজিওঁ দনর[৩]
Croix de guerre (ফ্রান্স)
স্বাধিনতা পুরস্কার (যুক্তরাষ্ট্র)
আরএসএ স্বর্ণ ব্যাজ (নিউজিল্যান্ড)

ন্যান্সি গ্রেস অগাস্টা ওয়েক (জন্মঃ ৩০ আগস্ট, ১৯১২; মৃত্যুঃ ৭ আগস্ট, ২০১১[৫]) একজন ব্রিটিশ এজেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষের দিকে কাজ করেছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি ফ্রান্স রেজিসটেন্সের গেরিলা বাহিনী মাকিস এর একজন নেতৃস্থানীয় এজেন্ট ছিলেন এবং যুদ্ধে একজন নিবেদিত প্রান সৈনিক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ১৯৪০ সালে জার্মানি ফ্রান্স আক্রমণ করলে তিনি ফ্রান্স রেজিসটেন্সের বার্তাবাহক হিসেবে কাজ করেন ও পরে ক্যাপ্টেন অইয়ান গ্যারোর নেতৃত্বাধীন গেরিলা বাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৪২ সালের পর গেস্টাপো বাহিনীর মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায় শীর্ষ ব্যক্তি ছিলেন ন্যান্সি ওয়েক এবং তখন তার মাথার দাম ঘোষণা করা হয় ৫ মিলিয়ন ফ্রাঙ্ক।[৬]

ইংল্যান্ডে পৌঁছার পর তিনি ইংল্যান্ডের বিশেষ অপারেশনস এক্সিকিউটিভে যোগ দেন। ট্রোনকাইস জঙ্গলে ক্যাপ্টেন হেনরি টার্দিভাদের নেতৃত্তাধীন মাকিস গেরিলাদের সাথে লন্ডনের যোগাযোগ স্থাপনের জন্য তাকে ২৯-৩০ এপ্রিল, ১৯৪৪ সালের রাতে আভারজিনে প্যারাশূট দিয়ে নামানো হয়। ১৯৪৪ সালের এপ্রিল মাস থেকে ফ্রান্সের স্বাধীনতা লাভ পর্যন্ত তার সাত হাজার ফ্রান্স রেজিসটেন্সের গেরিলা সেনা অপর দিকে বাইশ হাজার জার্মান সেনার সঙ্গে যুদ্ধ হয়। তাতে ১৪০০ জার্মান সেনা নিহত হয়। অপর দিকে মাত্র ১০০ জন রেজিসটেন্সের গেরিলা সেনা নিহত হয়।

প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

ন্যান্সি ওয়েক রোজনিথ, ওয়েলিংটন, নিউজিল্যান্ড ১৯১২ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ছয় ভাইবোনের মধ্যে ওয়েক ছিলেন সবার ছোট। ১৯১৪ সালে তার পরিবার অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে চলে যান এবং উত্তর সিডনিতে বসবাস শুরু করেন।[৭] এর কিছুদিন পর ন্যান্সিদের বাবা চার্লস অগাস্টাস ওয়েক সন্তানদের লালনপালনের দ্বায়িত্ব ন্যান্সির মায়ের (এলা ওয়েক; ১৮৭৪-১৯৬৮) কাছে দিয়ে নিউজিল্যান্ড ফিরে যান।

সিডনিতে ন্যান্সি ওয়েক উত্তর সিডনি হাউসহোল্ড আর্টস স্কুলে ভর্তি হন।[৮] কিন্তু ১৬ বছর বয়সে তিনি বাড়ি থেকে চলে গিয়ে সিডনিতে পরিষেবিকা হিসেবে কাজ শুরু করেন। ২০ বছর বয়সে এক কাকিমার কাছ থেকে £২০০ নিয়ে তিনি নিউ ইয়র্ক চলে যান। এরপর সেখান থেকে লন্ডন গিয়ে সাংবাদিকতার উপর প্রশিক্ষন গ্রহণ করেন। ১৯৩০ সালে তিনি প্যারিসে সাংবাদিক হিসেবে কাজ শুরু করেন ও তারপর হেয়ারেস্ট পত্রিকায় ইউরোপীয়ান প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করেন। ইউরোপে কাজ করার সময় ওয়েক ১৯৩৩ সালে ভিয়েনায় হিটলারের একটি সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন।[২] প্রতিবেদন তৈরির স্বার্থে তাকে নাজি বাহিনীর কাছাকাছি থাকার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। ভিয়েনার রাস্তায় তিনি হিটলারের গেস্টাপো বাহিনীর হাতে অনেক ইহুদিকে প্রহীত হতে দেখেছেন।[৯]

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

১৯৩৭ সালে ওয়েকের সাথে হেনরি এডমন্ড ফিওকা (১৮৯৮-১৯৪৩) নামে একজন ধনী ফ্রেঞ্চ শিল্পপতির সাক্ষাত হয়। ৩০ নভেম্বর, ১৯৩৯ সালে ওয়েক তাকে বিয়ে করেন। জার্মান বাহিনী ফ্রান্স আক্রমণ করার পূর্ব পর্যন্ত তারা মার্সিলিতে বসবাস করতেন।

যুদ্ধে অবদান ও বিশেষ অপারেশনস এক্সিকিউটিভ[সম্পাদনা]

১৯৪০ সালে জার্মান বাহিনী বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ড ও ফ্রান্স আক্রমণ করলে ওয়েকের স্বামী যুদ্ধে চলে যান। ওয়েক তখন অ্যাম্বুলেন্স চালক হিসেবে কাজ করেন। তখন থেকেই ওয়েক ফ্রান্সে আহত ব্রিটিশ সৈন্যদের গোপনে পরিবহনের কাজ শুরু করেন। এই পরিবহন কাজ করতে করতেই তার সাথে বেলজিয়াম সেনাবাহিনীর ডাক্তার এবং এস্কেপ লাইনে বিখ্যাত এজেন্ট আলবার্ট গুয়েরিজের যোগাযোগ হয়। যুদ্ধের প্রথম তিন বছর তিনি যুদ্ধাহতদের সেবা শুশ্রূষা করতেন, তাদের পালাতে সাহায্য করতেন ও বার্তাবাহকের কাজ করতেন। তিনি সৈন্যদের বিভিন্ন ধরনের নকল কাগজপত্র যেমন পাসপোর্ট, ভিসা, পরিচয় পত্র ইত্যাদি তৈরি করে দিতেন।অতঃপর তিনি ফ্রান্স রেসিস্টেন্স ও পরে আইয়ান গ্যারোর এস্কেপ নেটওয়ার্কে যোগ দেন।

জার্মানির গেস্টাপো বাহিনীর অন্যতম দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দেখা দেন ওয়েক। ১৯৪২ সালের নভেম্বরে অপারেশন টর্চ শুরু হলে জার্মান বাহিনী অনেক গুরুত্তপূর্ন কাগজপত্র পান। এতে ওয়েকের জীবন আরো বিপদজ্জনক হয়ে উঠে। জার্মানিরা তাকে “সাদা ইঁদুর(White Mouse)” বলে ডাকত। ১৯৪৩ সালে গেস্টাপো তার মাথার দাম ঘোষণা করে পাঁচ মিলিয়ন ফ্র্যাঙ্ক। যদিও তারা তখনো এই “সাদা ইঁদুর(White Mouse)” সম্বন্ধে বিশেষ কিছুই জানত না । রেসিস্টেন্সের সৈন্যরাও তার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করত কারণ তারা জানত গেস্টাপো বাহিনী ওয়েকের টেলিফোন ও মেইল টেপ করছে। জার্মানিদের একজন সার্জেন্ট হ্যারোল নামে ইংরেজ স্পাই ছিল যার কাছ থেকেও তারা ওয়েক সম্পর্কে তথ্য পেয়েছিল। যখন তার নিজের দলের লোকেরা তার সাথে প্রতারনা করল তখন ওয়েক মার্সিলিতে তার স্বামীর কাছে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ১৯৪৩ সালের মে মাসে গেস্টাপো তার পিছু নেয় ও ওয়েক পালিয়ে ফ্রান্স থেকে স্পেন চলে আসে কিন্তু তার স্বামী পরে গেস্টাপো বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন ও তাকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়।[১০][১১] এজন্য ওয়েক সবসময় নিজেকে দোষ দিতেন। তিনি বলতেন, তার কারণেই তার স্বামী খুন হয়েছে। তার সাথে দেখা না করলেই তার স্বামী বেঁচে যেতেন।[১২]

ন্যান্সি যুদ্ধের সময়কার তার কৌশল সম্পর্কে বলেন,

আমি যখন জার্মান বাহিনীর তল্লাশি চৌকি পার হতাম তখন মুখে পাউডার মেখে, মদ খেয়ে মাতাল হওয়ার ভান করতাম এবং জার্মানদের বলতাম, তোমরা আমাকে সার্চ করতে চাও?[১৩]

এদিকে ন্যান্সিকে ধরার জন্য যখন জার্মানরা ফাঁদ পাততে থাকে তখন এক ব্রিটিশ এজেন্ট ন্যান্সিকে সতর্ক করে দেয়। ন্যান্সি পালানোর সময় পাইরিনির রেল স্টেশনে জার্মানদের হাতে ধরা পরেন, তার আগে তাকে গুলি করা হয়েছিল এবং তাকে টওলাউস পুলিস স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। তাকে চারদিন বন্দি করে রাখা হয়েছিল। এরপর ন্যান্সি ছাড়া পাওয়ার পর স্পেন হয়ে লন্ডন চলে আসেন।[১৪]

ব্রিটেনে পৌঁছার পর তিনি স্পেশাল অপারেশনস এক্সিকিউভে (এসওই) যোগ দেন। ট্রেনিং এর সময় তিনি ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী ও গুলি চালনায় দক্ষ।[১২] ওয়েক ফ্রান্সের মাকিস গ্রুপের জন্য সৈন্য সংগ্রহ করেন ও মাকিস গ্রপকে ৭,৫০০ সৈনের একটি শক্তিশালী গ্রুপে পরিনত করেন।[১০][১৫] এছাড়াও তিনি জার্মান রসদ সংগ্রহের স্থল ও কন্টাক্লনের স্থানীয় গেস্টাপো হেডকোয়ার্টারে হামলার নেতৃত্ব দেন।[১৫] একদিন ওয়েক দেখতে পায় তার সাথের অন্য সকল পুরুষ সৈন্যরা একটি নারী জার্মান গোয়েন্দাকে ঘিরে আছে কিন্তু তারা তাকে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করতে পারছেনা কিন্তু ওয়েক করেছিল। পরে সে বলেছিল এ ঘটনার জন্য সে মোটেও অনুতপ্ত নয় কারণ সেটি ছিল যুদ্ধের সময়।[১৬]

১৯৪৪ সালের এপ্রিল থেকে ফ্রান্সের স্বাধীনতার পূর্ব পর্যন্ত তারা ৭০০০+ জন প্রায় ২২,০০০ এসএস সৈন্যদের সাথে যুদ্ধ করেন যার মধ্যে ১,৪০০ জন আহত হয় তাদের মধ্যে মাত্র ১০০ জন ছিল তারা নিজেরা। তার সাথে যুদ্ধ করা ফ্রান্স কম্পানিয়নের হেনরি টারডিভাট বলেন, একটি অপারেশনে এক এসএস সৈন্যকে এলার্ম বাজানো থেকে বিরত রাখতে ওয়েক তাকে খালি হাতে খুন করেছিলেন। ১৯৯০ সালের পর তাকে একটি টেলিভিশনে সাক্ষাতকারে জিঞ্গাস করা হলে তিনি বলেন তাকে এসওইতে ট্রেনিং এর সময় জুডো শেখানো হয়েছিল এবং আমি নিয়মিত চর্চা করতাম কিন্তু জীবনে মাত্র এই একবারই ব্যবহার করেছি। তিনি আরো বলেন, গার্ড মরার পর আমি অবাক হয়ে যাই আমার জুডো কাজ করছে দেখে।[১৩]

একটি অপারেশনে ওয়েক ৫০০ মাইলের (৮০০ কিমি) বেশি সাইকেল চালিয়ে এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় গিয়েছিলেন যেখানে পথিমধ্যে তাকে কিছু জার্মান চেকপোস্ট পার হতে হয়েছিল।[১৭] মাকিস দলের উপর একবার জার্মানরা হামলা করলে তার দলের কমান্ডার মৃত্যুবরণ করলে তিনি আরো দুইজন আমেরিকান সৈন্যের সাথে মিলে নেতৃত্ব দেন এবং এরপর আর কোন ক্ষতি হয়নি।[১২]

যুদ্ধ পরবর্তী জীবন[সম্পাদনা]

যুদ্ধের পরপরই ওয়েক অনেক পুরস্কারে ভূষিত হন। তার মধ্যে জর্জ মেডেল[১৮], যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা পুরস্কার, মেদেলি দে লা রেসিস্টেন্স এবং তিনবার ক্রোইস ডি গ্যারে। যুদ্ধের পর তিনি ব্রিটিশ উড়োজাহাজ মন্ত্রনালয়ের ইন্টিলিজেন্স শাখায় প্যারিস ও প্রেগে কর্মরত ছিলেন।

ওয়েক ১৯৪৯ ও ১৯৫১ সালের অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল নির্বাচনে লিবারেল প্রার্থী[১৯] হয়ে অংশ নিয়ে হেরে যান।[২০][২১] ১৯৫১ সালের নির্বাচনের পরপরই ওয়েক অস্ট্রেলিয়া থেকে উংল্যান্ড চলে আসেন। তিনি উড়োজাহাজ মন্ত্রনালয়ের ইন্টিলিজেন্স অফিসার হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় ১৯৫৭ সালের ডিসেম্বরে আরএএফ অফিসার জন ফরোয়ার্ডকে বিয়ে করেন। বিয়ের পরই তিনি চাকরি থেকে পদত্যাগ করেন। ১৯৬০ সালের পর তারা আবার অস্ট্রেলিয়া চলে যান[১৫] এবং সিডনি থেকে ১৯৬৬ সালের ফেডারেল নির্বাচনে লিবারেল পার্টির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন। কিন্তু তিনি পুনরায় নির্বাচনে হেরে যান।[২২] ১৯৮৫ সালের দিকে ওয়েক ও জন সিডনি থেকে পোর্ট ম্যাকুয়ারিতে চলে আসেন।

১৯৮৫ সালে ওয়েক তার আত্মজীবনী মূলক বই “দ্য হুয়াইট মাউস” প্রকাশ করেন।[২৩] বইটি সর্বাধিক বিক্রিত বইয়ের তালিকায় স্থান পায় এবং অসংখ্যবার পূনমুদ্রন হয়েছিল। ৪০ বছর দাম্পত্য জীবন পার করার পর তার স্বামী জন ১৯ আগস্ট, ১৯৯৭ সালে পোর্ট ম্যাকোয়ারিতে মৃত্যুবরণ করেন। এই দম্পত্যির কোন সন্তান নেই।

২০০১ সালে ওয়েক শেষবারের মত অস্ট্রেলিয়া ছেড়ে অভিবাসি হিসেবে লন্ডন চলে যান।[২৪] তিনি সেখানে যুদ্ধের সময় সাবেক ব্রিটিশ-আমেরিকান সৈন্যদের ক্লাব বলে পরিচিত বর্তমান স্টেফোর্ড হোটেলে অবস্থান করেন। তিনি তার ৯০তম জন্মদিন এই হোটেলেই পালন করেন। হোটেল মালিক যিনি পূর্বে মার্সিলিতে রেসিস্টেন্সের হয়ে কাজ করত তিনি তার প্রায় সব খরচ দিয়ে দিতেন। ২০০৩ সালে তিনি রিচমন্ড, লন্ডনে কাজ করতে অক্ষম সাবেক রয়াল স্টার প্রাপ্ত নারী ও পুরুষের আশ্রয়কেন্দ্রে চরে আসেন এবং মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত এখানেই ছিলেন।[১৫]

সম্মান[সম্পাদনা]

ওয়েক ১৯৭০ সালে ক্যাভালিয়ার (নাইট) অফ দ্য লিজি’য়ন অফ অনার লাভ করেন এবং অফিসার অফ দ্য লিজি”য়ন অনার লাভ করেন ১৯৮৮ সালে।[২৫] প্রথম দিকে ওয়েক অস্ট্রেলিয়া সরকারের কাছ থেকে কোন পুরস্কার গ্রহণ করতে আপত্তি জানান।[২৬] কিন্তু ফেব্রুয়ারি, ২০০৪ সালে তিনি কম্পেনিয়ন অফ দ্য অর্ডর অফ অস্ট্রেলিয়া গ্রহণ করেন।[২৭] ২০০৬ সালের এপ্রিলে ওয়েক রয়াল নিউজিল্যান্ড রিটার্ন্ড এন্ড সার্ভিসেস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সর্ব শ্রেষ্ঠ সম্মান “আরএসএ স্বর্ণ ব্যাজ লাভ করেন।[২৮] ওয়েকের সকল মেডেল ক্যাবেরার যুদ্ধস্মৃতি যাদুঘর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ গ্যালারিতে সাজানো আছে।[৭]

সম্মান তালিকা[সম্পাদনা]

মনোগ্রাম প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ বর্ণনা পুরস্কারের তারিখ পদটীকা/তথ্যসূত্র
Ribbon of the AC কমনওয়েল্থ অফ অস্ট্রেলিয়া কম্প্যানিয়ন অফ দ্য অর্ডার অফ অস্ট্রেলিয়া ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০০৪ The award recognises the significant contribution and commitment of Nancy Wake, stemming from her outstanding actions in wartime, in encouraging community appreciation and understanding of the past sacrifices made by Australian men and women in times of conflict, and to a lasting legacy of peace.[২৭]
Ribbon of the GM যুক্তরাজ্য জর্জ মেডেল ১৭ জুলাই, ১৯৪৫ FANY: Special operations in France[১৮][২৯]
Ribbon of the 1939–1945 Star কমনওয়েল্থ অফ নেসনস ১৯৩৯-১৯৪৫ তারকা
Ribbon of the France & Germany Star কমনওয়েল্থ অফ নেসনস ফ্রান্স এবং জার্মানি স্টার
Ribbon of the Defence Medal যুক্তরাজ্য প্রতিরক্ষা পুরস্কার
Ribbon of the War Medal যুক্তরাজ্য যুদ্ধের মেডেল ১৯৩৯-১৯৪৫
Ribbon of the Legion of Honor – Chevalier ফ্রান্স রিপাবলিক ক্যাভেলিয়ার ডি লা লি’জিয়ন ডিঅনার ১৯৭০
Ribbon of the Legion of Honor – Officier ফ্রান্স রিপাবলিক অফিসার ডি লা লি’জিয়ন ডিঅনার ১৯৮৮
Ribbon de la croix de guerre ফ্র্যান্স রিপাবলিক ক্রোইক্স ডি গ্যারি with two Palms and a Star
Ribbon of the PMOF যুক্তরাষ্ট্র স্বাধীনতা পুরস্কার with Bronze Palm. (Only 987 issued with Bronze Palm during WWII)[৩০]
Ribbon de la Médaille de la Résistance ফ্র্যান্স রিপাবলিক মিডেীল ডি লা রেসিস্টেন্স
নিউজিল্যান্ড স্বর্ণ ব্যাজ ১৫ নভেম্বর, ২০০৬ Royal New Zealand Returned and Services' Association

গ্রন্থপঞ্জি[সম্পাদনা]

  • ১৯৫৬ সালে অস্ট্রেলিয়ান লেখক রাসেল ব্রেডন ন্যান্সি ওয়েকের জীবনী নিয়ে একটি বই লেখেন যার নাম, “ন্যান্সি ওয়েক: দ্য স্টোরি অফ অ্য ভেরি ব্রেইভ ওমেন” (আইএসবিএন ৯৭৮ ০ ৭৫২৪ ৫৪৮৫ ৬)।[৩১]
  • ২০০১ সালে অস্ট্রেলিয়ান লেখক পিটার ফিসিমন যে বইটি লেখেন তার নাম ছিল, “ন্যান্সি ওয়েক, অ্য বায়োগ্রাফি অফ আওয়ার গ্রেটেস্ট ওয়ার হিরোইন” (আইএসবিএন ০ ৭৩২২ ৬৯১৯ ৯)। এটি ওয়েকের অন্যন্য জীবনীমূলক বইয়ের চাইতে বেশি বিক্রি হয়।[২৪]
  • ২০১১ সালে আরেক জার্মান লেখক মাইকেল জর্জ একটি বই লেখেন যার নাম, “কোডনেম হেলেন: চার্চিল’স সিক্রেট এজেন্ট ন্যান্সি ওয়েক এন্ড হার ফাইট এগিনিস্ট গেস্টাপো ইন ফ্রান্স” (জার্মান: Codename Hélène: Churchills Geheimagentin Nancy Wake und ihr Kampf gegen die Gestapo in Frankreich)।[৩২] বইটি ২০১২ সালের অক্টোবরে বাজারে আসে।

চরিত্রচিত্রণ[সম্পাদনা]

  • ১৯৮০ দশকের ব্রিটিশ টেলিভিশন সিরিজ উইস মি লাকের সেশন ১সেশন ২ এর অধিকাংশ অংশই ওয়েকের আত্মজীবনী থেকে নেওয়া। এখানে তার বিভিন্ন ডায়লগ ও যুদ্ধের সময়কার দুঃসাহসিক কর্মকাণ্ড তোলে ধরা হয়েছিল।
  • ১৯৮৭ সালে “ন্যান্সি ওয়েক” নামের টেলিভিশনে প্রদর্শিত একটি ছবি তার জীবনী অবলম্বনে নির্মিত। এই ছবিকে পরবর্তী কালে “ট্রু কালারস” নাম দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তি দেওয়া হয়। ছবিটিতে ন্যান্সি ওয়েক চরিত্রে অভিনয় করেছেন, অস্ট্রেলিয়ার অভিনেত্রী “ননি হাজলহার্স্ট”।
  • সেবাস্তেইন ফক্সের ১৯৯৯ সালের উপন্যাস “চ্যারলট গ্রে” এর কাহিনী তার যুদ্ধের সময়কার দুঃসাহসিক কর্মকাণ্ড নিয়ে লেখা বলে মনে করা হয়। এছাড়া এই বইয়ে পার্ল কর্নিয়লে নামক একজন ব্রিটিশ গোয়েন্দার জীবনীও বর্ণনা করা হয়েছে।

এছাড়া “মিলেটারি অফিসার” ২০১২ এর একটি নিবন্ধে তাকে নিয়ে লেখা হয়।[৩৩]

মৃত্যু[সম্পাদনা]

ন্যন্সি ওয়েক ৭ আগস্ট, ২০১১ সালে লন্ডনে মৃত্যুবরণ করেন। তার ইচ্ছানুসারে দেহ ভস্ম ফ্রান্সের ভেরনেক্স গ্রামে যথাযথ সম্মানে উড়িয়ে দেওয়া হয়।[৩৪]

পদটীকা[সম্পাদনা]

  1. "NANCY WAKE"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৫-২৩ 
  2. "World War II heroine is honoured"বিবিসি। Sunday, 22 February, 2004। সংগ্রহের তারিখ 2013-05-23  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  3. "Tracing the last WWII heroines"বিবিসি। Tuesday, 25 January, 2005। সংগ্রহের তারিখ 2013-05-23  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  4. Profile of Nancy Wake
  5. "Australia WWII agent Nancy Wake's ashes scattered"বিবিসি। ১০ মার্চ ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৫-২৩ 
  6. "Nancy Wake - The White Mouse"http://www.convictcreations.com। ২০১৩-০৫-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৫-৩১  |কর্ম= এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
  7. Dennis et. al. (1995), p. 626
  8. FitzSimons, Peter (২০০২)। Nancy Wake A Biography of Our Greatest War Heroineআইএসবিএন 978-0-7322-7456-6 
  9. "Obituary for Nancy Wake"। New York Times। ১৪ আগস্ট ২০১১। পৃষ্ঠা A18। 
  10. "The White Mouse"। ২০১০-০৮-১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৫-২৩ 
  11. David Stafford (৮ আগস্ট ২০১১)। "Nancy Wake obituary"গার্ডিয়ান। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৫-২৪ 
  12. Stafford, David (১০ জুন ২০১৩)। "Nancy Wake obituary"। London: The Guardian। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০১১ 
  13. The Australian
  14. RTE 1 radio documentary, "Nancy Wake and Harry Potter", first broadcast 9-Aug-2011
  15. "Nancy Wake"। London: The Daily Telegraph। ৮ আগস্ট ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুন ২০১৩ 
  16. ABC Radio interview with Wake.[স্পষ্টকরণ প্রয়োজন]
  17. Peter FitzSimons (২০০১)। Nancy Wake, Australia's Greatest War Heroine। Harper Collins Australia। আইএসবিএন 0 7322 6919 9 
  18. "WAKE, Nancy: George Medal"Search Australian HonoursCommonwealth of Australia। ১৭ জুলাই ১৯৪৫। ২৯ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুন ২০১১ 
  19. "Maquis Heroine tries Politics"The Sydney Morning Herald। Fairfax Media। 30 March 1949। পৃষ্ঠা 2। সংগ্রহের তারিখ 10 june 2013  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  20. "Barton, NSW"Voting by constituency: Legislative election 1949। 10 December 1949। সংগ্রহের তারিখ 10 june 2013  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  21. "Barton, NSW"Voting by constituency: Legislative election 1951। 28 April 1951। সংগ্রহের তারিখ 10 june 2013  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  22. "Kingsford-Smith, NSW"Voting by constituency: Legislative election 1966। 26 November 1966। সংগ্রহের তারিখ 10 june 2013  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  23. Wake, Nancy (১৯৮৫)। The White Mouse। Sun Books। আইএসবিএন 0-330-35605-4 
  24. Fickling, David (২৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৪)। "A belated salute for war heroine"। London: The Guardian। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১১ 
  25. "Nancy Wake promoted to Officer of the Legion of Honour" [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  26. http://www.fighttimes.com/magazine/magazine.asp?article=79
  27. "WAKE, Nancy: Companion of the Order of Australia"Search Australian HonoursCommonwealth of Australia। ২২ ফেব্রুয়ারি ২০০৪। ৪ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুন ২০১১ 
  28. "RSA History: The Badge"Remembrance। Royal New Zealand Returned and Services' Association। ২০১১। ৬ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুন ২০১৩ 
  29. Supplement to the London Gazette, 17 July 1945, p. 3676
  30. OMSA Info on Medal of Freedom
  31. Braddon, Russell (২০০৯)। Nancy Wake: The Story of a Very Brave Womanআইএসবিএন 978 0 7524 5485 6 
  32. Bertelsmann, München (২০১২)। Codename Hélène: Churchills Geheimagentin Nancy Wake und ihr Kampf gegen die Gestapo in Frankreich (জার্মান ভাষায়)। Blick ins Buch। আইএসবিএন 9783570101421 
  33. Cantrell, Mark। "The white mouse"Military Officer10 (3)। Arlington, Virginia: Military Officers Association of America। পৃষ্ঠা 92–96। 
  34. "War hero Nancy Wake's ashes scattered in France"abc.net.au। মার্চ ১১, ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৫-২৩ 

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  • Braddon, Russell. Nancy Wake: The Story of a Very Brave Woman, Quality Book Club, Cassell & Co. Ltd:London, 1956.
  • Braddon, Russell. Nancy Wake, Pan Books, London; Sydney, 1958.
  • Braddon, Russell. Woman in Arms: The Story of Nancy Wake, Collins, London, 1963.
  • Dennis, Peter; Grey, Jeffrey; Morris, Ewan; Prior, Robin (১৯৯৫), The Oxford Companion to Australian Military History, Oxford: Oxford University Press, আইএসবিএন 0-19-553227-9 
  • FitzSimons, Peter. Nancy Wake: A Biography of Our Greatest War Heroine, HarperCollins, Pymble, New South Wales, 2002,আইএসবিএন ০-০০-৭১৪৪০১-৬.
  • Wake, Nancy. Autobiography of the Woman the Gestapo Called the White Mouse, Macmillan Publishers|Macmillan: South Melbourne, Victoria|South Melbourne, 1985, আইএসবিএন ০-৭২৫১-০৭৫৫-৩.
  • RTE 1 radio documentary, "Nancy Wake and Harry Potter", first broadcast 9-Aug-2011
  • "Son and heir in Labor stronghold", Sydney Morning Herald, 12 October 2006 [১]
  • "Finally, Nancy gets her gong", Sydney Morning Herald, 3 March 2004 [২]
  • "Her only regret:not killing more Nazis", Capital Times, Wellington, 2 June 2010 [৩]
  • "White Mouse war legend back where she started", The Dominion Post, Wellington, 4 June 2010 [৪]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]