তারানাথ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
তারানাথ

তারানাথ বা কুন-দ্গা'-স্ন্যিং-পো (ওয়াইলি: kun dga' snying po) (১৫৭৫-১৬৩৪) জো-নাং বৌদ্ধবিহারের ছাব্বিশতম প্রধান ও র্তাগ-ব্র্তান-দাম-ছোস-গ্লিং বৌদ্ধবিহারের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।

প্রথম জীবন[সম্পাদনা]

তারানাথ ১৫৭৫ খ্রিষ্টাব্দে তিব্বতের খা-রাগ (ওয়াইলি: kha rag) নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। চার বছর বয়সে তাকে ছোস-লুং-ব্যাং-র্ত্সে (ওয়াইলি: chos lung byang rtse) বৌদ্ধবিহারে নিয়ে আসা হয় এবং সেখানে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে কুন-দ্গা'-গ্রোল-ম্ছোগ (ওয়াইলি: kun dga' grol mchog) জো-নাং বৌদ্ধবিহারের চব্বিশতম প্রধানের পুনর্জন্ম বলে চিহ্নিত করা হয়। এরপর তিনি কুন-দ্গা'-গ্রোল-ম্ছোগের বিভিন্ন শিষ্যের নিকট বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষালাভ করেন, যেমন ব্যাম্স-পা-ল্হুন-গ্রুব (ওয়াইলি: byams pa lhun grub) সূত্রতন্ত্র সম্বন্ধে, র্দো-রিং-কুন-দ্গা'-র্গ্যাল-ম্ত্শান (ওয়াইলি: rdo ring kun dga' rgyal mtshan) মার্গফল সম্বন্ধে, ব্রাগ-স্তোদ-পা-ল্হা-দ্বাং-গ্রাগ্স-পা (ওয়াইলি: brag stod pa lha dbang grags pa) নারো পার ছয় যোগমহামুদ্রা সম্বন্ধে এবং কুন-দ্গা'-দ্পাল-ব্জাং (ওয়াইলি: kun dga' dpal bzang) নামক জো-নাং বৌদ্ধবিহারের পঁচিশতম প্রধান ও লুং-রিগ্স-র্গ্যা-ম্ত্শো (ওয়াইলি: ung rigs rgya mtsho) তাকে কালচক্র সম্বন্ধে শিক্ষাদান করেন। চৌদ্দ বছর বয়স থেকে ভারতীয় পণ্ডিত বুদ্ধগুপ্তনাথের নিকট শিক্ষা গ্রহণ করেন।[১] এছাড়াও বলভদ্র, নির্বাণশ্রী, পূর্ণানন্দ, পূর্ণবজ্র এবং কৃষ্ণভদ্র নামক ভারতীয় পণ্ডিতরাও তাকে শিক্ষাদান করেন ও সংস্কৃত বৌদ্ধগ্রন্থগুলির তিব্বতী অনুবাদে সহায়তা করেন।[২]

পরবর্তী জীবন[সম্পাদনা]

১৫৮৮ খ্রিষ্টাব্দে কুন-দ্গা'-দ্পাল-ব্জাং তারানাথকে জো-নাং বৌদ্ধবিহারের ছাব্বিশতম প্রধান হিসেবে নির্বাচিত করেন। এই সময়ে তিনি দোল-পো-পা-শেস-রাব-র্গ্যাল-ম্ত্শান নামক জো-নাং ধর্মসম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতার শিক্ষাকে পুনরায় প্রচারের দায়িত্ব নেন। তিনি দোল-পো-পা-শেস-রাব-র্গ্যাল-ম্ত্শান প্রচারিত গ্ঝান-স্তোং তত্ত্বের একনিষ্ঠ সমর্থক ছিলেন এবং এই তত্ত্বের ভুল পর্যালোচনাগুলিকে সংশোধন করেন। এই বিহারের প্রধান থাকার সময় তিনি দুইশত ষাট বছর পূর্বে দোল-পো-পা-শেস-রাব-র্গ্যাল-ম্ত্শান দ্বারা নির্মিত একটি বৃহদাকার স্তূপের সংস্কার সাধন করেন। ১৬০৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি গ্ঝান-স্তোং তত্ত্বের ওপর গ্ঝান-স্তোং-দ্বু-মা'ই-র্গ্যান (ওয়াইলি: gzhan stong dbu ma'i rgyan) নামক একটি বিখ্যাত গ্রন্থ রচনা করেন। ১৬০৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি দ্পাল-দুস-ক্যি-'খোর-লো'ই-ছোস-ব্স্কোর-গ্যি-ব্যুং-খুংস-ন্যের-ম্খো (ওয়াইলি: dpal dus kyi 'khor lo'i chos bskor gyi byung khungs nyer mkho) নামক ভারতের বৌদ্ধধর্মের ইতিহাস সম্বন্ধে তার বিখ্যাত গ্রন্থ রচনা করেন। ১৬১৫ খ্রিষ্টাব্দে ফুন-ত্শোগ্স-র্নাম-র্গ্যাল নামক গ্ত্সাং-পা রাজবংশের রাজা তারানাথকে একটি বৌদ্ধবিহার নির্মাণের জন্য জমি দান করেন। এই বিহারের নির্মাণ ১৬২৮ খ্রিষ্টাব্দে শেষ হয় এবং র্তাগ-ব্র্তান-দাম-ছোস-গ্লিং (ওয়াইলি: rtag brtan dam chos gling) বৌদ্ধবিহার নামে পরিচিত হয়।[২]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Buddhaguptanatha and the Late Survival of the Siddha Tradition in India, by David Templeman
  2. Stearns, Cyrus (আগস্ট ২০০৮)। "Tāranātha"The Treasury of Lives: Biographies of Himalayan Religious Masters। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৪-২৮ 

আরো পড়ুন[সম্পাদনা]

পূর্বসূরী
কুন-দ্গা'-দ্পাল-ব্জাং
তারানাথ
জো-নাং বৌদ্ধবিহারের ছাব্বিশতম প্রধান
উত্তরসূরী
কুন-দ্গা'-রিন-ছেন-র্গ্যা-ম্ত্শো
পূর্বসূরী
--
তারানাথ
র্তাগ-ব্র্তান-দাম-ছোস-গ্লিং বৌদ্ধবিহারের প্রথম প্রধান
উত্তরসূরী
সাংস-র্গ্যাস-র্গ্যা-ম্ত্শো