কেভিন পিটারসন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কেভিন পিটারসন
২০১৪ সালে পিটারসন
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামকেভিন পিটার পিটারসন
জন্ম (1980-06-27) ২৭ জুন ১৯৮০ (বয়স ৪৩)
পিটারমারিৎজবার্গ, নাটাল প্রদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা
ডাকনামকেপি, ক্যাপস, ক্যাপার্স[১]
উচ্চতা৬ ফুট ৪ ইঞ্চি (১.৯৩ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি অফ ব্রেক
ভূমিকাব্যাটসম্যান, অধিনায়ক
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৬২৬)
২১ জুলাই ২০০৫ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ টেস্ট২১ আগস্ট ২০১৩ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ১৮৫)
২৮ নভেম্বর ২০০৪ বনাম জিম্বাবুয়ে
শেষ ওডিআই১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৩ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ওডিআই শার্ট নং২৪
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৯৭-১৯৯৮নাটাল বি
১৯৯৮-১৯৯৯কোয়াজুলু নাটাল বি
১৯৯৯-২০০০; ২০১০কোয়াজুলু নাটাল
২০০১-২০০৪নটিংহ্যামশায়ার
২০০৪এমসিসি
২০০৫-২০১০হ্যাম্পশায়ার
২০০৯-২০১০রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর
২০১০-বর্তমানসারে
২০১১ডেকান চার্জার্স
২০১২-বর্তমানদিল্লি ডেয়ারডেভিলস
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ১০৪ ১৩৬ ২১৭ ২৫৩
রানের সংখ্যা ৮,১৮১ ৪,৪৪০ ১৬,৫২২ ৮,১১২
ব্যাটিং গড় ৪৭.২৮ ৪০.৭৩ ৪৯.৭৬ ৪০.৭৬
১০০/৫০ ২৩/৩৫ ৯/২৫ ৫০/৭১ ১৫/৪৬
সর্বোচ্চ রান ২২৭ ১৩০ ৩৫৫* ১৪৭
বল করেছে ১,৩১১ ৪০০ ৬,৪৪৩ ২,৩৯০
উইকেট ১০ ৭৩ ৪১
বোলিং গড় ৮৮.৬০ ৫২.৮৬ ৫১.৫০ ৫১.৭৫
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট - -
সেরা বোলিং ৩/৫২ ২/২২ ৪/৩১ ৩/১৪
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৬২/– ৪০/– ১৫২/– ৮৫/–
উৎস: ক্রিকেটআর্কাইভ, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

কেভিন পিটার পিটারসন, এমবিই (ইংরেজি: Kevin Peter Pietersen; জন্ম: ২৭ জুন, ১৯৮০) দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্মগ্রহণকারী বিশিষ্ট ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে তার সুনাম রয়েছে। ইংল্যান্ড দলের অন্যতম সদস্য কেভিন পিটারসন ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি মাঝেমাঝে স্পিন বোলিং করে থাকেন। এছাড়াও, কাউন্টি ক্রিকেটে সারে, ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে দিল্লি ডেয়ারডেভিলসে এবং ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লীগে সেন্ট লুসিয়া জুকসের হয়ে খেলছেন। ফিল্ডিংয়ের সময় তিনি মূলতঃ গালি অথবা কভার অঞ্চলে দণ্ডায়মান থাকেন।

প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

দক্ষিণ আফ্রিকার নাটাল প্রদেশের পিটারমারিৎজবার্গ এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন পিটারসন।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশগ্রহণ[সম্পাদনা]

নাটালের পক্ষে ১৯৯৭ সালে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এর পরেই তিনি ইংল্যান্ডে স্থানান্তরিত হন। এপ্রেক্ষিতে তিনি জাতিগত কোটা পদ্ধতিতে তার অসন্তুষ্টির কথা ব্যক্ত করেন।[২] তার ইংরেজ মা ইংল্যান্ডের পক্ষে খেলার উপযোগী করে তোলেন। এর যোগ্যতা অর্জনের জন্য তাকে চার বছর কাউন্টি পর্যায়ের খেলায় অংশগ্রহণ করতে হয়েছে। এর পরপরই তিনি দ্রুত জাতীয় দলে অন্তর্ভুক্তির জন্য ডাক পান।

২০০৪ সালে জিম্বাবুয়ে দলের বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত একদিনের আন্তর্জাতিকের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে পিটারসনের।[৩] এর পরের বছর ২০০৫ সালের অ্যাশেজ সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অংশগ্রহণের মাধ্যমে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষিক্ত হন তিনি।[৪]

আঘাতপ্রাপ্তি[সম্পাদনা]

জুন, ২০০৯ সালে লাফবোরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুশীলনী চলাকালে উদীয়মান রিস টপলির বোলিংয়ে আহত হন। এরপর পিটারসনকে দ্রুত লিচেস্টার রয়্যাল ইনফার্মারিতে প্রেরণ করা হয় এবং তার কানে সেলাই করতে হয়। এ ঘটনার পর টপলি'র আদর্শ পিটারসন তাকে স্বাক্ষর সংবলিত ব্যাট উপহার দেন।

ইংল্যান্ড দল পিটারসনের ধারাবাহিক সাফল্যে উজ্জ্বীবিত হয়ে ২০০৫ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে ঘরোয়া ক্রিকেটে হ্যাম্পশায়ারের পক্ষে তাকে শুধুমাত্র একটি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়। ১৭ জুন, ২০১০ তারিখে পিটারসন ঘোষণা করেন যে, তিনি হ্যাম্পশায়ার থেকে চলে যেতে ইচ্ছুক।[৫] এর পরপরই তিনি সারে দলের হয়ে ধারকৃত খেলোয়াড় হিসেবে বাকী মৌসুম চালিয়ে যান ও ২০১১ সাল থেকে স্থায়ীভাবে ঐ দলে যোগ দেন।[৬][৭]

খেলোয়াড়ী জীবন[সম্পাদনা]

টেস্ট ক্রিকেট ও একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পিটারসন অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। ৪ আগস্ট, ২০০৮ থেকে ৭ জানুয়ারি, ২০০৯ তারিখ পর্যন্ত ইংরেজ অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি মাত্র তিনটি টেস্ট ও নয়টি ওডিআইযে অংশ নেন। দায়িত্ব থেকে অব্যহতিকালে একইদিনে ইংল্যান্ডের কোচ পিটার মুরেজও অব্যহতি নেন।[৮] ইসিবি’র সাথে তার সম্পর্কের তেমন উত্তোরণ ঘটেনি। ২০১২ সালে সময়সূচীর সাথে একাত্মতা পোষণ না করায় ৩১ মে তারিখে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সকল ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেন।[৯][১০] পরবর্তীতে তিনি অবসরের চিন্তা-ভাবনা থেকে দূরে সরে আসেন এবং ইসিবি ও দলীয় খেলোয়াড়দের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে উঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত সিরিজে।[১১] তবে, তিনি সিরিজের চূড়ান্ত টেস্টে দল থেকে বাদ পড়ে যান।[১২]

বিতর্ক[সম্পাদনা]

২০০৯ সালের শুরুতে ভারত সফরে টেস্ট ও একদিনের আন্তর্জাতিকে সিরিজ হারলে ইসিবি ইংল্যান্ড অধিনায়ক কেভিন পিটারসনকে জরুরী সভায় তলব করে ও দলে মুরেজের কোচিংয়ের মান ও ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।[১৩] পরদিন পিটারসন গণমাধ্যমে ঐ সভায় দলের ‘অস্বাস্থ্যকর অবস্থার’ কথা তুলে ধরেন ও শীঘ্রই মুরেজকে কোচের পদ থেকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে বলে জানান।[১৪] দলের প্রশিক্ষণ, সম্ভাব্য ও সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ভনকে সামনের ওয়েস্ট সফরে অধিনায়ক হিসেবে মনোনয়ন ইত্যাদি বিষয়ে মুরেজ ও পিটারসনের মধ্যে দ্বন্দ্ব লেগেই থাকতো। ফলশ্রুতিতে ৭ জানুয়ারি, ২০০৯ তারিখে মুরজে কোচের দায়িত্ব থেকে ইসিবি অব্যহতি দেয় ও পিটারসন অধিনায়ক থেকে পদত্যাগ করেন। পদত্যাগের অব্যবহিত পরই ইংরেজ ক্রিকেটের সাথে জড়িত বেশ কয়েকজন ধারাভাষ্যকার মনে করেন, মুরেজের পদত্যাগের বিষয়ে পিটারসন উন্মুক্ত আলোচনার মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন।[১৫] কয়েকদিন পর এক স্বাক্ষাৎকারে পিটারসন জানান যে, অধিনায়কের পদ থেকে অব্যহতির ইচ্ছে না থাকলেও ইসিবি কর্মকর্তাগণ তাকে পদচ্যুতির কথা জানিয়েছিলেন।[১৬] তবে, ইসিবি’র সহ-সভাপতি ডেনিস অ্যামিস পিটারসনের বক্তব্যকে উদ্বৃতি দিয়ে জানান যে, মুরেজের পদত্যাগের বিষয়টি তিনি ফাঁস করেননি। অ্যামিস বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি না যে, কেভিন পিটারসন তথ্য ফাঁস করেছেন। তাঁর আবেগ তাড়নার ফলেই অন্যান্য সুবিধাবাদী গোষ্ঠী কাজে লাগিয়েছে।’[১৭] দলের অধিনায়কের দায়িত্বে অ্যান্ড্রু স্ট্রসের নাম পরবর্তীকালে ঘোষণা করা হয়েছিল।[৮]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Wilde, Simon (৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৯)। "Kevin Pietersen: Dumbslog millionaire"The Sunday Times। London। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ 
  2. Kevin Pietersen biography, Cricinfo. Retrieved on 28 May 2007.
  3. One Day International Matches played by Kevin Pietersen ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০ মে ২০০৮ তারিখে, Cricketarchive. Retrieved on 28 May 2007.
  4. Test Matches played by Kevin Pietersen, Cricketarchive. Retrieved on 28 May 2007.
  5. Dobell, George। "Kevin Pietersen set for Hampshire talks"Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুন ২০১০ 
  6. "Pietersen dropped by England, joins Surrey"। Reuters। ৩১ আগস্ট ২০১০। ২৮ মার্চ ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ নভেম্বর ২০১৩ 
  7. Aspin, Guy (২২ নভেম্বর ২০১০)। "Kevin Pietersen signs deal with Surrey"The Independent। UK। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০১১ 
  8. "England captain Pietersen resigns"। BBC Sport। ৭ জানুয়ারি ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ৭ জানুয়ারি ২০০৮ 
  9. "Kevin Pietersen retires from limited overs cricket: ECB"। ৩১ মে ২০১২। 
  10. "Pietersen quits ODIs, T20 internationals"। Wisden India। ১৩ জুলাই ২০১২। ২৫ জুন ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ নভেম্বর ২০১৩ 
  11. "Pietersen hints at Test retirement"। Wisden India। ৬ আগস্ট ২০১২। ১০ আগস্ট ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ নভেম্বর ২০১৩ 
  12. "Pietersen dropped over text messages"। ১২ আগস্ট ২০১২। 
  13. "Pietersen wants crisis talks with ECB"Cricinfo। ১ জানুয়ারি ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০১-০৭ 
  14. "Moores on the brink after row"Cricinfo। ৫ জানুয়ারি ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০১-০৭ 
  15. "Reactions to England cricket chaos"। BBC Sport। ৭ জানুয়ারি ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ৭ জানুয়ারি ২০০৯ 
  16. "Cricinfo – Pietersen says he was forced to quit"Cricinfo। ১১ জানুয়ারি ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ১১ জানুয়ারি ২০০৯ 
  17. "Kevin Pietersen didn't leak crisis talks: ECB"The Daily Telegraph। UK। ১১ জানুয়ারি ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০০৯ 

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

পূর্বসূরী
মাইকেল ভন
ইংরেজ জাতীয় ক্রিকেট অধিনায়ক
২০০৮-২০০৯
উত্তরসূরী
অ্যান্ড্রু স্ট্রস
পূর্বসূরী
ইরফান পাঠান
বর্ষসেরা উদীয়মান খেলোয়াড়
২০০৫
উত্তরসূরী
ইয়ান বেল