আবুল কালাম আজাদ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আবুল কালাম আজাদ
শিক্ষামন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
১৫ আগস্ট, ১৯৪৭ – ১৯৫৮
প্রধানমন্ত্রীজওহরলাল নেহেরু
পূর্বসূরীপদ প্রতিষ্ঠা
উত্তরসূরীকে.এল. শ্রীমলি
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্মআবুল কালাম মুহিয়ুদ্দিন আহমেদ আজাদ
(১৮৮৮-১১-১১)১১ নভেম্বর ১৮৮৮
মক্কা, উসমানীয় সাম্রাজ্য
(এখন সৌদি আরবের অংশ)
মৃত্যু২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৮(1958-02-22) (বয়স ৬৯)
দিল্লি, ভারত
মৃত্যুর কারণহৃদরোগ
জাতীয়তাভারতীয়
রাজনৈতিক দলভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
দাম্পত্য সঙ্গীজুলাইখা বেগম
পুরস্কারভারত রত্ন(১৯৯২)
স্বাক্ষর

আবুল কালাম মহিউদ্দিন আহমেদ উচ্চারণ; (উর্দু: مولانا ابوالکلام محی الدین احمد آزاد‎‎) (১১ নভেম্বর ১৮৮৮ - ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৮) ছিলেন একজন বিশিষ্ট ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামীস্বাধীন ভারতের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী। তিনি মৌলানা আবুল কালাম আজাদ (তার ডাকনাম ছিল আজাদ) নামেই অধিক পরিচিত। মৌলানা আজাদ ইসলামি ধর্মশাস্ত্রে সুপণ্ডিত ছিলেন। তরুণ বয়সে তিনি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন। তিনি হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির প্রবক্তা ছিলেন এবং দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত বিভাগের বিরোধিতা করেছিলেন। এমনকি নবগঠিত পাকিস্তান রাষ্ট্রে সামরিক শাসন ও পাকিস্তান ভাগ সম্পর্কেও তিনি ভবিষ্যতবাণী করে গিয়েছিলেন।[১] ১৯৯২ সালে তাকে ভারতের সর্বোচ্চ সম্মান ভারতরত্নে (মরণোত্তর) ভূষিত করা হয়।[২] স্বাধীন ভারতে শিক্ষাবিস্তারে তার উজ্জ্বল ভূমিকার কথা স্মরণে রেখে তার জন্মদিনটি সারা দেশে "জাতীয় শিক্ষা দিবস" হিসেবে পালন করা হয়।[৩]

তরুণ বয়স থেকে মৌলানা আজাদ উর্দু ভাষায় কবিতা এবং ধর্ম ও দর্শন-সংক্রান্ত নিবন্ধ রচনা করতে শুরু করেন। তিনি সাংবাদিকতার পেশা গ্রহণ করে ব্রিটিশ শাসনের সমালোচনা করেন এবং ভারতীয় জাতীয়তাবাদকে সমর্থন জানান। পরে আজাদ খিলাফত আন্দোলনের নেতৃত্ব দান করেন। সেই সময় তিনি মহাত্মা গান্ধীর সংস্পর্শে আসেন। আজাদ ১৯১৯ সালের রাওলাট আইনের বিরুদ্ধে গান্ধীজির অহিংস অসহযোগের ধারণায় অণুপ্রেরিত হয়ে অসহযোগ আন্দোলন সংগঠনে সক্রিয় হয়ে ওঠেন। ১৯২৩ সালে তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনিই ছিলেন কংগ্রেসের সর্বকনিষ্ঠ সভাপতি।

১৯৩১ সালে মৌলানা আজাদ ধারাসন সত্যাগ্রহ শুরু করেন। এই সময় তিনি দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক নেতা হয়ে ওঠেন। তিনি ভারতে ধর্মনিরপেক্ষতাসমাজতান্ত্রিক ধ্যানধারণা এবং হিন্দু-মুসলমান সম্প্রীতির কথা প্রচার করেন।[৪] ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় পাঁচ বছর (১৯৪০-৪৫) তিনি কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এই সময় তিন বছর তিনি কারারুদ্ধ ছিলেন। যে সকল ভারতীয় মুসলমান মুসলমানদের জন্য পৃথক পাকিস্তান রাষ্ট্রের দাবির বিরোধিতা করেছিলেন, তাদের মধ্যে সবচেয়ে উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব ছিলেন মৌলানা আজাদ। আ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় তিনি হিন্দু-মুসলমান সম্প্রীতির প্রচেষ্টা চালান। স্বাধীন ভারতের শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে তিনি বিনামূল্যে প্রাথমিক শিক্ষা ও উচ্চশিক্ষার জন্য আধুনিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি চালু করেন। তিনিই ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন স্থাপন করেন।[৪]

শৈশব জীবন[সম্পাদনা]

মৌলানা আবুল কালাম ১৮৮৮ সালের ১১ই নভেম্বর সৌদি আরবের মক্কায় জন্ম গ্রহণ করেন যেটি তখন উসমানীয় সাম্রাজ্যের অন্তর্গত ছিল।[৫] তার আসল নাম ছিল সৈয়দ গুলাম মুহিউদ্দিন আহমেদ বিন খায়েরুদ্দিন আল হুসায়নি, কিন্তু তিনি সময়ের আবর্তনে মওলানা আবুল কালাম আজাদ নামে পরিচিত হন।[৬] আজাদের পিতা দিল্লীতে বসবাসকারী একজন আলেম ছিলেন যিনি তার মাতামহের সাথে থাকতেন, কারণ তার পিতা অনেক কম বয়সে মারা যান। তার শৈশব কাটে কিছুটা অসহায়ত্বের মধ্যে। ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহের সময় আজাদের পিতা খায়েরউদ্দীন মক্কায় চলে যান এবং সেখানেই বসবাস করতে থাকেন। সেখানেই সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারের মেয়েকে বিয়ে করেন। ১৮৮৮ সালের ১১ নভেম্বর সেখানে আজাদের জন্ম হয়। তারপর ১৮৯০ সালে তার পিতা সপরিবারে কলকাতায় চলে আসেন। খায়েরউদ্দীন কলকাতায় মৃত্যুবরণ করার পর থেকে আজাদের পরিবার এখানেই স্থায়ী হয়।

শিক্ষা-দীক্ষা[সম্পাদনা]

আজাদের পরিবার ছিল ধর্মীয়ভাবে রক্ষণশীল। তাই ছোটবেলায় ধর্মীয় শিক্ষা লাভের মধ্য দিয়ে তার শিক্ষাজীবন শুরু হয়। তখনকার সময়ে বৃটিশ নিয়ন্ত্রিত, প্রচলিত স্কুল কিংবা মাদ্রাসা শিক্ষায় খায়েরউদ্দীনের এর খুব একটা আস্থা ছিল না। তাই তিনি বাড়িতেই আজাদের শিক্ষার ব্যবস্থা করেন। বাড়িতেই আজাদ আরবি ভাষায় গণিত, জ্যামিতি, দর্শন প্রভৃতি শিক্ষালাভ করেন। আরবি মাতৃভাষা হওয়ায় এবং ধর্মের প্রতি একনিষ্ঠ ও দৃঢ় বিশ্বাসী পারিবারিক পটভূমির কারণে প্রচলিত ধারায় ইসলামী শিক্ষার চর্চা করা ছাড়া আজাদের অন্য কোনো বিকল্প ছিল না। প্রাতিষ্ঠানিক আধুনিক শিক্ষা লাভ না করলেও ব্যক্তিগতভাবে অধ্যয়ন ও ব্যাপক পাঠাভ্যাসের মাধ্যমে তিনি উর্দু, ফারসি, হিন্দি ও ইংরেজিতে ব্যুৎপত্তি অর্জন করেন। তার সময়ের অনেক যশস্বী ব্যক্তিদের মতো তিনিও নিজ চেষ্টায় শিক্ষিত হওয়ার পথ অনুসরণ করেন এবং বিশ্ব ইতিহাস ও রাজনীতি সম্পর্কে বিপুল জ্ঞানের অধিকারী হন।[১]

তরুণ বয়সে স্যার সৈয়দ আহমদ খানের লেখা পড়ে তিনি গভীরভাবে প্রভাবিত হন। তার চিন্তাধারায় পরিবর্তন ঘটে। তিনি আধুনিক শিক্ষার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারেন। তাই ইংরেজী শিক্ষায় ব্রতী হন এবং অল্প সময়ের মধ্যেই নিজ প্রচেষ্টায় দক্ষতা অর্জন করেন।

সে সময়ে সমাজের প্রচলিত রীতি, পদ্ধতি আর বিশ্বাসের সঙ্গে নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারছিলেন না। একটা সময় তার ওপর পরিবারের সমস্ত শৃঙ্খল সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়ে। বিদ্রোহের এক নতুন বোধে তার মন-প্রাণ ছেয়ে যায়। তখন নিজের নামের শেষে 'আজাদ' যুক্ত করেন, যার অর্থ মুক্ত।[৭]

রাজনৈতিক জীবন[সম্পাদনা]

আজাদ যখন বিপ্লবী চিন্তাধারায় একটু একটু আকর্ষণ অনুভব করছেন, ঠিক তখন তিনি শ্রী অরবিন্দ ঘোষ এবং শ্যামসুন্দর চক্রবর্তীর মতো বিপ্লবী নেতাদের সংস্পর্শে আসেন এবং তাদের মাধ্যমে তিনি বিপ্লবী রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। তার কিছুদিন পর তিনি মিশর, তুরস্ক, সিরিয়া, ইরাক প্রভৃতি দেশ ভ্রমণ করেন এবং সেসব দেশের বিপ্লবীদের সাথে সাক্ষাৎ করেন। তাদের সাথে কথা বলে তিনি বুঝতে পারেন, ভারতবর্ষের স্বাধীনতার জন্য বিপ্লব করতেই হবে। তাই দেশে ফেরার পর তিনি মানুষকে স্বাধীনতায় উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে 'আল হিলাল' নামে উর্দুতে একটি পত্রিকা প্রকাশ করা শুরু করেন। এই পত্রিকা ব্রিটিশদের সমালোচনা করে এবং মানুষের মাঝে বিপ্লব ছড়িয়ে দিয়ে ব্রিটিশবিরোধী মনোভাব জাগিয়ে তোলে। ফলে অল্পদিনেই পত্রিকাটি ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং উর্দু সাংবাদিকতার ইতিহাসে এক মাইলফলক সৃষ্টি করে। জনপ্রিয়তা দেখে ব্রিটিশ সরকারের পিলে চমকে যায় এবং তড়িঘড়ি করে পত্রিকা বাজেয়াপ্ত করে। পরবর্তীকালে আজাদ 'আল বালাঘ' নামে আরো একটি পত্রিকা চালু করলে ব্রিটিশ সরকার সেটিও বাজেয়াপ্ত করে দেয়। ব্রিটিশ সরকার উপায়ান্তর না দেখে তাকে কলকাতা থেকে বহিষ্কার করে। আজাদ বিহারে চলে যান। কিন্তু সেখানেও তাকে গৃহবন্দী করে রাখা হয়। ১৯২০ সালের পহেলা জানুয়ারি তিনি মুক্তি পান এবং কলকাতায় চলে আসেন।

কলকাতায় এসে তিনি খিলাফত আন্দোলনের সাথে যুক্ত হন। ততদিনে মহাত্মা গান্ধী অসহযোগ আন্দোলন শুরু করে দিয়েছেন। খিলাফত আন্দোলন আর অসহযোগ আন্দোলন একসাথে চলার ফলে তিনি গান্ধীর সংস্পর্শে আসেন। আজাদ গান্ধীজীর অসহযোগ আন্দোলনকে পূর্ণভাবে সমর্থন করেন এবং যুগপৎভাবে অসহযোগ এবং খিলাফত, দুই আন্দোলনেই সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। আন্দোলনের ফলে ব্রিটিশ সরকার সারাদেশে ধরপাকড় শুরু করলে তিনি অন্যান্য কংগ্রেস নেতার সাথে গ্রেফতার হন এবং দু' বছর কারাবাস শেষে মুক্তি পান। এই সময়ে তিনি শীর্ষ কংগ্রেস নেতাদের একজন হয়ে ওঠেন এবং ১৯২৩ সালে মাত্র ৩৫ বছর বয়সে কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হন।[৮]

বিপ্লব ও সাংবাদিকতা[সম্পাদনা]

আজাদ সম্পূর্ণভাবে ভারতীয় জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক অবস্থান গ্রহণ করেন যা তৎকালীন বেশিরভাগ মুসলিমদের জন্য চরমপন্থা হিসেবে বিবেচিত হত।[৯] তিনি ব্রিটিশদের ওপর জাতিগত বৈষম্য এবং ভারতীয় সাধারণ মানুষের প্রয়োজনকে উপেক্ষা করার অভিযোগ তোলেন। বিপ্লবী ও সাংবাদিক জীবন: মুসলমান হলেও ধর্মের বদলে সেক্যুলার বা ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদী আজাদ পুরোপুরি জাতীয়তাবাদী ভারতীয় (ইন্ডিয়ান ন্যাশনালিস্ট) হয়ে যান। তিনি জাতিগত বৈষম্য উসকে দেওয়ার জন্য এবং সারা ভারতে সাধারণ মানুষের দাবি ও প্রয়োজন উপেক্ষা করায় ইংরেজদের অত্যন্ত তীব্র ভাষায় নিন্দা করেন। জাতীয় ইস্যুর আগে সাম্প্রদায়িক ইস্যুকে বড় করে দেখায় তিনি মুসলিম রাজনীতিবিদদেরও সমালোচনা করেন। আজাদ স্যার সৈয়দ আহমদের ‘ন্যাশনালিস্ট’ আইডিয়ার প্রতি অনুরক্ত হন। ১৯০৮ সালে তিনি ইরাক, সিরিয়া, মিশর, তুরস্ক ও ফ্রান্স ভ্রমণ করেন ও তাদের যুব সমাজের মধ্যে কামাল আতাতুর্কের ধর্ম ও সাম্রাজ্যবাদ বিরোধিতা ও জাতীয়তাবাদী মতবাদ তাঁকে প্রভাবিত করে। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের সময় তিনি সাধারণ মুসলিম সম্প্রদায়ের মতবাদের বিপরীতে অবস্থান নেন। এ সময় তিনি হিন্দু বিপ্লবী অরবিন্দ ঘোষ ও শ্যাম সুন্দর চক্রবর্তীর সংস্পর্শে আসেন। ধর্মের বদলে রাজনীতিতে মাওলানা আজাদের অনুরাগ দেখে মাওলানা শিবলী নোমানী তাঁকে ‘ওয়াকিল’ পত্রিকার সম্পাদক অমৃতসরের খান আতার কাছে পাঠান। সেখানে তিনি সম্পাদকমণ্ডলীর সভ্য হিসেবে পাঁচ বছর কাটান। কলকাতায় ফিরে ১৯১২ সালে তিনি ‘আল-হিলাল’ নামে একটি উর্দু পত্রিকা বের করেন। এতে ব্রিটিশ পলিসিকে আক্রমণ ও সাধারণ মানুষের সমস্যাগুলো তুলে ধরা হয়।[৮]

সাংবাদিকতা: ১৯১২ সালে প্রতিষ্ঠিত আজাদের উর্দু সাপ্তাহিক সংবাদপত্র আল-হেলাল প্রকাশ্যে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ ও ভারতে এর অপকর্মের আক্রমণাত্মক সমালোচনা করে। এ পত্রিকা কংগ্রেস ও জাতীয়তাবাদী মতামত প্রকাশে একটি শক্তিশালী বিপ্লবী মুখপত্রে পরিণত হয়। সম্প্রদায় ভিত্তিক প্রতিনিধিত্বের প্রশ্নে দুসম্প্রদায়ের মধ্যে সৃষ্ট শত্রুতার পর হিন্দু-মুসলমান ঐক্য গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আল-হেলাল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সরকার আল-হেলাল সাপ্তাহিকীকে বিপজ্জনক মতামত প্রচারে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত করে এবং সে কারণে ১৯১৪ সালে পত্রিকাটি নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়। আজাদ তখন এটির নাম পরিবর্তন করেন এবং আল-বালাগ নামে অপর একটি সাপ্তাহিকী প্রকাশ করেন। এ পত্রিকারও উদ্দেশ্য ছিল অভিন্ন অর্থাৎ হিন্দু-মুসলমান ঐক্যের ভিত্তিতে ভারতীয় জাতীয়তাবাদ ও বিপ্লবী ধ্যান-ধারণা প্রচার করা। কিন্তু ১৯১৬ সালে সরকার এ পত্রিকাও নিষিদ্ধ ঘোষণা করে এবং আজাদকে কলকাতা থেকে বহিষ্কার করে রাঁচিতে অন্তরীণ করে রাখে। সেখান থেকে তিনি প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯২০ সালে মুক্তি পান।[৯]

অসহযোগ[সম্পাদনা]

মৌলানা আজাদ যখন খিলাফত আন্দোলনের নেতৃত্বদান করেন; সেই সময় তিনি মহাত্মা গান্ধীর সংস্পর্শে আসেন। আজাদ ১৯১৯ সালের রাওলাট আইনের বিরুদ্ধে মহাত্মা গান্ধীর অহিংস অসহযোগের ধারণায় অনুপ্রাণিত হয়ে অসহযোগ আন্দোলন সংগঠনে সক্রিয় হয়ে ওঠেন।[১০]

কংগ্রেস নেতা[সম্পাদনা]

১৯২৩ সালে মৌলানা আজাদ ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনিই ছিলেন কংগ্রেসের সর্বকনিষ্ঠ সভাপতি। ১৯৩১ সালে তিনি সত্যাগ্রহ আন্দোলনে যোগদান করেন।এই সময় তিনি দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক নেতা হয়ে ওঠেন। তিনি ভারতে ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতান্ত্রিক ধ্যানধারণা এবং হিন্দু-মুসলমান সম্প্রীতির কথা প্রচার করেন। ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় পাঁচ বছর (১৯৪০-৪৫) তিনি কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এই সময় তিন বছর তিনি কারারুদ্ধ ছিলেন। যে সকল ভারতীয় মুসলমান মুসলমানদের জন্য পৃথক পাকিস্তান রাষ্ট্রের দাবির বিরোধিতা করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব ছিলেন মৌলানা আজাদ। তিনি ভারতের অন্তর্বর্তী সরকারেও মন্ত্রীত্ব করেন। দেশভাগের অব্যবহিত আগে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় তিনি হিন্দু-মুসলমান সম্প্রীতির প্রচেষ্টা চালান।আজীবন ভারতীয় জাতীয়তাবাদের রক্ষক ছিলেন মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩০ জুলাই ২০২১ তারিখে

১৯৪০-১৯৪৫ সালে তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে কংগ্রেসের সভাপতি নির্রাচিত হন। এসময় উপমহাদেশে হিন্দু-মুসলমান সম্পর্কের অবনতি ঘটে। পাকিস্তান আন্দোলন জোরদার হয়। তিনি পাকিস্তান আন্দোলনের বিরোধীতা করেন। হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতি রক্ষার জন্য প্রচেষ্টা চালান। কিন্তু সভাপতি হিসেবে, কংগ্রেসের কিছু উগ্রপন্থী নেতাকে নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হন,ফলে ভারতীয় মুসলিমরা তাকে বিশ্বাস করতে পারেননি। তার সময়ে কংগ্রেস পুরোপরি বর্ণ হিন্দুদের কজ্বায় চলে যায়।১৯৪৩ সালে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধকালে বাংলাদেশে খাদ্য ঘাটতির দরুন ব্যাপক দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। নাজিম উদ্দিন সরকার জরুরি ভিত্তিতে বিহার এবং উড়িষ্যা থেকে উদ্ধৃত্ত খাদ্যশস্য ক্রয় করার প্রস্তাব করলে ব্যবস্থাপক সভায় বাঙালি হিন্দু সদস্যরা হিন্দু অধ্যুষিত বিহার এবং উড়িষ্যায় খাদ্যভাব দেখা দেবে এই খোঁড়া অজুহাত তুলে উক্ত প্রস্তাবে বাধা দেন। নাজিম সরকার জরুরি ভিত্তিকে পাঞ্জাব থেকে গম আনার সিদ্ধান্ত নেন। পাঞ্জাব সরকারও গম পাঠাতে রাজী ছিলেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় খাদ্রমন্ত্রী হিন্দু মহাসভাপন্থী শিবনাথ শাস্ত্রী মহাযুদ্ধের অজুহাতে খাদ্য চলাচলে কর্ডন প্রথা চালু করায় পাঞ্জাব থেকে সেদিন বাংলায় খাদ্য সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। ফলে ৫৫ লক্ষ বঙ্গ-সন্তান খাদ্যাভাবে মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। বাংলার অধিকাংশ ছিল মুসলমান। মৌলানা আজাদ তাদের কাছে কংগ্রেসের তাবেদার ছাড়া অন্য কিছু প্রতিপন্ন হয়নি।পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পটভূমি এবং পাকিস্তান আন্দোলন বাংলার অবদান

ভারত ছাড়ো আন্দোলন[সম্পাদনা]

১৯৪২ সালের শুরুতেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে হয়ে পড়লে, যুদ্ধে ভারতীয় জনগণের সার্বিক সমর্থন ও অংশগ্রহণ লাভের আশায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের অনুরোধে ভারতীয় সমস্যা সম্পর্কে ব্রিটিশ সরকার মনোভাব বদল করে। ব্রিটিশ সরকারের যুদ্ধকালীন মন্ত্রীসভার সদস্য স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপসের নেতৃত্বে ক্রিপস কমিশন ভারতীয় সমস্যা সম্পর্কে আলোচনা করতে ভারতবর্ষে আসেন। তার প্রস্তাব ছিল, “ ব্রিটিশ সরকার তখনই এই মর্মে ঘোষণা করবে যে, যুদ্ধ মিটে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভারতকে স্বাধীন বলে ঘোষণা করা হবে । ঘোষণায় এই মর্মে আরও একটি ধারা যুক্ত থাকবে যে ব্রিটিশ কমনওয়েলথের ভেতর থাকা না থাকার বিষয়টি ভারত স্বাধীনভাবে স্থির করতে পারবে । যুদ্ধ চলাকালের জন্যে একজিকিউটিভ কাউন্সিল পুনর্গঠিত হবে এবং তার সদস্যরা মন্ত্রীর পদমর্যাদা পাবে । বড়লাট থাকবেন নিয়মতান্ত্রিক প্রধান হিসেবে । এইভাবে এটা হবে প্রকৃতপক্ষে ক্ষমতা হস্তান্তর, তবে এই হস্তান্তর আইন মোতাবেক হতে পারবে কেবল যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর”। প্রথম থেকেই গান্ধীজী যুদ্ধে অংশগ্রহণের বিপক্ষে ছিলেন, তাই তিনি এই প্রস্তাব সমর্থন করেন নি্, কিন্তু কংগ্রেসের শীর্ষনেতৃত্বকে ভারতের মঙ্গলের স্বার্থে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছিলেন। ২৯ মার্চ থেকে ১১ এপ্রিল, ১৯৪২ একটানা কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির অধিবেশনে দিনের বেলায় ক্রিপসের প্রস্তাবগুলো আলোচিত হয় এবং সন্ধ্যায় মৌলানা আজাদ ও জওহরলাল নেহেরু ক্রিপসের সাথে কথা বলেন। কংগ্রেস যুদ্ধের পরে ভারতকে স্বাধীনতা প্রদান করা হবে, একজিকিউটিভ কাউন্সিল মন্ত্রীসভার ন্যায় ক্ষমতাভোগ করবেন, যুদ্ধ একজন ভারতীয় মন্ত্রীর অধীনে পরিচালিত হবে ও বড়লাট থাকবেন নিয়মতান্ত্রিক প্রধান এই মর্মে লিখিত ঘোষণা চাইছিল। স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপস শেষ পর্যন্ত তার পূর্ব অবস্থান থেকে সরে এলে, এই মিশন ব্যর্থ হয়ে যায়।

১৯৪২ সালের জুনে জাপান কর্তৃক ভারত আক্রমণ বিশেষ করে বাংলা দখলের আশঙ্কা, ভারতীয় রাজনীতিতে নতুন পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। করণীয় নির্ধারণে কংগ্রেস নেতৃত্ব দ্বিধা বিভক্ত হয়ে পড়ে। যুদ্ধের শুরুর দিকে মৌলানা আজাদ বিভিন্নভাবে গান্ধীজীকে ব্রিটিশ বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধভাবে আন্দোলনের কথা বললেও তিনি নির্লিপ্ত ছিলেন, কিন্তু জাপানী বাহিনীর ভারত আক্রমণের আশঙ্কাকে কেন্দ্র করে গান্ধীজী নতুন করে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের কথা বলেন। মৌলানা আজাদ ও জওহরলাল নেহুরু গান্ধীজীর এই মতকে সমর্থন করতে পারেন নি। মৌলানা আজাদের আশঙ্কা ছিল, ভারতীয় সীমান্তে যখন শত্রুপক্ষ দাঁড়িয়ে, বৃটিশ সে সময়ে সংঘবদ্ধ কোনো আন্দোলন সহ্য করবে না, সব কংগ্রেস নেতাকে গ্রেপ্তারসহ প্রয়োজনে সর্বশক্তি প্রয়োগ করে আন্দোলন দমন করবে। “গান্ধিজী ধারণা করেছিলেন যে যুদ্ধ ভারতের সীমান্তে এসে যাওয়ায় আন্দোলন শুরু হওয়া মাত্র ব্রিটিশ কংগ্রেসের সঙ্গে একটা রফা করে নেবে । যদি তা নাও হয় তবু জাপানীরা যখন ভারতের দোরগোড়ায় তখন কোনো চরম পথ নিতে বৃটিশ ইতস্তত করবে না। তিনি ভেবেছিলেন এর ফলে কংগ্রেস একটি সার্থক আন্দোলন গড়ে তোলার সময় এবং সুযোগ পাবে”। ১৯৪২ সালের ১৪ জুলাই মৌলানা আজাদ ও জওহরলাল নেহুরুর সমর্থন ছাড়াই কংগ্রেস ব্রিটিশ বিরোধী অহিংস বিপ্লব “ভারত ছাড়” আন্দোলন ঘোষণা করে এবং পরবর্তীকালে মৌলানা আজাদের আশঙ্কাই সত্যি হয়। সরকার গান্ধীজীসহ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতার করে দীর্ঘ সময়ের জন্য জেলে পাঠায় এবং “ভারত ছাড়” আন্দোলন ব্যর্থ হয়ে যায়।[৮]

ভারত বিভাগ ও মৌলানা আজাদ[সম্পাদনা]

আজাদ, প্যাটেলমহাত্মা গান্ধী

ভারত বিভাজন বা দেশভাগ হল ব্রিটিশ ভারতের রাজনৈতিক বিভাজন। ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট ব্রিটিশ ভারত ভেঙে হয়ে পাকিস্তান অধিরাজ্য ও ভারত অধিরাজ্য নামে দুটি সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠন করা হয়। পাকিস্তান পরবর্তীকালে আবার দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ নামে দুটি রাষ্ট্রে পরিণত হয়। ভারত অধিরাজ্য পরবর্তীকালে ভারতীয় প্রজাতন্ত্র বা ভারত গণরাজ্য নামে পরিচিত হয়। ১৯৪৭ সালের ভারত বিভাজনের ফলে ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি ও পাঞ্জাব প্রদেশও দ্বিখণ্ডিত হয়। বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি ভেঙে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য (ভারত) ও পূর্ব বাংলা/পূর্ব পাকিস্তান প্রদেশ (পাকিস্তান) গঠিত হয়। পাঞ্জাব প্রদেশ ভেঙে পাঞ্জাব প্রদেশ (পাকিস্তান) ও পাঞ্জাব রাজ্য (ভারত) গঠিত হয়। ভারত বিভাজনের সঙ্গে সঙ্গে ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনী, ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস ও অন্যান্য প্রশাসনিক কৃত্যক এবং রেলপথ ও অন্যান্য কেন্দ্রীয় সম্পদ দুই রাষ্ট্রের মধ্যে বিভক্ত করে দেওয়া হয়। মৌলানা আজাদ ধর্মের ভিত্তিতে ভারত বিভাগের বিপক্ষে অবস্থান করেন। বিভিন্ন সভা ও সমাবেশে তিনি এর তীব্র বিরোধীতা করে বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি মনে করেন,পাকিস্তান সৃষ্টির কল্পনা একটা ঘৃণা থেকে জন্ম নিয়েছে এবং যতদিন ঘৃণা বেঁচে থাকবে, ততদিনই এর অস্তিত্ব। এই ঘৃণা ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্ককে গ্রাস করে ফেলবে। এমন পরিস্থিতিতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বন্ধুত্ব হওয়া বা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান সম্ভব নয়, যদি না এ দুটি দেশ আকস্মিক কোনো বিপদের মধ্যে পড়ে। দেশভাগের এই রাজনীতি এ দুটি দেশের মধ্যে এক বিরাট প্রাচীর তৈরি করবে। পাকিস্তানের পক্ষে ভারতের সব মুসলমানকে সেখানে স্থান দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ তার ভূমিস্বল্পতা। পক্ষান্তরে হিন্দুদেরও পশ্চিম পাকিস্তানে বাস করা সম্ভব নয়। তিনি এক সাক্ষাতকারে বলেন,

"যদি পাকিস্তান সৃষ্টি মুসলমানদের জন্য সঠিক হতো তবে আমি অবশ্যই তা সমর্থন করতাম। কিন্তু এই দাবির মধ্যে আমি অন্তর্নিহিত বিপদ দেখতে পাচ্ছি। আমি আশা করি না মানুষ আমাকে সমর্থন করবে, কিন্তু আমিও আমার বিবেকের বিরুদ্ধে যেতে পারি না।"

তার মতে,ভারত ভাগের আসল বিষয় হচ্ছে অর্থনৈতিক উন্নতি, ধর্ম নয়। মুসলমান ব্যবসায়ীদের মধ্যে সক্ষমতা ও প্রতিযোগিতার মনোভাব সম্বন্ধে তিনি যথেষ্ট সন্দিহান ছিলেন। তিনি মনে করতেন,মুসলিম ব্যবসায়ীগণ পৃষ্ঠপোষকতা ও বিশেষ বিশেষ সরকারি সুবিধা পেতে অভ্যস্ত। এখন ভারতের এই নতুন স্বাধীনতাপ্রাপ্তিকে তারা ভয়ের দৃষ্টিতে দেখছে। নিজেদের ভয়টাকে ঢেকে রাখার জন্য তারা দ্বিজাতিতত্ত্বের ব্যাপারে সোচ্চার, যেখানে তারা সম্পূর্ণ অর্থনীতিটাকে কব্জা করতে পারে ও সেখানে অন্যান্য প্রতিযোগীর প্রবেশ নিষিদ্ধ।[১১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Maulana Abul Kalam Azad: The Man Who Knew The Future Of Pakistan Before Its Creation (New Age Islam)"। ২ ডিসেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ নভেম্বর ২০১১ 
  2. "Padma Awards Directory (1954–2007)" (পিডিএফ)। [[Ministry of Home Affairs (India)|]]। ১০ এপ্রিল ২০০৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ডিসেম্বর ২০১০ 
  3. মৌলানা আজাদের জন্মদিনটি "জাতীয় শিক্ষা দিবস", "শিক্ষক দিবস" নয়। "শিক্ষক দিবস" সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণনের জন্মদিন।
  4. Agrawal, M. G. (6 জুন, 2008)। "Freedom Fighters of India (in Four Volumes)"। Gyan Publishing House – Google Books-এর মাধ্যমে।  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  5. http://www.liveindia.com/freedomfighters/5.html বাল্যকাল
  6. "Remembering Maulana Abul Kalam Azad: A Short Biography"Institute of Asian Studies। সংগ্রহের তারিখ ১ জানুয়ারি ২০১৩Maulana Abul Kalam Azad was born on November 11, 1888, in Mecca. He came back to Calcutta with his family in 1890. 
  7. Book= India Wins Freedom
  8. "জাতীয় শিক্ষা দিবস ও মৌলানা আবুল কালাম আজাদের জন্মদিন | BengalStudents"www.bengalstudents.com 
  9. সিরাজুল ইসলাম (২০১২)। "আজাদ, মওলানা আবুল কালাম"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  10. "মৌলানা আবুল কালাম আজাদ"SAMAKAL 
  11. Reporter (২০১৫-১১-১২)। "সাক্ষাৎকার: মাওলানা আবুল কালাম আজাদ | Daily Amar Bangla" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-২২ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]