স্পাইন্ড পিগমি শার্ক

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

স্পাইন্ড পিগমি হাঙর
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: Animalia
পর্ব: কর্ডাটা
শ্রেণী: Chondrichthyes
উপশ্রেণী: Elasmobranchii
বর্গ: Squaliformes
পরিবার: Dalatiidae
গণ: Squaliolus
প্রজাতি: S. laticaudus
দ্বিপদী নাম
Squaliolus laticaudus
H. M. Smith and Radcliffe, 1912
Range of the spined pygmy shark
প্রতিশব্দ

Squaliolus sarmenti Noronha, 1926

স্পাইন্ড পিগমি হাঙর বা পিগমি হাঙর, বৈজ্ঞানিক নাম (Squaliolus laticaudus)। এটি ডগফিস প্রজাতির একটি হাঙর এবং এটির পরিবার হলো Dalatiidae। এটি হাঙরের প্রজাতির ভেতর সব থেকে ছোট হাঙর। এরা লম্বায় মাত্র ৭-৮ ইঞ্চি হয়। সমস্ত মহাসাগরের মধ্যে ব্যাপকভাবে এদের পাওয়া যায়। এদের থেকে মানুষের কিছুটা বিপদের সম্ভাবনা অছে।

নামকরণ[সম্পাদনা]

১৯১২ সালে Hugh McCormick Smith এবং Lewis Radcliffe স্পাইন্ড পিগমি হাঙর আবিষ্কার করেন। তখন তারা এই গোত্রটির নাম দেন "Squaliolus" এবং এটির বর্ণনামূলক ব্যাখ্যা দিতে "laticaudus" নামটি দেন। এদের দ্বিপদী নাম দাড়ায় "Squaliolus laticaudus" যেটি এসেছে ল্যাটিন "latus" -যার মানে "বিস্তৃত" অথবা "চওড়া" এবং "cauda"- অর্থাৎ "লেজ"।

ইংরেজিতে এদের সাধারণ নাম গুলি হলো -Big-eye Dwarf Shark, Spined Pygmy Shark। তাছাড়া আরো যেসব নাম শোনা যায়- Cação-espinho পর্তুগীজ, Dvärgpigghaj সুইডিশ, Oome-kobitozame জাপানি, Pigget dværghaj ড্যানিশ, Requin nain ফরাসি, Stekeldwerghaai ডাচ, Tollo pigmeo espinudo স্প্যানিশ, Tubarão-anão পর্তুগীজ, Zwerghai জার্মান

বিচরণ[সম্পাদনা]

স্পাইন্ড পিগমি হাঙর বিশ্ব জুড়ে সব জায়গাতেই রয়েছে। আটলান্টিক মহাসাগরেও এটি থাকে। বারমুডা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সুরিনাম এবং দক্ষিণ ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনার উত্তর পশ্চিমে এটির দেখা মেলে। তাছাড়া উত্তর ফ্রান্স, মদিরা, কেপ ভার্দেও এদের পাওয়া যায়। ভারত মহাসাগরে এই প্রজাতি শুধুমাত্র সোমালিয়াতে পাওয়া যায়। প্রশান্ত মহাসাগরে, এটা দক্ষিণ জাপান, তাইওয়ান, এবং ফিলিপাইন এ পাওয়া যায়।

স্পাইন্ড পিগমি হাঙর একটি গভীর জলের হাঙর। এমিনতে এরা ২০০-৫০০ মি (৬৬০-১,৬০০ ফুট) গভীরে থাকে। রাতের সময় এটিকে ৬৫৬ ফুট (প্রায় ২০০মিটার) গভীরে পাওয়া যায়। এরা যেখানে থাকে সেখানে আলো খুবই কম যেতে পারে কারণ ৬৬০-১৬০০ ফুট গভীরে ঠিকভাবে আলো যাওয়া সম্ভব নয়। ৬০০ ফুট গভীরে গড় তাপমাত্রা হয় ৫৯°F/১৫°C। এখানে তাপমাত্রা খুব বাড়েও না খুব কমেও না। গভীরতম স্পাইন্ড পিগমি হাঙরটি পাওয়া গেছে ৩,০০০ মিটার গভীরে।

জীববিদ্যা[সম্পাদনা]

স্পাইন্ড পিগমি শার্ক খুবই ছোট হয়। এরা লম্বায় মাত্র ৭-৮ ইঞ্চি (১৮ থেকে ২১ সেমি) হয় । একটা স্ত্রী স্পাইন্ড পিগমি হাঙর ৮ ইঞ্চি (২১ সেমি ) হয়। আর একটা পুরুষ ৭ ইঞ্চির (১৮ সেমি) মতো হয়। বৃহত্তম স্পাইন্ড পিগমি হাঙরের আকার ছিলো ১১ ইঞ্চি (২৮ সেমি)। এদের চোখ দুটি বেশ বড়। এদের একটি অতিরিক্ত গোলাকার চেরা ফুল্কা থাকে। এদের চোখ কম আলোতে দেখার জন্য বিকশিত হয়েছে। এদের প্রথম এবং দ্বিতীয় পৃষ্ঠীয় পাখনা, বক্ষীয় পাখনা অনকটা গাঢ় ধূসরের উপর সাদা রংয়ের। এদের লেজের পাখনা অনেকটা লাভ এর মতো। এদের পায়ু পাখনা অবর্তমান।

এরা গাঢ় বাদামী রঙের হয়। এদের রং এতোটাই গাড় হয় যে অনেক সময় এদের রং কালো মনে হয়। তাছাড়া এদের সব পাখনাতেই হালকা সাদা রঙের মোটা মার্জিন টানা। এদের সারা শরীরে বাদামী রঙের প্রচুর ফোটা দেখা যায়।

স্পাইন্ড পিগমি হাঙরের উপরের দাঁত সংকীর্ণ এবং ছোট হয়। এদের নিচের দাঁত বৃহত্তর এবং ছুরির মত হয়। এরা এদের দাঁতের সারি প্রয়োজন মতো ঘোরাতে পারে। প্রথম দুই সারি শিকার ধরতে ব্যবহৃত হয়। অন্যান্য সারি ঘুরিয়ে সুবিধা করে নিতে পারে। এদের দাঁত অনেক সময় ভেঙ্গে যায়। ভেঙ্গে গেলে সেইখান দিয়ে আবার নতুন দাঁত গজায়।

এরা খুব গভীর জলে থাকে তাই গভীর জলের প্রাণী এরা খেয়ে থাকে। এদের খাবার তালিকায় আছে স্কুইড এবং খুবই ছোটো বোনি মাছ

বিপদ[সম্পাদনা]

এতো ছোট হাঙর এমনিতে মানুষের জন্য বিপজ্জনক হয় না। সেই দিক দিয়ে দেখলে এরা একদমই বিপজ্জনক নয়। তবে এরা কোনোভাবে মানুষের মুখের ভেতর ঢুকে গেলে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মানুষ মারা যেতে পারে। তবুও বলা যায় স্পাইন্ড পিগমি শার্ক মানুষের জন্য খুব বিপজ্জনক নয়।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Kyne, P.M. and G.H. Burgess (2006). Squaliolus laticaudus. 2008 IUCN Red List of Threatened Species. IUCN 2008. Retrieved on September 27, 2009.

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]