শাহ আমানত

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

আমানত খান
অন্য নামআমানত শাহ
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম
মৃত্যু১১৮৭ হিজরির জিলকদের শেষ তারিখ, ১৮০৯ সাল
সমাধিস্থলকুদ্দুস সিররাহুল আজিজ দরবার শরিফ
ধর্মইসলাম
সন্তান
আখ্যাসুন্নি
ব্যবহারশাস্ত্রহানাফি
অন্য নামআমানত শাহ
মুসলিম নেতা
ভিত্তিকলালদিঘি, চট্টগ্রাম
কাজের মেয়াদপ্রাথমিক ১১তম শতাব্দী
উত্তরসূরীআনোয়ার খান
এর শিষ্যআব্দুর রহীম রেজভী

শাহ আমানত উল্লাহ খান (বাংলা: শাহ আমানত উল্লাহ খান, ফার্সি: شاه أمانت الله خان), চট্টগ্রামের একজন বিখ্যাত দরবেশ ছিলেন। সামগ্রিক ভাবে ধারণা করা হয়, তার আবির্ভাব ১৮শ শতাব্দির শেষ দিকে। জনশ্রুতি মতে তিনি বিহার শরীফ থেকে চট্টগ্রামে আসেন। চট্টগ্রামে তিনি একটি কুটিরে বাস করতেন এবং চট্টগ্রাম জজ কোর্টের পাখা টানার চাকুরি করতেন।[১]

জীবন[সম্পাদনা]

আমানত শাহ ইরাকি আরব বংশোদ্ভূত একটি মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পূর্বপুরুষরা বাগদাদ থেকে বিহারে চলে আসেন এবং তারাও আব্দুল কাদের জিলানীর বংশধর।[২] তার পিতার নাম নিয়ামত। পরে আমানত বাংলায় চলে আসেন।[৩][৪] মুর্শিদাবাদ বা ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে আমানত শাহ আবদুর রহিম রিজভী[৫] নামে একজন কাশ্মীরি পণ্ডিতের শিষ্য হয়েছিলেন এবং বায়'আত গ্রহণ করেছিলেন।[৬] শাহ আবদুর রহিম ছিলেন আহমদ সিরহিন্দির পুত্র খাজা মাসুমের নাতি।[৭] আমানত দিল্লি, লখনউকাশ্মীরের মতো জায়গায় ইসলাম সম্পর্কে জানার জন্য উপমহাদেশ জুড়ে ভ্রমণ করেছিলেন।[৮]

একদিন আবদুর রহিম আমানতকে চট্টগ্রামে চলে যাওয়ার পরামর্শ দেন। থাকার জন্য আমানত চট্টগ্রামের একটি বনাঞ্চলে একটি ছোট কটেজ তৈরি করেন। তিনি চট্টগ্রাম বিচারক আদালতে পাখাওয়ালা হিসাবে চাকরি পেতে সক্ষম হন এবং খুব বেশি মনোযোগ আকর্ষণ না করে একটি সাধারণ জীবনধারা পছন্দ করেন। তিনি ইয়াসিন খানের কদম মোবারক মসজিদে নামাজে অংশ নিতেন। দরবারে কর্মজীবন থেকেই তাকে খান সাহেব বা মিয়া সাহেব ডাকা হতো।[৩] তবে, লোকেরা তার আসল পরিচয় উপলব্ধি করার পর আমানত তার জনজীবনকে ধর্মীয় প্রচারের জন্য উৎসর্গ করতে শুরু করেন।[৯] তার প্রথম শিষ্য ছিলেন আজিমপুরের দায়রা শরীফের শাহ সুফি মুহাম্মদ দায়েম যিনি পরে আজিমাবাদফুলওয়ারী শরীফ চলে যান।[১০]

জনপ্রিয়তার প্রভাব[সম্পাদনা]

মামলা মোকাদ্দমা জেতার উদ্দেশ্যে লোকজন তার মাজার জেয়ারত করে থাকে। চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, কর্ণফুলী নদীতে নির্মিত শাহ আমানত সেতু এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত হল তার নামেই নামকরণ করা হয়।

সমাধি[সম্পাদনা]

চট্টগ্রাম শহরের লালদীঘির পূর্ব দিকে তার সমাধিসৌধ অবস্থিত।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "শাহ আমানত (রহ.) - বাংলাপিডিয়া"বাংলাপিডিয়া 
  2. Ahmed, Rashid। বাংলাদেশের সুফী সাধক [Bangladesh's Sufi saints]। পৃষ্ঠা 25। 
  3. Muhammad Ghulam Mustafa Mullah (১৯৯০)। Hazrat Khwaja Sharaf Uddin Chishti ebong Mayar Proshashon o Proshongika Kichhu Kotha। Mubeshah Prakashani। পৃষ্ঠা 27। 
  4. Abdul Haq Choudhury (১৯৯৪)। Bondor Shohor Chottogram: Ekti Oitihashik PorjalochonaBangla Academy 
  5. Ainun Zariah। B। পৃষ্ঠা 18–21। 
  6. Muhammad Obaid al-Haq। বাংলাদেশের পীর আউলিয়াগণ [Bangladesh's pirs and awliya]। পৃষ্ঠা 94। 
  7. Chakrabarti, Kunal; Chakrabarti, Shubhra (২২ আগস্ট ২০১৩)। Historical Dictionary of the Bengalis। Scarecrow Press। পৃষ্ঠা 428। 
  8. Huda, Muhammad Shehabul (১৯৮৫)। The Saints And Shrines Of Chittagong (গবেষণাপত্র)। Chittagong: University of Chittagong। পৃষ্ঠা 107–131। 
  9. ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর, সম্পাদকগণ (২০১২)। "বাংলাদেশ"বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  10. Sayed Mahmudul Hasan (১৯৮৭)। Muslim Monuments of BangladeshIslamic Foundation Bangladesh। পৃষ্ঠা 43। 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]