শাহ আব্দুল হামিদ
শাহ আব্দুল হামিদ | |
---|---|
(গণ পরিষদ) জাতীয় সংসদের স্পিকার | |
কাজের মেয়াদ ১০ এপ্রিল ১৯৭২ – ১ মে ১৯৭২ | |
রাষ্ট্রপতি | বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী |
প্রধানমন্ত্রী | শেখ মুজিবুর রহমান |
ডেপুটি | মোহাম্মদউল্লাহ |
পূর্বসূরী | নেই [পদ প্রতিষ্ঠিত] |
উত্তরসূরী | মোহাম্মদউল্লাহ |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ১৮৯০ রংপুর জেলা, ব্রিটিশ রাজ (বর্তমান: গাইবান্ধা জেলা, বাংলাদেশ) |
মৃত্যু | ১ মে ১৯৭২ গাইবান্ধা, বাংলাদেশ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
রাজনৈতিক দল | বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ |
সন্তান | শাহ জাহাঙ্গীর কবীর (ছেলে) |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় |
ধর্ম | ইসলাম |
শাহ আব্দুল হামিদ (জন্ম: ১৯০০ - মৃত্যু: ১ মে ১৯৭২) ছিলেন বাংলাদেশের একজন রাজনীতিবিদ এবং গণপরিষদের প্রথম স্পীকার।[১]
জন্ম ও পারিবারিক পরিচিতি[সম্পাদনা]
শাহ হামিদ ১৯০০ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের রংপুর জেলার (বর্তমানে গাইবান্ধা জেলা) গোবিন্দগঞ্জের খলসি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম হাজী আব্দুল গাফফার শাহ এবং মাতা রহিমা খাতুন।[২]
শিক্ষা[সম্পাদনা]
শাহ আবদুল হামিদ ১৯১৬ সালে গোবিন্দগঞ্জ হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন, ১৯১৮ সালে কলকাতা রিপন কলেজ থেকে আই.এ এবং ১৯২০ সালে রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে বি.এ পাশ করেন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯২৭ সালে আইনে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন এবং ১৯২৮ সালে গাইবান্ধা মহকুমা আদালতে আইনব্যবসা শুরু করেন।[৩]
রাজনৈতিক জীবন[সম্পাদনা]
ছোটবেলা থেকেই শাহ আব্দুল হামিদ স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৩০ সালে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের অসহযোগ আন্দোলনে যুক্ত হন। তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সদস্য হিসেবে তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। ১৯৩৬ সালে তিনি মুসলিম লীগে যোগ দেন এবং দলের গাইবান্ধা মহকুমা শাখার সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৪১ সালে তিনি রংপুর জেলাবোর্ডের সদস্য এবং ১৯৪২ সালে জেলাবোর্ডের ভাইস-প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন এবং ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত এই পদে ছিলেন। ১৯৪৩ থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত তিনি রংপুর স্কুলবোর্ডের সভাপতি ছিলেন। ১৯৪৫ সালে তিনি ভারতের আইন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৪৬ সালে মুসলিম লীগ প্রার্থী হিসেবে তিনি ভারতীয় আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৫১ থেকে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত ন্যাশনাল ব্যাংকের কেন্দ্রীয় বোর্ডের ডিরেক্টর ছিলেন।
শাহ আবদুল হামিদ ১৯৫৬ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। তিনি ১৯৫৭ থেকে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। ১৯৬৬ সালে ৬-দফা আন্দোলন এবং ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে তিনি বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন।
১৯৭০ সালে তিনি আওয়ামী লীগ থেকে গোবিন্দগঞ্জ-পলাশবাড়ী আসন থেকে জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ৬নং জোনাল কাউন্সিলের (কোচবিহার) সাব-কমিটির সদস্য ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে তিনি ভারতে চলে যান এবং মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা সংগঠিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
তিনি গণ পরিষদের (জাতীয় সংসদ) প্রথম স্পিকার ছিলেন। ১৯৭২ সালের ১০ এপ্রিল গণ পরিষদের প্রথম অধিবেশনে তিনি স্পিকার নির্বাচিত হন। তিনি ১১ এপ্রিল গণ পরিষদের প্রথম অধিবেশনের দ্বিতীয় ও শেষ দিনে 'বাংলাদেশ সংবিধান প্রণয়ন কমিটি' গঠনের সময় স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১০ এপ্রিল ১৯৭২ থেকে ১ মে ১৯৭২ পর্যন্ত বাংলাদেশের গণ পরিষদের স্পিকারের দায়িত্বে ছিলেন। [৪]
পেশাগত জীবন[সম্পাদনা]
তিনি গাইবান্ধা আদালতে আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন।
তিনি একজন সক্রিয় সামাজসেবী এবং শিক্ষানুরাগী ছিলেন। উত্তরাঞ্চল, বিশেষত গাইবান্ধার শিক্ষা, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি তার পড়াশোনা শেষ হওয়ার পর, গাইবান্ধায় ফিরে আসেন এবং ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে কাজ শুরু করেন। তিনি দীর্ঘ সময় গাইবান্ধা টাউন ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বর্তমান গাইবান্ধা স্টেডিয়াম "শাহ আবদুল হামিদ স্টেডিয়ামে" হিসাবে নামকরণ করা হয়েছে।
তিনি গাইবান্ধায় শিক্ষা বিস্তারে অবদান রাখেন এবং ১৯৪৭ সালে গাইবান্ধা কলেজ প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন এবং গাইবান্ধা কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রথম সম্পাদক ছিলেন। তিনি ১৯৪৯ সালে রংপুর স্কুল বোর্ডের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। শাহ আব্দুল হামিদ গাইবান্ধার নাট্যক্ষেত্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি সক্রিয়ভাবে "জাগোরে অভিষেক নাট্য ক্লাব" (বর্তমান 'গাইবান্ধা নাট্য সংস্থা')-এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং বিভিন্ন নাটকে অভিনয় করেন।
তিনি ১৯৫৫ থেকে ১৯৬১ পর্যন্ত ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান এর পরিচালক ছিলেন।
মৃত্যু[সম্পাদনা]
তিনি ১৯৭২ সালের ১ মে গাইবান্ধায় মারা যান।
আরও দেখুন[সম্পাদনা]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ "List of Speakers"। http://www.parliament.gov.bd/। Bangladesh Parliament। 12 Dec, 2012। ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ 14 January 2015। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য);|ওয়েবসাইট=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য) - ↑ "হামিদ, শাহ আবদুল"। বাংলাপিডিয়া। ২০১২। ৩ ডিসেম্বর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ "হামিদ, শাহ আবদুল"। বাংলাপিডিয়া। ২০১২। ৩ ডিসেম্বর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ "হামিদ, শাহ আবদুল"। বাংলাপিডিয়া। ২০১২। ৩ ডিসেম্বর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জানুয়ারি ২০১৫।
বহি:সংযোগ[সম্পাদনা]
- বাংলাপিডিয়া –শাহ আব্দুল হামিদ
পূর্বসূরী: -নেই- |
জাতীয় সংসদের স্পিকার ১০ এপ্রিল, ১৯৭২ - ১ মে, ১৯৭২ |
উত্তরসূরী: মোহাম্মদউল্লাহ |
- ১৮৯০-এ জন্ম
- ১৯৭২-এ মৃত্যু
- আইনজীবী
- জাতীয় সংসদের স্পিকার
- বাংলাদেশী মুসলিম
- রংপুর জেলার রাজনীতিবিদ
- গাইবান্ধা জেলার রাজনীতিবিদ
- কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- বাংলাদেশী আইনজীবী
- কারমাইকেল কলেজ, রংপুরের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ
- ২০শ শতাব্দীর বাংলাদেশী আইনজীবী
- বাংলাদেশের রাজনীতি
- ১৯০০-এ জন্ম
- ২০শ শতাব্দীর পাকিস্তানি আইনজীবী
- ভারতের কেন্দ্রীয় আইনসভার সদস্য
- গাইবান্ধা জেলার ব্যক্তি