শরিফ আল-ফারুকি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

লেফটেন্যান্ট মুহাম্মদ শরিফ আল-ফারুকি (১৮৯১ – ১৯২০) ছিলেন মসুলের একজন উসমানীয় স্টাফ অফিসার। তিনি জাতিতে আরব ছিলেন। তিনি দামেস্কে অবস্থান নেন। আরব বিদ্রোহে প্রভাব বিস্তারকারী অনেক ঘটনায় তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল।

দামেস্কের একটি আরব গুপ্ত সংগঠনের তিনি সদস্য ছিলেন। ১৯১৫ এর শুরুতে ফয়সাল বিন হুসাইনের সাথে প্রথম সাক্ষাতের পর জামাল পাশা এই সংগঠনকে উসমানীয় সাম্রাজ্যের সাথে বিশ্বাসঘাতকতার জন্য সন্দেহ করতে শুরু করেন। ফলে এই সংগঠন ভেঙ্গে দেয়া হয় এবং সদস্যরা আত্মগোপন করেন। আল-ফারুকিকে গেলিপলির যুদ্ধে পাঠানো হয়। ১৯১৫ সালে তিনি রণাঙ্গন পরিত্যাগ করেন।

আল-ফারুকি এরপর মিত্রশক্তির পক্ষাবলম্বন করে। ব্রিটিশদের কাছে জরুরি এমন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আছে বলে তিনি দাবি করেন। ব্রিটিশরা এই তথ্য ব্যবহার করে। তার দুর্বল ইংরেজির কারণে অনাকাঙ্ক্ষিত ভুল বোঝাবোঝির সৃষ্টি হত। ব্রিটিশদের কাছে তার সরবরাহকৃত তথ্যে সত্য, মিথ্যার মিশ্রণ থাকত। তিনি নিজেকে গোপন সংগঠন আল-আহদের সদস্য বলে দাবি করতেন। সেসাথে দামেস্কের আরব সেনাবাহিনীর অফিসারদের প্রতিনিধি হিসেবেও দাবি করেন। ম্যাকমোহন-হুসাইন চুক্তির সময়কার দামেস্ক প্রটোকল অনুযায়ী একটি স্বাধীন আরব রাষ্ট্রের দাবিকে সমর্থন করার জন্য তিনি ব্রিটিশদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি দাবি করেন যে এ ক্ষেত্রে দেরি করলে হুসাইন বিন আলী জার্মানি ও উসমানীয়দের সাথে হাত মেলাবেন।

আল-ফারুকির দাবিগুলো ব্রিটিশ মিশর পরিকল্পনাকে মজবুত করে তোলে। এতে বলা হয় যে আরব বিশ্ব একটি বিদ্রোহের জন্য প্রস্তুত। মিশর ও অন্যান্য স্থানে অবস্থানরত কিচনারের অনুসারীরা হেনরি ম্যাকমোহনকে হুসাইন বিন আলীর সাথে ঐক্যে উপনীত হতে অনুপ্রাণিত করে। আরবদের বিদ্রোহ ব্রিটিশদের সাথে উসমানীয়দের লড়াইকে সহজ করে তুলবে। এই বিষয়ে ধারাবাহিক আলোচনাগুলোতে আল-ফারুকি নিজেকে মধ্যমণি করে তুলতে সক্ষম হন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  • A Peace To End All Peace, David Fromkin, Avon Books, New York, 1990