লীলা মজুমদার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
লীলা মজুমদার
জন্ম(১৯০৮-০২-২৬)২৬ ফেব্রুয়ারি ১৯০৮[১]
কলিকাতা, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত
মৃত্যু৫ এপ্রিল ২০০৭(2007-04-05) (বয়স ৯৯)
কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত
পেশালেখিকা
সময়কাল১৯২২–১৯৯৪
ধরনশিশুতোষ বই
দাম্পত্যসঙ্গীসুধীর কুমার মজুমদার (বি. ১৯৩৪; মৃ. ১৯৮৪)
সন্তান২ জন

লীলা মজুমদার (২৬ ফেব্রুয়ারি ১৯০৮ – ৫ এপ্রিল ২০০৭) একজন ভারতীয় বাঙালি লেখিকা। তিনি কলকাতার রায় পরিবারের প্রমদারঞ্জন রায় ও সুরমাদেবীর সন্তান (বিবাহপূর্ব নাম লীলা রায়)। তার জন্ম রায় পরিবারের গড়পার রোডের বাড়িতে। উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী (যাঁর পৈতৃক নাম ছিল কামদারঞ্জন রায়) ছিলেন প্রমদারঞ্জনের দাদা এবং লীলার জ্যাঠামশাই। সেইসূত্রে লীলা হলেন সুকুমার রায়ের খুড়তুতো বোন এবং সত্যজিৎ রায়ের পিসিমা।[২]

শিক্ষা ও ব্যক্তিজীবন[সম্পাদনা]

লীলার বাল্যজীবন কাটে শিলঙে। সেখানকার লরেটো কনভেন্টে তিনি পড়াশোনা করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরাজী পরীক্ষায় তিনি ইংরাজীতে সর্বোচ্চ নম্বর অর্জন করেন।

১৯৩৩ সালে লীলা বিবাহ করেন দন্ত চিকিৎসক ডাঃ সুধীর কুমার মজুমদারকে।[৩] এই বিবাহে তাঁর পিতার প্রবল বিরোধিতা থাকা সত্ত্বেও তিনি তাঁর স্বনির্বাচিত পাত্রকেই জীবনসঙ্গী হিসেবে গ্রহণ করে।

অন্যান্যদের সঙ্গে সম্পর্ক অটুট থাকলেও পিতার সঙ্গে সম্পর্ক চিরকালের মতো ছিন্ন হয়। বিবাহিত জীবনে লীলা-সুধীর খুব সুখী দম্পতি ছিলেন। স্বামী আজীবন লীলার সাহিত্য চর্চায় উৎসাহী ছিলেন। এদের এক পুত্র ডাঃ রঞ্জন মজুমদার ও এক কন্যা কমলা চট্টোপাধ্যায়।

১৯৫৬ সালে তিনি কলকাতা বেতারে যোগ দেন।[২]

১৯৭৫ সাল থেকে তিনি পাকাপাকি ভাবে শান্তিনিকেতনে থাকতে শুরু করেন ও এক পর্যায়ে এসে তিনি বিশ্বভারতীর ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।[৪] সেখানেই ২০০৭ সালের ৫ই এপ্রিল তার মৃত্যু হয়।[২]

সাহিত্যজীবন[সম্পাদনা]

তিনি বহু সংখ্যক বাংলা গল্প, প্রবন্ধ ও উপন্যাস রচনা করে নানান পুরস্কার ও সম্মানে ভূষিত হন।

তাঁর প্রথম গল্প লক্ষ্মীছাড়া ১৯২২ সালে সন্দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ১৯৬১ সালে সত্যজিৎ রায় সন্দেশ পত্রিকা পুনর্জীবিত করলে তিনি ১৯৬৩ থেকে ১৯৯৪ অবধি সাম্মানিক সহ-সম্পাদক হিসাবে পত্রিকাটির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, ১৯৯৪-এ তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতির জন্য অবসর নেন। তাঁর সাহিত্যিক জীবন প্রায় আট দশকের।

ছোটদের জন্য তাঁর কয়েকটি উল্লেখযোগ্য রচনা হল:

সাহিত্যিক বুদ্ধদেব বসুর তাগিদে প্রথম বড়দের গল্প ‘সোনালি রুপালি’ প্রকাশিত হয় ‘বৈশাখী’ পত্রিকায়। তিনি অনেক শিক্ষামূলক রচনা ও রম্যরচনা ইংরাজী থেকে বাংলায় অনুবাদও করেন।

পাকদণ্ডী নামে তাঁর লেখা আত্মজীবনীতে তাঁর শিলঙে ছেলেবেলা, শান্তিনিকেতন ও অল ইন্ডিয়া রেডিওর সঙ্গে তার কাজকর্ম, রায়চৌধুরী পরিবারের নানা মজার ঘটনাবলী ও বাংলা সাহিত্যের মালঞ্চে তাঁর দীর্ঘ পরিভ্রমণের কথা বর্ণিত হয়েছে।

তাঁর প্রথম আত্মজীবনী 'আর কোনখানে'-এর জন্য ১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দে রবীন্দ্র পুরস্কার পান।[৫]

সাহিত্যকর্ম[সম্পাদনা]

  1. হলদে পাখীর পালক
  2. টং লিং
  3. নাকু গামা
  4. পদি পিসির বর্মি বাক্স
  5. বোদ্দি নাথের বোরি
  6. দিন দুপুর
  7. ছোটোদার শ্রেষ্ঠ
  8. মনিমালা
  9. বাঘের ছোখ
  10. বক ধর্মিক
  11. টাকা গাছ
  12. লাল নীল দেসলাই
  13. বাঁশের ফুল
  14. ময়না
  15. শালিখ
  16. ভোটের বাড়ি
  17. আগুনি বেগুনি
  18. টিপুর উপর টিপুনি
  19. পটকা চোর
  20. আষাঢ়ের গল্প
  21. চিচিং ফাঁক
  22. যে যাই বলুক
  23. ছোটদের তাল বেতাল
  24. বাতাস বাড়ি
  25. বাঘ শিকারি বামন
  26. বাঘের গল্প
  27. শিবুর ডায়েরি
  28. হাওড়ার দাড়ি
  29. ফেরারি
  30. নেপর বই
  31. আর কোনখানে
  32. খেরোর খাতা
  33. এই যে দেখা
  34. পাকদণ্ডী
  35. শ্রীমতি
  36. চেন লণ্ঠন
  37. মনি মানিল
  38. নাতঘর
  39. কাগ নই
  40. শসব ভুতুরে
  41. বক বধ পালা
  42. মেঘের শাড়ি ধরতে নারি
  43. পরি দিদির বর
  44. পেশা বদল
  45. মনিমালা
  46. এলশে ঘাই
  47. পাগলা পাগলদের গল্প
  48. কুড়ি
  49. ছাগলা পাগলা লীলা মজুমদার

পুরস্কার ও সম্মাননা[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Ray, Prasadranjan, Remembering Lila Majumadar, Mejopishi, As I Saw Her, Times of Indian Kolkata edition, 8 April 2007.
  2. "বাঙালির ছেলেবেলাটা ভরা আছে লীলাপিসির বর্মি বাক্সে"www.anandabazar.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৯-০২ 
  3. www.kalerkantho.com https://www.kalerkantho.com/print-edition/education/2023/11/26/1339661। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-০১  |শিরোনাম= অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য)
  4. কবির, জাহিন যাঈমাহ্ (২০২৪-০২-২৬)। "লীলা মজুমদারের জন্মদিন"kishor.alo। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-০১ 
  5. মাহফুজ, ইমরান (২০২২-০৪-০৫)। "ছেলেবেলার সঙ্গী লীলা মজুমদার"The Daily Star Bangla (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-০১