লরেন্স রো

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
লরেন্স রো
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামলরেন্স জর্জ রো
জন্ম (1949-01-08) ৮ জানুয়ারি ১৯৪৯ (বয়স ৭৫)
কিংস্টন, জামাইকা
ডাকনামইয়াগ্গা
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনবামহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম
ভূমিকাব্যাটসম্যান
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১৪১)
১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২ বনাম নিউজিল্যান্ড
শেষ টেস্ট২৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৮০ বনাম নিউজিল্যান্ড
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ১৭)
২০ ডিসেম্বর ১৯৭৫ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ ওডিআই৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৮০ বনাম নিউজিল্যান্ড
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৬৮-১৯৮২জামাইকা
১৯৭৪ডার্বিশায়ার
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ৩০ ১১ ১৪৯ ৫২
রানের সংখ্যা ২,০৪৭ ১৩৬ ৮,৭৫৫ ১,৪০০
ব্যাটিং গড় ৪৩.৫৫ ১৭.০০ ৩৭.৫৭ ৩০.৪৩
১০০/৫০ ৭/৭ ০/১ ১৮/৩৮ ০/১০
সর্বোচ্চ রান ৩০২ ৬০ ৩০২ ৮৭
বল করেছে ৮৬ ৪৩০ ৩৪
উইকেট
বোলিং গড় ১১২.০০ ১৫.০০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ০/১ ১/১৯ ১/০
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১৭/– ২/– ১১৮/– ১৮/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৫ এপ্রিল ২০১৫

লরেন্স জর্জ রো (ইংরেজি: Lawrence Rowe; জন্ম: ৮ জানুয়ারি, ১৯৪৯) জামাইকার কিংস্টনে জন্মগ্রহণকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিশ্বখ্যাত ও সাবেক আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৭০-এর দশকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন।

ইয়াগ্গা ডাকনামে পরিচিত লরেন্স রো ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দলের ডানহাতি ব্যাটসম্যান ছিলেন। এছাড়াও বামহাতে মিডিয়াম-ফাস্ট বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন তিনি। কাউন্টি ক্রিকেটে ডার্বিশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেন।

খেলোয়াড়ী জীবন[সম্পাদনা]

১৯৬৮-৬৯ মৌসুমে জামাইকার পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে তার অভিষেক ঘটে। এরপর ১৯৭২ সালে কিংস্টনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেকেই ইতিহাস গড়েন। ঐ টেস্টের উভয় ইনিংসে তিনি ২১৪ ও অপরাজিত ১০০* করেন। এরফলে টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে টেস্ট অভিষেকেই দ্বি-শতক ও শতক করার গৌরব অর্জন করেন। পরবর্তীতে ইয়াসির হামিদ তার এ অর্জনের সাথে যুক্ত হন।[১] ১৯৭৪ সালে কেনসিংটন ওভালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩০২ রান তোলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের চারজন ব্যাটসম্যানদের একজন হিসেবে টেস্টে ত্রি-শতক লাভের অধিকারী তিনি। বাদ-বাকীরা হচ্ছেন গারফিল্ড সোবার্স, ক্রিস গেইলব্রায়ান লারা[২]

১৯৭৫-৭৬ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ায় পদার্পণ করে বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যানের স্বীকৃতি রক্ষার প্রচেষ্টা চালান। দ্বিতীয় ইনিংসে সেঞ্চুরি করে প্রতি ইনিংসে ৭০ ঊর্ধ্ব গড় বজায় রাখেন। কিন্তু সিরিজের বাকী খেলাগুলোয় তিনি ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারেননি।

ভিভ রিচার্ডসের পূর্বে তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিংয়ের নেতৃত্ব দিয়ে বীর বনে যান। ১৯৭২ থেকে ১৯৮০ এর মধ্যবর্তী সময়কালে ৩০ টেস্টে ৪৩ গড়ে ২,০৪৭ রান তোলেন। এছাড়াও ১১টি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশ নিয়েছেন। আঘাতপ্রাপ্তি স্বত্ত্বেও তিনি বীরদর্পে ব্যাটিং চালাতেন। তিনি চোখের সমস্যায় ভুগতেন।

ইংল্যান্ডের কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে ডার্বিশায়ারের পক্ষে খেলেন। এছাড়াও বিশ্ব সিরিজ ক্রিকেটে যোগ দেন। সেখানে তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ একাদশের পক্ষে একটি খেলায় ১৭৫ রান তুলেছিলেন।[৩]

মূল্যায়ন[সম্পাদনা]

টেস্টে ত্রি-শতকধারী ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান
খেলোয়াড় রান প্রতিপক্ষ স্থান তারিখ
গারফিল্ড সোবার্স ৩৬৫*  পাকিস্তান সাবিনা পার্ক ২৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৮
লরেন্স রো ৩০২  ইংল্যান্ড কেনসিংটন ওভাল ৬ মার্চ ১৯৭৪
ব্রায়ান লারা ৩৭৫  ইংল্যান্ড এন্টিগুয়া রিক্রিয়েশন গ্রাউন্ড ১৬ এপ্রিল ১৯৯৪
ব্রায়ান লারা ৪০০*  ইংল্যান্ড এন্টিগুয়া রিক্রিয়েশন গ্রাউন্ড ১০ এপ্রিল ২০০৪
ক্রিস গেইল ৩১৭  দক্ষিণ আফ্রিকা এন্টিগুয়া রিক্রিয়েশন গ্রাউন্ড ২৯ এপ্রিল ২০০৫
ক্রিস গেইল ৩৩৩  শ্রীলঙ্কা গালে আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম ১৫ নভেম্বর ২০১০


দলীয় সঙ্গী মাইকেল হোল্ডিংয়ের মতে, তিনি বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যান ছিলেন। এছাড়াও গারফিল্ড সোবার্স বিশ্বাস করতেন যে, তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ। একটি খেলায় বলকে এমন চমৎকার ভঙ্গীমায় মাঠের বাইরে পাঠিয়েছিলেন যে তা মিসাইলের ন্যায় ক্ষীপ্রমাণ ছিল। এ প্রসঙ্গে গিডিওন হেই মন্তব্য করেছেন যে, মার্চ, ১৯৭৪ সালে ব্রিজটাউনের কেনসিংটন ওভালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত টেস্টের প্রথম ইনিংসে বব উইলিস তাকে বাউন্সার মারলে তিনি তা সোজা স্কয়ার লেগের স্ট্যান্ডে পৌঁছে। এ সময়ের মধ্যে বলের অধিকাংশই মাথা সমান উচ্চতায় গিয়েছিল।[৪]

তিনি তার খেলোয়াড়ী জীবনে রাজত্ব করলেও ১৯৮২-৮৩ মৌসুমে বিশ্ব ক্রিকেট থেকে বিচ্ছিন্ন দক্ষিণ আফ্রিকা সফর করে ব্যাপক সমালোচিত হন।[৫] ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানগণ সফরের বিপক্ষে অবস্থান নেয় ও রো-সহ অন্যান্যদের জামাইকায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এর প্রধান কারণ ছিল তিনি হয়তোবা যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামিতে চলে যাবেন।

সম্মাননা[সম্পাদনা]

২০ জুন, ২০১১ তারিখে সফরকারী ভারতওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার প্রথম টেস্টের মধ্যাহ্ন বিরতিতে সাবিনা পার্ক স্টেডিয়ামটি তার নামে নামাঙ্কিত হয়। ঐ অনুষ্ঠানে মাইকেল হোল্ডিং ও কোর্টনি ওয়ালশকেও সম্মানিত করা হয়। এ সময় তিনি তার অতীতের কর্মকাণ্ডের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন ও বলেন যে, আজ আমি জামাইকার ভাগ্যবিড়ম্বিত ক্রিকেট জনগোষ্ঠীসহ ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জ ও বহিঃবিশ্বের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি।[৬]

বেশ বিতর্ক স্বত্ত্বেও জেসিএ সভাপতি লিন্ডেল রাইট রো’র মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বোর্ডের সভায় সিদ্ধান্তের বিষয়টি সমাধান করেন ও বলেন যে, দক্ষিণ আফ্রিকা সফর করে তিনি কোন ভুল করেননি।[৭]

লরেন্স রো’র খেলোয়াড়ী জীবনের লেখচিত্র।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. O'Donnell, George (৮ মার্চ ২০১৩)। "The best batting debuts in Test match history"The Guardian। London: Guardian Media Group। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০১৫ 
  2. cricinfo.com
  3. Cricket Archive
  4. When talent proves a Rowe too hard to hoe
  5. The unforgiven
  6. "Rowe apologises for rebel tour as Jamaica honours him"। ২৪ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ এপ্রিল ২০১৫ 
  7. http://rjrnewsonline.com/sports/cricket/jca-revokes-decision-honour-lawrence-rowe[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] JCA revokes decision to honour Lawrence Rowe

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]


পুরস্কার
পূর্বসূরী
ডন কুয়ারি
জামাইকার বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ
১৯৭২
উত্তরসূরী
মরিস ফস্টার
পূর্বসূরী
মরিস ফস্টার
জামাইকার বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ
১৯৭৪
উত্তরসূরী
ডন কুয়ারি