রায়পুরা উপজেলা

স্থানাঙ্ক: ২৩°৫৮′২″ উত্তর ৯০°৫২′৩১″ পূর্ব / ২৩.৯৬৭২২° উত্তর ৯০.৮৭৫২৮° পূর্ব / 23.96722; 90.87528
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
রায়পুরা
উপজেলা
মানচিত্রে রায়পুরা উপজেলা
মানচিত্রে রায়পুরা উপজেলা
স্থানাঙ্ক: ২৩°৫৮′২″ উত্তর ৯০°৫২′৩১″ পূর্ব / ২৩.৯৬৭২২° উত্তর ৯০.৮৭৫২৮° পূর্ব / 23.96722; 90.87528 উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
দেশবাংলাদেশ
বিভাগঢাকা বিভাগ
জেলানরসিংদী জেলা
আয়তন
 • মোট৩১২.৫০ বর্গকিমি (১২০.৬৬ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)[১]
 • মোট৪,৫৪,৮৬০
 • জনঘনত্ব১,৫০০/বর্গকিমি (৩,৮০০/বর্গমাইল)
সাক্ষরতার হার
 • মোট৪০.৫% (বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন অনুযায়ী)
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
৩০ ৬৮ ৬৪
ওয়েবসাইটদাপ্তরিক ওয়েবসাইট উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

রায়পুরা উপজেলা বাংলাদেশের নরসিংদী জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা যা ২৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। এটি ঢাকা বিভাগের অধীন নরসিংদী জেলার ৬টি উপজেলার মধ্যে একটি এবং নরসিংদী জেলার পূর্বে অবস্থিত। প্রশাসনিক, অর্থনৈতিক ও ঐতিহাসিকভাবে রায়পুরা উপজেলা নরসিংদী তথা দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা।

অবস্থান ও আয়তন[সম্পাদনা]

রায়পুরা উপজেলার উত্তরে বেলাবো উপজেলাকিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলা, দক্ষিণে নরসিংদী সদর উপজেলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলাবাঞ্ছারামপুর উপজেলা, পূর্বে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলানবীনগর উপজেলা, পশ্চিমে শিবপুর উপজেলানরসিংদী সদর উপজেলা

রায়পুরার চতুর্দিকে মেঘনা, রহ্মপুত্র, আড়িয়াল খাঁকাঁকন নদী বয়ে গেছে। নদ-নদী বিধৌত এই উপজেলাটি রাজধানী ঢাকা ও নরসিংদী জেলা সদরের খুব সন্নিকটে অবস্থিত। এই উপজেলাটি রাজধানী ঢাকা থেকে ৭৯ কিলোমিটার এবং জেলা সদর নরসিংদী থেকে ৩২ কিলোমিটার পূর্বদিকে অবস্থিত। এর আয়তন ৩১২.৫০ বর্গ কিলোমিটার। তন্মধ্যে, জলাশয় ও প্রশস্ত নদী ৪৩.৭৭ বর্গ কিলোমিটার।

নামকরণের ইতিহাস[সম্পাদনা]

কথিত আছে যে, ব্রিটিশ শাসন আমলে লর্ড কর্নওয়ালিশের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রথা চালু হওয়ার সময় এ অঞ্চল ময়মনসিংহ মুক্তাগাছা জমিদারের আওতায় আসে। উক্ত জমিদারের কাছ থেকে সিকিমি পত্তন নেন এখানকার রায় উপাধিধারী কিছুসংখ্যক অমাত্য। এদের উল্লেখ্যযোগ্য হলো প্রকাশচন্দ্র রায়, পূর্ণচন্দ্র রায়, মহিমচন্দ্র রায়, ঈশ্বরচন্দ্র রায় এবং আরও অনেকে। এদের নাম‍ানুসারে প্রথমে এলাকার নাম হয় “রায়নন্দলালপুর”। পর্যায়ক্রমে এই ‍নাম থেকে রায়পুরা নামের উৎপত্তি হয়। এখানে উল্লেখ্য যে, পূর্বে এই এলাকা “কালীদহসাগরেরচর” নামে পরিচিত ছিল। পাকিস্তান আমলের প্রথম দিকেও এ অঞ্চল ময়মনসিংহ কালেকটরেটের আওতাভুক্ত ছিল। এ উপজেলাকে নিম্নবর্ণিত প্রধান তিন ভূ-প্রাকৃতিক অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে:

(ক) মধুপুর গড় ভূমি যা ‍উপজেলার প্রায় ২ শতাংশ ভূমি
(খ) ব্রহ্মপুত্র পলল ভূমি যা ‍উপজেলার প্রায় ৫৫ শতাংশ ভূমি এবং
(গ) মেঘনা পলল ভূমি যা ‍উপজেলার প্রায় ৪৩ শতাংশ ভূমি।

ঐতিহাসিক ঘটনাবলী[সম্পাদনা]

ইংরেজ বিরোধী আন্দোলন, জমিদারি প্রথা, নীল চাষের বিরুদ্ধাচরণ, ইজারা প্রথা ও জমিদারদের ভৌতিক করের বিপক্ষে সাধারণ মানুষ ক্রমশঃ অধিকার সচেতন হতে থাকে। সুন্দর আলী গান্ধী, হাতেম আলী খান, বিপ্লবী সতীশ পাকরাশী, বিজয় চ্যাটার্জী, অনন্ত দাস, মধু ব্যানার্জী, আফতাব উদ্দিন খোন্দকার প্রমূখ সমগ্র নরসিংদী অঞ্চলে গোপনে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের আগুন ছড়াতেন। রায়পুরার তরুণ বিপ্লবী রমানন্দ সূত্রধর, সৃষ্টিধর খলিফা, ডাঃ রমেন্দ্র নারায়ণ সাহা, আঃ ছাত্তারসহ অনেকেই উদ্বুদ্ধ হন। বামধারার বরেণ্য নেতৃবৃন্দ গ্রেফতারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে এখানে আত্মগোপন করেন। তন্মধ্যে, তেভাগা আন্দোলনের নেত্রী নাচোলের রাণী ইলা মিত্রের স্বামী রমেণ মিত্র হাসিমপুরের রমানন্দ সূত্রধরের বাড়ীতে, ত্যাগী ও নির্যাতিত বাম রাজনীতিবিদ সুনীল রায়, অনন্ত দাস, মধু ব্যানার্জী ও বারিণ দত্ত পিরিজকান্দির সৃষ্টিধর খলিফার বাড়ীতে অবস্থান করেন। তারা অনেকেই ব্রিটিশ বিরোধী সংগঠন অনুশীলন ও যুগান্তরের সক্রিয় সদস্য ছিলেন।

১৯৪১ সালের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় রায়পুরার ৬১টি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শত শত ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়। দাঙ্গা প্রশমনে শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হকসহ কলকাতা থেকে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী এসেছিলেন। ঐতিহাসিক গরুরবাজারে বিশাল সমাবেশে তারা ভাষণ দেন। তাদের উদার ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা নিরসন হয়।

১৯৫০ সালে খাজা নাজিমউদ্দিনের পাক শাসন আমলে রায়পুরার পূর্বদিকে দৌলতকান্দি ও ভৈরবে হিন্দু-সম্প্রদায়ের লোকজনকে জবাই করে অথবা জীবন্ত অবস্থায় চলন্ত ট্রেন থেকে ছুড়ে ফেলা হয়েছিল।[২]

পাক আমলে বিদ্রোহ বিপ্লবে লড়াই-সংগ্রাম ও নানা বিষয়ভিত্তিক আন্দোলকে শাসকদলের ভিত নড়বড়ে করেছেন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। অনেকে মাথায় হুলিয়া নিয়ে এসে আত্মগোপন করতেন অথবা গোপনে সংগঠনের কাজ চালাতেন। ১৯৬৪ সালে ঐতিহাসিক গরুরবাজারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক ছয় দফার প্রস্তুতিস্বরূপ বিশাল জনসভায় ভাষণ দেন। এর পরের বছর একই স্থানে অগ্নিকন্যা মতিয়া চৌধুরী ভাষণ দিয়েছিলেন। ১৯৬৬ সালে জঙ্গী শিবপুরে পূর্ব পাকিস্তান কৃষক সমিতির জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ঐ সম্মেলনে অতিথি হিসেবে মজলুম জননেতা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, মতিয়া চৌধুরী, অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ প্রমূখ এসেছিলেন। এছাড়াও, তৎকালীন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় রাজনীতির অন্যতম নেতা ও জগন্নাথ কলেজের পরপর দুইবার নির্বাচিত ভিপি রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু বলিষ্ঠ ভূমিকার স্বাক্ষর রেখেছিলেন।

রাজনীতি[সম্পাদনা]

বাংলাদেশের স্বাধীনতা পূর্বকালে ১৯৭০ সালের প্রাদেশিক গণপরিষদের নির্বাচনে রায়পুরা থেকে রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। স্বাধীনতা উত্তর রায়পুরার রাজনীতি দুটি প্রধান ধারায় বিভক্ত হয়ে এগিয়ে চলছে। প্রবল বাম ও প্রবল ডানের মাঝখানে জামায়াত-ই-ইসলামী বাংলাদেশ, নেজাম-ই-ইসলাম ও ইসলামী ঐক্য জোট রয়েছে।

বাম নেতৃবৃন্দের মধ্যে কৃষকনেতা ফজলুল হক খোন্দকার (ন্যাপ, মোজাফফর), কমরেড শামছুল হক (সিপিবি) অন্যতম। অন্যদিকে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আফতাব উদ্দিন ভূঁইয়া, কাজী আক্তার উদ্দিন (নসা কাজী), আসাদুল হক খসরু, রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু এতদ্ঞ্চলের উজ্জ্বল নক্ষত্র। তন্মধ্যে, নরসিংদী-৫ (রায়পুরা) আসন থেকে রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু বর্তমান জাতীয় সংসদের অন্যতম সদস্য এবং ২০০৮ সালে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন।

অন্যদিকে, ১৯৭৯ ও ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) থেকে মাঈন উদ্দিন ভূঁইয়া সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দ্বিতীয়বার দায়িত্ব পালনকালে কৃষি উপমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৯১ সালে আবদুল আলী মৃধা নির্বাচিত হন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

আশির দশকের পর রায়পুরার রাজনীতির সাথে গণতন্ত্রী পার্টি ও গণফোরামের ফজলুল হক খোন্দকার, ন্যাপ-ভাসানী ও জাতীয় পার্টির আব্দুল হাই ফরাজী, বিএনপির আলহাজ্ব জামাল আমেদ চৌধুরী, ন্যাপের গোলাম সারোয়ার মাস্টার, সিপিবির আমিনুল হক, গণফোরামের ফরিদা ইয়াসমিন, ইঞ্জিনিয়ার হোসেন ভূঁইয়া খসরু, আঃ বাছেদ চৌধুরী, তাজুল ইসলাম, প্রকৌশলী শহীদুল ইসলাম প্রমূখ সম্পৃক্ত ছিলেন।

অতীতে নেজাম-ই-ইসলামী বাংলাদেশের মৌলবী আব্দুল খালেক, মুসলিম লীগের আব্দুল মতলেব ভূইয়া, জামায়াত-ই-ইসলামীর অধ্যক্ষ মাওঃ সোলায়মান মৃধা, ইসলামী ঐক্যজোটের মৌলানা আমিনুর রহমান রায়পুরা নির্বাচনী এলাকা থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন।

প্রশাসনিক বিন্যাস[সম্পাদনা]

এই উপজেলাটি ২৪টি ইউনিয়ন, ১টি পৌরসভা, ১১৩টি মৌজা ও ১৫২টি গ্রাম নিয়ে গঠিত।

জনসংখ্যার উপাত্ত[সম্পাদনা]

২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী এখানকার মোট জনসংখ্যা ৪,১৩,৭৬৫ জন; যার মধ্যে পুরুষ ২,১৩,৪১৯ জন (৫১.৫৮%) এবং নারী ২,০০,৩৪৭ জন (৪৮.৪২%)। এখানকার অধিবাসীদের মধ্যে মুসলমান ৩,৯৪,২০৮ জন (৯২%), হিন্দু ১৮,৯২৮ জন (৭%) এবং বৌদ্ধ ১০০ জন, খ্রিস্টান ১২০ জন, উপজাতি ৩৩৯ জন এবং অন্যান্য ধর্মানুসারী ৪১৫ জন (১%)।

শিক্ষা[সম্পাদনা]

২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী এখানকার শিক্ষার হার ৩৭%। এখানে রয়েছে:

  • ৩ টি মহাবিদ্যালয়
  • ২৬ টি উচ্চ বিদ্যালয়
  • ৪ টি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
  • ৪ টি সিনিয়র মাদরাসা
  • ৪ টি দাখিল মাদরাসা
  • ১৪৭ টি সরঃ প্রাঃ বিদ্যালয়
  • ১ টি প্রাথঃশিঃ প্রশিঃকেন্দ্র

স্বাস্থ্য[সম্পাদনা]

স্বাস্থ্য সেবাদানের জন্য রয়েছে:

  • উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স (সরকারী) - ০১টি
  • কমিউনিটি ক্লিনিকের সংখ্যা - ৩৮টি
  • বেসরকারী ক্লিনিক - ৫টি
  • এ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যা - ০১টি
  • পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিক সংখ্যা - ১৭টি

কৃষি[সম্পাদনা]

এখানকার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ কৃষক।

অর্থনীতি[সম্পাদনা]

  • কুটির শিল্প - তাঁত শিল্প এখনও এলাকার উল্লেখযোগ্য শিল্প। আরও রয়েছে বাঁশ দ্বারা তৈরি সামগ্রীর শিল্প, লৌহ শিল্প, মৃৎ শিল্প, সূচী-শিল্প।
  • রপ্তানী পণ্য - পাট, কলা, আলু ও শাক-সবজি।
  • কোহিনূর জুট মিল।

যোগাযোগ ব্যবস্থা[সম্পাদনা]

  • সড়ক পথ: ২৮১ কিলোমিটার (পাকা সড়ক - ২৯ কি.মি., আধ-পাকা সড়ক - ২৩ কি.মি., কাঁচা সড়ক - ২৩০ কি.মি.);
  • নৌ- পথ: ২২ নটিক্যাল মাইল;
  • রেলপথ: ২৭ কিলোমিটার।
  • রেল স্টেশন- ০৬ টি (আমিরগঞ্জ, খানাবাড়ি, হাঁটুভাঙ্গা, মেথিকান্দা, শ্রীনিধি ও দৌলতকান্দি)

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব[সম্পাদনা]

উল্লেখযোগ্য স্থান ও স্থাপনা[সম্পাদনা]

  • আমিরগঞ্জ জমিদার বাড়ি
  • পান্থশালা(ফেরীঘাট)
  • বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের জাদুঘর
  • কবি শামসুর রাহমানের বাড়ি(পাড়াতলী)
  • আটকান্দি [নীলকুটি মসজিদ]
  • ওয়ান্ডার পার্ক [মরজাল]
  • নির্জন গার্ডেন শান্তিপুর, মির্জাচর

মুক্তিযুদ্ধে রায়পুরা[সম্পাদনা]

১৯৭১ সালের ১৭ ই মার্চ রায়পুরা (বর্তমান বেলাব উপজেলাসহ) সিরাজনগর এমএ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে সর্বদলীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও ন্যাপ-সিপিবির নেতাকর্মীরা।

রায়পুরা থানার মুক্তিযুদ্ধ যারা পরিচালনা করেন তাঁরা হলেন এ্যাডভোকেট আফতাব উদ্দিন ভুঞা, রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু ও আলহাজ্ব গয়েছ আলী মাস্টার । গয়েছ আলী মাস্টার রায়পুরা থানা মুক্তিযোদ্ধাদের কামান্ডার ছিলেন । রায়পুরার আরেক কৃতি সমত্মান কর্নেল নূরম্নজ্জামান ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার । বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেঃ মতিউর রহমান এই উপজেলারই সন্তান । এছাড়া রায়পুরার আরও অনেকে মুক্তিযুদ্ধে দুঃসাহসী অবদান রাখেন । রায়পুরা থানার বিভিন্ন স্থানে হানাদার বাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রত্যক্ষ যুদ্ধ হয়েছে । রায়পুরা থানার যে সমসত্ম স্থানে মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে এর বেশির ভাগই রায়পুরার পশ্চিম অঞ্চলে, হাঁটুভাঙ্গা, আমিরগঞ্জ, বাদুয়ারচর রেলসেতুর পাশে । মুক্তিযুদ্ধের মাঝামাঝি সময়ে বাদুয়ার চর রেলসেতু মুক্তিযোদ্ধারা মাইনের সাহায্যে উড়িয়ে দেয়। এতে পাক বাহিনী মারাত্মক বাধার সস্মুখীন হয় । এর কিছুদিন পর রামনগর রেলসেতুও মুক্তিবাহিনী মাইনের সাহায্যে উড়িয়ে দেয় । হাঁটুভাঙ্গা বর্তমানে রেলস্টেশনের নিকট পাবাহিনীর সঙ্গে মুক্তবাহিনীর জোয়ানদের সামানাসামনি যুদ্ধ বাঁধে । এতে পাক বাহিনী টিকতে না পেরে হেরে যায় । এই যুদ্ধে রহু পাক সেনা নিহত হয়।

থানার যে সমসত্ম স্থানে মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে এর বেশির ভাগই রায়পুরার পশ্চিম  অঞ্চলে, হাটুু ভাঙ্গা, আমিরগঞ্জ, বাদুয়ারচর রেলসেতুর পাশে । মুক্তিযুদ্ধের মাঝামাঝি সময়ে বাদুয়ার চর রেলসেতু মুক্তিযোদ্ধারা  মাইনের সাহায্যে উড়িয়ে দেয়। এতে পাক বাহিনী মারাত্মক বাধার সস্মুখীন হয় । এর কিছুদিন পর রামনগর রেলসেতুও মুক্তিবাহিনী মাইনের সাহায্যে উড়িয়ে দেয় । হাঁটুভাঙ্গা বর্তমানে রেলস্টেশনের নিকট পাবাহিনীর সঙ্গে মুক্তবাহিনীর জোয়ানদের সামানাসামনি যুদ্ধ বাঁধে । এতে পাক বাহিনী টিকতে না পেরে হেরে যায় । এই যুদ্ধে রহু পাক সেনা নিহত হয়।

রায়পুরা উপজেলা ১০ ডিসেম্বর ১৯৭১ তারিখে পাক হানাদার মুক্ত হয়। উপজেলায় সর্বমোট ১৪৩৮ জন মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে।

চর অঞ্চল[সম্পাদনা]

পাড়াতলী,বাঁশগাড়ী সহ মোট ৬ টি ইউনিয়ন নিয়ে রায়পুরা উপজেলার চরঅঞ্চল গঠিত। এগুলো হলো;

  • পাড়াতলী
  • বাঁশগাড়ী
  • শ্রীনগর
  • চাঁদপুর
  • মির্জারচর
  • চরমধুয়া

রায়পুরার চরাঞ্চলের মানুষদের মধ্যে দ্বৈরথ দেখায় এর উন্নয়নে বিপর্যয় দেখা দেয়। এখানকার মানুষদের মধ্যে টেটা যুদ্ধের মতো প্রাণহানি ঘটনা ঘটলেও বর্তমানে প্রেক্ষাপট ভিন্ন। বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ও কবি শামসুর রহমান এর জন্ম/পৈতৃক নিবাস এখানেই।

  • আয়তন ৯৭.০৬ বর্গকিলোমিটার
  • শিক্ষার হার ২৬.১%
  • জনসংখ্যা ১১৫৩৬২ জন

বিবিধ[সম্পাদনা]

এনজিও

ব্রাক, আশা, গ্রামীণ ব্যাংক, মৌচাক ও পল্লী সঞ্চয় কর্মসূচী সক্রিয় এনজিওদের মধ্যে অন্যতম।

হাট-বাজার ও মেলা[সম্পাদনা]

হাট-বাজারের সংখ্যা: ৪০টি।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "এক নজরে রায়পুরা"বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। জুন ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১ জুলাই ২০১৫ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. রায়পুরার ইতিহাস ও ঐতিহ্য, মহসিন খোন্দকার, মুক্তচিন্তা প্রকাশনা, ঢাকা, ২০১১, পৃষ্ঠা-১৯

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]