মৃত্যুরূপা মাতা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মৃত্যুরূপা মাতা 
স্বামী বিবেকানন্দ কর্তৃক রচিত
মূল শিরোনামKali the Mother
অনুবাদকসত্যেন্দ্রনাথ দত্ত
প্রথম প্রকাশিত১৮৯৮
দেশভারত

মৃত্যুরূপা মাতা (মূল ইংরেজি নাম: কালী দ্য মাদার) হল স্বামী বিবেকানন্দের লেখা একটি কবিতা। ১৮৯৮ সালে কাশ্মীরে থাকাকালীন শ্রীনগরের ডাল লেকে একটি হাউসবোটে বসে বিবেকানন্দ এই কবিতাটি রচনা করেছিলেন।[১][২] এই কবিতায় তিনি হিন্দু দেবী কালীর স্তব করেছেন।[৩]

প্রেক্ষাপট[সম্পাদনা]

১৮৯৮ সালে কাশ্মীরের হাউসবোটে বিবেকানন্দ

গুরু রামকৃষ্ণ পরমহংসের মৃত্যুর পর বিবেকানন্দ হিন্দু দেবী কালীর সম্পর্কে বিশেষ আগ্রহী হন। পরে তিনি কালী পূজাও করেছিলেন। কালী পূজাকে তিনি নিজের আগ্রহের বিষয় বলে উল্লেখ করতেন।[১] ১৮৯৩ সালে বিবেকানন্দ আমেরিকায় বিশ্বধর্ম মহাসম্মেলনে ভারতহিন্দুধর্মের প্রতিনিধিত্ব করেন। ১৮৯৩ সাল থেকে ১৮৯৭ সাল পর্যন্ত তিনি আমেরিকা ও ইংল্যান্ডের নানা অঞ্চল ভ্রমণ করেন এবং ধর্ম ও হিন্দুধর্ম সম্পর্কে অনেক বক্তৃতা দেন। ১৮৯৭ সালে তিনি ভারতে ফিরে আসেন এবং ১৮৯৯ সাল পর্যন্ত ভারতের নানা অঞ্চল ভ্রমণ করেন। ১৮৯৮ সালে তিনি কাশ্মীরে যান। সেখানে তিনি ডাল লেকে একটি হাইসবোটে থাকতেন। শ্রীনগরের কাছে ক্ষীরভবানী মন্দির দর্শন করার পর বিবেকানন্দ এই কবিতাটি লিখেছিলেন।[১][২] স্বামীজির ভ্রমণসঙ্গী ভগিনী নিবেদিতা লিখেছেন, এই কবিতাটি লেখার আগে স্বামীজি মন দিয়ে কিছু ভাবছিলেন আর নিজের ভাবনাটি লিপিবদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত খুব ছটফট করছিলেন।[৩]

বিষয়বস্তু[সম্পাদনা]

এই কবিতায় শক্তিদেবী কালীর মহিমা কীর্তন করা হয়েছে। বিবেকানন্দ এই কবিতায় কালীর ভয়ংকর রূপটির বর্ণনা দিয়েছেন (কালীকে সাধারণত দুটি রূপে পূজা করা হয়: একটি চতুর্ভূজা ও অন্যটি দশভূজা মহাকালী রূপ। মহাকালী রূপটিই ভয়ংকর)। এই কবিতায় সমস্ত বিশ্বব্রহ্মাণ্ডকে দেবী কালীর ভয়ংকর প্রলয়নৃত্যের মঞ্চ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।[৩]

প্রভাব[সম্পাদনা]

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনকে এই কবিতাটি বিশেষভাবে প্রভাবিত করেছিল। বিশেষভাবে সুভাষচন্দ্র বসুঅরবিন্দ ঘোষ এই কবিতাটির দ্বারা বিশেষভাবে প্রভাবিত হন। অরবিন্দ ঘোষ তার ভবানী মন্দির নামক ম্যানিফেস্টোতে এই কবিতাটিকেই মূল অনুপ্রেরণা বলে গ্রহণ করেছিলেন। এই কবিতা সম্পর্কে তিনি লিখেছিলেন:[৩]

The Shakti we call India. Bhawani Bharati is the living unity of the Shaktis of three hundred million people; but she is inactive, imprisoned in the magic circle of Tamas, the self-indulgent inertia and ignorance of her sons. Strength can only be created by drawing it from the eternal and inexhaustible reservoirs of the spirit, from the Adya-Shakti of the Eternal which is the fountain of all new existence.

সর্বপল্লি রাধাকৃষ্ণন বলেছিলেন, এই কবিতাটি "ভারতের সনাতন চেতনার রূপরেখা ও কণ্ঠস্বর"।[৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Swami Vivekananda; Amiya P. Sen (১ এপ্রিল ২০০৬)। The Indispensable Vivekananda: An Anthology of Our Times। Orient Blackswan। পৃষ্ঠা 16–। আইএসবিএন 978-81-7824-130-2। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০১৩ 
  2. "Kali the Mother"। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০১৩ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  3. "Poems written by Swami Vivekananda"। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০১৩