মাধবপুর হ্রদ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মাধবপুর হ্রদ

মাধবপুর হ্রদ সিলেটের মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত একটি কৃত্রিম জলাধার। বাংলাদেশের পর্যটন আকর্ষনগুলোর মধ্যে এই হ্রদটি অন্যতম।

অবস্থান[সম্পাদনা]

এই হ্রদটি বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব কোণে অবস্থিত সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের পাত্রখলা এলাকায়। কমলগঞ্জ উপজেলা সদরের ৫ কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে ন্যাশনাল টি কোম্পানি (এনটিসি)-র সত্ত্বাধীন মাধবপুর চা-বাগানের ১১ নম্বর সেকশনে (পাত্রখলা) এর অবস্থান। এই স্থানটি জেলা শহর মৌলভীবাজার থেকে ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে ও বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান পর্যটন কেন্দ্র শ্রীমঙ্গল থেকে ১০ কিলোমিটার পূর্বে।

হ্রদ তৈরীর ইতিহাস[সম্পাদনা]

চা বাগানে চাষের ও অন্যান্য বিভিন্ন কারণে ব্যবহারের জন্য প্রচুর পানির প্রয়োজন হয় বলে পাবত্য অঞ্চলের বৃষ্টিবহুল এলাকাগুলোই চা চাষের জন্য সর্ব্বোৎকৃষ্ট। কিন্তু, এসব অঞ্চলে বৃষ্টির পরিমাণ অধিক হলেও ঢালু ভূমির কারণে পানি অধিক সময় অবস্থান করেনা বিধায় পানির প্রয়োজনে বাগান কর্তৃপক্ষ একাধিক জলাধার তৈরী করেন, যা প্রায় প্রতিটি চা বাগানের ক্ষেত্রেই অতি স্বাভাবিক ব্যাপার এবং স্থানীয় চা শ্রমিকরা এসব হ্রদকে "ডাম্প" বলে থাকে।। এরই ধারাবাহিকতায়, মাধবপুর চা বাগান কর্তৃপক্ষ ১৯৬৫ সালে বাগানের মধ্যস্থিত তিনটি টিলাকে বাঁধ দিয়ে পানি জমিয়ে রেখে গড়ে তোলেন মাধবপুর হ্রদ।[১]

হ্রদের বর্ণনা[সম্পাদনা]

মাধবপুর হ্রদটির আয়তন প্রায় ৫০ একর এবং দৈর্ঘ্যে ৩ কিলোমিটার; প্রস্থ স্থান বিশেষে ৫০ হতে ৩০০ মিটার।[২] চা বাগান কর্তৃপক্ষ লেকের পাড় ঘেঁষে হেঁটে বেড়ানোর জন্য সরু পায়ে চলার পথ এবং টিলার ওপর খড় দিয়ে তাঁবু তৈরী করে দিয়েছে। দক্ষিণ দিকের টিলা (পাহাড়)-টি ভারতীয় সীমান্তের দিকে; এখান থেকে ভারতীয় এলাকার উচু নিচু পাহাড়গুলো চোখে পড়ে। নিরাপত্তা এবং বাগানের ব্যবস্থাপনার জন্য এখানে সকাল ৮টা হতে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অবস্থান করার সুযোগ দেয়া হয়।

উদ্ভিদ ও প্রাণী বৈচিত্র[সম্পাদনা]

এখানে হ্রদের পানিতে রয়েছে নীল পদ্ম আর বেগুনী শাপলা; দেখা যায় গোলপাতা আর শালুকের ঝাড়। টিলার ঝোপঝাড়ে আছে নানা বর্ণের বুনো ফুল, যাদের মধ্যে ভাঁট ফুলই প্রধান। চা বাগানের মধ্যে বলে প্রাকৃতিক গাছের পরিমাণ স্বল্প; দেখা মেলে ছায়া বৃক্ষের।

হ্রদের জলে দেখা মেলে বিভিন্ন জাতের হাঁস, সরালি, পানকৌড়ি, জলপিপি প্রভৃতি জলচর ও পরিযায়ী পাখীর।

যোগাযোগ ব্যবস্থা[সম্পাদনা]

চা বাগানের মধ্যে অবস্থিত বলে এখানে আসার সরাসরি কোনো যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই; সিলেট বা মৌলভীবাজার হয়ে এখানে আসতে হয়। মাধবপুর হ্রদে যেতে হলে প্রথমে ঢাকা থেকে সড়ক বা রেলপথে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল হয়ে কমলগঞ্জে আসতে হবে; এরপর কমলগঞ্জের ভানুগাছ চৌমুহনী হয়ে চা বাগানের মধ্য দিয়ে মাধবপুর হ্রদে পৌছতে হবে।

ছবি গ্যালারি[সম্পাদনা]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. আরো মনোহর হচ্ছে মাধবপুর হ্রদ ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৪ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে কালের কন্ঠ, প্রকাশিত হয়েছে: ১৫ই অক্টোবর ২০১১।
  2. 'বৃষ্টিধোয়া হ্রদ পাহাড়ে'; banglapost24.com, সঙগ্রহের তারিখঃ ১৭ই ডিসেম্বর ২০১২

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]