মহাদেব সাহা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মহাদেব সাহা
জন্ম৫ আগস্ট ১৯৪৪
ধানগড়া, সিরাজগঞ্জ জেলা, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ইন্ডিয়া
পেশাসাহিত্য
কবি
জাতীয়তাবাংলাদেশি
নাগরিকত্ব বাংলাদেশ
উল্লেখযোগ্য রচনাবলিএই গৃহ এই সন্ন্যাস, তোমার পায়ের শব্দ
উল্লেখযোগ্য পুরস্কারবাংলা একাডেমি পুরস্কার, একুশে পদক, আলাওল সাহিত্য পুরস্কার, জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কার, স্বাধীনতা পুরস্কার
দাম্পত্যসঙ্গীনীলা সাহা
সন্তানতীর্থ সাহা, সৌধ সাহা

মহাদেব সাহা (জন্ম: ৫ আগস্ট ১৯৪৪) বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তীকালের একজন অন্যতম প্রধান কবি। তিনি তার সাহিত্যিক অবদান দিয়ে সব ধরনের পাঠকের মনোযোগ আকর্ষণ করেছেন। তিনি রোম্যান্টিক গীতিকবিতার জন্য জনপ্রিয়। তার কবিতা অপরিশ্রুত আবেগের ঘনীভূত প্রকাশে তীব্র। তিনি জীবিকাসূত্রে একজন সাংবাদিক ছিলেন, এবং দীর্ঘকাল দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ২০১৬ থেকে তিনি কানাডা প্রবাসী।[১]

জন্ম ও পারিবারিক পরিচিতি[সম্পাদনা]

মহাদেব সাহা ১৯৪৪ সালের ৫ আগস্ট সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার ধানগড়া গ্রামে পৈতৃক বাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম গদাধর সাহা এবং মাতা বিরাজমোহিনী সাহা। সাহিত্যানুরাগী পিতা গদাধর সাহার বাড়িতে আসত মাসিক বসুমতী সংবাদ, দৈনিক লোকসেবক, বাই উইকলি অমৃতবাজার পত্রিকা। কলকাতা থেকে আনা হতো পিএম. বাগচী ও গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকা।[২]

শিক্ষা জীবন[সম্পাদনা]

মহাদেব সাহা বগুড়ার ধুনট হাইস্কুল থেকে ১৯৬০ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। উচ্চমাধ্যমিকে তিনি ঢাকা কলেজে ভর্তি হয়েও অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং পরে তিনি বগুড়ার আজিজুল হক কলেজ থেকে ১৯৬৪ সালে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। তিনি আজিজুল হক কলেজে বাংলা সাহিত্য বিষয়ে অনার্স শ্রেণীতে ভর্তি হন এবং ১৯৬৭ সালে অনার্স পাস করে রাজশাহীতে আসেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বাংলা বিষয়ে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। এমএ পাসের পর তিনি কিছুদিন ইংরেজি বিষয়ে গবেষণায় নিযুক্ত হন কিন্তু কবিতা লেখার অদম্য আগ্রহ তাকে গবেষণা শেষ করার আগেই ঢাকায় নিয়ে যায়। তিনি জ্যোতিপ্রকাশ দত্তের সহায়তায় ১৯৬৯ সালে তৎকালীন সাপ্তাহিক পূর্বদেশ পত্রিকায় যোগদান করেন।

কর্ম জীবন[সম্পাদনা]

সাপ্তাহিক পূর্বদেশ পত্রিকায় সাংবাদিক হিসেবে যোগদানের মধ্য দিয়ে ১৯৬৯ সালে মহাদেব সাহার কর্মজীবন শুরু হয়। জীবনব্যাপী তিনি বিভিন্ন পত্রিকায় সাংবাদিক হিসেবে কর্মরত থেকেছেন। সর্বশেষ তিনি দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকা থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

সাহিত্য কর্ম[সম্পাদনা]

তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ৯৩ টি।

কাব্যগ্রন্থ[সম্পাদনা]

  • এই গৃহ এই সন্ন্যাস (১৯৭২)
  • মানব এসেছি কাছে (১৯৭৩)
  • চাই বিষ অমরতা (১৯৭৫)
  • কী সুন্দর অন্ধ (১৯৭৮)
  • তোমার পায়ের শব্দ (১৯৮২)
  • ধুলোমাটির মানুষ (১৯৮২)
  • ফুল কই, শুধু অস্ত্রের উল্লাস (১৯৮৪)
  • লাজুক লিরিক (১৯৮৪)
  • আমি ছিন্নভিন্ন (১৯৮৬)
  • মানুষ বড়ো ক্রন্দন জানে না (১৯৮৯)
  • প্রথম পয়ার ১৯৯০
  • কোথা সেই প্রেম, কোথা সে বিদ্রোহ ১৯৯০
  • অস্তমিত কালের গৌরব ১৯৯২
  • আমূল বদলে দাও আমার জীবন ১৯৯৩
  • একা হয়ে যাও ১৯৯৩
  • যদুবংশ ধ্বংসের আগে ১৯৯৪
  • কোথায় যাই, কার কাছে যাই ১৯৯৪
  • সুন্দরের হাতে আজ হাতকড়া, গোলাপের বিরুদ্ধে হুলিয়া ১৯৯৫
  • এসো তুমি পুরাণের পাখি ১৯৯৫
  • বেঁচে আছি স্বপ্নমানুষ ১৯৯৫
  • বিষাদ ছুঁয়েছে আজ, মন ভালো নেই ১৯৯৬
  • তোমার জন্য অন্ত্যমিল ১৯৯৬
  • আকাশের আদ্যোপান্ত ১৯৯৬
  • ভুলি নাই তোমাকে রুমাল ১৯৯৬
  • তুমিই অনন্ত উৎস ১৯৯৬
  • কেউ ভালোবাসে না ১৯৯৭
  • কাকে এই মনের কথা বলি ১৯৯৭
  • অন্তহীন নৃত্যের মহড়া ১৯৯৭
  • একবার নিজের কাছে যাই ১৯৯৭
  • পাতার ঘোমটা-পরা বাড়ি ১৯৯৭
  • মন কেন কাঁদে ১৯৯৮
  • এ বড়ো আনন্দ এ বড়ো বেদনা ১৯৯৮
  • স্বপ্নে অাঁকি সুন্দরের মুখ ১৯৯৮
  • ভালোবাসি হে বিরহী বাঁশি ১৯৯৮
  • বহুদিন ভালোবাসাহীন ১৯৯৮
  • কে তুমি বিষণ্ন ফুল ১৯৯৯
  • অপরূপ অশ্রুজল ১৯৯৯
  • কোনোখানে কোনো একদিন ১৯৯৯
  • কেন সুন্দর ব্যথিত এতো ১৯৯৯
  • ভালোবেসে ছুঁয়েছি আকাশ ১৯৯৯
  • অনেক দিনের বিষাদ আছে মনে ২০০০
  • সব দুঃখ ভুলে যাই প্রেমের গৌরবে ২০০০
  • ভালোবাসা, প্রিয় ঝরাপাতা ২০০০
  • কেন মোহে, কেনবা বিরহে ২০০০
  • শূন্যতা আমার সঙ্গী ২০০০
  • আমার ভিতরে যতো অন্ধকার, আমার ভিতরে যতো আলো ২০০১
  • তবু স্বপ্ন দেখি ২০০১
  • সোনালি ডানার মেঘ ২০০১
  • পৃথিবী, তোমাকে আমি ভালোবাসি ২০০১
  • কে পেয়েছে সব সুখ, সবটুকু মধু ২০০১
  • শুকনো পাতার স্বপ্নগাঁথা ২০০৩
  • দুঃসময়ের সঙ্গে হেঁটে যাই ২০০৩
  • দুঃখ কোনও শেষ কথা নয় ২০০৪
  • ভালোবাসা কেন এতো আলো অন্ধকারময় ২০০৫
  • লাজুক লিরিক-২ ২০০৬
  • দূর বংশীধ্বনি ২০০৬
  • অর্ধেক ডুবেছি প্রেমে, অর্ধেক বিরহে ২০০৭
  • কালো মেঘের ওপারে পূর্ণিমা ২০০৮
  • সন্ধ্যার লিরিক ২০০৮
  • অন্ধের আঙুলে এতো জাদু ২০০৯
  • অক্ষরে বোনা স্বপ্ন ২০০৯
  • আদম হাওয়ার অশ্রুবিন্দু ২০১১
  • মাটির মলাট ২০১১

কবিতা সংকলন[সম্পাদনা]

  • মহাদেব সাহার রাজনৈতিক কবিতা
  • মহাদেব সাহার প্রেমের কবিতা
  • মহাদেব সাহার শ্রেষ্ঠ কবিতা
  • প্রেম ও ভালবাসার কবিতা
  • নির্বাচিত ১০০ কবিতা
  • প্রকৃতি ও প্রেমের কবিতা
  • মহাদেব সাহার কাব্যসমগ্র [১ম, ২য়, ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম খণ্ড]

প্রবন্ধ[সম্পাদনা]

  • গরিমাহীন গদ্য ২০০৯
  • আনন্দের মৃত্যু নেই ২০১১
  • মহাদেব সাহার কলাম
  • কবির দেশ ও অন্যান্য ভাবনা ২০১১
  • ভাবনার ভিন্নতা ২০১১
  • মহাদেব সাহার নির্বাচিত কলাম

শিশুসাহিত্য[সম্পাদনা]

  • টাপুর টুপুর মেঘের দুপুর
  • ছবি আঁকা পাখির পাখা
  • আকাশে ওড়া মাটির ঘোড়া
  • সরষে ফুলের নদী
  • ''আকাশে সোনার থালা
  • মহাদেব সাহার কিশোর কবিতা (সংকলন)

পুরস্কার ও সম্মাননা[সম্পাদনা]

মহাদেব সাহা তার কাব্য প্রতিভার জন্য অসংখ্য পুরস্কার লাভ করেছেন। তিনি ১৯৮৩ সালে কবিতায় বাংলা একাডেমী পুরস্কার এবং ২০০১ সালে একুশে পদক লাভ করেন। এছাড়াও অন্যান্য পুরস্কার ও সম্মননার মধ্যে ১৯৯৫ সালে আলাওল সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৯৭ সালে বগুড়া লেখকচক্র পুরস্কার, ২০০২ সালে খালেকদাদ চৌধূরী স্মৃতি পুরস্কার এবং ২০০৮ সালে জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কার অন্যতম।২০২১ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Mahadev Saha's 70th birth anniversary observed in Mymensingh"দ্য ডেইলি স্টার। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ১২, ২০১৫ 
  2. তানিয়া, তহমিনা (২০১০)। মহাদেব সাহা : আমূল উদ্বাস্তু (প্রথম সংস্করণ)। ঢাকা: অনন্যা। পৃষ্ঠা ২৪ ও ২৫। আইএসবিএন ৯৮৪-৭০১-০৫-০৩২২-৭ |আইএসবিএন= এর মান পরীক্ষা করুন: invalid character (সাহায্য) 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]