মধুসূদন দে

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মধুদা

মধুসূদন দে
মধুসূদন দে পুনঃনির্মিত স্মৃতি ভাস্কর্য
জন্মএপ্রিল ১৯১৯
মৃত্যু২৬ মার্চ ১৯৭১
মৃত্যুর কারণপাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অপারেশন সার্চলাইট
নাগরিকত্ব পাকিস্তান (১৯৪৭-৭১)
 ব্রিটিশ ভারত (১৯১৯-৪৭)
পেশারেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী
পরিচিতির কারণঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন
সন্তানঅরুণ কুমার দে
পিতা-মাতা
  • আদিত্য চন্দ্র (পিতা)

মধুসূদন দে (মধুদা) (এপ্রিল, ১৯১৯ - ২৬শে মার্চ, ১৯৭১), বাংলাদেশের ঢাকায় অবস্থিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের প্রতিষ্ঠাতা।[১] তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান, এবং পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু হিসাবে মধুর ক্যান্টিন সুপরিচিত। সেইসাথে মধুসূদন দে, মধুদা নামেই সমধিক পরিচিত ছিলেন।

জীবন[সম্পাদনা]

মধুর জন্ম ১৯১৯ সালের এপ্রিলে। মধুসূদনের বাবা আদিত্যচন্দ্র খাবারের ব্যবসা করতেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়। ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকেই আদিত্যচন্দ্র এ কাজ করতেন। ১৯৩৪ সালে ১৫ বছর বয়সে বাবার ব্যবসার কাজে সহায়তা করা শুরু করেন মধুসূদন। ১৯৩৯ সালে আদিত্যচন্দ্র পক্ষাঘাতে মারা যান। মধুসূদনের ওপর গিয়ে পড়ে ব্যবসার ভার। প্রথম কিছুদিন বাবার আমলের ছনের ঘরেই ব্যবসা করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বর্তমান ভবনে আসেন।[২]

মধুসূদন দে ছিলেন সামাজিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনে সোচ্চার। মুক্তিযুদ্ধের পূর্ববর্তী নানা আন্দোলনে তাঁর ছিল পদচারণা। এসব কর্মকাণ্ডের কারণে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীদের চক্ষুশূল হয়ে উঠতে সময় লাগেনি। তাই ২৫ মার্চ, ১৯৭১ সালের সেই বর্বর কালরাতে হানাদার বাহিনী তাঁকে জগন্নাথ হল থেকে তুলে নিয়ে যায় এবং সেই রাত্রেই হত্যা করে। মুক্তিযুদ্ধের পর তাঁরই ছেলে অরুণ কুমার দের ওপর ক্যান্টিনের দায়িত্ব অর্পিত হয়।[৩]

মধুর রেস্তোরা[সম্পাদনা]

ঊনিশ শতকের প্রথম দিকে বিক্রমপুরের শ্রীনগরের জমিদারদের সাথে নকরীচন্দ্রের ব্যবসায়িক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ব্যবসা প্রসারের লক্ষ্যে নকরীচন্দ্র তার দুই পুত্র আদিত্যচন্দ্র ও নিবারণ চন্দ্রকে নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন। তারা জমিদার বাবুর জিন্দাবাজার লেনের বাসায় আশ্রয় নেন। ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হলে নকরী চন্দ্র পুত্র আদিত্য চন্দ্রের ওপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ব্যবসা প্রসারের দায়িত্ব দেন। নকরীচন্দ্রের মৃত্যুর পর আদিত্য চন্দ্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাসের মাধ্যমে তার ব্যবসা শুরু করেন।[৪]

মধুর রেস্তোরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট ভবনের সামনে অবস্থিত। এটি '"মধুর ক্যান্টিন"' নামে অধিক পরিচিত। প্রয়াত মধুসূদন দে'র স্মৃতি স্মরণে স্থাপিত একটি বিখ্যাত রেস্তোরাঁ। ১৩৭৯ বঙ্গাব্দের ২০শে বৈশাখ ক্যান্টিনটি প্রতিষ্ঠিত হয়। রাজনীতি, সংস্কৃতি চর্চা এবং আড্ডার জন্য মধুর ক্যান্টিনের আলাদা খ্যাতি রয়েছে।[৫]

মধুসূদন দে স্মৃতি ভাস্কর্য

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "মধুর ক্যান্টিনের যতকথা"NTV Online (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৫-০৮-২৭। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০১-১২ 
  2. মনজুর, তারিক। "কে ছিলেন মধুদা"Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-২৬ 
  3. Gopalganj, দৈনিক গোপালগঞ্জ :: Dainik। "রাজনীতির পাঠশালা: মধুর রেস্তোরাঁ, ইতিহাস সৃষ্টিতে সদা তৎপর"Dainik Gopalganj (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-২৬ 
  4. ডটকম, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর। "মধু দা'র ভাস্কর্যের ভাঙা অংশ পড়ে ছিল পাশেই"bdnews24। ২০২২-১২-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-২৬ 
  5. "জৌলুস হারাচ্ছে মধুর ক্যান্টিনের রাজনীতি"banglanews24.com। ২০১৯-০৯-০৮। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-২৬ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]