দীপু নাম্বার টু

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
দীপু নাম্বার টু
বইয়ের প্রচ্ছদ
১৯৯২ সালে মোহনা প্রকাশনীর সংস্করণের প্রচ্ছদ
লেখকমুহম্মদ জাফর ইকবাল
দেশবাংলাদেশ
ভাষাবাংলা
ধরনকিশোর উপন্যাস
প্রকাশকসময় প্রকাশন
প্রকাশনার তারিখ
১৯৮৪
আইএসবিএন৯৮৪৪৫৮৪৭৩৬
ওসিএলসি১৩৪২০১৭৩০৯

দীপু নাম্বার টু বাংলাদেশী লেখক মুহাম্মদ জাফর ইকবাল রচিত ১৯৮৪ সালের বাংলা কিশোর উপন্যাস। এটি বাংলাদেশের শিশু-কিশোর সংবাদপত্র কিশোর বাংলার ১৯৮১ সালের ঈদ সংখ্যায় প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকালে লেখক এই উপন্যাসটি রচনা করেন। সময় প্রকাশন এই উপন্যাসটি গ্রন্থাকারে প্রকাশ করে। ১৯৯৬ সালে এই উপন্যাস অবলম্বনে একই শিরোনামে একটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়।

পটভূমি[সম্পাদনা]

"দীপু নাম্বার টু" রচনা প্রসঙ্গে লেখক জাফর ইকবাল বলেন, "আমি যখন পদার্থ বিজ্ঞানে পিএইচ.ডি. করার জন্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছি তখন সেখানে আমি একেবারেই একা, বাংলায় কথা বলার একজন মানুষও নেই পড়াশোনার প্রচণ্ড চাপ, সিয়াটলের মেঘে ঢাকা ধূসর আকাশ, গুঁড়িগুড়ি বৃষ্টি, কনকনে শীত সব মিলিয়ে খুব মন খারাপ করা নিঃসঙ্গ একটা পরিবেশ। একাকিত্ব দূর করার জন্যে আমি তখন কল্পনায় একটা কিশোর তৈরি করে নিয়েছিলাম। তার নাম দিয়েছিলাম দীপু। যখন মন খারাপ হতো সেই কিশোরটি তখন আমাকে সঙ্গ দিতো। বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃষ্টিভেজা ক্যাম্পাসের পিঠে ব্যাকপ্যাক নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে সেই কাল্পনিক চরিত্রকে তা আপনজনদের প্রায় সত্যিকার মানুষদের মতো দেখতে পেতাম। এক সময় সেই কিশোর আর তার প্রিয় মানুষদের সুখ-দুঃখ আর অ্যাডভেঞ্চারের কাহিনীটা লিখতে বসেছি, গভীর ভালোবাসা নিয়ে লিখে শেষ করেছি। লেখা শেষ হলে নাম দিয়েছি দীপু নাম্বার টু!" [১]

কাহিনীসংক্ষেপ[সম্পাদনা]

সংসারে দুজন ব্যক্তি - আব্বা ও দীপু। দীপু জানে ওর মা বেঁচে নেই। দীপুর বাবার খুব অদ্ভুত স্বভাব, কোনো জায়গাতেই বাবার তিন-চার মাসের বেশি থাকতে ভালো লাগে না। প্রতি বছর-ই দীপুর বাবা পোস্টিং নিয়ে নতুন নতুন জায়গায় যান; খুব স্বাভাবিক ভাবেই দীপুকেও বাবার সাথে ঘুরতে হয়। প্রতি বছর-ই সে ভর্তি হয় নতুন স্কুলে। এরই ধারাবাহিকতায় সে ক্লাস এইটে ভর্তি হয় নতুন স্কুলে। ভর্তির প্রথম দিনেই দীপুর ভালো লেগে যায় এই নতুন স্কুল। তারিক ছাড়া প্রায় সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়ে যায় তার। ঘটনাপ্রবাহে তারিক হয়ে ওঠে দীপুর ঘনিষ্ঠতম বন্ধু। এক পর্যায়ে দীপু জানতে পারে ওর মায়ের কথা। জানতে পারে, বাবার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে বহুদিন আগে আমেরিকা চলে গিয়েছিলেন। দেশে এসেছেন কয়েক দিনের জন্য। ছেলেকে দেখতে চেয়ে বাবাকে চিঠি লিখেছেন। দীপু একা একাই মায়ের সঙ্গে দেখা করার জন্য ঢাকায় যায়। মাকে পেয়ে দীপুর মধ্যে অদ্ভুত এক অনুভূতি জেগে ওঠে। তারপরও সে আবার ফিরে আসে বাবার কাছে। মা ফিরে যান আমেরিকায়। এদিকে দীপু জানতে পারে তারিকের অপ্রকৃতিস্থ মায়ের কথা। তারিকের স্বপ্ন টাকা আয় করে ওর মায়ের চিকিৎসা করাবে। এরপর শুরু হয় দুঃসাহসিক অভিযান। বুদ্ধি আর সাহস খাটিয়ে দীপু, তারিক আর ওদের বন্ধুরা দেশের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন মূর্তি পাচারকারী চক্রকে ধরিয়ে দেয়।

প্রধান চরিত্রগুলো[সম্পাদনা]

  • দীপু
  • আব্বা (দীপুর আব্বা)
  • আম্মা (দীপুর আম্মা)
  • স্কুল শিক্ষক
  • তারিক, দীপুর বন্ধু
  • সাজ্জাদ, দীপুর বন্ধু
  • বাবু, দীপুর বন্ধু
  • টিপু, দীপুর বন্ধু
  • নান্টু, দীপুর বন্ধু
  • মিঠু, দীপুর বন্ধু
  • বিলু, দীপুর বন্ধু
  • রাশেদ, দীপুর বন্ধু
  • জামশেদ চাচা

চলচ্চিত্রে অভিযোজন[সম্পাদনা]

উপন্যাসটি অবলম্বনে ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্রীয় অনুদানে একটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়।[২] চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেন চলচ্চিত্রকার মোরশেদুল ইসলাম[৩] চলচ্চিত্রের নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন অরুন সাহা। এছাড়াও বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন বুলবুল আহমেদ, ববিতা, আবুল খায়ের, গোলাম মুস্তাফা, শুভাশীষ সহ আরও অনেকে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. দীপু নাম্বার টু বইটির কভার জ্যাকেটে লেখকের বক্তব্য।
  2. প্রচলিত কিশোর দীপু চলচ্চিত্রের ধারাবাহিক উপস্থাপন ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৫ আগস্ট ২০২০ তারিখে দৈনিক কালের কণ্ঠ, ২৮ এপ্রিল ২০১০
  3. "মোরশেদুল ইসলাম সম্পর্কিত তথ্য"। ১৩ মার্চ ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ মার্চ ২০১৩ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]