দিসুম সেন্দ্রা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

দিসুম সেন্দ্রা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পুরুলিয়া জেলার অযোধ্যা পাহাড় অঞ্চলে প্রতি বছর বৈশাখী পূর্ণিমায় অনুষ্ঠিত সাঁওতাল সম্প্রদায়ের শিকার উৎসব।

পালনরীতি[সম্পাদনা]

প্রতি বছর বৈশাখী পূর্ণিমার আগের রাতে পিতলের কলসিতে জল ভরে দুটি কচি শালগাছের ডাল ডুবিয়ে রাখা হয়। ভোরবেলায় ডালগুলির রঙ দেখা হয় এবং সেই অনুযায়ী আসন্ন শিকার সম্বন্ধে অনুমান করা হয়। বৈশাখী পূর্ণিমার দিনে একটি নির্দিষ্ট স্থানে জড়ো হয়ে সমবেত স্বরে গান করে[n ২] সাঁওতাল পুরুষেরা শিকারে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হন। সাঁওতাল মহিলারা পুরুষদের জন্য মহুয়ার মোয়া, ভাত, তরকারি ও আম পোড়া তৈরী করেন। পুরুষেরা শিকারে বেড়িয়ে ফিরে না আসা পর্যন্ত মহিলারা কোন রকম প্রসাধন করেন না। শিকারে কোন রকম বিপদ হলে তিন বার ঘণ্টা বাজানো হলে শিকারীরা সেখানে উপস্থিত হন। শিকারে জন্তু বা পাখি মারা গেলে তার ভাগ বাটোয়ারার নির্দিষ্ট বিধি রয়েছ। শিকারে অমীমাংসিত বিরোধের নিষ্পত্তি মেটাতে ফুলহি ঢুড়ুপ বা বিচারসভা বসে। শিকার শেষে সীতাচাটান নামক জমায়েত স্থানে শিকারীরা একত্র হয়ে তারা চাঁপা ফুল ও ঘন কালো রঙের সূক্ষ্ম শিকড় সংগ্রহ করেন। বাড়ি ফিরে এলে মহিলারা শিকারীদের পা ধুইয়ে দেন ও সংগৃহীত চাঁপাফুল গ্রহণ করে পবিত্রস্থানে রেখে দেন।[২]:২৫১

পাদটীকা[সম্পাদনা]

  1. সিংবিররে সিম কোরাককে
    মানবিররে মারাক হিঁয়োকে
    অয়োধিয়ারে ঢেঁকী শাড়ঁয়েম
    চেতেরেনা রেগড়া টামাক
    দগো আয়োগা সাড়ে কান দো[১]
  2. অনুবাদ-জংলি মোরগ ডেকেছে দূর সিংবিরে
    মানবিরের গভীর বনে কেকাধ্বনি
    অযোধিয়া কাঁপছে যেন ঢেঁকির পাড়
    রেগড়া টামাক বাজছে
    কেন বাজিছে কেন আজ[n ১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. দিসুম সেন্দ্রায় যৌবন মেলা-পশুপতিপ্রসাদ মাহাতো, অমৃত, ১৪ই জুলাই, ১৯৭৮
  2. তরুণদেব ভট্টাচার্য, পুরুলিয়া,ফার্মা কে এল প্রাইভেট লিমিটেড, ২৫৭-বি, বিপিন বিহারী গাঙ্গুলী স্ট্রিট, কলকাতা-১২, ২০০৯