জলধর সেন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
জলধর সেন
জলধর সেন
জলধর সেন
জন্মজলধর সেন
১৩ মার্চ ১৮৬০
কুমারখালি, কুষ্টিয়া, নদিয়া জেলা, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমান বাংলাদেশ বাংলাদেশ)
মৃত্যু১৫ মার্চ ১৯৩৯(1939-03-15) (বয়স ৭৯)
কলকাতা, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত
ভাষাবাংলা
জাতীয়তাভারতীয়
নাগরিকত্বভারতীয়
ধরনভ্রমণ কাহিনী, রম্যরচনা ও উপন্যাস, পত্রিকা সম্পাদনা
উল্লেখযোগ্য রচনাবলিপ্রবাসচিত্র, হিমালয়, নৈবেদ্য, কাঙ্গালের ঠাকুর, বড় মানুষ, দুঃখিনী, অভাগী, উৎস, হরিনাথ গ্রন্থাবলী, প্রমথনাথের কাব্য গ্রন্থাবলী

জলধর সেন (১৩ মার্চ ১৮৬০ - ১৫ মার্চ ১৯৩৯) বাঙালি ভ্রমণ কাহিনী, রম্যরচনা ও উপন্যাস লেখক। তৎকালীন নদিয়া জেলার কুমারখালিতে (বর্তমানে বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলায়) তার নিবাস ছিল ।[১] তবে তার আদি নিবাস অধুনা পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগণা জেলার বারাসাতের নিকট অবস্থিত দেগঙ্গা (বা দেগঙ্গ)৷ তার প্রপিতামহ কুমারখালির ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির রেশম-কুঠির দেওয়ানীর কাজ পেয়ে কুমারখালিতে যান এবং সেই থেকে তারা সেখানে বাস করেন৷ তারা দক্ষিণ রাঢ়ীয় কায়স্থ এবং "দেগঙ্গের সেন" নামে পরিচিত ছিলেন৷[২]

জন্ম[সম্পাদনা]

১৩ মার্চ ১৮৬০ সালে কুষ্টিয়ার কুমারখালি গ্রামে (বর্তমানে বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলায়) তিনি জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতার নাম হলধর সেন। ১৮৮১ সালে স্ত্রী, কন্যা ও মাতাকে হারিয়ে হিমালয়ে চলে যান।

শিক্ষাজীবন[সম্পাদনা]

১৮৭৮ খ্রিষ্টাব্দে কুমারখালি থেকে তিনি এন্ট্রান্স পাস করেন এবং তারপর কলকাতার জেনারেল অ্যাসেমব্লিজ ইনস্টিটিউসনে এল.এ পর্যন্ত পড়েন। এরপর গোয়ালন্দ বিদ্যালয়ে, দেরাদুনে এবং মহিষাদলে কিছুদিন শিক্ষকতা করেন।[১]

সাহিত্যকর্ম[সম্পাদনা]

১২৯৭ বঙ্গাব্দে তিনি হিমালয় বেড়াতে যান। তার ভ্রমণবিষয়ক বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রবাসচিত্র, হিমালয়। তার রচিত গল্পের বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নৈবেদ্য, কাঙ্গালের ঠাকুর, বড় মানুষ প্রভৃতি। তার রচিত উপন্যাস হল দুঃখিনী, অভাগী, উৎস প্রভৃতি। তার সম্পাদিত বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হরিনাথ গ্রন্থাবলী, ও প্রমথনাথের কাব্য গ্রন্থাবলী[১]

গ্রামবার্তা, সাপ্তাহিক বসুমতী, হিতবাদী, সুলভ সমাচার প্রভৃতি সাময়িক পত্রিকাতে তিনি সম্পাদক বা সহ-সম্পাদক হিসাবে যুক্ত ছিলেন। পরে ১৩২০ বঙ্গাব্দ থেকে ১৩৪৫ বঙ্গাব্দ পর্যন্ত দীর্ঘ ২৬ বছর তিনি ভারতবর্ষ মাসিক পত্রিকা সম্পাদনা করেন।[১] তার সাহিত্যকর্মের জন্য ব্রিটিশ সরকার 'রায় বাহাদুর' উপাধি দেয়।

রচনা[৩][সম্পাদনা]

ভ্রমণবিষয়ক বই[৪][সম্পাদনা]

  • প্রবাসচিত্র
  • হিমালয়
  • হিমালয় পথিক
  • হিমাচল-বক্ষে
  • হিমাদ্রি
  • দশদিন
  • আমার য়ুরোপ ভ্রমণ (অনুবাদ)
  • মুসাফির মঞ্জিল
  • দক্ষিণাপথ
  • মধ্যভারত

গল্পের বই[সম্পাদনা]

  • নৈবেদ্য
  • কাঙ্গালের ঠাকুর
  • বড় মানুষ

গল্প[৪][সম্পাদনা]

নৈবেদ্য, ছোটকাকী ও অন্যান্য গল্প, নূতন গিন্নী ও অন্যান্য গল্প, পুরাতন পঞ্জিকা (গল্প ও ভ্রমণ), আমার বর ও অন্যান্য গল্প, পরাণ মণ্ডল ও অন্যান্য গল্প, আশীর্ব্বাদ, এক পেয়ালা চা, কাঙালের ঠাকুর, মায়ের নাম, বড় মানুষ প্রভৃতি।

উপন্যাস[৪][সম্পাদনা]

  • দুঃখিনী
  • অভাগী
  • উৎস
  • ষোল-আনি
  • বিশুদাদা
  • করিম সেখ
  • আলাল কোয়াটারমেন (অনুবাদ)
  • বড়বাড়ি
  • হরিশ ভাণ্ডারী
  • ঈশানী
  • পাগল
  • চোখের জল
  • সোনার বাংলা
  • দানপত্র
  • পরশপাথর
  • ভবিতব্য
  • তিনপুরুষ
  • উৎস
  • চাহার
  • দরবেশ (উর্দু উপন্যাস, অনুবাদিত)

সম্পাদিত বই[সম্পাদনা]

  • হরিনাথ গ্রন্থাবলী
  • প্রমথনাথের কাব্য গ্রন্থাবলী
  • জাতীয় উচ্ছ্বাস

জীবনী-গ্রন্থ[৪][সম্পাদনা]

কাঙাল হরিনাথ

পাঠ্যপুস্তক[৪][সম্পাদনা]

বাঙলা দ্বিতীয় পাঠ, প্রথম শিক্ষা, শিশুবোধ, নবীন ইতিহাস, বঙ্গ গৌরব।

সম্পাদিত পত্রিকা[৪][সম্পাদনা]

  • ‘বঙ্গবাসী’,
  • ‘বসুমতী’,
  • ‘সন্ধ্যা’,
  • ‘হিতবাদী’,
  • ‘সুলভ সমাচার’,
  • ‘ভারতবর্ষ’
  • ‘গ্রামবার্তা প্রকাশিকা’।

আত্মজীবনী[সম্পাদনা]

জলধর সেনের আত্মজীবনী

মৃত্যু[সম্পাদনা]

তিনি ১৯৩৯ সালে কলকাতায় মারা যান।

জলধর সেন সম্পর্কিত সহায়ক বই[সম্পাদনা]

জলধর সেন (১৮৬০-১৯৩৯) : আবুল আহসান চৌধুরী [৫]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান - প্রথম খণ্ড - সাহিত্য সংসদ আইএসবিএন ৮১-৮৫৬২৬-৬৫-০
  2. আত্মজীবনী ও স্মৃতি-তর্পণ, জলধর সেন, জিজ্ঞাসা এজেন্সিজ্ লিমিটেড, কলিকাতা, ১৩৬৭ বঙ্গাব্দ, পৃ. ১
  3. "চিত্র:হরিশ ভাণ্ডারী (দ্বিতীয় সংস্করণ) - জলধর সেন.pdf - উইকিসংকলন একটি মুক্ত পাঠাগার"commons.wikimedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-২১ 
  4. "জলধর সেন - উইকিসংকলন একটি মুক্ত পাঠাগার"bn.wikisource.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-২১ 
  5. Basu, Narendranath (১৯৫৬)। Jaladhar Sener Atmajibani