ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র
ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র
মানচিত্র
বিকল্প নামটিএসসি
সাধারণ তথ্য
ধরনবিনোদনমূলক কেন্দ্র
স্থাপত্য রীতিআধুনিক
অবস্থানবাংলাদেশ ঢাকা, বাংলাদেশ
নির্মাণকাজের সমাপ্তি১৯৬১
নকশা এবং নির্মাণ
স্থপতিকন্সটান্টিন ডক্সিয়াডেস

ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (সংক্ষেপে টিএসসি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ও কার্যকলাপ কেন্দ্র। এটি ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপত্য ইমারত। এটির অবস্থান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকা, শাহবাগ, ঢাকা, বাংলাদেশে।[১] শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে একাডেমিক শিক্ষা ও জ্ঞানের পাশাপাশি অন্যান্য জ্ঞান, সুকুমারবৃত্তির চর্চার প্রয়োজনে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এটি দেশের সংস্কৃতি পৃষ্ঠপোষকতা, সমাজের অন্যান্য সম্প্রদায়ের জন্য পরিষেবা রুপে আবির্ভূত হয়েছে।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

স্থাপত্য তাৎপর্য[সম্পাদনা]

১৯৬২ সালে টিএসসির মূল ভবন নকশা করেন গ্রিক স্থপতি কন্সটেন্টিনোস এপোস্তলো ডক্সিয়াডিস। এই নকশা আবর্তিত হয়েছে একটি অভ্যন্তরীণ উঠানকে কেন্দ্র করে। মূল দরজা দিয়ে ঢুকতেই যে ভবন তাতে ‘বাটারফ্লাই ক্যানপি’ দেখতে পাওয়া যায়, যা ছাদের কাঠামোকে অনেকটা প্রজাপতির পাখার মতো করে তুলেছে। এর ভেতরে ছাত্রসংগঠনগুলোর মূল কক্ষ, পাঠাগার, অডিটরিয়াম, খাবারের জায়গা, খেলার জন্য নির্ধারিত কক্ষ, সুইমিংপুলসহ আরও কিছু সুবিধাসংবলিত কক্ষ। অডিটরিয়ামটি দৈর্ঘ্য প্রায় ১৭০ ফিট আর প্রস্থে ৮৫ ফিট, যার ছাদ অর্ধবৃত্তাকার বা প্যারাবলিক ভল্ট আকারে তৈরি। ভবনে জালির ব্যবহার করা হয়েছে আলো–বাতাস ঢোকার জন্য এবং অভ্যন্তরীণ পরিসরকে আড়াল করার জন্য। চত্বরের সবগুলো ভবন স্টিলের কলামে তৈরি করিডর দিয়ে সংযুক্ত। কেন্দ্রীয় উঠানের দক্ষিণ–পূর্ব কোনায় পূর্বে গ্রিক স্থাপত্যে নির্মিত গ্রিক স্থাপনা, চৌকো একটি সমাধি।[২] ডক্সিয়াডিস টিএসসির স্থাপত্যে এ দেশের সংস্কৃতি, গ্রামীণ বসতির চিরায়ত ঐতিহ্য ও আবহাওয়ার বিষয়টি চিন্তায় রেখেছিলেন। বাংলাদেশের গ্রামীণ পরিসরে ও স্থাপনার প্রাণকেন্দ্রে উঠান থাকে, সেটিকে কেন্দ্র করে মানুষ ঘর নির্মাণ করে। টিএসসিতেও এর প্রাণকেন্দ্রে উঠানের মতো মাঠ রয়েছে এবং সেটিকে কেন্দ্র করে অন্যান্য স্থাপনা ও শিক্ষার্থীদের কোলাহল এটিকে সবসময় মুখরিত করে রাখে।[৩]

টিএসসিকেন্দ্রিক সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহ[সম্পাদনা]

টিএসসি মূল ভবন
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ,
  • ঢাকা ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাহিত্য সংসদ
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবৃত্তি সংসদ
  • বাঁধন (স্বেচ্ছায় রক্তদান সংগঠন)
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা সংসদ(DURS)
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নাট্য সংসদ(DUDT)
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশ সংসদ(DUES)
  • ঢাকা ইউনিভার্সিটি কুইজ সোসাইটি(DUQS)
  • ঢাকা ইউনিভার্সিটি আইটি সোসাইটি (DUITS)
  • ঢাকা ইউনিভার্সিটি ট্যুরিস্ট সোসাইটি(DUTS)
  • ঢাকা ইউনিভার্সিটি ব্যান্ড সোসাইটি(DUBS)
  • ঢাকা ইউনিভার্সিটি কালচারাল সোসাইটি(DUCS)
  • ঢাকা ইউনিভার্সিটি মাইম অ্যাকশন (DUMA)
  • ঢাকা ইউনিভার্সিটি ক্যারিয়ার ক্লাব (DUCC)
  • ঢাকা ইউনিভার্সিটি ফটোগ্রাফি সোসাইটি(DUPS)
  • ঢাকা ইউনিভার্সিটি সাইক্লিং সোসাইটি
  • ঢাকা ইউনিভার্সিটি সায়েন্স সোসাইটি(DUSS)
  • ঢাকা ইউনিভার্সিটি মডেল ইউনাইটেড নেশনস(DUMUNA)
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভা
  • স্লোগান ৭১
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভা
  • প্রভাতফেরী
  • জয়োধ্বনি সাংস্কৃতিক সংসদ

বর্তমান অবস্থা[সম্পাদনা]

টিএসসির উন্নয়নে একটি পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। তবে টিএসসির ভবন ভেঙে সেখানে নতুন কোন বহুতল ভবন নির্মাণ করা হবে কিনা সে বিষয়ে এখনো কোন সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছে গণপূর্ত অধিদপ্তর এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।[৪] টিএসসির স্থাপনা ভেঙে এর উন্নয়নে বিরোধিতা করেন ছাত্র- শিক্ষক সহ অন্যান্য পেশার ব্যক্তিত্ব।[৫][৬]

চিত্রশালা[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. সাজাহান মিয়া (২০১২)। "ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  2. টিএসসি: আমরা কি ঠিক করছি, প্রথম আলো, ২৩ ডিসেম্বর ২০২০
  3. টিএসসির নকশাকার কে ছিলেন, কী ছিল তাঁর অনুপ্রেরণা, প্রথম আলো, ২২ ডিসেম্বর ২০২০
  4. টিএসসি ভবন ভাঙা নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি, কিন্তু থেমে নেই বিতর্ক, বিবিসি নিউজ বাংলা, ২২ ডিসেম্বর ২০২০
  5. ঢাবি টিএসসির সঙ্গে জাতির লড়াইয়ের ইতিহাস জড়িত, যুগান্তর, ১৬ জানুয়ারি ২০২১
  6. টিএসসি ভাঙার পক্ষে নেই কেউ, বাংলা ট্রিবিউন, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]