চিরুনি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
চিরুনি

চিরুনি হচ্ছে চুল আঁচড়াবার উপকরণ। এটি কঠিন বস্তু হতে প্রস্তুত করা হয়, সাধারণত চ্যাপ্টা হয়, এবং এর অবশ্যই দাঁত থাকে। চিরুনি ব্যবহার করে মানুষ চুল বা অন্য কোন আঁশ জাতীয় তন্তু সোজা করে কিংবা পরিষ্কার করে।

উপাদান[সম্পাদনা]

A Punjabi wooden comb

প্রাচীন যুগে চিরুনি বিভিন্ন উপাদান দিয়ে তৈরি হতো। এর মধ্যে চিরুনি তৈরিতে যে উপাদান সবচেয়ে বেশি ব্যবহূত হতো, তা হলো পাথর। ওই সময় পাথর কেটে কেটে চিরুনি তৈরি করা চুলের পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে সচেতনতারই একটা বড় প্রমাণ। পাথরের পাশাপাশি প্রাচীনকালে বিভিন্ন প্রাণীর হাড়গোড়ও চিরুনি তৈরিতে ব্যবহূত হতো বলে প্রমাণ পেয়েছেন প্রত্নতত্ত্ববিদেরা।[১]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

Ashanti comb - an example of Afro pick

প্রস্তর যুগেই নাকি মানুষ চিরুনির ব্যবহার শিখে গিয়েছিল। ওই সময় শক্ত উপাদান দিয়ে মানুষ যেসব দ্রব্য তৈরি করত, তার মধ্যে অন্যতম ছিল নিজের চুল পরিষ্কার রাখার চিরুনি। খ্রিষ্টপূর্ব ৫৫০০ শতকে প্রাচীন মিসরের মানুষের মধ্যে চিরুনির ব্যবহার প্রচলিত ছিল। প্রাচীন চীনে কারও মালিকানায় একটি চিরুনি থাকাকে মনে করা হতো আভিজাত্যের প্রমাণ।[১]

চিরুনির ইতিহাসের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে সুইডেন দেশটির নাম। বেশির ভাগ প্রত্নতত্ত্ববিদ একমত যে ইতিহাসের সবচেয়ে প্রাচীন চিরুনিগুলো সুইডেনে তৈরি হয়েছিল। খ্রিষ্টপূর্ব ২৫০০ শতকে সুইডেনে চিরুনি তৈরি হয়েছিল বলে মত দিয়েছেন তারা। পাথর, বিভিন্ন প্রাণীর হাড়ের পাশাপাশি সুইডেনে টিন, রুপা ও তামা-দস্তার সমন্বয়ে গঠিত একধরনের ধাতু থেকে তৈরি করা হতো চিরুনি।[১]

মধ্যযুগে এসে চিরুনি তৈরিতে একটা বড় ধরনের বিপ্লব সংঘটিত হয়। এ সময় চিরুনি তৈরিতে হরিণ ও অন্যান্য গবাদিপশুর শিং দিয়ে তৈরি বিশেষ একধরনের পদার্থ আবিষ্কৃত হয়। কচ্ছপের শক্ত খোলটিও এই বিশেষ পদার্থ তৈরিতে ব্যবহূত হতো। শিং ও কচ্ছপের খোল গলিয়ে ওই বিশেষ পদার্থ প্রস্তুত করে বিভিন্ন আকারের চিরুনি সে সময় তৈরি করা হতো। উনিশ শতকের শেষ দিকে ইসাইয়াহ ও জন হায়াত নামের দুই ভাই প্রাকৃতিক উপাদানের বদলে কৃত্রিম উপাদান দিয়ে চিরুনি তৈরির উপায় আবিষ্কার করেন। তাদের উদ্ভাবিত সেলুলয়েড চিরুনির ইতিহাস বদলে দেয় । সেলুলয়েড চিরুনিকে করে তোলে সস্তা সেই সাথে নিয়ে আসে মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে।[১]


চিত্রসংগ্রহ[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. চিরুনি ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৮ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে, নাইর ইকবাল, দৈনিক প্রথম আলো। ঢাকা থেকে প্রকাশের তারিখ: ০৫-০৪-২০১৩ খ্রিস্টাব্দ।

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]