গঞ্জ-ই-সাওয়াই

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ফেঞ্চিগঞ্জ-ই-সাওয়াই-এর সম্মুখে হেনরি এভরি

গঞ্জ-ই-সাওয়াই বা গাঙ্‌-ই-সাওয়াই ছিল ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত মোঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের অধীন একটি বাণিজ্য জাহাজ। জাহাজটি ৭ই সেপ্টেম্বর, ১৬৯৫ সালে ইংরেজ জলদস্যু হেনরি এভরি দখল করেন। জাহাজটি হেনরি এভরি ভারত মহাসাগরের ইয়েমেন-সুরাত-এর (বর্তমান মুচা) পথে আটক করেন। আগস্ট ১৬৯৫ সালে এভরি ও তার জাহাজ ফেঞ্চি মান্দাব স্ট্রেইটে পৌঁছে। সেখানে এভরি থমাস টিউ সহ চারজন জলদস্যুদের নিয়ে একটি দল গঠন করে কারণ সেসময় মোঘলদের ২৫টি জাহাজ ভারত মহাসাগরে অবস্থান করছিল। ৭ই সেপ্টেম্বর রাতে গঞ্জ-ই-সাওয়াই ও ফাহাত মুহাম্মদ নামে আরো একটি এসকর্ট জাহাজ পথভ্রস্ট হয়ে সুরাতের দিয়ে চলে যায়।

এভরি ও তার দলের লোকেরা প্রথমে ফাহাত মুহাম্মদে আক্রমণ চালায় এবং এর ক্যাপ্টেনকে হত্যা করে। পরে জলদস্যুরা এ জাহাজটিতে থাকা প্রায় £৫০,০০০ সমমূল্যের রত্নভান্ডার দখল করে নেয়। পরবর্তীতে এভরি গঞ্জ-ই-সাওয়াই আক্রমণের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে কিন্তু জাহাজটিতে ৬২টি কামান ও ৪ থেকে ৫শত লোকের সমন্বয়ে গঠিত সম্রাটের বাহিনী ছিল। এছাড়াও এতে ছয়শত-এর মত যাত্রী ছিল। জাহাজটি দখলের সময় ছোট একটি যুদ্ধ হয়েছিল বলে সমসাময়িক তথ্য থেকে পাওয়া যায় কিন্তু উভয় পক্ষের কিছু লোক নিহত হলেও শেষ পর্যন্ত হেনরি এভরি জাহাজটি দখল করতে সমর্থ হয়। দখল করার পর তার বাকীদের বন্দি করে।

বিজয়ী জলদস্যুদল পরবর্তী কয়েকদিন বন্দিদের হত্যা ও নারীদের ধর্ষণসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত হয়। এছাড়াও জাহাজের গুপ্তধন কোথায় রাখা হয়েছে এটা জানার জন্যও তারা বন্দিদের উপর নির্যাতন অব্যাহত রাখে। কিছু কিছু নারীকে ধর্ষণ করার পর তারা পানিতে ঝাঁপিয়ে আত্মহত্যা করে।[১][২] বাকী জীবীত বন্দিদের পরবর্তীকালে জলদস্যুরা মুক্ত করে দেয়। গঞ্জ-ই-সাওয়াই থেকে লুট করা সম্পদের পরিমাণ ৫০০,০০০ স্বর্ণ ও রৌপ্য মুদ্রাসহ ছিল মোট £৩২৫,০০০ ও £৬০০,০০০। পরবর্তীতে জলদস্যুরা প্রত্যেকে £১,০০০ ও কিছু মুদ্রা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেয়।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Doug Lennox (২০০৮)। Now You Know Pirates: The Little Book of Answers (illustrated সংস্করণ)। Dundurn। পৃষ্ঠা 70। আইএসবিএন 978-1-55002-806-5 
  2. Jadunath Sarkar (1962), A short history of Aurangzib, 1618-1707.